চারিদিকে ডামাডোল! অসহিষ্ণু বাস্তবতা আমাদের ভাবতে বাধ্য করে চালের দাম, ডালের দাম, নানাবিধ পণ্যের ঊর্ধ্বশ্বাস। তারপরও আছে পরিচালিত নানাবিধ ঝঞ্ঝাট ব্যস্ততা। এই যেমন ধরুন, সোনেলার উঠোন বাড়ির কথা? মেনটেইনস কি কম ঝক্কির কথা? কতিপয় পরিচালক, উপদেষ্টা মিলে দিনরাত ভাবনা চিন্তায় মাথার তালু কেশহীন করে ফেলছেন। একেকজন সদস্য ব্লগার বৃন্দ একটা ফ্রি প্লাটফর্ম পেয়ে, নিজেদেরকে হামবড়া লেখক / কবি ভাবতে কি গর্বটাই করে করে ভুঁড়ি বাগাচ্ছেন বলেন তো! এই …. একটুও ভাবছেন নাতো! আমাকে বাদ দিয়ে আমি এরকম ভাবছি? খবরদার মোটেই তা ভাববেন না। শোনেন সবাই! প্রশংসা শুনতে ভালো লাগে না এমন খচ্চর মার্কা মিথ্যা কথা বলার পাবলিক হাতে গুণে খুব কমই পাবেন। তো আমার দোষ কি? আমি আবার একটু হুজুগে বুড়ি তো! সবাই সিরিয়াস বিষয়ে যখন ক্যাচর ক্যাচর করতে থাকে, আমি বড্ড অধৈর্য হয়ে উঠি, ধুর….. এত্ত ভারী ভারী কথার রেলগাড়ি কাঁহাতক সহ্য হয়? অনলাইনে আড্ডাবাজি সেতো শুধু বুড়ো আঙুলের কর্মদক্ষতা/ বা যোগ্যতা। অর্থাৎ বুড়ো আঙুলটা সচল আছে তো আড্ডাবাজি হচ্ছে আঙুল আর মস্তিষ্কের হাডুডু খেলা। আরুজু মুক্তা শুভ সন্ধ্যা জানালো তো আমি বললাম- চা না হলে শুভ সন্ধ্যা জমবে কেন? তিনি পিঠার ছবি দিয়ে বললেন – খান” আমার তো চায়ের তেষ্টাই মিটলোনা! দাবিও ছাড়া যাবেনা, আরে বাপু! হাওয়ায় হাওয়ায় ই যদি খাব তো চা কেন ছাড় দেব? ও মাগো মা! শুধু চা? তিনি ঝালমুড়ি সহ চায়ের কাপ ফটোগ্রাফি করে ছেড়ে দিলেন আড্ডার টেবিলে। ব্যস্…. হয়ে গেলো সান্ধ্যকালীন চা জলখাবার। এখন? আমি বন্যা লিপি বলে কথা!! এত অল্পতে তো তুষ্ট হওয়া এই রাগী, জেদী, বেশি বকবক করা বুড়ি লিপির কম্ম না। সাবিনা ভালো জানে আমার সম্পর্কে, সে কথা কইতে সুযোগ পাইলে ভাবের কাব্য যখন তখন হুমড়ি খেয়ে পড়বেই পড়বে। এখানেও সেই চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে বলে উঠলাম- নাও এবার একেকজন এক এক করে কিছু বলো। হয়ে যাক আমাদের কাব্য আড্ডা” ওমা! মহারাজ কয় কি? মহারাজ কয়।, এ নাকি সম্ভব না। এটা কোনো কথা হলো ? শব্দের মহারাজ যদি বলে যখন তখন কাব্য হয় নাকি? আমি না ডরাইয়া যাই কই কন তো আপনারা ? কিন্ত….. আমি তো বন্যা! এত তারাতারি হাল ছেড়ে দিয়ে নৌকা খালি খালে ভাসাইয়া দিতে রাজি না। বললাম – যায় যায় । আরজু মুক্তা আবার টপিক চায়। আরো ধ্যাত্তোরি! কিসের টপিক?
আমি শুরু করলাম, আপনারা লেজুড় ধরেন…….
বন্যা লিপি-
বিষয় আশয় বুঝিনা যা আসে মনে তাই নিয়েই চলুক না, যা হবার তা হবে, এত ভাবলে চলেনা।
ছাইরাছ হেলাল-
এক দঙ্গল কবির ভীড়ে কী-ই-বা লিখি! কে বা কাকে/আমাকে দেখে!
আরজু মুক্তা-
আয়নার উল্টো পিঠে প্রতিবিম্ব চলুক না আড্ডা যা আছে আবছায়ায়।
ছাইরাছ হেলাল-
আঁকড়ে ধরে প্রস্তরখণ্ড
ঝরনাজলে কী ঝরে পড়ে পাপড়িগুলো
কমলার রঙে রঙে;
সুপর্ণা ফাল্গুণী-
বসন্তের কুহকে পাপড়িগুলো ঝরুক না,
স্মৃতির আয়নায় একটুখানি মন পুড়ুক না।
বন্যা লিপি-
ব্যস্ততা দেখি অ-ব্যস্ত চোখের জ্যোতিতে,
আকরিক পাথরের বুকে লিখে রাখি না বলা কথাদের আবদার।
ছাইরাছ হেলাল-
হনুমান/বাদড় আর বেকুবের পদছাপ,
এখানে ওখানে, মিথ্যে জ্ঞানের খোলসে অজস্র শয়তানি মনে-প্রাণে;
তবুও রেশমী স্রোত-শব্দেরা ঘিরে থাকে তুমুল প্রত্যাশার মনোরম সমতল সোনেলা-দেয়ালে;
মুক্তির ভিড়ে মনোরম কুয়াশার শিশির বিন্দুতে।
সুপর্ণা ফাল্গুণী- –
সোনেলার প্রাচীরে সোনা গেঁথে রয় অবচেতন মনে,
তাইতো উঁকিঝুঁকি বেলা-অবেলায় আনমনে।
আরজু মুক্তা-
তবুও কবিতারা পাক
মুক্তি-কুয়াশা সরিয়ে আসুক বসন্ত-শিমুল
পলাশে লাগুক আগুন
সোনেলার পাতায় পাতায় লাগুক রঙ
বন্যা লিপি-
কবিতা বা মোহময় কথাদের রঙিন সেসব শব্দ!
কুয়াসা চিড়ে আনুক তবে একটুকরো রোদের আলো।
ভুলেরই বা সাধ্যি কী সেথায় রয়েছি খাড়া যেখানে এতশত আলোকবর্তিকা
ছাইরাছ হেলাল-
গোলেমালে ভালমন্দে কত কী রয়ে/থেকে যায়না-খোলা না-বলা দিনের অগোচরে
ভবিতব্য ই জানে, জানা না-জানার শেষ ঠিকানা।
চারপাশে শুধুই কঠিন বাস্তবতা, পরাবাস্তবতা ও।
বন্যা লিপি-
হিসেবের লাল ফাইলে দিনের ক্লান্তি ভর করে থাকে/ থাকবে
এরই মাঝ থেকে তুলে নেই বাস্তবতার একটুকু
বেঁচে বর্তে যাবার সহজ উপমায়িত অনুষদ।
দোষ কি তাতে হয় যদি সময়ের কাছে সময়ের অল্পকিছু বেহিসেবি খরচ!
ছাইরাছ হেলাল-
ফুলেরা হেঁটে/ছুটে চলে যায়
বাতাস-নদীর জলস্রোতে,
তবুও সূর্যোদয়ের দৈববাণী ভেসে আসে শিশিরে শিশিরে।
————————–!
অবশেষে আমাদের আড্ডাবাজি কোন মাত্রায় এসে শেষ হলো এবার বাকি ব্লগাররা একবার ভাবুন তো!!
একেবারে প্রথম প্রয়াস হিসেবে মন্দ হয়নি কি বলেন সবাই?
এটুকু বলতে পারি, আমাদের এই অভিনব চা- পানের আড্ডাবাজি জারি রাখার জন্য আমি কোমড়ে শাড়ি ছাড়াই আঁচল বাইন্ধা আদাজল খাইয়া লাইগা পরুম……
২১টি মন্তব্য
ছাইরাছ হেলাল
এমন সুন্দর ও হৃদয়গ্রাহী আড্ডা হয়-নি/হয়-না বহুদিন।
আপনই শুরু করেছেন, চালু রাখুন, সাথে আছি থাকবো ও, যদিও নিভৃতচারীরা আড্ডা বাজ হয় না।
তবে সঙ্গদোষ বোলে কথা!!
বন্যা লিপি
অ-হৃদয়গ্রাহী থেকে হৃদয়াগ্রাহী করে তোলার দায় দায়িত্ব হস্তান্তর যোগ্য। যে কেউ সার্থক হবার দৌড়ে লম্ফ ঝম্ফ দিতেই পারে। আমি রাস্তা দেখাইয়া দিলাম। এবার হৃদয় টানতে যে কেউ সফল হউক।
ছাইরাছ হেলাল
‘অ-হৃদয়গ্রাহী’ টাইপো ছিল ঠিক করে দিয়েছি।
সাবিনা ইয়াসমিন
আপাতত কবিতার বৃষ্টিতে ভিজে যাচ্ছি, খরখরে বসন্তের দিনে এমন একটা বৃষ্টির প্রয়োজন ছিলো।
ভাবনা সব এখনকার জন্য তুলে রাখলাম, আসবো আবার এই পোস্টে, এইদিনেই 🙂
বন্যা লিপি
আহহা তুমি বৃষ্টিতে ভিজছ? আমাকেও সঙ্গে রেখো।বড্ড দহণ শুরু হয়ে গেছে। আমার হুদাহুদি কান্দন আইতাছে😢😢
সাবিনা ইয়াসমিন
বৃষ্টিতে ভিজে অসুখ নিয়ে এ’কদিন বিছানাতেই ছিলাম। তুমিকি এখনো শুধুশুধু কাঁদছো!!
পপি তালুকদার
দুপুরের খাবারের পর আড্ডাভাজদের আড্ডা দেখে কিঞ্চিৎ মন( অনেক দিন আড্ডা দেয়া হয় না তাই) খারাপ হলেও বেশ ভালো লেগেছে বলতে হবে।
আড্ডা চালু রাখুন………..
বন্যা লিপি
আরে মন খারাপ করবেন কিল্লাই। আয়া পড়েন পিড়ি পাইতা বইসা পড়েন। আপনার বিখ্যাত সাচি পান নিয়া বসেন। কতক্ষণ পরপর আমারে একটা করে পান বানাইয়া গালে পুইরা দিলেই ঝাক্কাস আড্ডাবাজি জমে উঠবে দেখবেন। মন খারাপ দেখবেন হাওয়া খুঁজবে পালাবার জন্য
পপি তালুকদার
হা হা হা সে দারুণ বলেছেন…
সুপর্ণা ফাল্গুনী
আহ্ এমন ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আড্ডা মনটাকে কিছুক্ষণের জন্য হলেও চাঙ্গা করে দেয়। আড্ডাবাজদের জন্য অফুরন্ত শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইলো। সবাই মন্তব্য করলে আরো ভালো লাগবে। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন সবাই
বন্যা লিপি
আহমনে একের নিরস ফাগুন দি! রসকষহীন প্রাণী। এট্টুও আড্ডা জমাইতে পারেন না। খালি হাসেন দাঁত বাইর কইরা। বকর বকর করেন আমার মত,
সুপর্ণা ফাল্গুনী
😁😁 সবাই তো সমান বলতে পারেনা। আবার সবাই বললে শুনবে কে?? আড্ডা ও সবাই জমাইতে পারেনা
বন্যা লিপি
এইরে!!! আমনে কি মাইন্ড খাইলেন নি দি? আর যাই খান মাইন্ড খাইয়েন না, এডা তো মজার আড্ডা, যা খুশি তাই কমু, খালি গিল্লা হজম কইরালাইতে হইব
সুপর্ণা ফাল্গুনী
নাহ্! মাইন্ড খাবো ক্যান? গিলতে হইবো 🤣🤣। অফুরন্ত ধন্যবাদ। শুভ সকাল
আরজু মুক্তা
এমন আড্ডা হলে তিনবার চা টা দিতে রাজি। কড়কড়া রোদে খটখট আড্ডা। চলুক।
বন্যা লিপি
মোটে তিনবার ফুম্মা? যতক্ষণ আড্ডা ততক্ষণ চা মুড়ি।
আরজু মুক্তা
আচ্ছা।
রোকসানা খন্দকার রুকু
আমিও ছিলাম কিন্তু পারদর্শি খোলোয়ারদের কর্ম দেখে আমার তো সারা হবার জোগার। হুহু করে চা মুড়ির সাথে কবিতা বৃষ্টি। সত্যিই অবাক হবার মত ব্যাপার ছিল।কিভাবে সম্ভব? শুধু চেয়ে চেয়ে দেখলাম,,,,,,,,
বন্যা লিপি
খালি শব্দের খেলা। একটা শব্দের পিঠে ভর করে বহু শব্দের ব্যঞ্জনা। চাইলে যে কোনো সময়, যে কোনো শব্দের যোগানে।
“কখনো সময় পেলে খুলে দেখো পুরোনো কাঠের আলমারির তালা
রাশি রাশি জোনাকিদের রয়ে গেছে ছেড়ে রাখা আলোর ডানা।
হাতের তালুতে নিয়ে দেখো রোশনাই নয় মিছে,
যদিবা ভুলে থাকো বিগত দিনের কথন
ন্যাপথলিনের সুবাস আছে পড়বেই স্মরণ”
ছোটে ছোট জলকণা মিশে গিয়ে জলধারা
অক্ষরের পিঠে চড়ে শব্দের মনের কথা….”
এইতো এই রকম আরকি!
আপনিও চেষ্টা করেন, পেরে যাবেন।
আশরাফুল হক মহিন
মন লাগিয়ে ভাবতে হবে প্রিয় কবি
বন্যা লিপি
কবি কাকে বলছেন? মাফ চাই দোয়াও চাই। কবিতা লেখা বড় জ্ঞানের ঝক্কি। ও আমার পক্ষে পোহানো সম্ভব না। আর মন টন লাগানো আমার হয়ে ওঠেনা। যখন যেমন ভাবনা, তখন তেমন বেয়ে চলা। হলে হলো না হলে নাই।জরিমানা নাই