
আফরিন অফিসের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে, সেলফোনে রিং হচ্ছে শুনে স্পিকার অন করে হ্যালো বললো।
আফরিন তুমি কোথায় এখন, অনিকের কণ্ঠ শোনা গেলো।
অনিক আমি অফিসের পথেই আছি।
আচ্ছা শুনো, আমার বাসায় যাও, ওখানে ছায়ার কাছে একটা এনভেলপ রাখা আছে লেভিনের, ওটা পিক করেই অফিসে আসো।
ওকে, আমি যাচ্ছি।
ধন্যবাদ বলে অনিক কল কেটে দিলো।
অনিক অফিসে পোঁছেই কাজে ব্যস্ত হয়ে গেলো, সেলফোনে রিং বাজছে শুনে ডায়ালে দেখলো, লেভিনের কল দেখে রিসিভ করলো।
হ্যালো অনিক?
ইয়েস বন্ধু বল কি খবর?
লিসেন, আমি চায়নাতে ল্যান্ড করেছি, কিছুক্ষণ পর ফিলিপিন যাবো, তোমার জন্য কিছু ডকুমেন্টস দিয়ে এসেছিলাম, পেয়েছো?
না ভুলে আনিনি, আফরিন গেছে আনতে।
আচ্ছা শুনো, আমি অবস্থা ভালো বুঝতেছিনা, ওরা বেশ অনেকদিন ধরে আমাদের মাল নিচ্ছে, ওদের মতো ক্লাইন্ট আমাদের দ্বিতীয়টি নেই, ডকুমেন্টস দেখলে তুমিও বুঝতে পারবে, ওরা খুব ফ্রিকোয়েন্ট ইম্পোর্ট করে থাকে।
তো এতে কোন সমস্যা?
না সমস্যা হতোনা যদিনা আমার সাথে এক ফিলিপিনো বন্ধুর সাথে দেখা না হতো।
মানে কি?
ও বললো, মি. চেং ফিলিপিনের অঘোষিত মাফিয়া কিং।
হোয়াট, কি বলছিস তুই?
হাঁ এই জন্য বলছিলাম কি, আমরা ভিজিটে যায়, কিন্তু কোন ধরণের চার্জ করবোনা যদি কথাগুলো সত্য হয়, যদিও আমার বিশ্বাস এখন যে ওরাই কালপ্রিট।
ওহ গড, বন্ধু এ বড়ই বিপদের কথা, ঠিক আছে তুমি যাও, কিন্তু বিকেয়ারফুল, আর একটি কথা, তোমরা দ্রুত
ফোন ডিসকানেট করে অনিক চিন্তায় পড়ে গেলো, ইতিমধ্যে আফরিন ফিরে এসে ডকুমেন্টস গুলো দিয়ে গেলো, অনিক দ্রুত সব পড়তে শুরু করলো, সব দেখে দ্রুত ফোন তুলে কেভেনিকে কল দিলো।
হ্যালো অনিক, আমি ফ্লাইটে উঠতে যাচ্ছি।
না বন্ধু, তোমরা যেওনা, বিপদ হতে পারে, তোমরা ফিরে আসো।
কি বলছিস, এখন তো ফেরা সম্ভব না, আমরা চেকইন করে ফেলেছি।
তাজলে ফিলিপিন ল্যান্ড করে রিটার্ন ফ্লাইট ধরে চলে আসো, ওদেরকে বুঝতে দিওনা তোমাদের উপস্থিতি।
ঠিক আছে বন্ধু।
বাই।
ফোন ডিসকানেট করে অনিক দ্রুত ড্রয়ার খুলে ফোন দিলো বাংলাদেশে সোহেল চৌধুরিকে।
অপর প্রান্তে কয়েকটা রিং হতেই সোহেল চৌধুরির কণ্ঠ শোনা গেলো।
হ্যালো মি. অনিক।
সোহেল সাহেব আই হ্যাভ আ নিউজ ফর ইউ।
রিয়েলি, বলে ফেলুন।
অনিক সব খুলে বলতে শুরু করলো, সব শেষে বললো, নাউ বল ইজ ইন ইউর কোর্ট, কিন্তু আমার লোকজন ফিরে না আসার আগে কোন একশন নেবেন না প্লিজ।
ঠিক আছে আমি আবার আপনাকে কল ব্যাক করবো।
সিউর, ধন্যবাদ, বলে ফোন ডিসকানেট করলো অনিক।
মি. অনিক, আমি আজ আধাবেলা অফিস করবো, আফরিন রুমে প্রবেশ করে বললো।
কেন?
আজ বাসায় মেহমান আসবে।
ওহ আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম, ঠিক আছে যেও।
কি ব্যাপার, চিন্তিত মনে হচ্ছে?
না না, কাজের চাপে আছি তাই মনে হচ্ছে, তা আজকের ডেলিভারি সিটটা আনো তো।
আফরিন উঠে গিয়ে সিট নিয়ে ফিরে এলো, অনিক সিটটাতে চোখ ভুলাতে লাগলো, কিছু সময় সিটটা দেখে অনিক বললো, এক কাজ করো, সিঁ চেঁ বায়োটেক করপোরেশনের ডেলিভারিটা স্টপ করো।
কি বলেন, এখন স্টপ করলে বড় ক্ষতি হয়ে যাবে আমাদের, ফ্রেইট ফরওয়ার্ডার অলরেডি কন্টেইনার লাগিয়েছে ডেলিভারি শেডে, এতো গুলো কন্টেইনারের প্রচুর বিল হয়ে যাবে, সাথে আসবে শিপিং বিল।
ওহ নো, অনিক চিন্তায় পড়ে গেলো।
একটু পর বললো, ঠিক আছে, যেভাবে যাচ্ছে যাক, আমি শীপিং এজেন্টের সাথে কথা বলছি।
সন্ধ্যার পর অনিক সবাইকে নিয়ে আফরিনের বাসায় পোঁছে গেলো, আফরিন দরজা খুলে ঘরের বাইরে এসে সবাইকে রিসিভ করলো।
অনিক আফরিনের হাতে ফুল এবং দু বোতল রেড ওয়াইন দিয়ে বললো, এ তোমার জন্য।
ধন্যবাদ, এগুলো আনার কি দরকার ছিলো?
না তেমন কিছু না, চলো ভিতরে যায়।
অনিক সবাইকে নিয়ে ঘরে প্রবেশ করলে আফরিনের মা সবাইকে স্বাদর সম্ভাষণ এবং সালাম জানিয়ে রিসিভ করলেন, সাথে অনিকের মাকে জড়িয়ে ধরলেন বাঙ্গালী নিয়মে।
ভাই কোন জন, আফরিনের মা জিজ্ঞেস করলেন?
দুইজনই ভাই, এনি আমার হাসবেন্ড এবং উনি সুলতান ভাই, সাথে উনার মেয়ে ছায়া, অনিকের মা পরিচয় করিয়ে দিলেন।
সবাই দাঁড়িয়ে কেন, বসুন প্লিজ বসুন।
সবাইকে বসিয়ে অনিকের দিকে ফিরে বললেন, আপনিই সেই বিখ্যাত অনিক?
আন্টি আমি বিখ্যাত নই, আমি অনিক।
………. চলবে।
ছবিঃ গুগল।
৩২টি মন্তব্য
ফয়জুল মহী
ভালো ।
ইঞ্জা
ধন্যবাদ।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
চলুক গল্প। ত্রিভুজ প্রেমের গল্প মনে হচ্ছে!! ধন্যবাদ ভাইয়া। ভালো থাকবেন সবসময় শুভ কামনা রইলো
ইঞ্জা
ত্রিভুজ প্রেম কিনা জানিনা আপু, দেখা যাক সামনে কি হয়।
ধন্যবাদ।
সুপায়ন বড়ুয়া
অনেকগুলো চরিত্র ও জটিল কিছুর
অবতারনা করলেন। দেখা যাক চোখ রাখি।
শুভ কামনা।
ইঞ্জা
জঠ লাগার অর্থই হলো জঠ খোলার সময় এসেছে, প্রার্থনা করবেন দাদা যদিন ভালোভাবে শেষ করতে পারি, ধন্যবাদ।
সুপায়ন বড়ুয়া
অবশ্যই। তাই তো কামনা।
ভাল থাকবেন সব সময়।
ইঞ্জা
অনিঃশেষ ধন্যবাদ দাদা।
আলমগীর সরকার লিটন
অনেক শুভেচ্ছা রইল
ইঞ্জা
ধন্যবাদ
সাবিনা ইয়াসমিন
মাফিয়া কিং এর কবলে পড়লো অনিক!! পেশাগত ঝামেলাটা কিভাবে সামলে উঠবে সে? দেখার জন্যে পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম 🙂
শুভ কামনা ভাইজান 🌹🌹
ইঞ্জা
আমাকেও একি কথা ভাবাচ্ছে আপু, দেখা যাক কি হয়।
সাবিনা ইয়াসমিন
আপনি-ইতো ভাববেন ভাইজান। আমি আছি দুশ্চিন্তায়। অনিককে ফাঁসালেন কিনা চাইনীজ মাফিয়ার কবলে!! কাজটা ভালো করেননি, তাড়াতাড়ি ঝামেলা শেষ করুন। ছাঁয়া আর আফরিন যদি টের পায় এটা আপনি করেছেন, তাহলে কিন্তু রক্ষা নেই 😂😂
ইঞ্জা
আপু, কে কার কবলে পড়ছে এ নিয়ে আমি ভাবছিনা, ভাবা আমার শেষ, আমি ভাবছি গল্পটা কতদূর এগুবে। 😬
হালিম নজরুল
মাফিয়ারা অনিকের কি কি ক্ষতি করার চেষ্টা করবে, তা হয়তো পরের পর্বে দেখতে পাবো।
ইঞ্জা
গল্পের মোর পুরাই ঘুরে যাচ্ছে ভাই, দেখা যাক সামনে কি হয়।
হালিম নজরুল
ভাই,
আপনি বলার পর দুইটা গল্প দিয়েছিলাম। সম্ভবত ব্যস্ততার কারণে একটিও পড়তে পারেন নি।
ইঞ্জা
জ্বি ভাই, অফিসের ব্যস্ততার কারণে পড়তে পারিনি, কিন্তু যতই মিস হোক পড়ে নেবো ভাই।
জিসান শা ইকরাম
মাফিয়া এসে গেলো!
সবকিছু মনে হয় তছনছ হয়ে যাবে।
পরের পর্বের জন্য অপেক্ষায় থাকলাম ভাই।
শুভ কামনা।
ইঞ্জা
হাঁ ভয়ানক জালে জড়িয়ে যাচ্ছে হয়ত অনিক, চায়নিজ মাফিয়ারা বেশ ভয়ানক হয়।
ধন্যবাদ ভাইজান।
মোঃ মজিবর রহমান
আজ পড়তে খুব ভাল লাগল । ভালবাসা রইল। ব্যাবসা কোন মাফিয়া আঘাত হানে বুঝি, সো ব্যাড। দেখি কি হই।
ইঞ্জা
চায়নিজ মাফিয়ারা বেশ ভয়ানক হয়, এখন দেখার বিষয় কি হয় সামনে, পাশে থাকবেন ভাই, ধন্যবাদ।
মোঃ মজিবর রহমান
গল্পে আছি পাশেও আছি ভাইজান
ইঞ্জা
ধন্যবাদ অনিমেষ
ছাইরাছ হেলাল
গল্পে এমন একটি মোড় দরকার ছিল, শুধু প্রেমে ঠিক জমে উঠছিল না।
সাথে আছি, দেখি মাফিয়াদের কী ভাবে সামলে সামনে এদিয়ে যায় গল্প।
ইঞ্জা
জ্বি ভাইজান, চায়নিজ মাফিয়ারা বেশ ভয়ংকর হয়, এখন দেখা যাক কি হয়।
ধন্যবাদ ভাইজান।
মনির হোসেন মমি
গল্পের আসল মজা বুঝি এসে গেল।প্রেম ভালবাসা এবং এ্যাকসান সব চমকপ্রদ। চলুক।
ইঞ্জা
বুঝতে পারছি আপনি এইসবে অভ্যস্ত, এ জন্যই বুঝতে পারছেন মোর কোথায় কোথায় ঘুরবে।
ধন্যবাদ ভাই।
সঞ্জয় মালাকার
পড়ে বেশ ভালো লাগলো ভাইজান।
ইঞ্জা
আন্তরিক ধন্যবাদ দাদা, আনন্দিত হলাম।
তৌহিদ
গল্পে এখন টানটান উত্তেজনা!! মাফিয়ার কবলে নায়ক!! পারফেক্ট কম্বিনেশন। প্রেম, বন্ধুত্ব, বিরহ, থ্রিলার এসবকিছু যেন গল্পকে অন্যরকম মোড় দিচ্ছে।
চলুক ভাই, পাশেই আছি।
ইঞ্জা
এইতো মনের মতো একটা মন্তব্য পেলাম, বুঝতে পারছি এককালে আপনিও গল্পের পোকা ছিলেন, দোয়া রাখবেন ভাই, ধন্যবাদ।