
কক্সবাজারে যেতে এখন মন আর আগের মতো সায় দেয় না। আমার ইচ্ছে নতুন জায়গা দেখা, কিন্তু ছেলেদের ইচ্ছাতেই আবারো যেতে হলো কক্সবাজার। কক্সবাজার থেকে সেন্টমার্টিন যেতে ঘোর আপত্তি থাকলেও না গিয়ে পারলাম না, এমন কি অবশেষে বাধ্য হয়ে বাংলাদেশের মানচিত্রের দক্ষিণের সর্বশেষ বিন্দু ছেড়া দ্বীপ পর্যন্ত যেতে হয়েছিলো। যদিও এর আগে আরো দুইবার ছেড়া দ্বীপে পা রাখার সৌভাগ্য আমার হয়েছিল।
কক্সবাজার থেকে পৃথিবীর দীর্ঘতম মেরিন ড্রাইভ সড়ক ধরে টেকনাফ আর টেকনাফ থেকে জাহাজে চড়ে সেন্টমার্টিন যাওয়ার পথ দুটিকে আমি বলব অবশ্যই স্বর্গ। মেরিন ড্রাইভ সড়কের এক পাশে সাগরের উত্তাল ঢেউ স্বগর্জনে এসে মাথা কুটে মরছে, অন্যপাশে সবুজ প্রকৃতি আর উঁচু নিচু পাহাড়ের মিতালী। আর টেকনাফ থেকে জাহাজে চড়লে নাফ নদীর নীল পানি আর সীমান্তের এপারে ওপাড়ের পাহাড়গুলো চোখ জুড়ায়। সেই সাথে জাহাজের পেছনে পেছনে ছুটে চলা সীগার্লদের কিচির মিচির ভ্রমণটাকে দেয় অন্য রকম একটা আবহ। আর তাই এই জায়গাগুলোতে রয়েছে আমার অন্যরকম ভালোলাগা। সেই ভালোলাগা পথের কিছু ছবি নিয়েই আমার আজকের ছবি ব্লগ।
(২) কক্সবাজার থেকে টেকনাফ যাওয়ার মেরিন ড্রাইভ সড়ক, আমার দেখা সব থেকে চমৎকার এই সড়ক ধরে মাইক্রোবাসে রওয়ানা হলাম টেকনাফ হয়ে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে।
(৩) যাওয়ার পথে ডান পাশে বিশাল নীল জলরাশি পূর্ণ আমাদের বঙ্গোপসাগর, তার বালিয়াড়িতে উঁকিঝুকি মারছে জেলেদের কুঁড়েগুলো।
(৪) আর বাঁম পাশে পাহাড় আর নয়নাভিরাম সবুজে ভরা এক অপার্থিব পৃথিবী।
(৫) টেকনাফ থেকে জাহাজে চড়ার জন্য পারি দিতে হয় এমন লম্বা কাঠের জেটি।
(৬) নাফ নদীর জলে অলস বসে আছে বিজিবির বোট।
(৭/৮) আকাশে কালো ধোয়া উড়িয়ে নাফ নদীর জল আলোড়িত করে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে আমাদের জাহাজগুলো রওয়ানা হয়ে গেলো।
(৯/১০) নদীর জলে ড্রাম ভাসিয়ে তাতে বসে মাছ ধরছে স্থানীয় কিছু লোকজন।
(১১/১২) একটা দুটো করে এক সময় শত শত গাংচিল প্রতিটা জাহাজের পিছু নিয়েছিল পর্যটকদের দেওয়া খাবার খাওয়ার লোভে।
(১৩) পাহাড়ের পাশে একটা ইন্ডাষ্ট্রি ও তার জেটি।
(১৪) এটা শাহপরীর দ্বীপ।
(১৫/১৬) আমাদের জাহাজ নাফ নদীর যেখান দিয়া যাচ্ছিল তার আরও বাংলাদেশের ভেতরের দিকে দেখলাম মিয়ানমারের পতাকাবাহী জেলেরা মাছ ধরছে, ব্যাপারটা আমার বোধগম্য হলো না।
(১৭) এক সময় আমাদের জাহাজ এসে ভীড়ল সেন্টমার্টিনের জেটিতে।
(১৮) ছেলেদের বায়নায় বাধ্য হয়েই স্পীডবোট নিয়ে ছুটে গেলাম ছেড়া দ্বীপের দিকে।
(১৯) ছেড়াদিয়া দ্বীপের একাংশ, এটাই বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণ বিন্দু, এর পর শুধুই অথৈ জলরাশি।
(২০) সেন্ট মার্টিনের জেলেরা শুটকি শুকাচ্ছে রোদে।
(২১) জাহাজে করে শেষ বিকালে যখন ফিরছিলাম তখন গাংচিলেরা আমাদের বিদায়ী শুভেচ্ছা জানাচ্ছিল।
২০টি মন্তব্য
মনির হোসেন মমি
বাহ্ নয়াভিরাম ছবির দৃশ্যে লেখার কৌশলে দেখার স্বাদ মেটালাম।মিয়ানমার জেলেরা সম্ভবত অবৈধ ভাবে মাছ ধরছে দেখার কেউতো নেই তাই হয়তো পুরো স্বাধীনতা নিয়ে মাছ ধরছেন তারা।
বহুদিন পর লেখা ও ছবি দেখে মন ভরে গেল।সব চেয়ে ভাল লাগল শে ছবিটি যেন জীবন ইতির কথা কয়।
কামাল উদ্দিন
হুমম, এমন পতাকা লাগিয়ে অবৈধভাবে মাছ ধরাটা আমার কাছে কেমন যেন বেমানান মনে হলো, ধন্যবাদ মমি ভাই।
সাখাওয়াত হোসেন
দারুণ সব চমৎকার ছবি! দেখলে মন জুড়িয়ে যায়।
কামাল উদ্দিন
ধন্যবাদ শাখাওয়াত ভাই, ভালো থাকবেন সব সময়।
আরজু মুক্তা
পথটা অনেক চেনা। তবুও ভালো লাগার রেশ থাকেই।
শুভকামনা
কামাল উদ্দিন
হুমম, আমিও কয়েকবার গিয়েছি এই পথে, তবু যেন সব সময়ই নতুল লাগে আপু, শুভেচ্ছা জানবেন।
তৌহিদ
আপনার ছবিব্লগ মানেই পাঠক এবং একজন ভ্রমণকারী হিসেবে নিজেকে সেই জায়গায় বাস্তবিক কল্পনা করা যায় নির্ভাবনায়। আপনাকে ব্লগে ভীষণ মিস করি কামাল ভাই।
দারুণ সব ছবিকথা! অসংখ্য ধন্যবাদ।
শুভকামনা জানবেন।
কামাল উদ্দিন
আপনার জন্যও শুভ কামনা সব সময় ভাইজান, আমিও ব্লগকে, আপনাদেরকে মিস করি। কিন্তু কিভাবে যেন সময়টা আষর করাও যায় না 🙁
আলমগীর সরকার লিটন
আহা রে কামাল দা সেই ছুটে চলা খুব সুন্দর লাগল ছবিগুলো অনেক শুভেচ্ছা রইল
কামাল উদ্দিন
এখন ও চলছে ছূটে চলা, তবে সেই পথ ভিন্ন ভাইজান। অর্থ আছে সুখ নাই এই পথে, ভালো থাকবেন।
ছাইরাছ হেলাল
বহুদিন পরে হলেও এমন ছবি দেখে ভাল লাগার ই কথা,
তবে শুটকি’র ছবি দেয়া ঠিক-না কিন্তু।
ধন্যবাদ! একদম-ই ভুলে না-যাওয়ার জন্য।
কামাল উদ্দিন
বুজেছি আমার মতো আপনিও শুটকি ভালোবাসেন, শ্রদ্ধা জানবেন বড় ভাই।
রোকসানা খন্দকার রুকু
অসাধারণ ছবি। মন ভরে গেল। শুটকি বোধহয় আনতে ভোলেননি। একা একাই টেস্ট নেন।
শুভ কামনা ভাই।
কামাল উদ্দিন
ধন্যবাদ আপু, শুটকি আমার প্রিয় হলেও এই যাত্রায় শুটকি আনা হয়নি।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
কামাল ভাইকে পেয়ে ষোলো কলা পূর্ণ হলো অনেক দিন পর। মনোমুগ্ধকর ছবির সাথে চমৎকার লেখনী। খুব খুব মিস করি এমন ছবি কারণ আমি যে ভ্রমণ পিপাসী, সহজে কোথাও যেতে পারিনা তাই আপনিই আপাতত সম্বল এমন করে ভ্রমণটাকে উপভোগ করার জন্য। নিরন্তর শুভকামনা রইলো
কামাল উদ্দিন
এখন আমিও আপনার মতোই হয়ে গেছি আপু, মাঝে মাঝে মনটা চায় সংসারের শেকল ছিড়ে পালাই, ভালো থাকবেন আপু।
জিসান শা ইকরাম
ড্রাম, বোতলের উপরে বসে মাছ ধরার অভিনব উপায় দেখলাম।
মেরিন ড্রাইভ রোড আমার কাছেও অত্যন্ত ভালো লাগার একটি রোড।
বাংলাদেশের সীমানার মধ্যে মায়ানমারের জেলেরা মাছ ধরছে! অবাক হবারই কথা।
চমৎকার ছবি ব্লগ।
শুভ কামনা।
কামাল উদ্দিন
ধন্যবাদ বড় ভাই, মন্তব্যের জাবাব দিতে দেরী হওয়ায় দুঃখিত।
মোহাম্মদ মনজুরুল আলম চৌধুরী
চেনা জায়গার অপূর্ব সুন্দর ছবির সমাহারে বিমোহিত। ধন্যবাদ অশেষ।
কামাল উদ্দিন
শুভেচ্ছা জানবেন মনজুর ভাই।