এক বৃদ্ধ দাদু

পুষ্পবতী ২৮ মে ২০১৪, বুধবার, ০৫:০৬:১৫অপরাহ্ন একান্ত অনুভূতি ১৫ মন্তব্য

আকাশটা খুব মেঘ্লা ছিলো তাড়াহুড়া করে বাসা থেকে বের হলাম।তাড়াতাড়ি গাড়িতে উঠতে হবে নাহলে বৃষ্টি নামলে ভিজে যেতে হবে.আমার আবার ছাতা ভালো লাগেনা খুব বোরিং লাগে,সবসময় চেষ্টা করি ছাতা না নিয়ে কিভাবে বের হওয়া যায় । বাসা থেকে বের হয়ে একটু হেটে মুরে গিয়ে গাড়িতে উঠতে হয়। দাড়িয়ে আছি অটো ,রিক্সা যেকুনো একটি পাবার আশায় কিন্ত কিছুই মিলছে না।অনেকক্ষণ দাড়িয়ে থাকার পর একটা অটো আসলো ,কিন্ত আমি উঠতে পারলাম না ,কয়েকজন উঠে পড়ল ,এরপরেরটাতে উঠলাম।আমার পাশে একজন মহিলা বসলো ,আমার সামনাসামনি সিটে বসলো এক বৃদ্ধ দাদু। দাদুটার বয়স কত হবে তা ঠিক অনুমান করতে পারছিনা তবে দেখতে দাদুর মতো বয়সী মনে হচ্ছে তাই দাদু বললাম । খুব বয়স্ক,গায়ের চামড়া বটে গেছে ,শরীর কাপছে ,পরনে ছিল একটা পাঞ্জাবী আর লুঙ্গি। দাদু আমার পাশের মহিলাটিকে বলল ‘তোমার দেশ কনে ?( মহিলাটির গ্রামের বাড়ি কোথায়?)মহিলাটি বলল রংপুর কুড়িগ্রাম ,তখন দাদু ও বলল আমার বাড়ি ও রংপুর ,আমি ফার্মগেট ,গুলিস্তান ওই দিকে ভিক্ষা করি ,মহিলাটি চুপ করে আছে কিছুই বলছেনা ,আমি দাদুটার দিকে তাকিয়ে বললাম আপনার ছেলে মেয়ে নাই ?তখন সে বলল আছে দুই মেয়ে এক ছেলে ,ছেলে মেয়ের বিয়ে দিয়েছি ,নাতি নাতনি সবই আছে। কিন্ত কেউ তার দেখাশুনা করে না ,সবার কাছে সে বুঝা হয়ে গেছে,তার বয়স হয়েছে তাই পৃথিবীতে তার দাম ও অনেক কমে গেছে ,এইসব শুনার পর আমার খুব খারাপ লাগলো।আমি ভাবছিলাম সত্যি বয়স হয়ে গেলে মানুষ কতটা অসহায় হয়ে যায়.জীবনের শেষ সময়ে এসে এতো কষ্ট পেতে হয়,তার যেই বয়স তাতে মনে হয় যেকুনো সময় মারা যেতে পারে।

বাবা মাকে মানুষ এতো অবহেলা করে যা আসলে উচিত না,বিবাহিত জীবনের পর বাবা মায়ের সব স্বপ্ন সন্তানদের নিয়ে থাকে,নিজের সমস্ত চাওয়া পাওয়া বাদ দিয়ে সন্তানদের মানুষ করে কিন্ত শেষ বয়সে এমন পরিনতি মেনে নেওয়া যায় না ,কিন্ত না মেনে কি বা করার থাকে ,আল্লাহ জীবন যতদিন রেখেছে যুদ্ধ করেই কুনোমতে বেচে থাকতে হবে।আর মরে গেলেইতো দুনিয়ার সব কষ্ট থেকে মুক্তি পাবে।

যেসব সন্তানরা বাবা মায়ের সাথে এমন আচরন করে তাদের প্রতি আমার একটাই অনুরোধ ,আপনারা একটু ভেবে দেখবেন কত কষ্ট করে মা একটা সন্তান জন্মদান করেন ,কতো কষ্ট করে উপার্জন করে বাবা সন্তানের সব চাওয়া পূরণ করেন,আপনারা ও একদিন বাবা মা হবেন। এমন সময় আপনাদের জীবনে ও আসবে তাই বাবা মায়ের সেবা করুন।যতদিন এই দুনিয়াতে আছে সুখে রাখার চেষ্টা করুন। তাহলে মরণের পরে পেতে পারবেন জান্নাত কারণ মায়ের পায়ের নিচেই সন্তানের বেহেশত। আপনি ও পাবেন শেষ বয়সে আপনার সন্তানের কাছে এমন সুখ।

 

 

(সোনেলা পরিবারের আমি এক নতুন সদস্য। সবার পোস্ট আমি পরি ভালো লাগে,সবাই খুব ভালো লিখে।তাই ভাবি আমিও কিছু লিখব কিন্ত লিখা হয়ে উঠে না এটা আমার প্রথম পোস্ট।আমার জন্য দোয়া করবেন যাতে আমিও আপনাদের মতো লিখতে পারি। ভালো থাকেবেন সবাই।)

৬৫২জন ৬৫২জন

১৫টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ