
অনেকদিন হলো ডাইরির পাতায় কলমটা ঘষাঘষি করা হয়নি। তাই বলি কিছু লিখিনি তা নয়, যা কিছু লেখা লিখেছি তা ফোনের নোটপ্যাডে। এর একটা বিশেষ সুবিধা আছে। যখন মন চায় তখনই কিছু লেখা যায় ।কারণ ফোনটা মোটামুটি সব সময় সাথে এবং হাতে থাকে ।
তবে আর যাই হোক, কলমটা হাতে নিয়ে ডাইরির পাতায় উপর্যুপরি ঘষাঘষির মাঝে লেখালেখির পূর্ণ তৃপ্তি পাওয়া যায়। যা কি না নোটে হাজার শব্দ সহস্র বর্ণ লিখেও পাওয়া যায় না। তৃপ্তির ঢেকুর ডায়েরি কলমের গোপন মিলনে ।
তাইতো অনেকদিন বাদে ডাইরিতে কিছু একটা লেখার ইচ্ছা নিয়ে বসে পড়লাম। ডাইরি নিয়ে বসে পড়লে কিছু তো একটা লেখার উদ্ভট ধারণা মাথায় চলে আসবেই । ডায়রিতে লেখার মূল মজা তো এখানেই। এখানেই চলতে থাকে একান্ত ভাবে মিলনের বিশেষ মুহূর্ত।
কলম টা হাতে নিয়ে আনমনা হয়ে কিছু ভাবনার অতলে ডুব দেয়া, তারপর সেখান থেকে কোনো কিছু খুঁজে বের করে, তা ডাইরির পাতায় লেখা পৃথিবীর সবচাইতে বিশেষ মুহূর্ত গুলোর একটা। সে বিশেষ কোন প্রিয়জনের সাথে মিলিত হবার সময় গুলোর মত অথবা তার চেয়েও বেশি ।
গুরুত্ব বুঝাতে গিয়ে বারবার একটা উদাহরণ টানতে ইচ্ছা করছে যদিও সেটা সামাজিকতার একটু অবক্ষয়। একজন ধর্ষক যেমনভাবে তার বিশেষ মুহূর্তটা উপভোগ করার চেষ্টায় থাকে ঠিক তার চেয়েও অনেক গুণ বেশি মহ এখানে কাজ করে। এই আকৃষ্ট করার সময়টার চেয়েও বেশি আকৃষ্ট করে, মাথায় থাকা কোন কিছু কলমের দ্বারা ডায়েরির সাথে সঙ্গম ঘটাতে।
যার ফলে খুব দ্রুতই অগণিত বাচ্চার জন্ম হয় ।পৃথিবীতে এত দ্রুত জন্মগ্রহণ বা জন্মদানের মত আর কোন কিছু নেই।
প্রচন্ড আঘাত বা কষ্ট পেলে সাধারণ মানুষের মাথায় রক্তক্ষরণ হয় আর আমার মাথায় হয় শব্দক্ষরণ। অসংখ্য শব্দরাশি মস্তিষ্ক যোনিতে এসে আমাকে গণধর্ষণ করে ।এতে অবশ্য আমার খুব একটা খারাপ অনুভূত হয় না ।
যদিও আমার তীব্র শব্দ প্রসব বেদনা সহ্য করতে হয়। আর আমার এমন সময় কোন নিকটাত্মীয় পাশে থাকে না ।কাছে থাকলেও কোনো কাজে আসে না। নিজেকে খুব একলা মনে হয় ।অনেকটা নিজেকে নিজেকে লুকিয়ে রাখতে ইচ্ছে হয়।
আনমনা হয়ে অনেক কিছু ভাবতে ইচ্ছে করে শুধু। ভাবনার অতল গহবরে ডুবে যাই আমি। কোন কিছুতেই তৃপ্তি আসে না যতক্ষণ পর্যন্ত আমি আমার মস্তিষ্ক যোনিতে ঘুরে বেড়ানো অসংখ্য শব্দগুলোকে প্রসব করতে পারি।
গত কয়েকদিন ধরে মনের অবস্থা ভালো নেই অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবনায় সময় গুলো ভেসে যাচ্ছে। অমুক্তি প্রাপ্ত সিনেমার রিল যেমন উক্ত পরিচালকের দৃশ্যপটে বারবার ভেসে ওঠে কিন্তু সিনেমা হলে মুক্তি না পাওয়া পর্যন্ত কোনো দর্শক দেখতে পায় না। ঠিক তেমনি অসংখ্য অপরিকল্পিত কল্পনা ভাবনার জগতে আমাকে নিয়ে খেলছে বারংবার। আমাকে নিয়ে যেতে চাইছে কালের গহবরে। কোথায় যেন হারিয়ে যাচ্ছে আমি কিন্তু কেউ আমার সেই হারিয়ে যাওয়া দেখছে না ।
জীবনটার ভারসাম্য রক্ষা করা অনেক কঠিন ।যতটা কঠিন প্রদর্শিত ভারসাম্য রক্ষাকারী খেলা। একজন খেলোয়াড় ঝুলন্ত লাফ, দড়ির উপর সাইকেল খেলা কিংবা বর্শা খেলার মত ভারসাম্য রক্ষার খেলা গুলো দেখান ।সম্পূর্ণ খেলা সুন্দরভাবে শেষ হলে তবেই না আমরা হাততালি দেয় ।আর যদি তা সঠিকভাবে শেষ করা সম্ভব না হয় ,তাহলে আর হাততালি ভাগ্যে জোটে না ।তার সামান্য অসাবধানতার জন্য যেমন সকল শ্রম পন্ড হয়ে যেতে পারে জীবনটাও ঠিক তাই।
চলার পথে একটু গড়মিল হয়ে গেলে ছিটকে পড়তে হয় সমাজ থেকে। সফলভাবে জীবনের গোটা পথ পাড়ি দিতে পারলেই তবে কিছু হাততালি পাওয়া সম্ভব, নয় আপনি আমি কে কোথায় হারিয়ে যাবো পৃথিবী একদম মনে রাখবে না।
আমি যেন ঠিক তেমনি ও অগতিসম্পন্ন হয়ে যাচ্ছি প্রতিনিয়ত। জীবনটা যখন এমনিতেই জটিল আমার তো বর্ণনাতীত।
আমার ধারনা , একবার হোঁচট খেয়ে পা গড়মিল হয়ে গেলে কোথায় যে হারিয়ে যাব, পৃথিবী এবং মহাকাশ বিষয়ক গবেষণা কেন্দ্র আমার কোন অস্তিত্ব খুঁজে পাবে না ।
২৪টি মন্তব্য
সুপায়ন বড়ুয়া
“,ধর্ষণ যখন নিশ্চিত তখন উপভোগ করাই শ্রেয়। “
উক্তিটা বোধ হয় ভারতের কোন চিত্র নায়কের। যেটাকে মানুষ সহজ ভাবে নেয় না।
এতো সুন্দর পরিপাটি একটা লেখার মাঝে এই শব্দ বা বাক্যটি না থাকলে হৃদয়গ্রাহি হতো।
খুব ভালো হয়েছে।
শুভ কামনা।
নিরব সাগর
সুন্দর পর্যালোচনা করার জন্য অভিনন্দন আপনাকে।
নিরব সাগর
লাইনটাকে সরিয়ে ফেলেছি । আশা করি এখন আপনার হৃদয়গ্রাহি হবে প্রিয়।
সুপায়ন বড়ুয়া
ধন্যবাদ সুপ্রিয়। শুভ কামনা।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
একবার হোঁচট খেয়ে পা গড়মিল হয়ে গেলে কোথায় যে হারিয়ে যাব, পৃথিবী এবং মহাকাশ বিষয়ক গবেষণা কেন্দ্র আমার কোন অস্তিত্ব খুঁজে পাবে না । পুরো লেখাটাই অসাধারণ। ধন্যবাদ ভাইয়া শুভ কামনা রইলো
নিরব সাগর
ধন্যবাদ প্রিয়
জিসান শা ইকরাম
ডায়েরীতে লেখার মত আনন্দ অন্য কিছুতে নেই,
আনন্দের উদাহরন ধর্ষক না দিয়ে অন্য কিছু দিলে ভালো হতো মনে হয়।
শুভ কামনা।
নিরব সাগর
আনন্দের উৎকর্ষতা বুঝাতে গিয়ে শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে মাত্র।
নিরব সাগর
এখানে বিশেষ মুহূর্তটা আকৃষ্ট
হালিম নজরুল
“জীবনটার ভারসাম্য রক্ষা করা অনেক কঠিন ।যতটা কঠিন প্রদর্শিত ভারসাম্য রক্ষাকারী খেলা। একজন খেলোয়াড় ঝুলন্ত লাফ, দড়ির উপর সাইকেল খেলা কিংবা বর্শা খেলার মত ভারসাম্য রক্ষার খেলা গুলো দেখান ।সম্পূর্ণ খেলা সুন্দরভাবে শেষ হলে তবেই না আমরা হাততালি দেয় ।”
—————চমৎকার কথা।
নিরব সাগর
ধন্যবাদ প্রিয় লেখাটি কোড করার জন্য।
এস.জেড বাবু
ভিন্নতর উদাহরনে চমৎকার শব শব্দের অসাধারণ আয়োজন।
বেশ উপভোগ্য।
এমন ডাইরি হাতে পেলে নাওয়া খাওয়া ছেড়েই পড়তাম।
শুভকামনা।
নিরব সাগর
অসংখ্য ধন্যবাদ প্রিয় এতো করে প্রশংসা করার জন্য ।
ইঞ্জা
অসাধারণ হৃ্দয়গ্রাহী লেখা, বেশ লাগলো।
নিরব সাগর
ধন্যবাদ প্রিয়
ইঞ্জা
শুভেচ্ছা অনিঃশেষ
নাজিয়া তাসনিম
ডায়েরির পাতায় ইচ্ছেমতো যা খুশি তাই লেখা যায়। পোস্টটি পড়ে খেয়াল হলো, সত্যিই অনেকদিন ডায়েরি লিখি না।
নিরব সাগর
আপনাকে কিছু মনে করে দেওয়ার সুযোগ পেয়ে ভালো লাগছে ।
ফয়জুল মহী
অসামান্য ভাবনায় নান্দনিক লেখনী ।
নিরব সাগর
ধন্যবাদ প্রিয় । এতো প্রশংসিত করার জন্য আবারো ধন্যবাদ ।
কামাল উদ্দিন
“একজন ধর্ষক যেমনভাবে তার বিশেষ মুহূর্তটা উপভোগ করার চেষ্টায় থাকে” এই কথাটুকু পোষ্টে দেওয়াটাকে আমি অবশ্যই অবিবেচনা প্রসুত মনে করছি। আশা করছি এখানটায় আপনি এডিট করে নেবেন ভাই।
ধর্ষণ কোন উপভোগের বিষয় নয়, বিকৃত রুচির পরিচয় মাত্র, যা আমাদের বর্তমান সমাজকে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে।
নিরব সাগর
ঠিক আছে প্রিয় । আমি একখটাই পরিবর্তন করার চেষ্টা করবো।
আসলে বিশেষ মুহূর্তের গুরত্ব বুঝানোর জন্য উদাহরণটা টানা হয়েছে এবং তার সমীপে বরাত দিয়ে আগের লাইনে উল্লেখ করা হয়েছে ।
মনির হোসেন মমি
জীবন আর ডায়রী দুটোই পরিত্যাক্ত ।তবে সুন্দর বলেছেন ডায়রীতে লেখার মজাই অন্য রকম। সবার জীবনই সূখ স্বাচ্ছন্দ হয় না কিছু জীবন হয় একেবারেই নিরামিষ যা নিজেকে দিয়েই উপলব্দি করতে পারছি। হৃদয়গ্রাহী লেখা অনেকের জীবনের সাথে মিলে যায়।
নিরব সাগর
ধন্যবাদ প্রিয় এতো সুন্দর পর্যালোচনা করার জন্য।