কোটা নিয়ে কিছু আন্দোলন এর খবর পড়লাম। মুক্তিযোদ্ধাদের ৩০% কোটার দিকেই মুলত এরা আংগুল তুলে দেখাচ্ছে। আন্দোলনকারীদের প্রতি কিছু প্রশ্ন:
১। আপনাদের বাবা,মা,দাদা,দাদি, নানা,নানিকে জিজ্ঞেস করে দেখেছেন যে কেন তারা ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেননি? তারা কি সুবিধাবাদীর চরিত্র নিয়ে অপেক্ষা করেছেন ঐ সময়ে কারা যুদ্ধে জয়ী হবে আর তারা( আপনাদের পুর্ব পুরুষ) এর সুফল ভোগ করবেন?
২। ১৯৭১ এর পুর্বে পাকিস্থানের কেন্দ্রীয় সরকারে তৎকালীন পুর্ব- পাকিস্থানীদের চাকুরির অবস্থান ছিল মাত্র ৭%, এই তথ্য কি আপনি জানেন?
৩। মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ৩০% বাদ দিলে অবশিষ্ট থাকে ৭০%। আপনি কি ৭০% এর অখুশি হয়ে ৭% এ ফিরে যেতে ইচ্ছুক?
৪। যারা প্রানের মায়া ত্যাগ করে নিশ্চিত মৃত্যুর ডাকে যুদ্ধ করেছেন, তাদের ৩০% দিতে আপনাদের আপত্তি কেন?
৫। মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধ করে আপনাদের চাকুরীর সুযোগ ১০ গুন বৃদ্ধি করেছেন, এটিকে আপনি কি দৃষ্টিতে দেখছেন?
প্রশ্ন অনেক করা যায়, আপাতত তা আর না করে আন্দোলন করুন জোড়ালো ভাবে এটা নিয়ে…….
রাজাকার, আলবদর, আল-সামস, ১৯৭১ এর পাকিদের দোসরদের সন্তান, নাতী নাতনীদের চাকরী ক্ষেত্রে অযোগ্য ঘোষনা করতে হবে।
৫টি মন্তব্য
নাজমুল আহসান
আমি মাঝে মাঝে সোনেলাতে আসি। কাল অনেক রাতে, ঘুমানোর আগে একটা ঢুঁ মারতে এসে পোস্টটা দেখেছি। একটা কমেন্ট করতে ইচ্ছে করছিল, বেশি রাত হয়ে গিয়েছিল বলে আর কমেন্ট করিনি।
প্রথমেই যেটা বলা দরকার, কাউকে ছোট করার অভিপ্রায় আমার নেই, শুধু বলা প্রয়োজন তাই বিনীতভাবে বলছি- আমি নিজে এইসব চাকুরীর পিছনে ঘুরি না। কখনোই ঘুরিনি। যে চাকুরীগুলো নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, আল্লাহর রহমতে আমি সেগুলোর চেয়ে ঢের ভালো অবস্থানে আছি। সুতরাং, না পাওয়ার বেদনা, ব্যর্থতা কিংবা ক্ষোভ থেকে এসব বলছি -এটা ভাবার কোনো কারণ নেই।
দেশের অবস্থা কী, সেটা আপনি জানেন।
ব্যাগে হালি-হালি সার্টিফিকেট নিয়ে ছেলেপেলে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এরা বেকার, এটা বহুলাংশে এদের নিজের দোষ। আমি স্বীকার করছি, দেশে পর্যাপ্ত চাকুরী নেই। কিন্তু কারও কারও তো চাকুরী হচ্ছে। তারমানে যাদের হচ্ছে না, অথবা যারা চাকুরী পাচ্ছে না, সেটা তাদের নিজেদের ব্যর্থতা।
এই সার্টিফিকেটধারী বলদগুলো আবার খুব প্রেস্টিজ-সচেতন। পেটে ভাত নেই, না খেয়ে থাকবে, কিন্তু “ছোট” কাজ করবে না। আর দেশের বেকারের পরিমাণ বাড়াবে।
আমি নিজে একমাস ধরে একটা চাকুরীর বিজ্ঞাপন দিয়ে বসে আছি, ২জন লোক নেব। ছয় অংকের কাছাকাছি স্যালারি। একটা যোগ্য ছেলে/মেয়ে খুঁজে পাচ্ছি না!
এই হচ্ছে হালচাল। এদের মধ্যে থেকে যারা তুলনামূলক ভালো, যারা “ভেড়ার মধ্যে বাছুর চৌধুরী” তাদেরকে নিয়ে আপনার চলতে হবে। দেশ চালাতে হবে। এখন, এর মধ্যে যখন আপনি কোটা চাপাবেন, ব্যাপারটা “মরার উপর খাঁড়ার ঘা” হয়ে যাবে না?
এই জন্যে আমি পুরোপুরি কোটার বিপক্ষে। কিছু মানবিক ব্যতিক্রম হয়তো থাকতে পারে। যেমনঃ শারীরিক প্রতিবন্ধী। এর বাইরে কোটা রাখার কোনো যুক্তি দেখি না।
এবার আসি মুক্তিযোদ্ধা কোটা প্রসঙ্গে। চাইলেই মুক্তিযোদ্ধা কোটার “সরবত” আমিও খেতে পারতাম, সেটা মাথায় রেখেই বলছি।
আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা এইসব কোটার জন্যে যুদ্ধ করেছেন, এটা আশা করি আপনিও বিশ্বাস করেন না। তাঁরা যুদ্ধ করেছেন দেশের জন্যে। দেশের মঙ্গলের জন্যে। মানুষ যেন নিজের মতো করে বাঁচতে পারে, দেশটা যেন এগিয়ে যায়।
আপনি যখন একজন অযোগ্য লোককে কোটায় ফেলে একটা পদে ঢুকিয়ে দিলেন, তখন মুক্তিযোদ্ধাদের সেই উদ্দেশ্য কি সফল হল?
বাকি থাকল কৃতজ্ঞতা প্রকাশের ব্যাপার। মুক্তিযোদ্ধারা আমাদের যা দিয়েছেন, সেটার কোনো বিনিময় হতে পারে না। কিন্তু আমাদের চেষ্টা করা উচিত। অবশ্যই উচিত। কিন্তু সেটা এভাবে কেন? দেশকে পিছিয়ে দিয়ে কেন? মুক্তিযোদ্ধাদের তৃতীয় প্রজন্মও সেটা কেন পাবে? এরপর কি চতুর্থ কিংবা পঞ্চম প্রজন্মও পাবে? পেতেই থাকবে?
সরকার তাঁদের স্থায়ী কোনো ব্যবস্থা করতে পারত। আমি জানি না, বিগত দিনে এরকম কিছু করা হয়েছে কিনা। রাজাকার-ঘেষা সরকার তো অবশ্যই, আওয়ামীলীগ সরকারও এরকম উল্লেখযোগ্য কিছু করেছে বলে আমার জানা নেই।
অ্যাান্ড দ্য বিগেস্ট কোশ্চেন- যাঁদের মুক্তিযোদ্ধা বলা হচ্ছে, তাঁদের কতভাগ সত্যিকারের মুক্তিযোদ্ধা?
মৌনতা রিতু
হুম, হুম, ভাইয় আপনার যুক্তি একদম ঠিক আছে। আর এটাও সত্যি যে দেশ স্বাধীন না হলে মুক্তিযোদ্ধাদের উপর নেমে আসতো অমানবিক নির্যাতন। কিন্তু কিছু কথা থেকে যায় তা আমাদের মানসিকতা। বর্তমানে অধিকাংশ, হুম অবশ্যই অধিকাংশ মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তানদের আচরণ এতোটাই নীচে নেমে গেছে যা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। আমি নিজে তার স্বাক্ষী।
ঘটনা একঃ পাবনাতে আমি যে বাসাততে থাকতাম তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা। আমাকে খুবব ভালবাসতেন। সে ভাল মানুষ বলব। অবশ্যই। তার ছয়জন ছেলেমেয়ে। ছোটো মেয়ে ও ছেলে বাদে সবগুলো মেয়েরই চাকরি হইছে। রেজাল্ট তাদের একেবারেই জঘন্য। ছোটো ছেলেকে কিছুতেই এসএসসি পাশ করাতে পারছিলো না, চাচা তো বলেই দিলো কোনোরকম শুধু পাশটা করার জন্য। সে এখন একটা কলেজের শিক্ষক হয়েছে। তার ছয় ছেলেমেয়েই চাকরি করছে।
ঘটনা দুইঃ সেদিন এক মুক্তিযোদ্ধার গায়ে বেখায়ালে একজন অল্পবয়সি ছেলের চলতি পথেই কনুই এর গুতা লেগেছে। এটা সামান্য ঘটনা। সে ভিড় মার্কেটে সবার সামনে খুব বিশ্রিভাবে ছেলেটাকে মারলো। আমাদের পুলিশের গাড়ি দেখে আরো মনে হলো বেশি চিল্লাতে লাগলো যে সে একজন মুক্তিযোদ্ধা। পুরা ঘটনাটা আমাদের সামনে।
ঘটনা তিনঃএক মুক্তিযোদ্ধার ছেলে একজনকে চাকরি দিবে বলে টাকা নিয়েছে। এরকম সে কয়েকজনের কাছ থেকে নিয়েছে।প্রমাণসহ লোকটি থানায় অভিযোগ করেছে। পুলিশকেই তার ছেলে হুমকি দেওয়া শুরু করেছে।
ঘটনা চারঃএকটা পরিবার আছে সে পরিবারের সবাই চাকরি করছে এই কোঠায়। অথচ ঠিক তার পাশের বাড়ির নিতান্তই গরীব খুব ভাল রেজাল্ট নিয়ে মাস্টার্স শেষ করে বসে আছে। কিছুদিন পর তাদের জমিটাও ওরা কিনে নিয়েছে।
সব থেকে বড় কথা তাদের মানসিকতাই এখন তৈরি হইছে,কোনোরকম পাশ করলেই চাকরি। না, এটা কোনোভাবেই ঠিক না। আমার বাবা শীতের রাতে নদী সাঁতরায়ে মুক্তিযোদ্ধাদের টাকা, মাথায় গামলা করে ভাত নিয়ে দিয়ে আসতো। হুম, তার পরিবার খুব রক্ষণশীল ছিলো। একমাত্র সে কারণে, কোনো অ’পাকিরা ঐ এলাকায় ঢুকতে পারে নাই।
পরিবর্তন আনতে হবে আমাদের মানসিকতায়।
আমি আমার জ্ঞানমতে বিশ্বাস করি কোঠাতে পরিবর্তন আনতে হবে।
মোঃ মজিবর রহমান
যাই বলেন কোটা পধ্বতি যুব সমাজে বিভেদ স্রিস্টি কুরবে, আর এতে সরকারের কোন লাভ হবেনা। তাদের চিকিতসা ভাতা, চাল,ডাল। আবাসন, লোন দিচ্ছেন আর কতভাবে সাহায্য বা পুরুস্কিত করতে চান। সামনে ভোট টের পাবে সরকার বার বার ‘১৪ করতে পারবেন?
আমাদের বংশের প্রায় ২০/৩০ টি বাড়ি পুড়িয়েছিল মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয় বা সাহায্য করার জন্য পাক+রাজাকাররা আমাদের বা এইরকম লাখ লাখ বাড়ির লোক আছে এদের কোন কোটায় ফেলবেন ভাই, এদের কি মুক্তিযুদ্ধ এ অবদান কোন অংশে কম ছিলো? না তারা রাদের ভবিষ্যৎ জেনেই মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয় দিয়েছিলো।
কার সঙ্গে নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে লড়বেন।
প্রধানমন্ত্রী এক রাজাকারের পুতকে মন্ত্রী বানায়া মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করেছে। জেলে দিচ্ছে। সাংবাদিক প্রবির। আজ দেশের শীর্ষ ব্যাবসায়ী সংগঠন এফবিসিসিয়াইয়ের সাবেক সভাপতি একে আজাদ সাহেবের বাড়ী ভাংছে বাড়ীর নকশা নায় বলে। ঐ একটি বাড়ীই কি নকশা বিহীন?
আজ স্ক্যান্ডাল পরিবারে তাদের আত্বীয়। দেখেন শেখ সেলিমের বেয়ায়ের জন্য একজন ভাল মানুষ সোহেল তাজে কে অপমানিত হতে হল।আবার শেখ সেলিমের ছেলে বিয়ে করেছেন বিএনপি সরকারের সাবেক মন্ত্রী ও
চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর মেয়েকে।ইকবাল হাসান টুকু ছাত্র জীবনে বঙ্গবন্ধুর
জেষ্ঠ্য পুত্র শেখ কামালের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও সহপাঠিছিলেন।শেখ সেলিমের আরেক ছেলে বিয়েকরেছেন আলোচিত
ব্যবসায়ী মুসা বিন শমসেরের মেয়েকে।
কিভাবে এই সরকার ভাল করবে??
এই সরকার গনতন্ত্র দিতে পেরেছে, এই সরকার জনগণের নিরাপত্তা দিতে পেরেছে, এই সরকার কি দিচ্ছে জনতারে।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
মন্তব্যগুলো পড়ে লিখের মন্তব্য লেখার আর কোন ক্লু খুজেঁ পেলাম না ।তিন জনের মন্তগুলোতে একটা কথাই স্পষ্ট হয় বিশেষ করে ভাই নাজমুল এর সাথে এক মত সত্যিইতো কেনো ঘুরবো চাকুরীর পিছনে নিজেকে প্রতিষ্টিত করতে আরো অনেক উপায় আছে।তবে পোষ্ট যখন কোটা নিয়ে তখন এইটুকুই বলব লক্ষ্য যেন থাকে এই কোটার বদলে মুক্তিযুদ্ধারা ঘৃণার পাত্র না হন।
শাওন এরিক
কোনো যুক্তিই ফেলে দেবার মত না। তবু জিসান ভাইয়ের কথাগুলি মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। হ্যাঁ, কোটায় হয়ত কিছু সুবিধাবাদী লোকও ঢুকে পড়বে, অল্প বিস্তর অযোগ্য লোকও ঢুকে পড়বে, কিন্তু আসলেই তো অল্প কয়েকজনের জন্য মুক্তি যোদ্ধাদের সন্তানদের এই অধিকার কেড়ে নেবো কেনো?
কত মুক্তিযোদ্ধা রিকশা চালিয়ে, ভ্যান চালিয়ে, ভিক্ষা করেও কাটাচ্ছে… তারাই বা কি পেয়েছিলো। পাক, তাদের সন্তানরা অন্তত কিছু পাক। তাদের সন্তানদের তো আর বাবার রক্তের বিনিময়ে রক্ত দিচ্ছি না, কয়েকটা কোটাইই তো…