১.
আলবাট্রস পাখির পালকে ধুলো’র রেনু ছিলো এলডোরাডো শহরের ;
গুপ্তধনের খোঁজে কেউ পাড়ি জমানো, চলতি পথের ক্লান্তি ভুলে দু’দণ্ড জিরোতে এসে থেকে গিয়েছিলো খনির গুহায়, আফ্রোদিতি সোনার বরনী রঙ ধুয়ে নেমেছিলো জলের ভেতর জলের খোঁজে! ব্লাড অর্কিডের সন্ধানে পেরিয়ে গেছে এ্যামাজনের মধ্যবর্তী রহস্যের পাথুরে ক্লিফে। ক্যানিয়নের খাড়া দেয়ালে দেয়ালে রোদের ছায়া বেয়ে বেয়ে উঠে গেছে আনা-কড়ির মূল্যে জীবনের দাম।
ফুটে আছে দুর্ধর্ষ প্রহরী সাপের আবাসভূমে- দুর্মূল্যের রক্তাক্ত অর্কিডের ভ্রূণ! নগরের কোলাহল ছেড়ে ইফ্রিদের সন্তান জন্ম নেবার অপেক্ষায়, পরম জংগলের নিভৃতে প্রেম নিয়েছে সমাধি।
অবিবেকের হাতের তালুতে শেকলের চাবির গায়ে মরচে ধরে গেছে বলে, পরীর পায়ে আজন্মের তালা ঝুলে রয়ে গেছে। এ জন্মে আর পরী বিষমুক্ত হলো না……
২.
সন্ধ্যে থেকে ভোরের দূরত্ব কমানো গেলে আমিও হবো ভোরের পাখি।
ভারবাহী দুপুরটাকে দোষ দেব না আর। গ্লানিভরা জলের মত সরল ছিলো যে পরন্ত রোদ্দুরের ছায়!
প্রচণ্ড রকম বিস্ময় নিয়ে আয়তক্ষেত্রের চৌকনো বাক্সবন্দী রেখে দেবো নিবন্ধিত দস্তখতে।
শুধু বিস্তৃর্ণ মরুভূমির বুকে রেখে যাবো কাঁটার চিহ্ন!
প্রতিনিয়ত ঝরাবে স্মৃতীকাঁটার বর্ষা!
মনে করে ভালো থাকা আর না থাকার মাঝখানো ঝুলিয়ে যাব সাধ্যাতীত ছেঁড়া ঘুড়ির সুঁতো।
৩.
সরলের মত অংকের ঘর কেটে কুটে নামিয়ে নিয়েছিলাম বেজোড় সমাধানের সংখ্যা।
ছাদ ফুঁড়ে চোখ উঠে গেলো আকাশের খোলা বুকে; ছুঁড়ে দিয়েছি শঙ্কার, দ্বিধায় ভরা নির্ভূল পেন্সিলের স্কেচ। আঁকতে চেয়ে নদীর সিঁড়ি,
মেঘের জলে ভিজেছে নীল হাওয়া কাগজের পৃষ্ঠা।
অক্ষ পথের মোহে আটকে গেলো গুচ্ছ গুচ্ছ মাথার কেশ! নেমে যাবার পথ খুঁজছি মহাশুন্যের চারিধার জ্যামিতিক কম্পাসের কাটায়।
দুর্বোধ্য নিরবতায় সরেজমিন ফালা ফালা করে চিড়ে দেখেছি একেকটা শব্দের তির ছুঁড়ে। কৃষ্ণ গহ্বরের ওপারে রয়ে গেছে ঠাঁয় স্থির মুর্তির পাথুরে চোখের প্রহরী। আমি অপেক্ষায় সমাধি নেব ।
অপ্রতিশোধ্য ঋণে বেঁধে দিয়ে যাব ঋণাত্বক ঘণত্বের ধরাপাতের হিসেব।
প্রহরীর কান ফেটে রক্তাক্ত হয়ে উঠুক কোনো একসময়……শুধিতে ঋনের বোঝা।
২৯টি মন্তব্য
রোকসানা খন্দকার রুকু
আবার পড়তে হবে॥ এতখানি সাহস নাই মন্তব্যের কিন্তু ফাষ্ট হইতে মন চায়!!!!!
বন্যা লিপি
ফাষ্ট হবার জন্য ভালবাসা,সুভেচ্ছা। আর সাহস না থাকলেও সমস্যা নাই। আপনার যেমন ইচ্ছা তেমন মন্তব্য করুন। আমি আমি বুঝিয়ে দিতে ফেল মারব না আশা করি।
ফয়জুল মহী
সুন্দর এবং সাবলীল প্রকাশ অনেক অনেক ভালো লাগলো
বন্যা লিপি
ধনঢবাদ আপনাকে
খাদিজাতুল কুবরা
প্রথম লেখাটির মর্মার্থ ধরতে পারিনি।
শুধু জানি আলবাট্রস সামুদ্রিক এলাকার পাখি। এ পাখিকে কোথাও কোথাও শুভ প্রতীক হিসেবে ভাবা হয়।
দ্বিতীয় লেখাটি পড়ে এটাই মনে হলো জীবনের পড়ন্ত বেলায় এসে সময়কে বাক্সবন্দী করতে ইচ্ছে করে।
সুখ দুঃখ আনন্দ বেদনা সবকিছু থরে থরে সাজিয়ে রেখেই একদিন চলে যাবো না ফেরার দেশে।
তৃতীয় লেখাটি পড়ে মনে হলো জীবনের চিত্রটা দ্বিধায় ভরা যা আমরা হতে চাই তার কতোটুকুই হতে পারি।
তবুও জমা করলে কৃতিত্বের যে স্তুপ জমা হবে, তা কি প্রিয়মুখগুলো বুঝতে পারবে বেঁচে থাকতে কিংবা মরণের পরে।
আপু দুঃসাহসে লিখে ফেলেছি।
জানিনা কতোটুকু বুঝতে পেরেছি।
বন্যা লিপি
তোমাকে আমি ক্রিটিক মন্তব্যকারীর উপাধি দিলাম রুবি। তোমার চৌকস বুদ্ধিদীপ্ত বিশ্লেষন যেকোনো লেখার জন্য গর্বের হতে পারে। প্রথম লেখাটার মধ্যে আমি অনেক কিছু রেখেছি। টুকরো টুকরো কয়েকটা গল্পের ছায়া। এলডোরাডো জেগে উঠছে, বার্তাবাহক আলবাট্রস পাখি। বাকি ব্যাখ্যা এখন করছি না। তোমাকে ভালবাসা।
খাদিজাতুল কুবরা
কি যে বলেন আপু!
তবুও আনন্দে আত্মহারা হলাম।
প্রশংসা শুনতে ভালোই লাগে।
ভালো থাকুন সবসময়।
সুপায়ন বড়ুয়া
“সন্ধ্যে থেকে ভোরের দূরত্ব কমানো গেলে
আমিও হবো ভোরের পাখি।”
যেমন করে আমার আপু গুচ্ছানুভুতিগুলোকে
পর্ব করে প্রাঞ্জল ভাষায় সাজাতে দেখি।
ভাল লাগলো। শুভ কামনা।
বন্যা লিপি
আমার লেখাগুলো সব ছোট আকারের হয়ে থাকে সাধারনত! মানে এই যে সব গুচ্ছানুভূতির ছায়ায় রাখি! আলাদা করে একটা করে দিতে গেলে আবার যদি কেউ বলে বসে! ছোট লেখা কেন দিলাম? তাই জড়ো করে দুই তিনটা করে গুচ্ছানুভূতি আকারে এখানে দেয়া। জমে আছে অনেক।
আপনার ভালো লাগলো জেনে, আমারো ভালো লাগলো দাদা। শুভ কামনন।
তৌহিদ
তাই বলে এত্ত কঠিন কঠিন সব লেখা দিবেন! মাথা আউলাই গেলো!
বন্যা লিপি
কঠিন হইলো ভাই@তৌহিদ। সুন্দর সুন্দর শব্দ পড়েন। দৃশ্য ভাবেন। কঠিন লাগব না।
আরজু মুক্তা
ভোরের পাখি হয়ে গান শোনালেই ভালো। কি দরকার মরুভুমিতে কাঁটা রেখে কারও হৃদয় খোঁড়ার। বেদনা জাগিয়ে কি লাভ?
সুখ আর দুঃখ কিন্তু বৃত্তের মতো। জ্যামিতিক কম্পাসের একদিকে থাকে সুখ। অপর দিকে দুঃখ।তবে কেন্দ্র ঠিক থাকলে, সব ওকে।
পরীকে এতো শাস্তি দিয়ে, নিজে নিজে কষ্ট পাওয়ার কি দরকার? ছেড়ে দিলেই বোঝা যাবে, ভালোবাসা কার বড়? আশাবাদী হই। ভাবনায় বাস্তবে।
শুভকামনা
বন্যা লিপি
ফু’ম্মা আপনে শুনবেন নাকি আমার বেসুরো গলার গান? তাইলে কল দিয়েন। শোনামুনে😊 পরী অবশেষে নিজের বিষে নিজেই প্রমান করে গেছে, পরীর ভালবাসাই সবচে বড় ছিলো। সে এক নিভৃত জঙ্গলে ফিরে গিয়ে একা সমাধি নিয়েছে।
বৃত্ত মাঝেই নিবৃত থেকে যায় সুখ-দুঃখের গাজন। একটা ব্যাপারে আমি নিশ্চিত আমার অবস্থান থেকে। আমি আশাবাদী হতেই পারি না। স্পষ্ট দৃষ্টিতে দেখতে পাই বাস্তবতার ব্যর্থতা। সেখানো আশার কোনো কিরণই পৌঁছায়না।
তবে আপনার আশাবাদী মন্তব্য অনুপ্রেরনার বিশাল উৎসাহ। ভালো থাকবেন সবসময়।ভালবাসা।
রেহানা বীথি
জলের ভেতর জল খুঁজেই তো চলি আজীবন। ভারবাহী দুপুরকে দোষ দিয়ে কি লাভ? শব্দের তিরে লক্ষ্যভেদ হয় কখনও!
সিঁড়ির পর সিঁড়ি এঁকে চলি সাদা পৃষ্ঠায়। তবু নিচে দাঁড়িয়ে আকাশ দেখি আর ভাবি, পরী মুক্ত হবে একদিন। এটুকুই স্বপ্ন। অনেক না পাওয়ার মাঝে এটুকুই বেঁচে থাকা।
লেখা পড়ে মুগ্ধ হলাম আপু।
বন্যা লিপি
না পাওয়ার মাঝেই কারো কারো জীবন ঠিকই বয়ে যায় সহজ জলের মত অথবা জল হয়ে যায় কঠিন বরফের মত। তবু জীবন যেখানে বহমান বয়েই যায় স্রোতের মত! সেখানে হিসেব নিকেষের ধারাপাত অমিমাংসিতই থেকে যায়।
মন্তব্যে অনুপ্রানিত আপু। ভালবাসা জানবেন।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
অবিবেকের হাতে মরিচা পড়লো বলে পরীরা এভাবেই নিজেকে শিকলবন্দী করে ফেলে, মুক্তি আর মেলে না/নয়তো মুক্তি চায় না এভাবেই সুখ খুঁজে নেয়।
বিস্তীর্ণ মরুভূমিতে কেন কাঁটা দিয়ে কাউকে স্মরণ করাতে হবে! পাখি হলে কি ভারবাহী দুপুর থেকে সত্যিই মুক্তি মেলে? সুখ দুঃখ, আনন্দ বেদনার বৃত্তে ঘুরপাক খায় প্রতিটি প্রাণ, ছটফট করতে করতে অন্তিম সময় ঘনিয়ে আসে তবুও এ বৃত্ত চলমান আজন্ম। তবে ব্যর্থতার, কষ্টের পরিমান কিন্তু বেশীই থাকে , সুখসারি সহজে কি দেয় ধরা ! ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন শুভকামনা অবিরাম
বন্যা লিপি
হয় প্রেম নয় ভালবাসা। মাঝামাঝি আমার কোনো পথ নেই। তাই লিখে যাই আমার একান্ত কথা। শব্দের আদল পড়তে ভালো লাগে বলে আপনাদের মতো পাঠকের কাছে আমার সার্বক্ষণিক সার্বভৌম কৃতজ্ঞতাত।
আন্তরিক শুভেচ্ছা দিদি। ভালো থাকবেন সর্বদা।
সুরাইয়া পারভীন
বিস্তৃর্ণ মরুভূমির বুকে রেখে যাওয়া কাঁটাতে সবচেয়ে বেশি রক্তাক্ত ক্ষত বিক্ষত হবে পরীরই অন্তর। সেই কাঁটা সুচ হয়ে বিঁধবে পরীরই বুকে
শেষ বিকেলের পড়ন্ত রোদ্দুরের স্পর্শটুকু কল্পনার অনিবন্ধিত দস্তখতে বাক্সবন্দী করতে পারলেও বাস্তবে তা একেবারেই অসম্ভব। তবুও মানুষ স্বপ্ন দেখে, আশায় বাঁচে।
নাই হয়ে যাওয়ার পরে প্রতিশোধ নেওয়া বাহ্!
থেকেও যখন নাই হয়ে যাওয়া হয় অবজ্ঞায় অবহেলায়
তখন নেই হয়ে যাওয়ার পর কারো শূন্যতায় খাঁ খাঁ করবে চারপাশ। নিঃসঙ্গতা আষ্টেপৃষ্ঠে জাপটে ধরে তখনই হবে এই জীবনে সমস্ত অবজ্ঞার চরম প্রতিশোধ
বন্যা লিপি
প্রকৃতি কোনো ঋন নিজের কাছে রাখে না সুরু। কিছু ঋন পৃথিবীই শোধ করতে সাহায্য করে। সেই দিনের আশায়।
ভালবাসা তোমাকে। এত চমৎকার ব্যাখ্যায় আমার লেখা সার্থক।
আলমগীর সরকার লিটন
খুব সুন্দর এক গুচ্ছানুভূতির প্রকাশ লিপি আপু
বন্যা লিপি
আপনাকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা লিটন ভাই।
রেজওয়ানা কবির
প্রথম লেখাটি আমার ও বুঝতে সমস্যা হয়েছে একটু।তবে পরের দুটো বুঝেই ভালো লেগেছে, কেন ভালো লেগেছে তার উত্তর উপরের আপুরা দিয়ে দিয়েছে ।আর ভোরের পাখিকে আটকে রাখতে চাই।কেননা,
পাখি রে তুই দুরে থাকলে কিছুই আমার ভালো লাগে না।
ভালো থাকবেন আপি।
তৌহিদ
আলবাট্রস এসেছে পথ প্রদর্শক হয়ে। প্রেমহীন খুবলে খাওয়া মনের গন্তব্যের ঠিকানা জানে একমাত্র সেই।
ভোরের পাখিদের দেখলে মন ভালো হয়ে যায়। কাঁটা বিছিয়ে রাখলে প্রিয়জনরাও কষ্ট পাবে বৈকি!
জীবন তার নিয়মেই চলে। অংক কষে এর হিসেবনিকেশ মেলানো বৃথা।
বড্ড কঠিন করে লিখেছেন। মাথা আউলায় গেলো।
শুভকামনা রইলো আপু।
বন্যা লিপি
যেটুকু বুঝেছেন তাতেই আমার লেখা সার্থক হলো রুকু আপু। পাখি গাইতে ভুলে যাচ্ছে। হারিয়ে যাচ্ছে পাখির কন্ঠের গান। সকাল আর সন্ধ্যের হিসেব যে মিলছে না আপু।
শুভ কামনা নিরন্তর।
তৌহিদ
আলবাট্রস এসেছে পথ প্রদর্শক হয়ে। প্রেমহীন খুবলে খাওয়া মনের গন্তব্যের ঠিকানা জানে একমাত্র সেই।
ভোরের পাখিদের দেখলে মন ভালো হয়ে যায়। কাঁটা বিছিয়ে রাখলে প্রিয়জনরাও কষ্ট পাবে বৈকি!
জীবন তার নিয়মেই চলে। অংক কষে এর হিসেবনিকেশ মেলানো বৃথা।
বড্ড কঠিন করে লিখেছেন। মাথা আউলায় গেলো।
শুভকামনা রইলো আপু।
বন্যা লিপি
অংকে ভীষণ কাঁচা। সেজন্যেই হিসেব মেলে না তৌহিদ ভাউ। আমি সহজ করে লিখতে চাই। তা আমার নিজের কাছেই ক্যান ভাল্লাগেনা কন তো ভাই? নাহ্…..সেই ভালো লিখমুই না আর।
শুভ কামনা নিরন্তর।
তৌহিদ
আরে লিখুন। আমি মন্তব্য করতে না পারলেও অনেক বিজ্ঞজন আছেন। তারা অবশ্যই করবেন।
তৌহিদ
এডের জন্য ঝামেলা হচ্ছে কিছুটা। মোবাইলে ক্লিক করি একজায়গায় কাজ হচ্ছে আরেকজায়গায়। দুঃখিত।
বন্যা লিপি
মাঝে মাঝেই এমন হচ্ছে। এ্যাডের আগেও হইছে আমার সাথে এরকম। টেকনিক্যালিটি ভোগাচ্ছে। ঠিক হয়ে যাবে চলতে চলতে।