আকাশটা খুব মেঘ্লা ছিলো তাড়াহুড়া করে বাসা থেকে বের হলাম।তাড়াতাড়ি গাড়িতে উঠতে হবে নাহলে বৃষ্টি নামলে ভিজে যেতে হবে.আমার আবার ছাতা ভালো লাগেনা খুব বোরিং লাগে,সবসময় চেষ্টা করি ছাতা না নিয়ে কিভাবে বের হওয়া যায় । বাসা থেকে বের হয়ে একটু হেটে মুরে গিয়ে গাড়িতে উঠতে হয়। দাড়িয়ে আছি অটো ,রিক্সা যেকুনো একটি পাবার আশায় কিন্ত কিছুই মিলছে না।অনেকক্ষণ দাড়িয়ে থাকার পর একটা অটো আসলো ,কিন্ত আমি উঠতে পারলাম না ,কয়েকজন উঠে পড়ল ,এরপরেরটাতে উঠলাম।আমার পাশে একজন মহিলা বসলো ,আমার সামনাসামনি সিটে বসলো এক বৃদ্ধ দাদু। দাদুটার বয়স কত হবে তা ঠিক অনুমান করতে পারছিনা তবে দেখতে দাদুর মতো বয়সী মনে হচ্ছে তাই দাদু বললাম । খুব বয়স্ক,গায়ের চামড়া বটে গেছে ,শরীর কাপছে ,পরনে ছিল একটা পাঞ্জাবী আর লুঙ্গি। দাদু আমার পাশের মহিলাটিকে বলল ‘তোমার দেশ কনে ?( মহিলাটির গ্রামের বাড়ি কোথায়?)মহিলাটি বলল রংপুর কুড়িগ্রাম ,তখন দাদু ও বলল আমার বাড়ি ও রংপুর ,আমি ফার্মগেট ,গুলিস্তান ওই দিকে ভিক্ষা করি ,মহিলাটি চুপ করে আছে কিছুই বলছেনা ,আমি দাদুটার দিকে তাকিয়ে বললাম আপনার ছেলে মেয়ে নাই ?তখন সে বলল আছে দুই মেয়ে এক ছেলে ,ছেলে মেয়ের বিয়ে দিয়েছি ,নাতি নাতনি সবই আছে। কিন্ত কেউ তার দেখাশুনা করে না ,সবার কাছে সে বুঝা হয়ে গেছে,তার বয়স হয়েছে তাই পৃথিবীতে তার দাম ও অনেক কমে গেছে ,এইসব শুনার পর আমার খুব খারাপ লাগলো।আমি ভাবছিলাম সত্যি বয়স হয়ে গেলে মানুষ কতটা অসহায় হয়ে যায়.জীবনের শেষ সময়ে এসে এতো কষ্ট পেতে হয়,তার যেই বয়স তাতে মনে হয় যেকুনো সময় মারা যেতে পারে।
বাবা মাকে মানুষ এতো অবহেলা করে যা আসলে উচিত না,বিবাহিত জীবনের পর বাবা মায়ের সব স্বপ্ন সন্তানদের নিয়ে থাকে,নিজের সমস্ত চাওয়া পাওয়া বাদ দিয়ে সন্তানদের মানুষ করে কিন্ত শেষ বয়সে এমন পরিনতি মেনে নেওয়া যায় না ,কিন্ত না মেনে কি বা করার থাকে ,আল্লাহ জীবন যতদিন রেখেছে যুদ্ধ করেই কুনোমতে বেচে থাকতে হবে।আর মরে গেলেইতো দুনিয়ার সব কষ্ট থেকে মুক্তি পাবে।
যেসব সন্তানরা বাবা মায়ের সাথে এমন আচরন করে তাদের প্রতি আমার একটাই অনুরোধ ,আপনারা একটু ভেবে দেখবেন কত কষ্ট করে মা একটা সন্তান জন্মদান করেন ,কতো কষ্ট করে উপার্জন করে বাবা সন্তানের সব চাওয়া পূরণ করেন,আপনারা ও একদিন বাবা মা হবেন। এমন সময় আপনাদের জীবনে ও আসবে তাই বাবা মায়ের সেবা করুন।যতদিন এই দুনিয়াতে আছে সুখে রাখার চেষ্টা করুন। তাহলে মরণের পরে পেতে পারবেন জান্নাত কারণ মায়ের পায়ের নিচেই সন্তানের বেহেশত। আপনি ও পাবেন শেষ বয়সে আপনার সন্তানের কাছে এমন সুখ।
(সোনেলা পরিবারের আমি এক নতুন সদস্য। সবার পোস্ট আমি পরি ভালো লাগে,সবাই খুব ভালো লিখে।তাই ভাবি আমিও কিছু লিখব কিন্ত লিখা হয়ে উঠে না এটা আমার প্রথম পোস্ট।আমার জন্য দোয়া করবেন যাতে আমিও আপনাদের মতো লিখতে পারি। ভালো থাকেবেন সবাই।)
১৫টি মন্তব্য
স্বপ্ন নীলা
সোনেলায় স্বাগতম।
আপনার প্রথম পোস্টেই বাজিমাত——–আপনাকে এত্তগুলো ++++++++++ দিলাম
আপনার সাথে সহমত– সবারই উচিত বাবা মার সাথে ভাল ব্যবহার করা। বৃদ্ধ বয়সে তাদেরকে সন্তানের মত দেখাশোনা করা — যারা বাবা মাকে দেখাশুনা করেন না-তাদের জন আমার এক রাশ ঘৃনা ——–
সব বাব মা ভাল থাকুন
পুষ্পবতী
ধন্যবাদ সপ্ন নীলা। ভালো থাকবেন।
শুন্য শুন্যালয়
পুষ্পবতীর আগমন আগেই ঘটে গেছে সোনেলায়, আজ লেখক পুষ্পবতীকে সুস্বাগতম জানালাম সোনেলা পরিবারে।।
খুব সুন্দর ভাবনা, সবাই যদি এমন করে ভাবতো তাকেও আসতে হবে অই সময়ে।
সুন্দর, লিখে যেতে হবে কিন্তু নিয়মিত।।
পুষ্পবতী
দোয়া করবেন যাতে লিখতে পারি। ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।
ছাইরাছ হেলাল
স্বাগত আপনি এখানে , লিখতে থাকুন মনের ইচ্ছেয় ,মনের আনন্দে ।
পুষ্পবতী
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আমাকে লিখতে বলার জন্য। ভালো থাকবেন সবসময় আর দোয়া করবেন যেন আমিও খুব ভালো লিখতে পারি
মশাই
লেখা নিয়ে মন্তব্য পরে হবে আগে আপনাকে সুস্বাগতম জানাই এই সোনেলা পরিবারে। খুব ক্ষুধা লেগেছে, মন্তব্য নিয়ে পরে আসছি। -{@
মশাই
প্রথমেই শেষদুটি স্তবকের জন্য ধন্যবাদের বদলে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। খুব সুন্দরভাবেই লিখেছেন। এটা আপনার প্রথম পোষ্ট হলেও আমার কাছে অনেক দক্ষ হাতের লেখা মনে হয়েছে। ভাববেন না আবার প্রশংসা করছি যদিও সেটা আপনার প্রাপ্য। এই সোনেলাতে অনেকেই ভাল লিখেন সেটা সত্যি তবে তাদের কাতারে আপনিও যে দাড়িয়ে গেলেন তাতে আমার সন্দেহ নেই স্বপ্ন নীলা কিন্তু ঠিকই বলেছেন প্রথম পোষ্টেই বাজিমাত। আমাদের দোয়াতো থাকবেই সাথে আপনার চেষ্টা যোগ করে লিখে যান অবিরত। শুভেচ্ছা রইলো পুষ্পবতী।
এটা যে সত্যি ঘটনা তাতে আমার কোনো সন্দেহ নেই। আপনার মনের স্বচ্ছতা দেখে আমি অনেক মুগ্ধ হয়েছি।
মাকে কষ্ট দেওয়ার ঘটনা অথবা বৃদ্ধ বয়সে তাদের উপর অত্যাচারের ঘটনা প্রায় লিখনীতে উঠে আসে। নিজে এমন ঘটনা পড়ি প্রায় সময়ই এমনকি মাঝে মাঝে লিখেও থাকি। তবে আপনার লিখাটা পড়ে অনেক অবাক হয়েছি। আপনি যাকে দাদু বলে ডাকলেন সে গুলিস্থানে, ফার্মগেটের ঐদিকে ভিক্ষা করে, কিন্তু এই লেখাটি যদি আমি লিখতাম তাহলে তাকে হয়তো আমিও এমন সম্বোধন করতাম না। তার দুঃখগুলোই শুধু আমার লেখায় উঠে আসতো এমনকি তবে সম্বোধন থাকে ভিক্ষুক নামেই। তাকে দাদু অথবা অন্যকোন শ্রদ্ধাশীল নামে সম্বোধন খুব কম লেখাতেই উঠে আসে। দেখুন আজও আমরা অনেক পিছিয়ে। তাকে দাদু বলে সম্বোধন করে লেখার জন্য আপনার প্রতি যে সম্মান জন্ম হয়েছে আমার মনে তা থাকবে আজীবন। সাথে শিখে নিলাম মানুষকে কিভাবে শ্রদ্ধা করতে হয়।
খুব সুন্দর অনুরোধ করে গেছেন। চেষ্টা করবো আপনার অনুরোধ রাখার জন্য। পিতা মাতাকে কোনদিন কষ্ট দিবো না। আমি বেচে থাকতে তারা যেন কষ্ট না পায় সেদিকে দৃষ্টি থাকবে। অনেক অনেক ধন্যবাদ। লিখুন অবিরত। সালাম জানবেন। -{@
পুষ্পবতী
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ মশাই আমাকে এতটা উত্সাহিত করার জন্য। এমন উত্সাহ পেলে লিখে ভালো লাগে আর লিখার জন্য আগ্রহ জন্মে। ভালো থাকবেন। -{@
ফরহাদ ফিদা হুসেইন
পিতামাতার আস্থারা অবিরাম ছায়া পাক সন্তানের বুকে।।
পুষ্পবতী
ধন্যবাদ -{@
মিথুন
সন্তান যখন বড় হয়ে বাবা-মা হয়, তখনও কেনো বোঝেনা কতোটা কস্ট সহ্য করে একটি সন্তানকে বড় করে পিতা-মাতা।
আপনার পোস্ট অনেক ভালো লাগলো আপু। সন্তানদের দ্বারা বাবা-মা যেনো আর কস্ট না পায়।
আপনি আরো লিখুন। প্রথম পোস্টেই ভালোলাগা।
পুষ্পবতী
ধন্যবাদ আমাকে এতটা উত্সাহিত করার জন্য।ভালো থাকবেন।
স্বপন দাস
স্বাগতম ও ধন্যবাদ ।। ভাল লিখেছেন ।। লিখতে থাকুন । । -{@
পুষ্পবতী
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।