বর্ণিল,
আরেক শ্রাবণ এলো। অথচ গরম কমছে না। সমস্ত আকাশ জুড়ে মেঘ লেপ্টে আছে, তবুও বৃষ্টি নামেনি। ঋতুর বৈচিত্র্য কোথায় হারিয়ে গেলো! এই দেখো তোমাকে লিখতে বসে সেই আগের মতোই আবহাওয়া প্রসঙ্গ চলে এসেছে৷ মনে আছে তুমি বলতে, “যখন কোনো কথা খুঁজে পাওয়া যায়না, তখনই তুমি আবহাওয়ার কথা টেনে নিয়ে আসো। কেন বলো তো? আমাদের কি কথা ফুরিয়ে গেছে?” আসলে কি জানো, তোমার সামনে দাঁড়ালে কথাগুলো কেমন এক লজ্জ্বায় কুঁকড়ে যায়! এ কথা আজও তোমাকে বলা হয়নি।
আচ্ছা আমাদের কতোদিন দেখা হয়নি বলো তো! কতোদিন আমরা একে অন্যের উপর মিষ্টি রাগ দেখাইনি? কতো যুগ যেনো পেরিয়ে এসেছি, কথা হয়নি! আমাদের বুনো অভিমান এতো গভীর হতে পারে বর্ণীল? তার মানে তো আমরা দুজনই দুজনকে নীরবে ভালোবেসে যাচ্ছি! তুমি আমার আনন্দদায়ক যন্ত্রণা। বুঝেছো?
জানো সেদিন একটা ঘটনা ঘটলো। আমি হেঁটে যাচ্ছি কেউ যেনো পেছন থেকে আমায় ডেকে উঠলো, “এই মেয়ে কোথায় যাচ্ছো?” চমকে উঠলাম একেবারে তোমার কন্ঠ! চেয়ে দেখি আসলে আমায় নয়, আরেকজনকে ডাকছে নাম-না-জানা ছেলেটি। তুমি আমায় নিয়ে কী পজেসিভ ছিলে! ঠিক পজেসিভও না, খুব কষ্ট পেতে কারো সাথে কথা বললে। এত্তো বোকা তুমি! আমাকে আজও বুঝতে পারলে না বর্ণিল! হয়তো কখনো জানতেও পারবেনা এই যাপিত জীবনে তুমি কী গভীরভাবে জড়িয়ে আছো! আমিও চাইনা অবশ্য তুমি আমাকে জানো কিংবা চেনো। শুধু এটুকু ভেবেই দিন কাটিয়ে দিচ্ছি, এ পৃথিবীর কোথাও না কোথাও তো তুমি আছো!
যাক অনেক কিছু লিখে ফেললাম। এ চিঠিটাও আমার ডায়েরির পাতাতেই থেকে যাবে প্রতিবছরের মতো। এভাবেই এই দিনটিকে আমি উদযাপন করি। অবশ্য তুমি এই দিনটিতে তোমার পুরোনো বাড়ীতে চলে যাও। তারপর সম্পূর্ণ দিন চোখের জলে ভাসাও মায়ের কথা ভেবে। আমার অনেক যন্ত্রণা হয় বর্ণিল। কিন্তু তারপরও জানো এই দিনটিই আমার জীবনের সব থেকে শুভদিন? আজ তোমার জন্মদিন!
শুভ জন্মদিন বর্ণিল।
বৃষ্টি শুরু হলো।
ভিঁজে চলে পথ-ঘাট, প্রান্তর; ক্রমশ অপেক্ষারা শীতল হয়ে আসে।
কার্ণিশ বেয়ে নেমে যায় জল, স্ফটিকের মতো চিকচিক করে ওঠে জানালার গ্লাস।
অথচ আজও আমার শ্রাবণ আসেনি—
চোখের বর্ষাকে ভিঁজিয়ে দেবে সেই মেঘ আজ যক্ষপুরীর অন্তরালে।—শুধু তোমার জন্যে।
ইতি,
অতিন্দ্রিলা
হ্যামিল্টন, কানাডা
২৪ জুলাই, ২০১৮ ইং।
(y) বিঃদ্রঃ ইহা একখানা রোমান্টিক পত্র। এই দুই চরিত্র কাল্পনিক। ইহার সহিত কাহারো মিল পাওয়া গেলে আমি দায়ী থাকিবো না, পূর্বেই জানাইয়া রাখিলাম। 😀
১৮টি মন্তব্য
মোঃ মজিবর রহমান
ঐ যে আর দেখা না হওয়া জ্বালা
মনে আছে জেগে অতীত সৃতি
তাই পুষে আছি হৃদয় গহীনে
তাই লিখে যাই তোমার গীতি।
নীলাঞ্জনা নীলা
মজিবর ভাই দেখছি চমৎকার বিরহের গীতিকবিতা লিখতে পারেন!
ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
ছাইরাছ হেলাল
পাক্কা লিখিয়ে,
ধুর আপনি আবার কাকে লিখবেন!! বললেই হল!!
এতই যদি ইনুনি-বিনুনি করতে পারেন তাহলে মোরে একখানা চিডি দ্যান দেহি!!
কোথাকার কে না কে!! তার আবার মৃত্যু দিন, বেঁচে কী ছিল কোন দিন।
বৃষ্টি সে আসবেই
প্লাবিত যক্ষপুরী সে হাসবেই।
নীলাঞ্জনা নীলা
শ্রদ্ধেয় কুবিরাজ ভাই,
প্রথমেই আমার পেন্নাম গ্রহণ করিবেন। আশা করি আপনি আপনার পরিবার নিয়ে ভালো আছেন। আমি ভালো আছি। পরসমাচার এই যে বহুদিন হইলো আপনার কুনু খবরাদি না পাইয়া বড়োই চিন্তিত আছি। অনুগ্রহ করিয়া কুশল মঙ্গল জানাইবেন।
আজ এই পর্যন্তই। ভালো থাকিবেন। পেন্নাম।
ইতি,
আপনার শিষ্য
ছাইরাছ হেলাল
পেন্নাম সাষ্টাঙ্গে না নবম না দশম তা তো বললেন না,
তবে লেখা দুষ্টুমিতে কামেল হইছেন দেখতেছি!!
ভালু হই যান!!
নীলাঞ্জনা নীলা
ভালু হইতে ডলার লাগে।
ওইডাই তো অখন নাই। ;(
জিসান শা ইকরাম
চরিত্র কাল্পনিক হইলেও মিল খুঁজে পাওয়া গিয়েছে 🙂
অনেক অনেক সুন্দর একটি চিঠি,
কাল্পনিক কাউকে এত আন্তরিক ভাবে চিঠি লেখো কিভাবে?
নীলাঞ্জনা নীলা
নানা কাল্পনিক চিঠি লেখা সহজ। যা মন চায় লেখা যায়।
আমার কাছে কঠিন লাগে কল্পনার বাইরে কাউকে লিখতে। বুঝেছো?
মায়াবতী
অসাধারণ লিখেছেন আপু * মাশায়াল্লাহ
নীলাঞ্জনা নীলা
মায়াবতীর মায়াবী মন্তব্য পেয়ে খুশী হলাম।
ধন্যবাদ।
নায়িমা জাহান
এরকম চিঠি পেতে ভীষণ ইচ্ছে করছে… মুগ্ধতায় রাখলেন…
নীলাঞ্জনা নীলা
চিঠি আমারও পেতে ইচ্ছে করে। আজকাল সবাই চিঠি দেয়ার বেলায় অলস হয়ে গেছে। একদিন দেখা যাবে বাংলাদেশ ডাক বিভাগ বন্ধ হয়ে গেছে।
আপনার মুগ্ধতায় মোহিত হোলাম।
ধন্যবাদ!
শুন্য শুন্যালয়
আমার এড্রেসটা দিচ্ছি তোমাকে। আর তোমাকে না অনেক আগে মানা করেছিলাম কাওকে চিঠি লিখবেনা!!
নীলাঞ্জনা নীলা
ঠিকানা তো দেবেনা। জানি আমি। দিয়েই দেখতে কাকে চিঠি লিখি আমি!
তোমার কথা শুনবো কেন, কারণ দর্শাও। 🙂
শুন্য শুন্যালয়
শুনোনা শুনোনা, আমার কথা যেই-ই শুনেছে সেই-ই নিজের নাম ভুলে গেছে। 😀
নীলাঞ্জনা নীলা
নিজের নাম জানি কি আমার!!!
মাহমুদ আল মেহেদী
কাল্পনাকে বাস্তবে রুপ দিয়েছেন, অনেক ভাল লেগেছে
নীলাঞ্জনা নীলা
চিঠি লিখে আনন্দ পাই। লেখালেখির বিষয়ের মধ্যে প্রিয় বিষয় হচ্ছে চিঠি লেখা।
ধন্যবাদ আপনাকে মেহেদী।