সত্যি ঘটনা তবে স্থান,কাল,পাত্র বলা হবেনা। ভুক্তভোগি বা অভিজ্ঞরা বুঝবেন অবশ্যই।
বন্ধু সম প্রকল্প পরিচালকের দামী মোবাইল ছিনতাই হয়ে গেলো একদিন সন্ধ্যায়। ভীষন মন খারাপ। মন খারাপের কারনে কফি দিয়ে আপ্যায়নের কথাও ভুলে গেলেন। মনে করিয়ে দিলাম,দাদা কফি পাইনি এখনো।
আরো দুঃখী মুখে বললেন ‘ জিসান ভাই নিজে নিয়ে নিন ‘।
-আরে ধুর মন খারাপ করবেন না তো,দেখি উদ্ধার করা যায় কিনা- বললাম আমি। অবিশ্বাসের দৃষ্টিতে তাকালেন আমার দিকে।
সংক্ষেপে বলছি এখনঃ
সোর্স ধরে গেলাম এমপি সাহেবের কাছে।
– ভাই আমার এক বন্ধুর মোবাইল ছিনতাই হয়েছে, ব্যাপারটা যদি একটু দেখতেন।
উনি জিজ্ঞেস করায় সব কিছু বললাম তাঁকে,কেমন মোবাইল,কোথা থেকে,কখন ছিনতাই হয়েছে। ফোন করলেন একজনকে, কথা বললেন একটু দূরে গিয়ে। ফোন রেখে বললেন,
– আগামী কাল বিকেল পাঁচটায় আপনার বন্ধুকে নিয়ে ওমুক স্থানে গিয়ে ০১৭১২……… এই নাম্বারে ফোন দিয়ে আমার কথা বলবেন।
পরদিন বন্ধুকে নিয়ে ওমুক স্থানে গিয়ে ঐ ফোন নাম্বারে কল দিলে একটা বাড়ির নাম্বার দিলেন।গেলাম সে বাড়িতে। কলিং বেল টিপলেই একজনে দরজা খুলল।বললাম আমরা ফোন দিয়েছিলাম……ভাই বলেছেন একটা মোবাইলের কথা।
ভিতরে একটা কক্ষে নিয়ে গেলেন। ৩টা বড় ডাইনিং টেবিল একসাথে লম্বালম্বি করে রাখা। আমাদের চোখ তখন কপালে উঠে গিয়েছে। টেবিলের উপর শতশত মোবাইল রাখা।
বললেন তিনি,খুঁজে নিন আপনাদের মোবাইল।অল্প সময়েই খুঁজে পেলাম।কারন অত দামী মোবাইল এবং মডেল খুব কম। মোবাইল হাতে নিয়ে বললাম,ভাই আমাদের নাম্বারে একটা কল করুন,প্রমাণ নিন যে এটা আমাদের মোবাইল।’ প্রমাণের দরকার নেই, ভাই বলেছেন যেটা ইচ্ছে আপনারা নিয়ে যান।’
ভাইয়ের বদৌলতে আমরা ছিনতাই হওয়া মোবাইল ফিরে পেলাম।ভাইয়ের প্রতি কৃতজ্ঞ আমরা। তবে ওনার ছত্রছায়ায় যে মোবাইল ছিনতাইও হতো এটি আর বলা উচিৎ না,কারন ভাই এখন মৃত।মৃত মানুষের দুর্নাম করা উচিৎ না।
মোবাইল উদ্ধার করার পরে প্রকল্প পরিচালক বন্ধু সম ব্যাক্তির কাছ থেকে আলাদা সমীহ পাওয়া শুরু করেছিলাম। ‘জিসান ভাই আপনার হাত তো অনেক লম্বা- বলতেন তিনি। হাত বাড়িয়ে দিয়ে আমি বলতাম ‘ আসুন মেপে দেখি কার হাত লম্বা বেশী’ 🙂
অঃকঃ নিজের ছিনতাই হওয়া মোবাইল উদ্ধার করার আর একটি সত্যি কাহিনী লিখবো কোন একদিন।
৩৮টি মন্তব্য
সীমান্ত উন্মাদ
মামা এটাই হল আমাদের জীবনের বাস্তব সত্য কারন আমাদের রক্ষকই আমাদের ভক্ষক। যাইহোক তিনি যেহেতু মারা গেছেন তারে নিয়া একটা কথা মনে আসলেও বলতে পারছি না, কারন নিজেকে উন্মাদ হলেও মানুষ মনে করি।
মামা আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা, আর নিজের ছিনতাই হবার কাহিনিটা শুনবো, তাই তাড়াতাড়ি দিয়েন।
জিসান শা ইকরাম
সেটাই মৃত মানুষের দোষ নিয়ে আলোচনা করে কি হবে,
তিনি এখন সব সমালোচনার উর্ধ্বে চলে গিয়েছেন।
আমার ঘটনা দিয়ে দেবো যে কোন দিন।
শুভ কামনা উন্মাদের জন্যেও ।
স্বপ্ন
একজন সংসদ সদস্য এই ছিনতাইকে প্রশ্রয় দেন!! ভাবতেও কেমন লাগে।
জিসান শা ইকরাম
অনেক সময় অবশ্য এক্ষেত্রে সংসদ সদস্যের কিছুই করার থাকেনা।
এটি অত্যন্ত শক্তিশালী একটি চক্র
যিনি সংসদ সদস্য থাকেন ঐ এলাকার,ইচ্ছে বা অনিচ্ছায় স্রোতে গা ভাষান।
খেয়ালী মেয়ে
মৃত মানুষের দুর্নাম করা উচিৎ না–একদম ঠিক….
তবে মানুষ চলে গেলেও তার কাজ থেকে যায়, আর এই কাজই তাদের পরিচয় বয়ে বেড়ায়…
ভাবতে অবাক লাগে যে, আমাদের রাজনীতিবিদদের দ্বারা কোন কাজই বোধ হয় অসম্ভব না..
জিসান ভাইয়া আপনার লম্বা হাতের একটা ছবি দিলে ভাল হতো 🙂
জিসান শা ইকরাম
তবে মানুষ চলে গেলেও তার কাজ থেকে যায়, আর এই কাজই তাদের পরিচয় বয়ে বেড়ায়-এমকত আপনার সাথে।
হাতের ফটো দিয়ে দেবো এক সময় 🙂
তবে তা লম্বা আমার হাতের মতই।
খেয়ালী মেয়ে
দিয়ে দেন, আমাদেরও তো দেখতে হবে যে আপনার হাতটা কতটুকু লম্বা :p
জিসান শা ইকরাম
ইঞ্চিতে দৈর্ঘ্য বলে দেবো,আগে মেপে নেই।
খেয়ালী মেয়ে
হাতের ছবি দেখতে চাই, মাপ না 🙂
লীলাবতী
আপনার বন্ধুর মোবাইল উদ্ধার হবার কাহিনীটি বেশ মজার।এমপি সাহেবের জন্যই মোবাইল ফিরে পেলেন।এজন্য খুশী হওয়া উচিত।সাথে সাথে এমপিকে তিরস্কার একারনে যে তিনি এই সব ছিনতাইকে প্রমোট করতেন।ওনার নাম বলে দিলে কি কোন সমস্যা আছে?
জিসান শা ইকরাম
আসলে সিস্টেমে আটকে আছেন সবাই
মুক্তি নেই কারো।
কৃন্তনিকা
এমনো হয়???!!!
ভীষণ অবাক হচ্ছি। মজাও পেলাম :p
দুনিয়াদারী বড়ই অদ্ভুত… প্রয়োজন পড়লে ভাবছি আমিও আপনার লম্বা হাত দেখবো… বলা তো যায় না, মোবাইল যদি চুরি হয় আমার… এমপি তো আর আছে দেশে… :p
জিসান শা ইকরাম
হ্যা হয়,
সব কিছু হয় কোন একজনের ছত্রছায়ায়।
সব সময় যে সফল হবো তার নিশ্চয়তা নেই
ঐ সময়ে ওনার সাথে আমার সোর্স মিলে গিয়েছিল,তাই সহজ হয়েছে।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
মুখোসের আড়ালে বিভৎস রুপ।
জিসান শা ইকরাম
এ আমাদের সমাজের ক্ষত।
ছাইরাছ হেলাল
অনেক কিছুই ঘটে আমাদের অজান্তে।
অবশ্যই একটি চলমান প্রক্রিয়া।
জিসান শা ইকরাম
এ প্রক্রিয়া থেকে মুক্ত হওয়া কঠিন খুব।
শুন্য শুন্যালয়
এ পোস্ট দিয়ে আপনি একদম ভালো কাজ করেননি। যেই হারে মোবাইল ছিনতাই হয়, আপনার বাড়ির সামনে লাইন লেগে যাবে এবার। মোবাইল উদ্ধারকারী হিসাবে অচিরেই আপনার সুনাম ছড়িয়ে পরবে।
মৃত মানুষের বেঁচে থাকার কাহিনী শুনে আশ্চর্য হইনি, তাদের অনুমতি ছাড়া গাছের পাতাও নড়েনা, এটা আমরা আমজনতা জেনে গেছি এতদিনে।
আপনার হাত লম্বা? প্লাস্টিক ম্যান নন তো? 🙂
জিসান শা ইকরাম
একটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান দেবো নাকি?
পরামর্শ দেবো কিভাবে চুরি যাওয়া মোবাইল উদ্ধার করতে হবে।
সফলতার গ্যারান্টি নাই- যেমন ডাক্তার,উকিলরা করেন 🙂
মৃত মানুষের বেঁচে থাকার কাহিনী শুনে আশ্চর্য হইনি, — আপনার মন্তব্যের এই অংশটি বুঝিনি আসলে।
আমার লেখায় কি বুঝেছেন কে জানে।
সেই বন্ধু বলতেন এটা।
শুন্য শুন্যালয়
আমিই আসলে বোঝাতে পারিনি। আসলে সকল কুকর্মের মধ্যেই বড় বড় লোকদের, মানে মন্ত্রী, এমপিদের হাত থাকে, এটা বোঝাতে চেয়েছি।
সফলতার গ্যারান্টি না দিলে আপনার প্রতিষ্ঠান গোল্লায় যাবে 🙂
হাতের ছবি কই?
জিসান শা ইকরাম
আচ্ছা ,বুঝলাম এবার।
হাতের ছবি দেবো কোন এক সময় প্রসঙ্গ এলে।
নীলাঞ্জনা নীলা
মৌয়ের একটা মোবাইল ছিনতাই হয়েছে,ওকে বলতে হয় আপনার সাথে যোগাযোগ করতে 🙂 পরের কাহিনীর জন্য অপেক্ষা করছি।
জিসান শা ইকরাম
বলে দিয়েন যোগাযোগ করতে
পরামর্শ দিতে পারবো।
নিজের কাহিনী বলবো এক সময়।
ইমন
লোকটা বোধ হয় ভালো একটা কাজ করে গেলো। আচ্ছা লোকটা কি আরও এমন গুটা কয়েক ভালো কাজ করে গেছে! আল্লাহ তাকে বেহেশত নসিব করুক।
জিসান শা ইকরাম
তা জানিনা আমি।তবে আমার কাজটি তিনি করে দিয়েছিলেন।
অনিকেত নন্দিনী
এরকম আকছারই হচ্ছে। এমপি আর মন্ত্রীরাই তো তাদের ছত্রছায়ায় এদের ঠাঁই দিয়ে দয়া দেখান। তাঁদের অতি দয়ার শরীর কিনা!
প্রয়াত সেই এমপিকে বোধহয় সনাক্ত করতে পেরেছি। আল্লাহ্ তাঁকে মাফ করে দিন।
জিসান শা ইকরাম
হ্যা তাঁদের দয়ালু মন, কি করবেন আর ! তাই প্রশ্রয় দেন একটু।
শাহ আজিজ
এমন লম্বা হাত থাকা ভালো 🙂 তাহলে এমন অনেক কিছুই হারিয়ে গেলেও ফিরে পাওয়া যায় ভাইয়া 🙂 আর মৃত মানুষের নাম্নিতে হয় না আমাদের মৃত মানুষের কর্মই তার নাম বারবার উচ্চারণ করে থাকে আমাদের সামনে ।
জিসান শা ইকরাম
হ্যা যেমন আমরা উচ্চারন করি গোলাম আজমের নাম।
আজিম
অদ্ভুত।
নতুন লাগলো বিষয়টা জিসান ভাই।
জিসান শা ইকরাম
নতুন লাগলেও ঘটনা সত্যি ।
সোনিয়া হক
ছিনতাইকারীদের গড ফাদার থাকেই।গড ফাদার পরিবর্তন হয়।
জিসান শা ইকরাম
হ্যা, সত্যি এটা।
স্বদেশী যোদ্ধা
জিসান ভাই , আপনার বর্ণিত ঘটনার মত একটি ঘটনা হুবহু আমার এক বড় ভাইয়ের সাথে ঘটেছে । তবে এক্ষেত্রে চুরি যাওয়া বস্তুটি ভিন্ন । আমার ঐ বড় ভাইয়ের চুরি যাওয়া বস্তুটি ছিলো মানিব্যাগ ।
জিসান শা ইকরাম
হা হা হা হা , মানি ব্যাগও ছিলো তো ফ্লোরের উপর রাখা শত শত।
মানি ব্যাগ,মেয়েদের হ্যান্ড ব্যাগ 🙂
saunar
জিসান শা ইকরাম ভাই চুরি হয়া মোবাইল কাহিনী ভালো লাগলো পড়ে
আপনার কাছে জানতে চাই আমার ফোবাইলে ডোকতে পারতেছিনা শুধু মন্তব্য করতে পারতেছি
তাই আপনার লেখার মাঝে জানিয়ে গেলাম
লীলাবতী
কেন জানি মনে হচ্ছে সানুয়ার হচ্ছেন ব্লগার আয়নাল 🙂
saunar
কি কারনে মনে হলো সানোয়ার নাম আয়নাল জানিনা
বানান প্রোফাইলে বানান ভুল হয়েছিলো
দয়া করে বলবেন
লীলাবতী