
ধরো কোনো একদিন হুট করেই তোমার শহরে চলে আসলাম। তুমি নীল শাড়ি পরে আমার জন্য অপেক্ষা করছো! হাতে নীল চুড়ি, কপালে নীল টিপ, চুলগুলো এলোমেলো। তুমি চট্রগ্রাম সমুদ্র বন্দরে এসে আমার জন্য অপেক্ষা করছো! আমি কাঁধে ব্যাগ ঝুলিয়ে চোখে মোটা ফ্রেমের চশমা পরে তোমার সামনে আসলাম। তুমি বিস্মিত হয়ে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে অাছো অামার দিকে!
তারপর, সমস্ত প্রতিকুলতাকে উপেক্ষা করে পালিয়ে এলে অামার হাত ধরে। দুজন ঢাকার উদ্দেশ্যে চট্রগ্রাম টু ঢাকা সৌরভী ১০ লঞ্চে উঠে ছাদে গিয়ে দাঁড়ালাম! খোলা আকাশ, বিস্তীর্ণ পৃথিবী। চারিদিকে পানির হৈহৈ ঢেউ, সাদা ফকফকা পানির স্রোত যেন দুঃখগুলোকে মুছে দিচ্ছে! তুমি চোখ বাঁকিয়ে মৃদু হেসে তাকিয়ে অাছো নীলাভ আকাশের দিকে। আমি অাকাশ দেখার ছলে শুধু তোমাকে দেখছি! আহাঃ কত মায়াবী মুখ যেন পদ্মঘাটের শ্রী। কত সুন্দর তোমার চোখ, নাক, কান! তুমি ধ্রুব তারার মত মিটমিট করে হাসছো। তোমার কালো কালো চুলগুলো সমুদ্রের বাতাসে শনশন করে উড়ছে!
তোমার শাড়ির আঁচলটা উড়ে গিয়ে লেপ্টে অাছে লঞ্চের গ্রিল জুড়ে। কি এক সুন্দর মুহূর্ত তখন। তারপর সন্ধ্যা নেমে এলো, তুমি সন্ধ্যার চকচকা শীতে বিড়বিড় করে কাঁপছ! আকাশে আজ মেঘ নেই, শুধু লাল, নীল তারা। তুমি তারার দিকে তাকিয়ে চিৎকার করে বললে ভালোবাসি, ভালোবাসি! আমি ঢেড় তাকিয়ে অাছি তোমার দিকে, একটুও কষ্ট হচ্ছেনা আমার, বরং ইচ্ছে করছে সন্ধ্যাটা টেনে আরেকটু লম্বা করে দেই!
পালাক্রমে রাত গনিয়ে এলো সবাই যার যার অবস্থানে শুয়ে অাছে। শুধু তুমি আর আমি নিশাচর হয়ে লঞ্চের গ্রিল ধরে দাঁড়িয়ে অাছি। লঞ্চের ওরপাশ থেকে ভেসে আসছে রবী ঠাকুরের গান ‘সখী ভাবনা কাহারে বলে, সখী যাতনা কাহারে বলে তোমরা যে বল দিবস-রজনী ভালোবাসা ভালোবাসা, সখী ভালোবাসা কারে কয় সে কি কেবলি যাতনাময়’
তুমি মুগ্ধ হয়ে গান শোনছো। তোমায় দেখে মনে হচ্ছিলো জীবনে প্রথম রাত জেগে গান শোনছো তুমি ! তোমার ঘুম ঘুম চোখ, আমার কুলে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়ছো। আমি জেগে জেগে তোমাকে দেখছি। তোমার নাক চেপে ধরি, চুলগুলো এলোমোলো করছি কিন্তুু তুমি প্রচন্ড ঘুমাচ্ছো। তারপর ভোর হয়ে এলো চারিদিকে কুয়াশার অাবির যেন ঢেউ খেলছে! জীবনে এই প্রথম এত সুন্দর দৃশ্য দেখছে চোখ! কত রুমান্টিক ওয়েদার, নদী জুড়ে পাল তুলা নৌকা! মাঝির গানে উড়ে যাচ্ছে সকালের মেঘ, চারিদিকে বাতাসের শব্দ! অাকাশে উড়ে চলা গাঙচিলের পায়চারী সবকিছু যেন কাল্পনিকতার স্তম্ব!
তারপর, সকাল হয়ে গেল। আমি তোমার কানে কানে ফিসফিস করে বললাম এ্যাই উঠো আমরা ঢাকায় চলে আসছি!!
২৩টি মন্তব্য
শাহরিন
অনেক সুন্দর রোমান্টিক কল্পনা। আশাকরি বাস্তবেও এমন আচরণ থাকবে সারাজীবন আপনার নীল পরীর সাথে।
মাছুম হাবিবী
অনেক ধন্যবাদ। সব সময় ভালো থাকবেন
জিসান শা ইকরাম
বাহ!
এত সুন্দর স্বপ্ন 🙂
আমারই তো এখন পিছনে গেলে আসা বয়সে গিয়ে এমন স্বপ্ন দেখতে ইচ্ছে করে।
লেখা পড়ে মন ফুরফুরে হয়ে গেলো ভাই।
শুভ কামনা।
মাছুম হাবিবী
হাহাহা দাদা স্বপ্নতো তাই এতটা সুন্দর
ইঞ্জা
বেশ রোমান্টিকতা, লেখাটি খুব ভালো লাগলো ভাই।
মাছুম হাবিবী
অনেক অনেক ভালো লাগলো ভাই
ইঞ্জা
শুভেচ্ছা ভাই
সাবিনা ইয়াসমিন
ফকফকা পানির স্রোত,
চকচকা শীত 😀😀 এমন জিনিস কল্পনাতেই দারুন দেখায়। প্রেমিকাকে নিয়ে লঞ্চের ছাদে উঠলেন, কতকিছু দেখালেন, দেখলেন। ক্লান্ত বেচারিকে শান্তিতে ঘুমাতেও দিলেন না! ঢাকায় এলেই কি? কল্পনার লঞ্চ কি সদর ঘাটেই ভিড়বে!!
ঘুম থেকে উঠার পর আপনার অনুভূতি কেমন ছিলো তা কিন্তু বলেননি 😂😂
মাছুম হাবিবী
ঘুম থেকে উঠার পর অনুভূতিগুলো খুব হন্য ছিল! পালিয়ে যাওয়ার পর তখন শুধু থাকার টেনশনটাই মাথায় ছিল বেশি!
এটা শুধু কল্পনা্,আর কল্পনা দ্বারাই এতকিছু সম্ভব। ধন্যবাদ আপুটি
নিতাই বাবু
সবার স্বপ্ন বাস্তবায়িত হোক। নিদ্রিতাবস্থায় চমকে না উঠুক। যা দেখার জাগ্রতবস্থায়ই দেখতে থাকুক। আমরা শুনতে থাকি।
মাছুম হাবিবী
অনেক ধন্যবাদ ভাইজান
ছাইরাছ হেলাল
খুব সুন্দর, দারুন মায়া মায়া উপস্থাপনা।
তবে সুরভী ১০ লঞ্চে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা আসা যাবে না।
আর সকালের বুড়িগঙ্গার পচা জলের গন্ধে রোমান্টিকতা পালিয়ে যেতে চাইবে।
মাছুম হাবিবী
হাহাহা একদম ঠিক ভাই বুড়িগঙ্গা যে বাজে গন্ধ, রুমান্টিকতা আকাশে উড়বে
শামীম চৌধুরী
বাহ লঞ্চ ভ্রমনটি বেশ উপভোগ্য ছিলো।
আমার কুলে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়ছো।
কুলে নয় কোলে হবে। বানানের দিকে নজর রাখলে লেখা মার্জিত হয়। কিছু মনে করবেন না। ভুল ধরিয়ে না দিলে এই ভুল সারাজীবনই থাকবে।
মাছুম হাবিবী
অনেক ধন্যবাদ ভাই। আর মাইন্ড করবো কেন ভাই? এখানে তো আপনাদেরর কাছ থেকে শিখতে এসেছি! ভুলটা ধরিয়ে দিবেন শোধরে নেয়ার চেষ্টা করবো। অনেক ধন্যবাদ ভাই
শামীম চৌধুরী
শুভ কামনা রইলো মাছুস ভাই।
শিরিন হক
চট্টগ্রাম না হয়ে বরিশাল হলে সপ্ন আরো রোমান্টিক হতো। বরিশাল থেকে ঢাকা যেতে আরো অনেক লঞ্চের দেখা মিলতো।
স্বপ্নের রোমান্স সদর ঘাটেই শেষ কস্ট পেলাম।আগামী তে ঢাকার রোমাঞ্চকর গল্প দেখতে চাই।
ভালো লাগলো লেখাটা।
মাছুম হাবিবী
অনেক অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন
আরজু মুক্তা
রোমান্টিক কাহিনী পড়ে মনটাও ভালো হয়ে গেলো।।
ভালো লাগলো।।সেই সময়ের কিছু ঘটনাও মনে পরে গেলো
মাছুম হাবিবী
জ্বী অনেক ধন্যবাদ
মোঃ মজিবর রহমান
কেমনে লেখে লেখক ভাবি পড়ি। মন ভোলে। আরো ভালো লিখুন পড়ি।
মাছুম হাবিবী
ধন্যবাদ
হাফেজ আহমেদ রাশেদ
বেশ রুমান্টিক উপস্থাপন, মন ছুঁয়ে যাওয়ার মতো লেখা,,ভালো লেগেছে প্রিয়