এ কোন দেশে বসবাস (২য়)
গতকাল আমরা পাহাড় ধস, জলবদ্ধতায় চট্টগ্রাম শহর ও হাওড় নিয়ে আলোচনা করেছি, আজ করবো বাকি সমস্যা গুলো নিয়ে, আসুন তাহলে আলোচনা করা যাক।
৪) খাদ্য, আমাদের প্রধান খাদ্য হলো ভাত যা চাল থেকেই হয় আমরা সবাই জানি, কিন্তু এই বছর এই চাল নিয়েই এমন সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে যা আগের কোন বছর হয়নি আর তা হলো চাল সংকট এতো প্রকট হয়েছে যে, যার ফলশ্রুতিতে চালের দাম এখন আকাশ ছোঁয়া।
প্রতিবছরই ধানের বাম্পার ফলন হয় যা এইবার বাম্পার ডাউন হয়েছে, মোটা চাল যা এইদেশের প্রতিটি মানুষ খায়, যা সরকার দশ টাকা কেজি দরে খাওয়ানোর কথা, তা এখন ষাট টাকা হয়েছে, এই মূহুর্তে এই মূল্য মধ্যবিত্তদের তুলেছে নাভিশ্বাস আর গরীবদের পেটে মেরেছে লাথ (লাথি)।
সরকার বলছে হাওড়ের বন্যার কারণে সমস্যা হয়েছে কিন্তু আমাদের প্রশ্ন হলো, হাওড়ের কারণে তো মাত্র পাঁচ লাখ মেট্রিকটন ধানের সমস্যা হয়েছে, বাকি গুলো কই গেলো?
আসল কথা হলো, সরকার গতবছর চাল স্টক করেনি, গোডাউন খালি আর এই সুযোগে চাল আমদানিকারক, মিল মালিক, মুনাফাখোররা দিলো দাম বাড়িয়ে আর সরকার দিলো মুখে আঙ্গুল।
আমাদের খাদ্যমন্ত্রী এক কাটি বেড়ে বললেন, এইসব বিএনপির সিন্ডিকেটের কাজ, বাহ!
মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়, আপনারা কি শুরু করেছেন বলুন তো?
সব দোষ নন্দঘোস কি হয়, না হয়না।
তেমনি আপনার দায়িত্ব ছিলো যথাযথ ভাবে খাদ্য মজুত করা, এইসব ফড়িয়া মুনাফা লোভিদের দমন করা, কিন্তু আপনি কোন কাজেরই না তা আরেকবার প্রমাণ করলেন, আপনি এর আগেও আমাদের পঁচা গম খাওয়ানোর চেষ্টা করেছিলেন, মনে আছে কিন্তু আমাদের।
অন্য কোনো দেশের মন্ত্রী হলে ততঃখনাৎ পদত্যাগ করতেন, কিন্তু আপনারা করবেন না, লজ্জা আমাদের হয়।
আমাদের অনুরোধ হলেও একবার রাখুন, সকল ফড়িয়াদের ধরে ঢলা দিন, দেখবেন চাল ভুড় ভুড় করে বেড়িয়ে যাবে।
৫) আমাদের দেশের কোন মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রীর কাজ সবচেয়ে কঠিন জানেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় আর এই মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী মহোদয় এমন চাপে থাকেন যে, একসময় উনাদের মাথা আউলাইয়া যায়, মাঝে মাঝে উনাদের জন্য আমাদের দুঃখ হয়, ইশশিরে টাইপের।
আপনারা সবাই জানেন, এই সরকারের আমলে যত খুন, ধর্ষণ, নারী নির্যাতন এতো বেশি বেড়েছে, যা অন্য সময়ের তুলনায় এলার্মিং, কিন্তু আমাদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীকে জিজ্ঞেস করলেই উনি বলেন কিনা, “এইসব বিচ্ছিন্ন ঘটনা”, বুঝেন ঠ্যালা।
এই মুহুর্তে সব চাইতে বিপদজনক ভাবে বেড়েছে ধর্ষণ, ছোট চার পাঁচ বছরের বাচ্চা পর্যন্ত বাদ যাচ্ছেনা এই ধর্ষকদের হাত থেকে, এই দুই তিনদিন আগেও বাড্ডায় ধর্ষিত হলো একটা শিশু, গত সপ্তাহে হবিগঞ্জে দ্বিতীয় বার ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে জনসমুক্ষে পিটিয়ে মেরে ফেলা হলো এক মহিলাকে, বনানির রেপ কান্ডে তো বড় রাঘব বোয়াল ধরা খেলো, আর কতো বলবো?
খুনও যেন দুধভাতের মতো হয়ে গেছে, প্রেমে ব্যর্থ হয়ে স্কুল ছাত্রী রিসা হত্যাকান্ড, সিলেটে দুই তিনটা মেয়েকে কুপিয়ে মেরে ফেলা, যার মধ্যে একজন তো মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এলো, বকাটেদের অত্যাচারে কতো মেয়ে, তাদের বাবা ভাই যে আত্মহত্যা আর খুন হচ্ছে যা অহরহ ভাবে আমাদের কানে আসছে।
স্বামি ও শশুরালয়ের নির্যাতনে কতো নববধুর মৃত্যু হচ্ছে তার খবরও আমরা প্রতিদিন শুনছি।
কিন্তু এইসব কেন হচ্ছে তার জবাব কি সরকার খুঁজে দেখেছে কখনো, দেখা উচিত ছিলো নিশ্চয়।
এর প্রধান কারণ হলো সামাজিক অবক্ষয়, আইনের দুর্বলতা, আইন প্রয়োগকারীদের অতি লোভী আচরণ।
সরকার যদি যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করেন সকলের জন্য কর্মসূচী বা চাকরীর ব্যবস্থা, তাহলে এই সামাজিক অবক্ষয় রোধ অনেকাংশে সম্ভব।
আইনকে আরো কঠোর করা উচিত, বিশেষ করে ধর্ষকদের বিরুদ্ধে তো অবশ্যই কঠিন আইন করা উচিত, এমন হতে পারে প্রমাণ সাপেক্ষে ধর্ষককে ক্রসফায়ারে দেওয়া, অথবা তার মেসিন কেটে নেওয়া, প্রমাণ না পাওয়া পর্যন্ত এদের কোন জামিন দেওয়া যাবেনা, এমন আইন করা, ধর্ষককে কোন জেল জরিমানা নয় ডাইরেক্ট ফাঁসি, এমন কঠিন আইন না করলে ধর্ষণ থামবেনা, Mind It মাননীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী মহোদয়, আরো কঠিন হোন।
চলবে…..
১৬টি মন্তব্য
মিষ্টি জিন
কাকে বলেন ইন্জ্ঞা ভাই ,এসব কেউ শুনে না। যাদের শোনার কথা তারা বলে বসবে সাধারন মানুষ ভাত খেতে না পারলে পোলাউ খাক।
চারিদিকে শুধু দূরনীতি। যে পরযন্ত আইনের সঠিক ব্যাবহার না হবে সেই পরযন্ত কোন সমস্যারই সমাধান হবে না।
ইঞ্জা
আপু আমার কথাটাই আপনি বলে দিলেন, আমার কথা হলো জনগণ বুঝুক জানুক আর এতেই বুঝতে পারবে দেশের উন্নয়ন কিসে, ধন্যবাদ অশেষ আপনার দারুণ মন্তব্যের জন্য।
ছাইরাছ হেলাল
আমরা জানলাম চাল আমাদের উদ্বৃত্ত, তা রফতানিও করি,
এখন দেখছি পৃথিবীর মধ্যে মোটা চালের দাম এখানেই বেশি, আবার জানলাম দাম বেশি হলে নাকি
কৃষকের জন্য ভাল!!
ম্যাংগো পিপল!! এবারে ভাতের উপর চাপ কমানোর কোন উপদেশের অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
ইঞ্জা
আলু খেতে বলবে, ওদের দোষেই আজ আমাদের এই মরণ, আর ম্যাংগো পিপলসরা তো বলদের বলদ, তাদের মুখে কোন রা নেই। :@
ছাইরাছ হেলাল
আপনি ৫৭ ধারার খুবই কাছাকাছি!!
ইঞ্জা
মাথা টুকার ইমো কই ভাইজান, একটু টুকি।
নীহারিকা
কিছুই বলার নেই। বলবোও না কারণ কেউ শুনবেও না।
ইঞ্জা
দাদী এইখানেই সমস্যা, আমাদের বলার অনেক কথা থাকার পরও আমরা চুপ মেরে থাকি।
আবু খায়ের আনিছ
অস্থিতিশীল বাজার হলে সরকারের কাছে শত শত সমাধান আছে। দাম বৃদ্ধির সাথে চালের ঘাটতি ফালতু কথা, বরং বিগত বছরগুলোতে সরকারের গোদামে খাবার নষ্ট হওয়ার রেকর্ড আছে।
শোচনীয় অবস্থায় উত্তরণের জন্যই সরকার, দেশের মানুষ অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে যাচ্ছে, সরকার কেন চাল নেই দোহাই দিচ্ছে? আমদানী করে না কেন?
আঠাশ হাজার কোটি টাকা রির্জাভ দিয়ে কি করব? খেতে না পারলে?
আইন শৃংখলা পরিস্থিতি ভালোই আছে, কারণ কেউ কথা বলার মত নাই। কথা বলতে গেলেই আইনশৃংখলার অবনতি হয়ে যাবে। ( মূর্খের শাষণ চলছে দেশে। )
ইঞ্জা
যথার্থ বলেছেন ভাই। (y)
নীলাঞ্জনা নীলা
ভাইয়া কী আর বলবো বলুন!
আমাদের দেশটাতে এখন হীরক রাজার রাজত্ব চলছে।
ইঞ্জা
একদম ঠিক ধরেছেন আপু। (y)
শুন্য শুন্যালয়
খুন, ধর্ষন, সবকিছুর দাম ঊর্ধ্বগতি, পাহাড়ি বাড়ি পোড়ানো, সংখ্যালঘু পেটানো, সব, সবকিছু বিএনপির কাজ। বুঝুন তাহলে দেশে কাদের দাপট। মরা হাতিও লাখ টাকা। আমি বিএনপিতে জয়েন করুম।
ইঞ্জা
আরেকজনের উপর দায় চাপানোর সংস্কৃতি চলছে এই দেশে আর বাকিরা যেন ধোয়া তুলশী পাতা।
সৈয়দ আলী উল আমিন
আমি আগেও বলেছি এখনও বলছি—– প্রতিশোধ
ইঞ্জা
কতো আর প্রতিশোধ নেবে, সব কিছুই তো খেয়েই শেষ।