
২৫ জানুয়ারী মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত এর জন্মদিন। ১৯৬ বছর আগের ২৫ জানুয়ারি, ১৮২৪ সালে তিনি ব্রিটিশ ভারতের যশোর জেলার এক সম্ভ্রান্ত কায়স্থ বংশে জন্ম গ্রহণ করেন। যৌবনে খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করে মাইকেল মধুসূদন নাম গ্রহণ করেন এবং পাশ্চাত্য সাহিত্যের দুর্নিবার আকর্ষণবশত ইংরেজি ভাষায় সাহিত্য রচনায় মনোনিবেশ করেন। জীবনের দ্বিতীয় পর্বে মধুসূদন আকৃষ্ট হন নিজের মাতৃভাষার প্রতি। এই সময়েই তিনি বাংলায় নাটক, প্রহসন ও কাব্যরচনা করতে শুরু করেন।
তাকে ঊনবিংশ শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ বাঙালি কবি ও নাট্যকার মনে করা হয়। তাঁকে বাংলার নবজাগরণ সাহিত্যের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব গণ্য করা হয়। মাইকেল মধুসূদন বাংলা ভাষায় সনেট ও অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তক। তাঁর সর্বশ্রেষ্ঠ কীর্তি অমিত্রাক্ষর ছন্দে রামায়ণের উপাখ্যান অবলম্বনে রচিত মেঘনাদবধ কাব্য নামক মহাকাব্য। তাঁর অন্যান্য উল্লেখযোগ্য গ্রন্থাবলি হলো দ্য ক্যাপটিভ লেডি, শর্মিষ্ঠা, কৃষ্ণকুমারী (নাটক), পদ্মাবতী (নাটক), বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ, একেই কি বলে সভ্যতা, তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য, বীরাঙ্গনা কাব্য, ব্রজাঙ্গনা কাব্য, চতুর্দশপদী কবিতাবলী, হেকটর বধ ইত্যাদি। মাত্র ৪৯ বছর বয়সে কলকাতায় মৃত্যু হয় এই মহাকবির।
কপোতাক্ষ নদ পড়ে কবির প্রতি একটা অন্য রকম আকর্ষণ বোধ থেকেই কবির বাড়ি যাওয়ার পরিকল্পনায় ছিলাম দীর্ঘদিন। আর সুযোগ পাওয়া মাত্রই হাত ছাড়া না করে চলে গেলাম তার বাড়ি। আসুন আমার ক্যামেরায় কবি বাড়ির বর্তমান অবস্থাটা দেখে নেই।
(২) প্রধান ফটক দিয়ে প্রবেশ করলেই সামনে বিশাল পুকুরের পাশে এই লিখাঃ “দাঁড়াও পথিক বর জন্ম যদি তব বঙ্গে তিষ্ঠ ক্ষণকাল। এ সমাধিস্থলে (জননীর কোলে শিশুলভয়ে যেমতি বিরাম) মহীর-পদে মহানিদ্রাবৃত দত্ত কুলোদ্ভব কবি শ্রীমধুসূদন। যশোরে সাগর দাঁড়ী কপতাক্ষ তীরে জন্ম ভূমি, জন্মদাতা দত্ত মহামতি রাজ নারায়ণ নামে জননী জাহ্নবী।” কবির নিজের সমাধির এফিটাফ হয়তো এটা।
(৩) কবির বাড়ি সংলগ্ন পুকুরের সান বাধানো ঘাট।
(৪) ঘাটে দাঁড়িয়ে বাড়ির দিকের ছবি তুললে এমন দেখায়।
(৫/৬) কবির বাড়িটা এখন জাদুঘর।
(৭) বাড়ির ভেতরের ফুলের বাগান, ২০০ বছর আগে কবি হয়তো এসব দেখে মুগ্ধ হতেন, কবিতা লিখতেন।
(৮/৯) কবির পারিবারিক দেবালয়, এক সময় পূজা পার্বণে বেঁজে উঠতো উলু-শঙ্খের ধ্বনি। অন্দর মহল সরগরম থাকতো উৎসবের আয়োজনে।
(১০) ভেতরটা কবির পারিবারিক ব্যবহার্য্য দ্রব্যাদি দ্বারা সাজানো।
(১১) কাঠের আলমিরা। কবির পারিবারিক ব্যবহৃত।
(১২) স্টিলের বাক্স, কবির পারিবারিক ব্যবহৃত।
(১৩) কাঠের সিন্ধুক, কবির পারিবারিক ব্যবহৃত।
(১৪) কলের গান, কবির পারিবারিক ব্যবহৃত।
(১৫) কাঠের খাট, কবির পারিবারিক ব্যবহৃত।
(১৬) এটা কবির কাকার বাড়ি।
(১৭) ফুলহীন কাঠগোলাপ গাছে বসে আছে একটা পাখি।
(১৮) বাড়ির পেছনেই রয়েছে সাগরদাঁড়ী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়।
(১৯) পুকুরের বিপরিত পাশ থেকে তোলা কবির বাড়ির ছবি।
(২০) পুকুরে বেশ বড় কিছু মাছ দেখা যায় মাঝে মাঝে ভেসে উঠতে।
২৫টি মন্তব্য
সুপর্ণা ফাল্গুনী
ভাইয়া একটু ভুল হয়েছে ২৫ এর জায়গায় ৫ হয়ে গেছে জন্মতারিখ। খুব ভালো লাগলো মধুসূদনের পৈতৃক ভিটা দেখে। ভালো থাকুন সবসময় শুভ কামনা রইলো
কামাল উদ্দিন
ধন্যবাদ আপু, সংশোধন করে নিয়েছি।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
ধন্যবাদ ভাইয়া ভালো থাকুন
হালিম নজরুল
স্মৃতি মনে পড়ল। কয়েকবার গিয়েছি।
কামাল উদ্দিন
ধন্যবাদ নজরুল ভাই, আমার একবারই যাওয়ার সৌভাগ্য হয়েছিল।
ছাইরাছ হেলাল
কপতক্ষ নদ দেখেছি, কিন্তু এগুলো দেখার সুজোগ হয়নি।
১৯ নং ছবিটি কিন্তু দারুণ তুলেছেন।
কামাল উদ্দিন
কপোতাক্ষের ছবি তোলা হয়নি, সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিল, শুভেচ্ছা জানবেন ভাই।
রেহানা বীথি
আপনার ছবিসহ পোস্টগুলোর মাধ্যমে অজানাকে জানার সুযোগ পেয়ে ভালো লাগে খুব। শ্রদ্ধা জানাই মধুকবিকে।
কামাল উদ্দিন
ধন্যবাদ রেহানা আপু, শুভ কামনা সব সময়।
সুপায়ন বড়ুয়া
অসাধারণ ছবির সমাহার
কামাল ভাইকে দেব আমি
কেমন উপহার ?
শুভ কামনা।
কামাল উদ্দিন
মন্তব্য করে উৎসাহিত করাই আমার জন্য বড় উপহার দাদা, শুভ কামনা সব সময়।
প্রদীপ চক্রবর্তী
আমার প্রিয় একজন কবি।
খুবি ভালো বর্ণনা অজানা কিছু জানলাম।
সাধুবাদ দাদা।
কামাল উদ্দিন
আপনাকেও সাধুবাদ
ফয়জুল মহী
অনন্য । শুভেচ্ছা । দোয়া করবেন।
কামাল উদ্দিন
শুভ কামনা সব সময়।
তৌহিদ
বাহ! চমৎকার একটি পোস্ট দিলেন ভাই। যাওয়া হয়নি তবে আপনার লেখা আর ছবির মাধ্যমে বেশ জ্ঞান উপলব্দ হলো।
ধন্যবাদ আপনাকে।
কামাল উদ্দিন
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ তৌহিদ ভাই, ভালো থাকবেন।
সুরাইয়া পারভীন
দারুণ দারুণ। আপনার পোস্টে কতো কিছুই দেখা যায়, জানা যায়। কৃতজ্ঞতা সহ আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন ভাইয়া। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন সাবধানে থাকুন সবসময়
কামাল উদ্দিন
পৃথিবীর সব কিছু দেখার এবং জানার আমার খুবই ইচ্ছে আপু, কিন্তু এক জীবনে আর কতোটাই পারা যায়…….শুভ কামনা সব সময়।
সুরাইয়া নার্গিস
চমৎকার একটা পোষ্ট। লেখা ছবি দুটোই অসাধারণ লাগছে, পড়ে অনেক কিছু জানলাম।
সাবধানে থাকুন, নিরাপদে থাকুন।
কামাল উদ্দিন
সাবধানে থাকার চেষ্টা করি, কিন্তু আমি জানি ফাঁক ফোকর আছে, জানিনা শেষ পর্যন্ত আমরা কজন টিকতে পারবো, আপনিও ভালো থাকবেন আপু।
ইঞ্জা
মধুসূদনের জন্মভিটা দেখে এলেন, এ যে অনেক বড় বিষয় ভাই, ছবি গুলো দেখে খুব ভালো লাগলো।
কামাল উদ্দিন
জ্বী ভাই, কোথাও কোন কিছু দেখতে পারাটাকেই আমি আমার নিজের জীবনে আরো একটা সৌভাগ্য যোগ হলো বলে মনে করি……শুভ কামনা সব সময়।
জিসান শা ইকরাম
দেখা হয়নি,
আপনার চোখে দেখলাম। কখনো সুযোগ হলে যাবো অবশ্যই।
শুভ কামনা।
কামাল উদ্দিন
আপনার জন্যও শুভ কামনা সব সময়।