৩দিন পরঃ
রাত ২টা।প্রসূন বারান্দায় বসে সিগারেট ফুকছে।হঠাৎ দুনিয়া কাপিয়ে মুঠোফোনটা বেজে উঠে।অপরিচিত নাম্বার দেখে মুখ কুচকে কানে উঠায় ফোনটা।
:হ্যালো(মিস্টি গলা শুনে প্রসূন বুঝতে পারে এইটা তার মায়াবতি)
-হাই।
:এই ছেলে এতরাতে কেন সিগারেট খাচ্ছেন??
-আরে কই আপনি??আর আমি যে সিগারেট খাচ্ছি তাই বা জানলেন কি করে??
:আপনার সামনের বাড়ির চার তালায় আমার বাবা থাকে।
-আরে।হাই কি খবর??তিন দিন কত খুজেছি জানেন আপনি??
:হুম জানি।প্রতিদিন মুখকালো করে ছেলেটা বারান্দায় বসে সিগারেট টানে।মায়াবতিকে নিয়ে স্ট্যাটাস দেয়।আমি সব দেখি ছেলে।
-সেদিন ফোন দিলেই পারতেন।এত দেরি করলেন যে??
:অপেক্ষা মধুর হয় শুনেছি।আমি এ সময়টা আপনাকে আমার জন্য ভাবার সময় দিয়েছি যে।
-কাল বিকেল চারটা সিটি ইন রেস্টুরেন্ট।রাখলাম,ঘুমাতে গেলাম।সকালে উঠে ফেসিয়াল করতে হবে যে।
:আরে আরে কই যায়??আমি কি বলেছি যে আমি আসবো??
-আমি অপেক্ষা করবো।গুড নাইট।টেইক কেয়ার।
মায়াবতিকে কিছু বলতে না দিয়েই ফোনটা কেটে রুমে ঢুকে পরে প্রসূন।জানালার পর্দা সরিয়ে দেখে মায়াবতি রাগি মুখ নিয়ে এদিকেই তাকিয়ে আছে।যাক কাল তোমাকে আসতেই হবে মায়াবতি।চিৎকার দিয়ে কথা গুলো বলেই বেডে গিয়ে ধপাশ করে শুয়ে পড়ে প্রসূন।
পরের দিন বিকেল চারটা।খুলনা শহরের সবচেয়ে সুন্দর হোটেলের রেস্টুরেন্টে বসে আছে প্রসূন।গায়ে নীল সার্ট আর ব্লাক প্যান্ট।আজ মায়াবতিকে যদি নীল ড্রেস পরে আসতে বলতো।উফফ ভুল হয়ে গেছে।ঘরির কাটা থেমে নেই চলছে।বসে থাকার এক ঘন্টা পাড় হচ্ছে এখনও আসার নাম নেই।মায়াবতি কি আসবে না।ফোনে নাম্বার ডায়েল করে প্রসূন।না সুইচ অফ।পাচটা ত্রিশ বেজে গেছে।উঠতে যাবে এমন সময় দরজা ঠেলে সত্যিকারের নীল রঙের এক মায়াবতি কে আসতে দেখে।চোখাচোখি হতেই মায়াবতি হেসে দেয়।প্রসূন টেবিল থেকে গোলাপ তুলে হাতে দিতে দিতে বলে-
-এত দেরি করলেন যে??
:ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম।উঠে আসতে লেইট হয়ে গেলো।অনেকক্ষন অপেক্ষা করে আছেন।স্যরি
-থ্যাংকু??
:ফর হোয়াট??আসছি এ জন্য??
-উহু।নীল ড্রেস পরে আসছেন তাই।
:আপনি মনে মনে তাই ভাবছিলেন না??
-হুম।
:আপনার স্ট্যাটাস যখন দেখি তখন রেড়ি হয়ে গিয়েছিলাম।দেন আবার জামা কাপড় চেঞ্জ করে এটা পরে আসছি।
-আপনি একটা পাগলি।
:হুম প্রহেলিকার মায়াবতি যে।
-পছন্দ হয়েছে নামটা।
:নিজের প্রোফাইল নেইম চেঞ্জ করে দিয়েছি।পছন্দ হবে না মানে।পুরাই পছন্দ হইছে।
-আমার সাথে তো এড নেই আপনার।আচ্ছা এখন করে নিচ্ছি।তার আগে বলুন কি খাবেন??
:আইসক্রিম।
-ওকে।(একটা আইসক্রিম আর একটা কফির অর্ডার দিয়ে প্রসূন চুপচাপ বসে আছে।)
:আচ্ছা আমি কি দেখতে এতটাই বাজে লাগছি যে আপনি আমার দিকে একদমই তাকাচ্ছেন না।
-আপনার চোখে মায়া আছে।সেই মায়ায় একবার জড়িয়ে গেছি।এবার তাকালে হয়ত মরার আগে সে মায়া পিছু ছাড়বে না।ভয় হচ্ছে।
:আমি কি আপনার পাশে এসে বসতে পারি।
-হুম
:হাত ধরি??
-হুম
:গাল টেনে দেই??
-হুম।
:কি হু হাম করছেন??
-আমি তোমাকে ভালবেসে ফেলেছি মায়াবতি।তোমার চোখের কোনে হুট করে জমে উঠা এক টুকরো নোনা জলে মরে যেতে চাই।
:আমি মরে যেতে দিলে তো।
-পাশে রাখবে তো??
:ছেড়ে যাবো কই???
-হাত ছেড়েই তো বসে আছো।
:নতুন পরিচয়ে ধরবো বলেই তো ছেড়ে দিছি।এখন থেকে মায়াবতিটা শুধুমাত্র এই ছেলেটার হাত ধরে থাকবে।ভালবাসি।
-আমিও ভালবাসি।
১২টি মন্তব্য
খসড়া
ভালবাসা বাসি চলুক।
নীল রঙ
হুম ভালবাসা বাসি চলুক।বাস্তবে না হোক গল্পে হলেও চলুক। 🙂
মশাই
পড়ছি আমি। আজকে অনেক ব্যস্ত তাই কিছু বলতে পারছি না পরে এসে ঘুরে যাবো আবার।
নীল রঙ
ওকে।
শুন্য শুন্যালয়
গল্পের মতো সবকিছুর এমন সুন্দর সমাপ্তি হলে ভালোই হতো।। ভালো লিখেছেন, প্রথম পর্ব দুটো একটু বেশি ভালো লেগেছে 🙂 ।।
লিখুন আরো।।
নীল রঙ
ছোট গল্প লিখে অভ্যস্ত।বড় গল্প বলেই তাল মিলিয়ে উঠতে পারছিনা। 🙁
পুষ্পবতী
রোমান্টিক প্রেমের গল্প। ভালো লাগলো।
নীল রঙ
ধন্যবাদ 🙂
মিসু
মায়ামায় গল্প।
নীল রঙ
মায়ায় দুনিয়া ভরা।মায়ায় বেচে থাকা।গল্প তো মায়াময় হবেই।কি বলেন??পড়ার জন্য অসংখ ধন্যবাদ।
জিসান শা ইকরাম
সুন্দর, স্নিগ্ধ, মায়াময় সমাপ্তি।
এমন আরো লিখুন।
নীল রঙ
ভালবাসার শুরু এখানে।এখনও ঢের পথ চলা বাকি।পরের অংশটুকু কাল দিয়ে দিবো।নাকি এখানেই শেষ করবো বুঝতেছি না। 🙁