আজ অভিকের খুব মন খারাপ।বাইরে বৃষ্টি হচ্ছে অথচ সে বের হতে পারছে না।অভিক বাসায় নেই মনে করে পাশের রুমের ভাইয়া ফ্লাট বাইরে থেকে তালা মেরে চলে গেছে।বুয়া ও আজ আসতে পারবে না।বুয়াকে চাবি দেয়া হয়নি।সকাল থেকে মাত্র দু পিচ বিস্কিট পেটে পড়েছে।দুপুর গড়িয়ে এখন বিকেল প্রায়।ওদিকে অহনা কাল রাতে ঝগড়া করে ফোন অফ করেছে এখনও অফ।অনেক ক্ষন ধরে ল্যাপ্পিতে বসে থেকে মাথায় ঝিম ভাব ধরে গেছে।পেটে ক্ষুদা থাকলে পুরা দুনিয়া অসহ্য লাগে।মাথার নিচে বালিশ টেনে শুয়ে পড়েছে অভিক,ভাইব্রেটের শব্দে ফোনের দিকে তাকায় সে।ইশশ মা কেন এখন ফোন দিলো??বলেই ফোনটা রিসিভ করে কানে কাছে এনে বলে-
:হ্যালো মা
-কেমন আছিস??
:ভাল,তুমি??
-ভালরে।খাইছিস দুপুরে??
:হুম
-কি হইছে তোর??
:মা কালকে একটা এসাইন্মেন্ট জমা দেয়ার কথা।সেটা নিয়েই কাজ করছিলাম,তাই একটু টায়ার্ড রাতে কথা বলবো নে।
-আচ্ছা ঠিক আছে কাজ কর।নিজের খেয়াল রাখিস।সন্ধ্যায় কিছু খেয়ে নিস বাবা।
:ওকে মা।বাই
ফোনটা কেটেই মনে হলো মন খারাপ আরো বেড়ে গেছে।মায়ের সাথে মিথ্যা না বলে উপায় ছিলো না।নয়ত দেখা যাবে সে না খেয়েইও থাকবে কটাদিন।থাক দু একটু মিথ্যা বললে কিছু যায় আসে না।
চা বানাতে গিয়ে দেখে সব আছে চা পাতা নেই।কি আর করার গরম পানিতে মসলা ছেড়ে দিয়ে এক মগ মসলা পানি নিয়ে বারান্দায় বসে অভিক।৬ তালার উপরে বাসা হওয়ার সুবাধে সামনে একটু ফাকা পাওয়া যায়।নয়ত এই শহরে আকাশ দেখার জায়গা কই??মগে ঠোট ছোয়াতেই বিশ্রি একটা স্বাদ লাগলো জিহবায়,সাথে পুড়েও গেলো।মেজাজ খারাপ করে পুরা মগ খালি করে একটা সিগারেট জ্বালায় অভিক।এটা শেষ সিগারেট রাতে আর কেউ না এলে না খাওয়ার সাথে সিগারেটও খাওয়া হবে না।ভাবতেছে একটু খেয়ে বাকিটুকু রেখে দিবে সন্ধ্যার পর খাওয়া যাবে তবে।এই কথা ভাবতেই মুখে একটা শুকনো হাসি চলে আসে।পকেটে কিছু একতা লড়ছে ভেবে হাত ঢুকাতেই বুঝতে পারে ফোন কাপছে।বের করে অবাক হয় অহনার ফোন।
:হ্যালো
-তুমি আমাকে ফোন দিলা না কেন???
:আরে কতবার ট্রাই করছি ফোনতো অফ ছিলো।খাইছো বাবু??
-খাওয়া খায়ির হিসাব বাদ।এখন কও কতবার ট্রাই করছে।যদি এতই ট্রাই করছো তাইলে এখন যে আমি ফোন অন করে বসে আছি তোমার ফোন আসলো না কেন??
:ওকে স্যরি।ঝগড়া করার মুডে নাই।
-কি আমি ঝগড়াটে??যা তোর লগে কথা নাই,তুই কোনদিন আমারে আর ফোন দিবি না।আমার সামনেও পরবি না।
:আচ্ছা ঠিক আছে।মেনে নিলাম।
-মেনে তো নিবাই,নতুন প্রেমে পড়ছো তাই না??আমি পুরান হইয়া গেছি??যা তোর লগে ব্রেক আপ।আরজিন্দিগিতেও তোর মুখ দেখুম না।
:হ্যালো হ্যালো।।
উফফফ ফোনটা কাটছে।এরপর অনেক বার ট্রাই করে অভিক না ফোন অফ।জেদ্দি মাইয়া।জানতেই চাইলো না আমি কই??কেমন আছি??খাইছি কিনা???থাক ও না জানলেই ভাল।শুধু শুধু টেনশন করবে।টেনশন করলে এইটার আবার জ্বর আসে।এর থেকে দুটা দিন রাগ করে থাকা ভাল।ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়ে অভিক।হয়ত এই ঘুম আর কোনদিন ভাঙ্গবে না।
২৪টি মন্তব্য
লীলাবতী
অভিকের ঘুম কেনো ভাংবে না? অবশ্যই জেগে উঠবে সে।
মা এর সাথে মিথ্যে বলা ভালোনা।
ভালো লেগেছে খুব। -{@ (y)
নীল রঙ
আসলে লেখাটা এখানে এভাবে শেষ করে দেয়ার মানেটা হচ্ছে আপনি প্রশ্ন করবেন তাই।আসলে ঠিক এই মূহুর্তে শেষ বা একটা লাইন পাঠকদের ভাবাবে এটা কি হলো বা কি হতে পারে?বা কি হবে এমন কিছু প্রশ্ন মাথায় আসবে চিন্তা করেই লাইনটা এখানে শেষ করা।।আর মা কে মিথ্যা বলতে হয়,বিশেষ করে খাওয়া নিয়ে।নয়ত মায়েরা খেতে পারে না।নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বললাম কথাটা।
আর আপনার ভাল লেগেছে শুনে খুব ভালো লাগলো। 🙂
লীলাবতী
এর মানে লেখক ফাদ পেতেছেন, আমি পাঠক হয়ে ফাদে পরেছি? :p
নীল রঙ
হে হে হে।।ব্যাপারটা সেরকম কিছু না।আসলে এক্সপেরিমেন্ট করলাম একটা লেখা নিয়ে।ব্লগে এইটা মাত্র আমার দ্বিতীয় পোস্ট।তাই একটু এদিক ওদিক করে দেখা।যেটা চেয়েছি সেটায় বলতে পারেন আমি সফল। 🙂
প্রহেলিকা
পড়লাম আরেকটি গল্প ভালো লাগলো। ভালোতো লিখেনি সাথে আবার ফাঁদও পাতেন তাই না???ভালো অনেক ভালো জানিনা ফাঁদে ফেলে কি মজা পান তারা তারই গল্পের শেষ কথাটার ব্যাখা করুন ঘুম ভাঙ্গবেনা কেন??????জলদি করেন কইলাম। ^:^ ^:^ ^:^
নীল রঙ
খেয়াল করুন “হয়ত” কথাটা লেখা আছে 😉
প্রহেলিকা
ভালই জানেন আপনি। যাক একজন গল্পকার পেয়ে অনেক ভালো হলো। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। 🙂
নীল রঙ
আসলে ব্লগে এই নিয়ে দুইটা পোস্ট মাত্র।এর আগে ট্রাই করি নাই।।আজ দুপুরে হঠাৎ করে এখানে চলে আসা।আসলে বই পড়ার অভ্যেস নেই আমার।ভুল টুল হলে ক্ষমা টমা করবেন।
প্রহেলিকা
ক্ষমা টমা এসব কিছুই চাইতে হবে না। ভুল হলে আমরাই বলব ঠিক করে দিতে। আমরা সবাই এখানে পরিবারের সদস্যের মত থাকব। আপনার দুটি লিখাই ভালো হয়েছে। আমার খুব ভালো লেগেছে সেজন্য আপনাকে শুভেচ্ছা। সময় করে আসবেন এখানে আমরা আপনাকে পেলে অনেক খুশি হবো, ভালো ভালো গল্প পড়তে পারবো। আশা করি পাব আপনাকে।
নীল রঙ
হুম চেষ্টা করবো প্রতিদিন সময় দিতে।মন খারাপ থাকলে লিখে ফেলবো আবার।আগে ফেবুতে যা লিখেছি সেগুলো দিতে ইচ্ছে করে না এখানে।আশা করি পাশে থাকবেন।। 🙂
প্রহেলিকা
পাশে অবস্যই থাকবো ইনশাল্লাহ। কিন্তু আবার সেই অপেক্ষা করতে হবে কখন আপনার আবার মন খারাপ হবে। দোয়া করি প্রতিদিন যাতে আপনার মন খারাপ থাকে আর আমরাও যাতে লিখা পাই। আর শেয়ার করতে পারেন আপনার পুরোনো লিখাগুলো সাথে আমরাও সৌভাগ্যবান হবো পড়তে পারলে।
নীল রঙ
হা হা হা।বেশি অপেক্ষা করে থাকতে হবে না।মন খারাপের সাথে বন্ধুত্বটা জমে গেছে প্রতিদিন আড্ডা দেয়া হয়।চা খাওয়া হয়,ধুম্রশলাকা ঠোটে নিয়ে শব্দের মালা গাথা হয়।
আর ধন্যবাদ লেখার কিছু না পেলে পুরান গুলো শেয়ার করে দিবো নে। 🙂
প্রহেলিকা
যাক বন্ধুত্ব যখন অনেক গভীর তাহলে তো আশা করাই যায় তাই না???? অনেক অনেক ভাল লাগলো আপনাকে এখানে পেয়ে।
নীল রঙ
আপনাদের কাছে পেয়ে আমারও ভাল লাগলো।ধন্যবাদ
জিসান শা ইকরাম
ভালো লেখেন আপনি।
নীল রঙ
ধন্যবাদ 🙂
ছাইরাছ হেলাল
পড়লাম , লেখা নিয়ে নিরীক্ষা করছেন দেখে ভাল লাগল ।
দুম করে শেষ করে ফেলাটাও লক্ষ্য করেছি ।
লিখুন নিয়মিত ।
নীল রঙ
নিয়মিত লেখার চেষ্টা করবো।আপনার ভাল লেগেছে শুনে খুশি হলাম।ধন্যবাদ 🙂
ব্লগার সজীব
ভালো লেগেছে লেখাটি । নিয়মিত লেখা চাই ।
নীল রঙ
ধন্যবাদ লেখাটি পড়ার জন্য। 🙂
সিনথিয়া খোন্দকার
টুকটাক কয়টা কথা। কিন্তু পাঠককে হঠাত করে বাইশ- তেইশ বছর বয়সে ফিরিয়ে নিয়ে যাবার ক্ষমতা আছে লেখায়। ভাল লাগল।
নীল রঙ
আপু উপলব্ধির উপর কোন মাইর নাই।পড়ার জন্য ধন্যবাদ। 🙂
শুন্য শুন্যালয়
গল্প তো বেশ লিখেছেন. এটা দ্বিতীয় গল্প বলছেন, প্রথম টাতো মিস করে ফেলেছি, পড়তেই হয় এখন.
চা এর বিকল্প যে মসলা পানি হতে পারে এটাতো মাথাতেই আসেনি এতদিন.
লিখুন আরো নীল রং মিশিয়ে -{@
নীল রঙ
কষ্ট করে পড়ার জন্য ধন্যবাদ।