
এটাই শেষ এটাই শেষ এরকম করে করে মাঝারি আকৃতির একটা কাঁঠালের ত্রিশটা কোয়া গলাধঃকরণ করার পরে অদ্ভুত সব চিন্তা মাথায় আসছে আমার!
ধরুন আপনি ফেসবুকে স্বাস্থ্যবিধি, মাস্ক সচেতনতা, সামাজিক দূরত্ব ইত্যাদি বিষয়ে জ্ঞানগর্ভ একটা স্ট্যাটাস দিলেন। এরপরে কিছুক্ষণের জন্য বারান্দায় দাঁড়িয়েই নীচের রাস্তায় দেখলেন- এক রিক্সায় চাপাচাপি করে তিনজন বসেছে, যাদের দুজনের মুখে মাস্ক আছে তবে তা থুতনিতে এবং অন্যজন মাস্কবিহীন খিলখিল করে হাসছে আর এমনভাবে নড়াচড়া করছে যেন বাকী দু’জনকে পারলে এক্ষুনি ধাক্কা দিয়ে সে নিজেও রিক্সা থেকে মাটিতে পড়ে গড়াগড়ি খায় অবস্থা!
রিক্সার উপর এসব অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে রিক্সাওয়ালা ভাই ভীত মনে একটু পরপর পিছনে দেখছে আর পিচিৎ পিচিৎ করে রাস্তার দু’ধারে পানের পিক ফেলতে ফেলতে যাচ্ছে। বলুনতো- রিক্সাওয়ালার মনে ভয়টা কি?
একদম ঠিক ধরেছেন, করোনা সংক্রমণের ভয় নয়। ভয় হচ্ছে পিছনের যাত্রীদের মাত্রাতিরিক্ত ঝাঁকাঝাঁকিতে তার আয়রোজগারের একমাত্র অবলম্বন রিক্সাটাইনা মুটুস করে দেবে যায়!
এ সবই আপনি বারান্দা থেকে দেখলেন। এখন কি করবেন আপনি? কিছুক্ষণ আগে ফেসবুকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার উপদেশ দেয়া সেই স্ট্যাটাসটি ডিলিট করবেন নাকি নিজে রাস্তায় নেমে স্বাস্থ্যবিধি না মানা পাব্লিকরে পেটানো শুরু করবেন?
ফেসবুকের কল্যানে সবাই করোনা বিশেষজ্ঞ। আমরা প্রত্যেকেই স্বাস্থ্যবিধি জানি কিন্তু কার্যক্ষেত্রে মানিনা। আবার আপনি রাস্তায় নেমে তাদের সাবধান করতে গিয়ে নিজেই আক্রান্ত হবার ঝুঁকি থেকেই যায় যেহেতু তাদের মাস্ক নেই, স্বাস্থ্যবিধি মানছেনা। রাগে দুঃখে আপনি নিজের মাথার চুল টেনে ধরেছেন কারন এতক্ষণে শতাধিক লাভ রিয়েক্ট পাওয়া সে স্ট্যাটাসটির আনন্দকর প্রসব বেদনাও ভুলতে পারছেননা।
প্রচণ্ড অস্থির লাগছে আমার, কি করবেন আসলে আপনি এই টেনশনে এখন মোটামুটি ঘামছি আমি। না, ফেসবুকে এতসুন্দর করে আপনি বুঝিয়ে বলার পরেও কেউ স্বাস্থ্যবিধি মানছেনা সেই চিন্তায় নয়। কাঁঠালের সেই ত্রিশটা কোয়া পাকস্থলীতে লুঙ্গী ড্যান্স দিচ্ছে সেই টেনশনে!
২৯টি মন্তব্য
প্রদীপ চক্রবর্তী
কাঁঠালের সেই ত্রিশটা কোয়া পাকস্থলীতে লুঙ্গী ড্যান্স দিচ্ছে সেই টেনশনে।
হাহা হা দাদা।
অনেকে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে অপরকে সচেতন করে এতে করে নিজে আশংকা হওয়ার প্রাধাণ্য তাকে বেশি।
যাই ত্রিশশটা কাঁঠালের কোয়া থেকে অদ্ভুত রহস্য বের হয়ে এসেছে।
আর রিক্সাওয়ালার ভয়টা কাটলে হলো।
এতো মোটাসোটা মানুষ আসলে রিক্সায় তুলা ঠিক না!
তৌহিদ
ফেসবুকে সচেতন করা ভালো কথা কিন্তু অনেকেই ফেসবুক ব্যবহার করেননা তাদের জন্য কি উপায় তাইনা?
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ দাদা। ভালো থাকুন।
ইঞ্জা
ভাই আমার সেই ঘড়ির ইমোজি কই, হাসতেই আছি আমি, এই দেশের জনগণ জীবনেও মানুষ হবেনা ভাই, এরচেয়ে কাঁঠালের তিরিশটা বিচির লুঙ্গি ডান্স ইজ বেস্ট। 🤪🤪
তৌহিদ
সেই ইমোজি এখানে সংযোজন করার দাবী জানাচ্ছি দাদা। কিভাবে মানুষ হবে বলুন! লকডাউন, কোয়ারেন্টাইন এসব শুনেই আসছে। সাধারন মানুষকে আমরা বোঝাতে অক্ষম যে!
ধন্যবাদ জানবেন ভাই।
ইঞ্জা
দুঃখ লাগেরে ভাই।
আলমগীর সরকার লিটন
বেশ জমার লেখেছেন
তৌহিদ
পড়ার জন্য ধন্যবাদ ভাই। ভালো থাকুন।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
কাঁঠাল খান আর যাই খান লুঙ্গি ড্যান্সটা দারুন লাগলো। কাঁঠাল একলাই খাইবেন তো লুঙ্গি ড্যান্স দিছে এটা কম হইছে। এদেশের মানুষরে আর মানুষ বানানো গেল না যারা করোনাকেই পাত্তা দিলো না তাদের কাছ থেকে আর বেশী কিছু আশা করা বৃথা। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন
তৌহিদ
সেকি যাতা ড্যান্স! পুরাই ঘেমে গিয়েছিলাম। আমরা সচেতন নই অনেকে। যারা ফেসবুক ব্যাবহার করেনা তাদের কাছে করোনার ভয়াবহতা কি করে বোধগম্য হবে বা কেউকি তাদের কোনদিন স্বাস্থ্যবিধি মানার কথা বলেছে?
ভালো থাকুন আপু।
সঞ্জয় মালাকার
কাঁঠালের সেই ত্রিশটা কোয়া পাকস্থলীতে লুঙ্গী ড্যান্স দিচ্ছে সেই টেনশনে! টেনশন করিয়েন না মনের আনন্দে ড্যান্স করেন।
তৌহিদ
ড্যান্স করতে করতে হাপায় গিয়েছি দাদা। ভালো থাকুন সবসময়।
বন্যা লিপি
আপনে কাঁঠালের কোষ গোণা থুইয়া বারান্দায় উঁকি দিতে যান কোন আক্কেলে?
ফেসবুক হইছে সস্তাদরের বিলবোর্ড।উপদেশ-পরামর্শ-নিতীবাক্য-ঝারিঝুড়ি-গলাবাজি- ঝালঝাড়ন…..। আমার এউগ্গা কোয়েশ্চেন আছিল😊 এই অসচেতন পাবলিকগুলা কি ফেবু সেলিব্রেটি নাকি? ওরা ফেসবুকে ঢোল পিটাইয়া নিজেরাই নাইমা পরে বিরত্ব দেখাইতে?
তাইলে ভাই আপনে অগরে কাঁঠাল পাতা সাপ্লাই করেন 😊 পেটের ভিতরে লুঙ্গীড্যান্স তো কাঁঠালে করবো, আপনে বরং আরো কয়েক কোষ খেয়ে উহাদের স্পিরিট বাড়াইয়া দেন পৌষী ভাবি দেখবো আপনার ড্যান্স😃😃
এইতো পারছেন মজার পোষ্ট লিখতে ভাই।এরহম আরো কয়েকখান লিইক্খেন।
দারুন লিখেছেন কিন্তু ভাইয়ো😊😊
তৌহিদ
আম্মার সাথে গল্প করতে করতে কাঁঠাল খাচ্ছিলাম, হঠাৎ দেখি তিনি আমার দিকে চেয়ে আছে। বুঝলাম জীবনের প্রথমবার এতগুলো কোয়া খেতে দেখে তিনি বিস্মিত!! পরে গুনে দেখি বিচি আছে ত্রিশটা 😃
ফেসবুকে সচেতন করছে এটা ভালো কিন্তু যারা ফেসবুক ব্যবহার করেনা তাদের জন্য কি হয়েছে? তাদের সচেতন করবে কে বলুন? আমরা থুতনিতেতে মাস্ক পড়ে ঘুরছি এই হলো অবস্থা।
ভালো থাকুন আপু।
ছাইরাছ হেলাল
আপনি কাঠাল-খোর এটি বলতে চাচ্ছেন তো!
দেখুন করোনা কিন্তু কাঠাল ছেড়ে দেবে এমন না।
ড্যান্স সামলে রাখুন।
তৌহিদ
কাঁডল আমার প্রিয় ফলের একটি, ওকা! থুতনিতে মাস্ক পড়া দেখলেই আমার ড্যান্স দিতে ইচ্ছে হয় যে!
ভালো থাকুন ভাইয়া।
মোহাম্মদ মনজুরুল আলম চৌধুরী
কথাচ্ছলে আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের অনুষঙ্গ ফেইসবুক নিয়ে দারুণ মন্তব্য করেছেন — ফেসবুকের কল্যানে সবাই করোনা বিশেষজ্ঞ। আমরা প্রত্যেকেই স্বাস্থ্যবিধি জানি কিন্তু কার্যক্ষেত্রে মানিনা। আবার আপনি রাস্তায় নেমে তাদের সাবধান করতে গিয়ে নিজেই আক্রান্ত হবার ঝুঁকি থেকেই যায় যেহেতু তাদের মাস্ক নেই, স্বাস্থ্যবিধি মানছেনা। রাগে দুঃখে আপনি নিজের মাথার চুল টেনে ধরেছেন কারন এতক্ষণে শতাধিক লাভ রিয়েক্ট পাওয়া সে স্ট্যাটাসটির আনন্দকর প্রসব বেদনাও ভুলতে পারছেননা। —- শুভেচ্ছা
তৌহিদ
সুন্দর বললেন ভাই। মন্তব্যে প্রীত হলাম। আসলে সবার সচেতনতা ছাড়া করোনা থেকে মুক্তি অসম্ভব।
ভালো থাকুন সবসময়।
সুরাইয়া নার্গিস
চমৎকার, বেশ ভালো লাগছে।
তৌহিদ
অনেক ধন্যবাদ আপু। শুভকামনা জানবেন।
জিসান শা ইকরাম
দেশে সবাই করোনা বিশেষজ্ঞ হয়ে গিয়েছে। তাই অন্যদের উপদেশ না দিয়ে কাঠাল খাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।
বাইরের পরিবেশ দেখলে মেজাজ খারাপ হয়ে যায়, তাই দেখিনা। নিজে নিরাপদ থাকার চেস্টা করি।
কাঠাল আমার খুবই প্রিয়,
শুভ কামনা।
তৌহিদ
মানুষের অসচেনতা দেখলে নাভিশ্বাস ওঠে ভাই। সবাই সব জানে কিন্তু মানেনা অনেকেই। কি যে হবে!
কাঁঠাল আপনার প্রিয় জেনে ভালো লাগলো। ভালো থাকুন ভাই।
আরজু মুক্তা
কাঁঠালের কোয়া লবণ দিয়ে খেয়ে ফেলেন।
সব ঠাণ্ডা
তৌহিদ
আমিতো লবন, কাঁচামরিচ শেনে কাঁঠাল দিয়ে খী। হেব্বি ট্যাশ।
সুপায়ন বড়ুয়া
কাঠালের লোভে পড়তে গিয়ে
পেলাম ভারী মজা।
করেনা কালের বিধি ভাঙার
কেমনে দেব সাজা ?
শুভ কামনা।
তৌহিদ
হা হা হা আপনার মন্তব্যে আমিও পেলুম মজা। ভালো থাকুন দাদা।
কামাল উদ্দিন
ঠিক এমনি করে আমিও আজ দুপুরে খেলাম। এক বাটি ভরে দিলো ভাবলাম কিছুটা খাব, তারপর খেতে খেতে ভাবলাম কয়েকটা বাটিতে রেখে আর এটো করে লাভ কি? সুতরাং সব সাবার। আর ফেজবুকে বসলে আমরা এতোটা জ্ঞাণী যে হই, তাই আমি এদের বলি ফেজবুক বিজ্ঞানী। ভালো থাকবেন ভাই।
তৌহিদ
কাঁঠাল কিন্তু চমৎকার সুস্বাদু একটি ফল ভাইয়া। আমার নিজের খুব পছন্দ। তবে সেদিন একটু বেশিই খেয়ে ফেলেছি আর কি!
স্বাস্থ্যবিধি আমরা সবাই মোটামুটি জানি কিন্তু মানিনা। কেন যে এমন সেটাই মাথায় আসেনা ভাই।
মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ ।
সাবিনা ইয়াসমিন
***এ সবই আপনি বারান্দা থেকে দেখলেন। এখন কি করবেন আপনি? কিছুক্ষণ আগে ফেসবুকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার উপদেশ দেয়া সেই স্ট্যাটাসটি ডিলিট করবেন নাকি নিজে রাস্তায় নেমে স্বাস্থ্যবিধি না মানা পাব্লিকরে পেটানো শুরু করবেন?*** হাহাহা, একটু হেসে নিই 🤣🤣🤣🤣
মন্তব্যে মুল লেখা থেকে কপি করার জন্যে প্রথমেই স্যরি। কিন্তু কি করবো এভাবে হুবহু করে লিখতে পারছিলাম না।
ত্রিশ কোঁঁয়া কাঁঠাল পেটে চালান দিয়ে আগের স্ট্যাটাস দেয়ার পর অন্যরা কি করতো জানিনা। তবে আম খাওয়া পাব্লিকেরা ঐ পোস্ট ভুলেও ডিলিট করবে বলে মনে হয় না। আর নীচে গিয়ে ঐ ঝামেলাও মিটমাট করবে না। তারা বারান্দা থেকে আবার ঘরে যাবে, গোটা-গোটা আরো কিছু আম খেয়ে আগেরটার চাইতে আরও তীব্র প্রকিয়ায় স্ট্যাটাস দিবে। বাঙালী যতই কাঁঠাল খাক, নামেতো আমজনতা!!
পোস্ট দারুণ হয়েছে তৌহিদ ভাই।
শুভ কামনা 🌹🌹
তৌহিদ
আমিও একটু হাসি খাড়ান! হা হা হা😂
একদম ঠিক, আমরা নিজেরা সবাইকেই কতকিছু বলে বেড়াই কিন্তু নিজেরাই আবার মানিনা সেসব। আম কিন্তু আমারও খুব প্রিয় আপু। ☺
আপনার মন্তব্যের শেষেরটুকু পড়ে ওমর মুড়ি কাঁঠাল বলে একজনের নাম মনে পড়লো। জিজ্ঞেস করলে সে বলেছিলো- ওমর খৈয়াম নাম হতে পারলে আমার ওমর মুড়ি কাঁঠাল হতে সমস্যা কি?
হা হা হা 😃😃
ভালো থাকুন আপু।