
দেশের টপ আলেম দিয়ে ওয়াজ করাতে হলে তাদের হাদিয়া দিতে হয় ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। প্রথমেই অগ্রিম ১০ হাজার দিয়ে চুক্তি করে নিতে হয়। এক বছর পিছে ঘুরে চুক্তি করার পর হুজুর ডেট নোট করেন। একজন বক্তা দুই ঘন্টা ওয়াজ করে ৫০ হাজার নিয়ে যায়। আর কোনো গরীব অসহায় ক্ষুধার্ত মানুষ ৫০ টাকা চাইলে পাঁচটা ঝাজি মারি। কি অদ্ভুত আমরা! বড় হুজুর দিয়ে ওয়াজ করানোর জন্য বাজারে হেঁটে হেঁটে টাকা কালেকশন করি! অনেক ঝড়ঝাপটার পর বড় হুজুর দিয়ে ওয়াজ করাই। অথচ পাশের বাড়ির এতিম পরিবারটা দুপুরে খেলো কি না তার খবর কেউ রাখিনা। সারা রাত হুজুরের ওয়াজ শুনে ভোরে ফজরের নামাজও পড়তে পারিনা অনেকেই। সকল ওয়াজ প্রেমী ভাইদের নিকট একটাই অনুরোধ ৫০ হাজার দিয়ে বক্তা এনে ওয়াজ করালে কী বেশি সওয়াব? নাকি ৫০ টাকা দিয়ে এতিমদের পেটপোড়ে খাওয়ালে বেশি সওয়াব? সারা রাত বড় হুজুরের ওয়াজ শুনে ফজরের নামাজ না পড়লেও কি চলবে? নাকি ওয়াজে না গিয়ে অর্ধেক রাত কাজ করে ফজর পড়াটা জরুরী? প্রশ্নের উত্তরগুলো দিলে খুশি হব! আমি আগে ওয়াজ মাহফিল হলেই চলে যেতাম। কোথাও বড় বক্তা এলে সবার আগেই বসে থাকতাম। কিন্তুু একদিন এক হুজুরের কাণ্ড দেখে আমিতো পুরাই অবাক। মাহফিল কমিটি ২ হাজার কম দেয়াতে তিনি প্রচন্ড রেগে গেলেন। তারপর থেকে সিদ্ধান্ত নিলাম আর ওয়াজে যাবনা। এখন থেকে নিজের আমলনামা নিজেই ঠিক করবো। সারা রাত টাকায় কিনা বক্তার ওয়াজ শুনে জীবনে ফেতনা ছাড়া কিছুই পেলাম না।
আরেকটা কথা যারা গ্রাম বা সংগঠনের নাম উজ্জ্বলের জন্য মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে বক্তা কিনে আনেন। এসব বক্তা দিয়ে ওয়াজ না করিয়ে এলাকার গরীব এতিম ক্ষুধার্ত মানুষের পেট ভরে খেতে দিন এতে তারাও খুশি আল্লাহ্ খুশি। চুক্তি করে বক্তা এনে ওয়াজ শুনে কোনো ফায়দা নাই!
২০টি মন্তব্য
সুরাইয়া পারভিন
এসব বক্তা দিয়ে ওয়াজ না করিয়ে এলাকার গরীব এতিম ক্ষুধার্ত মানুষের পেট ভরে খেতে দিন এতে তারাও খুশি আল্লাহ্ খুশি। চুক্তি করে বক্তা এনে ওয়াজ শুনে কোনো ফায়দা নাই👏👏
চমৎকার বলেছেন ভাইয়া।
কতোটা মূর্খ অজ্ঞ আমরা তা নিজেদের কর্মকাণ্ডেই প্রকাশ করি।
মাছুম হাবিবী
আসলেই আপু আমরা নিজেরাই নিজেদের ক্ষতি করছি। যেখানে গরীব দুঃখিদের পাশে থাকার কথা তা না করে মোটা অঙ্গের টাকা দিয়ে বক্তা এনে ওয়াজ করিয়ে হেদায়েত হওয়ার চেষ্টা করছি। এরূপ মন মানসিকতার পরিবর্তন না এলে সামনে কঠিন বিপদ আছে। ধন্যবাদ আপু
মনির হোসেন মমি
ভাইয়া চমৎকার বিষয়ে একটা লেখার জন্য স্পেশাল ধন্যবাদ।এ-ই যে ১৬ডিসেম্বর দিন আমিও এ-র কর্কট কণ্ঠ বাদ যাইনি।আরও ওয়াজ মাহফিলের প্যান্ডেলের কথা ভাবলেই বুঝা যায় এটা এ যুগে নেহাত নিস্ফল।
মাছুম হাবিবী
একদম ভাই। বিশাল এক মাহফিল করাতে খরচ যায় ১ থেকে দেড় লাখ টাকা। অনেক চাঁদা তুলে তা করানো হয়। যারা খেতে পারেনা তারাও চাঁদা দেয়। কিন্তুু কেউ অসহায় মানুষদের কথা ভাবেনা, কেউ ক্ষুধার্তদের কথা ভাবেনা। সবাই নাম কামাতে ব্যস্ত। আমাদের এসব ভুল পথ থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। ধন্যবাদ ভাইয়া
সুপর্ণা ফাল্গুনী
সবকিছুতেই লোক দেখানো টা আজকাল চল হয়ে গেছে। ধন্যবাদ আপনাকে এমন একটি বিষয় তুলে ধরার জন্য।
মাছুম হাবিবী
জ্বী ঠিক বলেছেন। আপনাকেও ধন্যবাদ আপু
তৌহিদ
মোটা টাকার বিনিময়ে নিয়ে ওয়াজ করা এখন একটি ফ্যাশন। আমি বুঝিনা কি করে একজন মুসলমান বক্তা হিসেবে এরকম করতে পারে? আমাদের রাসূল নিজেই টাকার বিনিময়ে ইসলাম প্রচার নিষেধ করেছেন। এমনকি ধর্ম শিক্ষায় উপহার গ্রহণ করাও হারাম। আমরা ইসলামের নামে যেসব করি তা মোটেও ইসলাম সমর্থন করে না। অথচ কত মানুষ না খেয়ে আছে তাদেরকে সাহায্য করি না। আশ্চর্য আমাদের মানসিকতা !
সকলের বোধোদয় হোক। ভালো লিখেছো ভাই।
মাছুম হাবিবী
টাকা দিয়ে ইসলাম প্রচার হারাম, হারাম, হারাম। তারপরও যারা এসব করে তাদের ওয়াজ শুনা ও হারাম। ধন্যবাদ ভাইয়া
সাবিনা ইয়াসমিন
সব কিছুর সাথে সব মিলালে তো হবেনা। আমার ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতায় দেখেছি, ওয়াজ মাহফিলের বক্তারা অনেকেই কোনো হাদিয়া নেন না। আবার অনেক জায়গায় দেখেছি বক্তারা তাদের হাদিয়া না নিয়ে উল্টো নিজেদের পকেটের টাকা উক্ত মসজিদ / মাদ্রাসায় দান করে দিয়ে গেছেন। সাধু / অসাধু ব্যাক্তি সব শ্রেনীতেই থাকে। এ খানে থাকাও অস্বাভাবিক নয়।
ছোট বেলায় মাওলানা যুক্তিবাদীর একটা ওয়াজ শুনে ছিলাম। তিনি ওয়াজে আসা মানুষদের জিজ্ঞেস করেছিলেন কে কে এশার নামাজ পড়েছেন? তখন অনেকেই কথা বলেনি। তিনি তখন বলেছিলেন ” এই হলো আমাদের বর্তমান মুসলিমদের অবস্থা। তাদের কাছে ওয়াজ টেস লাগে কিন্তু নামাজ টেস লাগে না।”
ধর্মীয় দাওয়াত দেয়া এবং ধর্মের পথে মানুষদের ডাক দেয়া প্রতিটি মুসলমান এর ঈমানী দায়িত্ব। ওয়াজ মাহফিল, মিলাদ বা ইসলামিক আলোচনা অনুষ্ঠানের ব্যাবস্থা করা ধর্মীয় দাওয়াতের অংশ। তবে বাড়াবাড়ি করা অনুচিত। এখানে এসে যদি আত্মা পরিশুদ্ধ না হয়ে মনে প্রশ্নের উদ্রেক ঘটে তাহলে ওয়াজের বক্তা সহ ব্যবস্থাপকদের কপালে নিন্দা ছাড়া কিছুই জুটবে না।
শুভ কামনা 🌹🌹
মাছুম হাবিবী
ভালো বক্তারা এখনো আছে তা স্বীকার করতে বাধ্য। তবে অধিকাংশ বক্তারাই টাকা নিয়ে ওয়াজ করেন। বিশেষ করে যারা একটু পরিচিত, সেলেব্রিটি টাইপের তাদের তো টাকা ছাড়া আনতেই পারবেন না। আমি নিজে একটা বাস্তব উদাহরণ, বক্তাকে অগ্রিম ১০ হাজার দিলে আসবেন তা হলে আসবেন না এটাই সাফ করা। তারপরও মানুষ তাদের দাওয়াত দিচ্ছে, তাদের পিছে ছুটছে। অথচ যে মানুষটা না খেয়ে, কটুর পরিশ্রম করার পরও আল্লাহ্ কে সব সময় স্মরণ করছে তাদের কোনো খবরই রাখিনা আমরা। আমি তাদের বিরোদ্ধে সোচ্চার যারা টাকার বিনিময়ে ওয়াজ করে। ইসলাম টাকার বিনিময়ে ইসলাম প্রচার করতে নিষেধ করছে তা না মানলে গুনাহ হবে।
আপনাকে ধন্যবাদ
কামাল উদ্দিন
আমার মনের কথাই আপনার লেখনিতে তুলে ধরেছেন ভাই। প্রতি বছর এই ওয়াজ ওয়ালাদের প্রচুর চাঁদা দিতে হয় আমাদেরকে। কিছুদিন আগে এক টক শোতে তাহিরী মাওলানা বললো ওনাকে প্রতি ওয়াজে নাকি মিনিমাম এক লক্ষ টাকা দেয়, আর মাসে ওনি ৪০/৪৫টা এমন ওয়াজ করে থাকেন।
মাছুম হাবিবী
এখন হিসাব করেন এতদিনে কত টাকা লুটেছে। মানুষ না খেয়ে ওয়াজে টাকা দেয়। সওয়াবের জন্য টাকা দেয়। তারা কেউ জানেনা টাকা দিয়ে ওয়াজ শুনে কোনো ফায়দা নেই।
কামাল উদ্দিন
হুমম, আজো আমি ওয়াজ মাহফিলে কিছু টাকা দিয়াছি, বাধ্য হয়েই দিতে হয়।
ছাইরাছ হেলাল
আপনি কি নাস্তেক হয়ে গ্যালেন! ধর্মের বিরুদ্ধে কথা বলছেন!
খুবই কঠিন অবস্থা, আর অন্যের দোষ দিয়েই বা কী লাভ!
নিজের ঠিকানা-ই তো খুঁজি না।
মাছুম হাবিবী
যাদের মাথার মধ্যে গোবর ভরতি তারা এটাকে নিয়ে তর্ক করবে। মানুষ না খেয়ে ওয়াজে টাকা দেয় আর বক্তারা দুঘন্টা ওয়াজ করে সব টাকা নিয়ে ফাইভ স্টার হোটেলে গিয়ে পেট ভরে খায়। এটাই বাস্তবতা
আরজু মুক্তা
আপনার বক্তব্য ঠিক আছে। তবে, সবকিছুর বাড়াবাড়ি ভালো লাগেনা। হুজুরদেরও পেট চালাতে হয়। তাদেরও সংসার আছে।
মাছুম হাবিবী
একজন হুজুর এক ঘন্টা ওয়াজ করে ৪০ হাজার টাকা নেয়। একদিনে ২ টা মাহফিল করা উনাদের জন্য কোনো ব্যাপার না। অনেকে তিনটাও করে। এবার আপনি বলুন সর্বনিম্ন ৪০ হাজার টাকা নিয়ে যদি দিনে ২ ট্ মাহফিল করে তাহলে তার আর কি চাই? মাসে তো ২৪ লাখের উপরের টাকা আসে। একজন মানুষ মাসে ২৪ লাখ টাকা আয় করে এবার বুঝতে পারছেন কতটা নিচ্ছে ওরা? মানুষ না খেয়ে সওয়াবের আশায় ওয়াজে টাকা দেয়। অথচ কেউ জানেনা টাকা দিয়ে ওয়াজ শুনা হারাম। ইসলাম তাতে নিষেধ করেছে। তবে হ্যা ভালো হুজুর এখনো আছে তবে অধিকাংশ হুজুরাই টাকা নিয়ে ওয়াজ করে।
ইসিয়াক
এসব বক্তা দিয়ে ওয়াজ না করিয়ে এলাকার গরীব এতিম ক্ষুধার্ত মানুষের পেট ভরে খেতে দিন এতে তারাও খুশি আল্লাহ্ খুশি। চুক্তি করে বক্তা এনে ওয়াজ শুনে কোনো ফায়দা নাই ।
ভালো লাগলো।শুভকামনা রইলো ভাইয়া।
নুর হোসেন
ধর্ম ব্যবসার চেয়ে আর কোনো ব্যবসা নেই,
মুসলিমরা নিজেদের ধর্ম-কর্ম ঠিকঠাক মানলে এই কেচ্ছা কাহিনীর তথাকথিত বক্তাদের নসিহত শোনা লাগতো না।
আমার পছন্দের পোস্ট করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
জিসান শা ইকরাম
এই ওয়াজ মাহফিল মধ্য প্রাচ্যের কোনো দেশে হয়না,
এই উপমহাদেশের বাইরে ওয়াজ মাহফিল হয় না,
খুব অল্প সংখ্যক বক্তা ওয়াজে টাকা নেন না, অধিকাংশ বক্তাই টাকা নেন।
হেলিকপ্টারে করে ওয়াজ মাহফিলে আনা নেয়ার ইতিহাসও আছে দেশে।
শীত আসলে ওয়াজ মাহফিলের একটা প্রতিযোগিতা হয় পাড়ায় মহল্লায়।