
কাহিনী কাঁদিয়েই ছাড়লো। সাথে মনটাও কেমন বিষিয়ে গেল রাগে,কষ্টে। দূপুরের পাবদা মাছের ঝোল আর গরম ভাত আর খাওয়া হলো না। পরীক্ষার ডিউটিতে চলে গেলাম।
ইন্টারমিডিয়েটের এক শিক্ষার্থী মধ্যবয়সী এক শিক্ষকের সাথে খুব আবদারের সুরে হেলেদুলে কিছু বলছে। আমি মেয়েটিকে ডেকে নিয়ে অকারণ ধমক দিলাম- কিছুক্ষণ বাদে পরীক্ষা না তোমার, এতো হাসো কেন? শিক্ষককে দেখে মেজাজ হঠাৎ খারাপ হয়ে গেল। কারণ আজকাল মেয়েরা আর কারও কাছেই নিরাপদ না। কেন এমনটা হবে বা হচ্ছে? শরীর আর যৌনতা তো একটা স্বাভাবিক বিষয় তাহলে সেখানে জবরদস্তি কেন?
ছবিতে আলিয়া ভাট চিৎকার করছে- মুঝে ঘাড় জানা হ্যায়, মুঝে ঘাড় জানা হানা হ্যায়, মুঝে ছোর দো। আর মধয়বয়সী একজন মানুষ তার এ চিৎকার উপেক্ষা করে নিজের খায়েশ পুরা করছে। আমার ভীষণ অবাক লাগে, গগনবিদারী আর্তনাদরত কারও সাথে এমনটা কিভাবে একজন পুরুষের পক্ষে করা সম্ভব। যৌনতা কি এতো জঘন্য ব্যাপার? আর তাই ষাটের দশকের রমরমা যৌন পল্লী আজও এ আধুনিক যুগেও চালু। যেগুলো কঠোর আইনের মাধ্যমে চিরতরে বন্ধ করা উচিত।
চটপটে কিশোরী গাঙ্গুবাই নিজের কৈশোর উদযাপনে ব্যস্ত। নেচে গেয়ে বেড়ানোটাই যেন তার কাল হলো। তাকে ধরে নিয়ে পতিতাবৃত্তিতে নামিয়ে দেয়া হল। আর এখন সেই আলিয়া আজকের মাফিয়া ডন। সবাই পারে না, হেরে যায়। গাঙ্গুবাই হেরে গিয়ে জিতেছিলেন।
আলিয়া ভাটের অভিনয় এবং পরিচালক লীলা বানশালীকে নিয়ে সন্দেহ করা অবান্তর। আলিয়া যেন পর্দায় গাঙ্গুবাঈয়ের চরিত্রে নয় বরং নিজেই হয়ে উঠেছিলেন গাঙ্গুবাঈ। কপালে বড় লাল টিপ, চোখে মোটা কাজল পরে পুরো অন্য বেশে ধরা দিয়েছেন আলিয়া ভাট।
মুম্বাইয়ের আন্ডারওয়ার্ল্ডের কুখ্যাত ডন করিম লালার চরিত্রে চেনা ঢঙে ধরা দিয়েছেন অজয় দেবগণ । রাজিয়া বাঈয়ের চরিত্রে দারুণ অভিনয় করেছেন বিজয় রাজ।
এস হুসেন জাইদির লেখা বই ‘মাফিয়া কুইনস অফ মুম্বাই’ অবলম্বনে তৈরি হয়েছে মুভির চিত্রনাট্য। ষাটের দশকে মুম্বাইয়ে যৌন সাম্রাজ্য থেকে সমাজকর্মী ও মাফিয়া গল্প বলেছে ‘গাঙ্গুবাঈ কাথিয়াওয়াড়ি’।
যৌনপল্লীর পতিতা নারীদের লড়াই, তাদের যন্ত্রণা, তাদের সন্তানদের যোগ্য সম্মান দাবিতে সরব হতে দেখা যায় গাঙ্গুবাঈ-কে। রাজিয়া বাঈকে নিজের জমি ছাড়তে নারাজ গাঙ্গুবাঈ (আলিয়া ভাট) । কামাথিপুরের মাফিয়া কুইনের নাভিশ্বাস ওঠা প্রতিটা মুহূর্তকে যেন পর্দায় জীবন্ত করে তুলেছেন আলিয়া ভাট। ছবিতে মাফিয়া কুইন হিসেবেই দেখা মিলবে আলিয়াকে । সাধারণ কিশোরীর নির্মম গণিকালয়ের মালকিন হয়ে ওঠার নির্মম কাহিনী ফুটে উঠেছে এই মুভিতে । তো দেখতে থাকুন সমাজের কালো অধ্যায়ের এক গল্প!!
মুভি লিঙ্ক –
https://youtu.be/EMUzfb_jRXw
পরিচালক: সঞ্জয় লীলা বনশালি
অভিনয়ে: আলিয়া ভাট, অজয় দেবগণ, বিজয় রাজ ,শান্তনু মহেশ্বরী, হুমা কুরেশি
রেটিং: ৩.৫/৫
ফিচার ছবি- নেট।
১১টি মন্তব্য
হালিমা আক্তার
হিন্দি বুঝিনা বলে দেখা কম হয়। ভাই বোনেরা যখন দেখতো, ওদের সাথে বসে দেখতে হতো একসাথে সময় কাটানোর উসিলায়। এখন আর হয় না। ভাবতে অবাক লাগে এখনো আমাদের দেশে ও পতিতালয় আছে। যদিও নারায়ণগঞ্জের টান বাজার অনেক আগেই বিলীন হয়ে গেছে। এক একটা পতিতালয়ে কতো মেয়ের স্বপ্ন ভাঙ্গার চিত্র ছড়িয়ে আছে। সময় পেলে ছবিটি দেখার ইচ্ছা আছে। শুভ কামনা রইলো।
রোকসানা খন্দকার রুকু
আপনার জন্যও অনেক অনেক শুভকামনা আপা। ভালো থাকবেন।
রিতু জাহান
আমার খুবই ভালো লেগেছে,,,,
আলিয়া দারুন অভিনয় করেছে মুভিটাতে।
আমার কখনো কখন খুব জানতে ইচ্ছে কর, আদতে আমি কি তাদের একসেপ্ট করব?
নাকি পর্দায় দেখে ঐ অতোটুকু হা হুতাশ করব!
আজকাল আমার নিজের কাছে নিজের করা অনেক প্রশ্নের উত্তর মেলে না।
সমাজ পরিবর্তন সহজ কিন্তু নিজেকে পরিবর্তন কঠিন।
পর্দায় যা নিতে পারি আমি বাস্তবে তাতে মুখ ফেরাই।
আসলে কাগজের বুকে সবই সয়, সয় না কেবল মন জমিনে।
রিভিউ ভালো হয়েছে। ধন্যবাদ।
রোকসানা খন্দকার রুকু
আমরা আসলেই নিতে পারিনা আর তাইতো তাদের সংগ্রাম করতে হয়। মূল্যবান মন্তব্যের জন্য কৃতজ্ঞতা রিতু। অনেক ভালো থেক।
রিতু জাহান
তুমিও ভালো থেকো। লিখে চলো,,, পাশে থেকো।
বোরহানুল ইসলাম লিটন
মুগ্ধতা রেখে গেলাম আপু
সুন্দর বর্ণনা করেছেন।
আন্তরিক শুভেচ্ছা ও শুভ কামনা জানবেন সতত।
রোকসানা খন্দকার রুকু
কৃতজ্ঞতা ভাই।
ছাইরাছ হেলাল
দেখেই ফেলব ভাবছি।
খুব সুন্দর করেই উপস্থাপন করেছেন।
রোকসানা খন্দকার রুকু
আচ্ছা দেখুন। ধন্যবাদ।
সাবিনা ইয়াসমিন
মুভি রিভিউ পড়ে গল্পটা জানা হলো, নইলে অনেক অনেক মুভির মতো এই মুভির গল্প/কাহিনী অজানা থাকতো।
শুভ কামনা 🌹🌹
রোকসানা খন্দকার রুকু
পারলে দেখে নেবেন। কৃতজ্ঞতা অশেষ 🌹🌹