
বান্দবানের পাহাড় চুড়া সিপ্পি বা আরসুয়াং জয় কিংবা বৃহৎ ঝর্ণা তিনাপ সাইতার ভ্রমণের বেস ক্যাম্প বলা চলে এই রোনিন / রনিন পাড়াকে। রোনিন পাড়ায় মূলত বম ও তঞ্চঙ্গ্যা জনগোষ্ঠীর মানুষের বসবাস।প্রকৃতির সন্তান এখানকার মানুষদের সাথে মিশলে যে কারো ভালো লাগবে এটা নিশ্চিৎ। বান্দরবান পৌঁছে বাস থেকে নেমে রোয়াংছড়ির বাসস্ট্যান্ড থেকে লোকাল বাসে যেতে হবে রোয়াংছড়ি। সেখান থেকে গাইড নিয়ে ২৩ কিমি পাহাড়ি পথ হেঁটে পাইক্ষ্যাং পাড়া হয়ে যেতে হবে রোনিন পাড়ায়। অন্য পথে গেলে বান্দরবান থেকে রুমা হয়ে মুন্নুয়াম পাড়া হয়ে রোনিন পাড়ায় যেতে হয়। মুন্নুয়াম পাড়ার পথটা অবশ্য দূরত্ব একটু বেশী হয়। তবে যেই পথেই যান না কেন মোটামুটি একটা দিন তো লেগেই যাবে। খুব ভালো ট্র্যাকার হলে হয়তো কিছুটা সময় বাঁচানো যাবে। আমার দুই পথেই যাওয়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে। প্রথম বার গিয়েছিলাম সিপ্পি সামিটের জন্য, কিন্তু রোনিন পাড়া যাওয়ার আগেই আমার পায়ে সমস্যা হয়ে যাওয়ায় সিপ্পি পর্যন্ত পৌছতে পারিনি। তবে ভাগ্য ভালো যে, ওখান থেকে অনেক কষ্ট হলেও কারো সাহায্য ছাড়াই ফিরে আসতে পেরেছি। দ্বিতীয় বার গিয়েছিলাম বাংলাদেশের বৃহত্তম ঝর্ণা তিনাপ সাইতার দেখার উদ্দেশ্যে। পাহাড়ে এমন এ্যডভেঞ্চার ট্যুরগুলো সব সময়ই আমাকে রোমাঞ্চিত করে। কিন্তু প্রায় দুই বছর হতে চলল পাহাড়ের ডাকে সাড়া দিতে পারছি না। চলুন আমার ক্যামেরায় রোনিন পাড়াটা দেখে আসি………….
(২) দীর্ঘ পাহাড়ি পথ পাড়ি দিয়ে এক সময় রোনিন পাড়া আমাদের নজরের মধ্যে চলে এলো।
(৩) পাড়ায় ঢোকার মুখেই পেতে রাখা আছে বাঁশ কাঠ নির্মিত বসার বেঞ্চ, ক্লান্ত শরীরে বসার বেঞ্চে শুয়ে পড়ল অনেকে।
(৪) এই গ্রামের পাশেই রয়েছে আরো উঁচু পাহাড়, সেই পাহাড়ের ঝর্ণাতে লাগানো পাইপ দিয়ে সর্বক্ষণ ওরা পানির সরবরাহ পেয়ে থাকে। একটা বড় হাউজ বানিয়ে তার মাঝে ঝর্ণা থেকে লাগানো পাইপের খোলা মুখ সেট করে দেওয়া আছে। পাড়ার সবাই এখান থেকে সমস্ত গেরস্থালীর পানি পেয়ে থাকে। সেই পানির হাউজের সামনে ব্যস্ত কিছু আদিবাসি মহিলাদের দেখা যাচ্ছে।
(৫/৬) আমাদের থাকার জন্য বরাদ্ধ বাড়িটা আরো ভেতরের দিকে, তাই গ্রামের ভেতরের রাস্তা দিয়ে আরো এগিয়ে যেতে হয়।
(৭/৮) উৎসুক নয়নে আমাদের অনেকে দেখছিল।
(৯) এই বাড়িটা ছিল দুই রাত থাকার জন্য আমাদের রোনিন পাড়ার ঠিকানা।
(১০) গ্রামের ভেতরে একটা লাল মাটির পথ নেমে গেছে নিচের দিকে।
(১১) এটা একটা সেনা ছাউনি, রোনিন পাড়া থেকে কিছুটা নিচে এই সেনা ছাউনিটা।
(১২/১৩) ওখানে আমাদের সকালের নাস্তাটা ছিল এমন। ওদের মাচার উপরের ঘরগুলোতেই চুলায় সব রান্নাবান্না হয়ে থাকে।
(১৪/১৫) রোনিন পাড়ার মা ও শিশুরা যেমন।
(১৬/১৭) ওখানকার পরিশ্রমী মানুষেরা যেমন।
(১৮) এখানে এমন কিছু প্রাণী আছে যারা অতিথীদের সেবা দিতে সর্বদা প্রস্তুত।
(১৯) দুইদিন থাকার পর অন্য পথে যখন রোনিন পাড়া ত্যাগ করছিলাম।
(২০) ফেরার পথে সিঁদুরে কলমী ফুল গুলো যেন আমাদের টিমকে বলেছিলো আবার এসো, আমরা অপেক্ষায় থাকবো তোমাদের জন্য………
২৫টি মন্তব্য
ছাইরাছ হেলাল
আর যাই হোক, ফুলের ছবি দেখে প্রাণ জুড়িয়ে গেল।
কেমনে মানুষ এত কষ্টের পথ পাড়ি দেয় কে জানে!
কামাল উদ্দিন
যেমন করে মানুষ ইয়াবা সেবন করে তেমন করেই এসব করে বড় ভাই। পাহাড়ের নেশাটাও কিন্তু অনেক বড় একটা নেশা………..শুভ কামনা জানবেন।
ফয়জুল মহী
ভীষণ সুন্দর ! ভালো লাগলো।
কামাল উদ্দিন
ধন্যবাদ মহী ভাই, ভালো থাকুন, সব সময়।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
পাহাড় আমার ও খুব ভালো লাগে। ধন্যবাদ এমন সুন্দর একটি পাহাড়ী গ্রাম নিয়ে লেখার জন্য। ফুলের ছবি দেখে প্রাণ জুড়িয়ে গেল।
কামাল উদ্দিন
আমারও তাই আপু, শুভকামনা জানবেন।
নিতাই বাবু
দুধের স্বাদ যেন কীসে মেটায়? সেভাবেই সেখানে যাওয়ার স্বাদ আপনার পোস্টের ছবি দেখে মেটালাম। ভালো থাকবেন আশা করি।
কামাল উদ্দিন
আর কিসে, ধনিয়া পাতার বড়াতে 😂
সুরাইয়া পারভীন
এ যেনো সত্যিই দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানো ব্যাপার। ফুলের ছবিটা অদ্ভুত সুন্দর
কামাল উদ্দিন
ঘোল কিন্তু খেতে খারাপ লাগে না আপু। এই ফুলগুলো শুধু মাত্র পাহাড়েই আমি দেখেছি। শুভ কাম, সব সময়।
সুপায়ন বড়ুয়া
ফুলেল ছবিতে ভ্রমন কাহিনী
ভালোই লাগলো
শুভ কামনা।
কামাল উদ্দিন
ধন্যবাদ দাদা, ভালো থাকুন, সব সময়।
ইসিয়াক
খুব সুন্দর ছবি ব্লগ।
ভালো লাগলো।
কামাল উদ্দিন
আন্তরিক শুভেচ্ছা জানবেন, ইসিয়াক ভাই।
তৌহিদ
আপনার লেখা পড়েই যেতে ইচ্ছে করছে সেখানে। ছবিগুলি অসাধারণ।
ভালো থাকবেন ভাই।
কামাল উদ্দিন
ধন্যবাদ তৌহিদ ভাই, আপনিও ভালো থাকুন, সব সময়।
জিসান শা ইকরাম
২৩ কিলোমিটার পাহাড়ি পথ হেটে যেতে হবে! ইচ্ছে থাকলেও যাওয়া হবেনা ভাই, শরীর সায় দেবে না।
পানি সরবরাহের সিস্টেম জেনে অবাক হয়েছি।
ছবি ব্লগ ভালো লেগেছে।
কামাল উদ্দিন
মোটামুটি সারাদিন লেগে যায় এই পথ পারি দিতে, তাও শরীরে শক্তি মনে সাহস রাখতে হয়………শুভ কামনা জানবেন ইকরাম ভাই।
সঞ্জয় মালাকার
লেখা ও সব গুলো চবব অসাধারণ, আর ফুলের ছবি দেখে প্রাণ জুড়িয়ে গেল দাদা।
কামাল উদ্দিন
পাহাড়ের সব কিছুই আমার কাছে খুব ভালো লাগে, মানুষ প্রকৃতি সব। আর ফুলের কথাটা আলাদা ভাবে নাই বা বললাম……..শুভ সকাল দাদা।
সঞ্জয় মালাকার
দুঃখিত দাদা ছবি লিখে ছিলাম, কিন্তু চবব হয়ে গেছে। ধন্যবাদ দাদা শুভ রাত্রী ,,
কামাল উদ্দিন
ওটা ব্যাপারনা, আমরা ঠিকই বুঝে নিয়েছি 😀
মনির হোসেন মমি
বরাবরের মত এ পোষ্টের প্রায় সবগুলোর ছবিই সুন্দর।ভয় পাইছি হাতে জোক নিলেন কেমনে? খুব ভাল লাগল রোনিন পাড়াটা দেখে। তবে পাহাড়ীগো সবার ফেইসই মনে হয় প্রায় এক।
কামাল উদ্দিন
একটা ঝর্ণায় গিয়েছিলাম, ওখান থেকে ফিরে গোসল সেরে রুমে বসার পর দেখলাম আমার পায়ের তলায় তিনি সেবা দিচ্ছেন। এটা আমার পায়ের তলার ছবি ভাই। ছবি উঠানোর পর আমিও ওনার সেবা যত্ন করি।
মনির হোসেন মমি
হুম ।