ঘুম
ব্যাপক প্রস্তুতি, উৎসাহ, উদ্দীপনার সাথে বিশিষ্ট ঘুমবিদ ঘুমের ইন্তেজাম করেন। তাঁর কাছে ঘুমের স্টাইলটি বেশ জৌলুসে পূর্ন । তিনি স্থির করেছেন তাঁর এই ঘুমের ঘটনাটির সাথে বিভিন্ন বাড়ীর মানুষকে সংশ্লিষ্ট করবেন, যাতে প্রতিটি বাড়ীর মানুষ আনন্দিত এবং খুশী হন।
তাঁর পরিকল্পনা মত, তিনি এক বাড়িতে রাখলেন বালিশ, এক বাড়িতে রাখলেন বালিশের কভার। অন্য এক বাড়িতে তোষক, বেড কভার এক বাড়িতে। খাট এক বাড়িতে, মশারি আর এক বাড়ি। স্লিপিং ড্রেস এক বাড়িতে। প্রতিটি বাড়ীর মানুষ বেশ খুশী। সবার আশা তিনি তাঁর বাড়িতে ঘুমাবেন, যদিও ঘুমের সরঞ্জাম এর অংশবিশেষ তাদের বাড়িতে, তবে সবাই ভেবে রেখেছে, অন্য সব কিছু তারাই সরবরাহ করবেন, এবং ঘুমবিদ এর নাসিকা গর্জনের শব্দ শ্রবণ করে তাঁরা ধন্য হবেন।
ঘুমবিদ সবার বাড়িতে গিয়ে গিয়ে প্রথমে বালিশের কভার সংগ্রহ করলেন, এরপর বালিশ, এরপরে তোষক, বেডকভার, মশারি , তোষক নিলেন। সব তাঁর হাতে কাধে মাথায়, গন্তব্য যে বাড়িতে খাট। ঘুরতে ঘুরতে তাঁর চৈতন্য কিছুটা লোপ পেয়েছে। স্লিপিং ড্রেস হাতে নিয়ে তিনি পরিধেয় জামা কাপড় খুলে রাখলেন ঐ বাড়িতে। রাস্তায় নেমে আসলেন। তাঁর ঘন্টা যে দুলছে সে খেয়াল নেই। খাট ওয়ালা বাড়িতে আসতে আসতে অনেক রাত। দারোয়ান গেট খুলে দিলে, কুকুরের মৃদু ঘেউ ঘেউ। গৃহস্বামী ঘুম থেকে জেগে জিবে কামড় দিলেন। ভাইসাব এত রাত হবে বুঝতে পারিনি, আপনার খাট খুলে ঐ রুমে আমার দোকানের কার্টুন বোঝাই করে রেখেছি। আপনাকে ড্রইং রুমের কার্পেটের উপর ঘুমাতে হবে। আর আপনার ঘন্টা………. :p ‘ দ্রুত রাতের পোষাক পরলেন ঘুমবিদ। এরপরে কার্পেটেই তাকে ঘুমাতে হয়েছে। রাতের খাবারও জোটেনি। গৃহস্বামীর বৌ ঘুমবিদের ঘন্টা দেখেই যে বেডরুমে গিয়েছেন আর বের হননি। স্বামী তাঁর কাছে গেলে তিনি স্বামীকে শতর্ক করে দেন, এই পাগলকে খাবার দিলে, পরদিন থেকে ঘরের রান্না বন্ধ। ৩০ মিনিট বুঝিয়েও বৌকে নরম করতে না পেরে ড্রইং রুমে এসে দেখেন ঘুমবিদ ক্লান্তিতে ঘুমিয়ে পরেছেন। তার নাসিকা গর্জনের জন্য যে শক্তি দরকার তাও মনে হয় নেই আর।
বিশিষ্ট ঘুমবিদের এহেন ঘুমের পরিকল্পনায় তাঁর উপর থেকে সবাই আগ্রহ হারিয়ে ফেললো। কিন্তু ঘুমবিদ এভাবেই প্রতিটি বাড়িতে ঘুমের সরঞ্জাম রেখে তাদের সন্তষ্ট করার ব্যার্থ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এখনো।
মহা গিয়ানী ব্লগার সজীবের উপদেশ:
হে ঘুমবিদ, যে কোন এক বাসায় ঘুমান সমস্ত সরঞ্জাম নিয়ে। নইলে কোন বাসায়ই আপনার কদর থাকবেনা। আপনাকে আস্থায় নিবেনা কেউ। আপনি যতই ভালো ঘুমান বা নাসিকা গর্জন করুণ না কেন, আপনার ঘন্টা দেখা যাবে।
৩৩টি মন্তব্য
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
:Thinking: ঘুম নিয়ে ভাবনা ভাল লাগল ।
ব্লগার সজীব
ভালো লাগায় ধন্য হলাম 🙂
শুন্য শুন্যালয়
শুনেছি গুনী মানুষদের মাথায় কিছুটা গোলোযোগ থাকে, আপনিও তার ব্যতিক্রম নন। 😀
ঘুমের জন্য এত্তো কিম্ভুতকিমাকার পরিকল্পনা আপনার মতো জ্ঞানী মানুষ ছাড়া আর কারো মাথায় আসার কথা না।
বালিশ, তোষক, বালিশে খোল সব খাটের উপর রেখে আপনি খাটের নীচে ঘুমিয়ে দেখতে পারেন, নয়তো এস, এস, সি; এইচ, এস,সি কিংবা যেকোন একটা এক্সামের ফরম ফিলাপ করুন, ঘুম আসবেই মাস্ট। জলদি কিছু একটা করুন, নইলে অনেক কিছুই দেখা যাবার সম্ভাবনা :Happy-Grin:
ব্লগার সজীব
হায়রে আমার পোড়া কপাল, এটি আমার ঘুমের পরিকল্পনা ভেবে বসেছেন 🙁 বুঝলাম এখন যে লেখক হিসেবে আমি ব্যার্থ, বুঝাতে পারিনি আপনাকে। বাড়িগুলো বিভিন্ন ব্লগ আর ঘুমের সরঞ্জামগুলোকে লেখা ভাবলে কেমন হয় ? ঘুমবিদকে আপনার পরামর্শ দিয়ে দেবো ।
শুন্য শুন্যালয়
ভাবলে ভালো হয়, কিন্তু না বুঝায় দিলে কেমন করে বুঝতাম? যাই হোক আপনি আছেন আর কোন ভরসা নাই। তবে খটকা এক জায়গায় লেগেছিল সবাই তার বাড়িতে ঘুমাবে ভেবে এতো খুশি হয়েছিল কেনো? এবার বোঝা গেলো। আপনি সত্যিই জিনিয়াস। 😀
ব্লগার সজীব
ধন্যবাদ আপনাকে ।
ওয়ালিনা চৌধুরী অভি
বুঝলাম ঘুম পোষ্টের অর্থ।
ব্লগার সজীব
বুঝলে ভালো 🙂
স্বপ্ন
কিছু একটা আছে লেখার মাঝে। ধরতে পারছি আবার পারছি না। কি আছে?
ব্লগার সজীব
যে কোন ব্যবসা বা যে কোন কাজ নিবিষ্ট মনে এক স্থানে করা উচিৎ। একসাথে বিভিন্ন স্থানে ডজন ডজন ব্যবসা শুরু করলে সফলতা আশা করা বোকামি।
মেঘাচ্ছন্ন মেঘকুমারী
এমন ঘুমের পরিকল্পনা আমি জীবনেও শুনিনি। স্বপ্নেও ভাবিনি। একবাসায় ঘুমের ইন্তেজাম করা উচিত।
ব্লগার সজীব
এক বাসায় ঘুমের ইন্তেজাম করা উচিৎ, আসল কথাটা বুঝে ফেলেছেন। ধন্যবাদ।
আগুন রঙের শিমুল
মানিজ্জত লেমিনেটিং করা হে 😀
ঝাটাপেটা করলেও কমেনা 😉
ব্লগার সজীব
এমন ঘুমিয়ে আসলে কোন লাভ নেই। কিন্তু ঘুমবিদগন এসব বোঝেন না, আপসোস ।
খসড়া
প্রথম মন্তব্য কোথায় গেছে হারায়,যাক কি জানি লিখেছিলাম মনে নেই। এখন নতুন উদ্যামে আর ভাষা নেই হে মহাজ্ঞানী ব্লগার। হুমায়ূন আহমেদ তার ইমা গল্পে এক মহাজ্ঞানী কে মহাগাধা :Distort: উল্ল্যেখ করেছেন। তবে বলি আপনি ঘুমান তাতে আপনার কেউ চুল কেটে টাক বানিয়ে ফেললেও আপত্তি নেই।
ব্লগার সজীব
এখানে যে ঘুমবিদ কে দেখানো হয়েছে, সে আমি নই ভাইয়া। আমার ঘুমের ইস্টাইল অন্য রকম।
ব্লগার সজীব
ঘুমবিদ গন ঘুমের ইন্তেজাম করতে করতে না ঘুমিয়েও কাটান মাঝে মাঝে ।
ব্লগার সজীব
এই জবাবটি এখানে ভুলে দিয়েছি।
ছাইরাছ হেলাল
ঘুমানোর দরকারটা কিসের সেটাই বুঝলাম না ।
আপনার মাথার অবস্থা দেখছি টাইট কেরোসিন ।
ব্লগার সজীব
ঘুমবিদ গন ঘুমের ইন্তেজাম করতে করতে না ঘুমিয়েও কাটান মাঝে মাঝে ।
স্বপ্ন নীলা
ওরে বাবা !! এ যে ঘুম কাহিনী — পড়লাম খুবটি করে —
ব্লগার সজীব
পড়ার জন্য ধন্যবাদ আপু।
ওয়ালিনা চৌধুরী অভি
ভয়ংকর এক পরিকল্পনা। ঘমবীদ কি কোনদিন বুঝবেন না যে তাঁর ঘন্টা প্রকাশ হয়ে যায়? তাঁকে আর কেউ আস্থায় নিচ্ছেন না ?
ব্লগার সজীব
তারা বুঝলে কি এত দৌড়ান ? ভাবেন সবাইকে সন্তষ্ট করা হচ্ছে। কিন্তু কেউই এদেরকে নিজের লোক ভাবেননা।
মিসু
এ কেমন ঘুম ? আমি এক বাসাতেই ঘুমাই কিন্তু ।
ব্লগার সজীব
আপনার কোথাও কোন শাখা নেই, জানি আমি 🙂
মিথুন
সবাইকে খুশি করতে গেলে ঘন্টা তো বেরোবেই। 😀
ব্লগার সজীব
ঘন্টাওয়ালারা এটা বুঝেন না 😀
বনলতা সেন
কী যেন বলতে চাচ্ছেন ইনিয়ে বিনিয়ে ? আরে বলেই ফেলুন না ।
ব্লগার সজীব
এটুকুতেই থাক, বেশী বললে আবার ব্যান ট্যান হয়ে যেতে পারি 😛
জিসান শা ইকরাম
যে যেমন ভাবে ঘুমিয়ে আরাম পায়
ঘুমাকনা তেমন করে।
সব মানুষের ষ্টাইল এক হবেনা
এটাই তো স্বাভাবিক ।
ব্লগার সজীব
সব মানুষের ষ্টাইল এক হবেনা
এটাই তো স্বাভাবিক । আচ্ছা ঘুমাক যে যার ইচ্ছে মত।
লীলাবতী
ঘুমবিদরা যদি এই পোষ্ট একটু পড়তো, তাহলে আর এভাবে ঘুমের ইন্তেজাম করতো না।