হয়নি দেখা বা কথা – কত অগণন অবিরাম উৎকণ্ঠিত স্মরণীয় সাড়াহীন বসন্ত কাল , প্রায়ান্ধ বাচালতায় ; অমাবস্যা পূর্ণিমার অজস্র যুগ -যুগান্তর ; ক্ষণিকের মুগ্ধ চোখে হয় না কথা সহনাতীত অপ্রতিরোধ্য মূখ ব্যাকুলতায় স্বপ্নপূত স্পর্শবিলাসী ভাষাহীন ভাষায়। দ্রবীভূত নিকষ অন্ধকারে পেতেছি নিশ্চল ফাঁদ আস্তেসুস্থে ব্যস্তহীনতার জাল ফেলে সব কিছুই সামলে-সুমলে জলঝিরির ধারে । নকশী ছায়ায় সুস্নিগ্ধ চন্দন সুগন্ধি রাতে নটীময় ফুরফুরে বাতাসে গেঁথে আছে স্মৃতি অনু স্মৃতি ছায়া-উপচ্ছায়া হয়ে । নীল কুয়াশার ধোঁয়ায় স্বপ্নঘোর ছদ্মবেশী নিরুপম হরিণ যেন , অপেক্ষার নিলেমে তুলে রক্তহলি খেলছে গণিকাময় সময় ফাঁদ । সীমাহীন উদাস উদাসীনতায় ভাঁড়ারের শেষ ফোটা ধানী-সুরায় আধ্মাতাল হ’য়ে চাই দ্বিখণ্ডিত হোক সবুজ শরীর ভোতা তরবারিতে রৌদ্রের অনন্ত অন্ধকারে , যন্ত্রণা শুধুই চোখে ঠোঁটে চুলে ও । উজবুক উচ্ছিষ্টভোজী হাড়হাবাতে ভাগারের বুড়ো শকুন । তবুও চাই ——দিন রাত্রির আলো আধারে , উচ্ছৃঙ্খল বিশৃঙ্খলাতে, ইচ্ছে অনিচ্ছায় , শিশিরের বুকে মৃত জোনাকির আলোয় বা নির্জন নির্জীব তীব্র শীতের রাত্রিতে অসংখ্য ঝরা পাতায় , আসমুদ্র পিপাসায় । ছাই কপালে ; কর্পূর গন্ধে নিষ্পলক পলক চোখে তাকিয়ে আছি আকাশ পানে দৃষ্টিহীন দৃষ্টি নিয়ে অদৃশ্যকেই খুঁজে ফিরি , সুবিনয় অসহায় নড়নড়ে নতজানু নতচোখ নতমুখ উন্মুখ অক্লান্ত উজ্জ্বল জ্যোতিহীন নিষ্প্রভ সুশৃঙ্খল শীতল যুক্তিবুদ্ধিহীন ঔদ্ধত্যে দাঁত কিড়মিড়িয়ে অপেক্ষায় অতীত বর্তমান ও ধূসর ভবিষ্যৎ সিঁড়ির শেষ ধাপে মিটমিটে আলেয়ার আলোয় খ্যাপা না হয়েও শুদ্ধতম বিশুদ্ধতায়। জানি …..আসবেনা , নিঃশব্দে শব্দ ক’রে পা টিপে টিপে কানামাছি খেলার ছলে বা ঝড়ের বেশে বা ঝিরঝিরে সবুজ বৃষ্টি হ’য়ে । নক্ষত্রের ছায়ায় নদীময় মাঝ পদ্মার বুকে জেলে নৌকায় ভাজা ইলিশের গন্ধে মেছো ভুত বা পেত্নী হ’য়ে এসো ; সব , সব মাছ খাও ভেজে ভেজে বা কাঁচা , খেয়েদেয়ে ব্রহ্মদৈত্য সেজে ঘাড় মটকে দাও , না করব না বা হাপুস নয়নে কাঁদবও না । সোনার শেকলে অবগুণ্ঠিত যুগযুগান্তর ক্লান্ত কম্পমান চোখের মন , চোখাতে পারবে না কিছুতেই শত ইচ্ছেতেও ; মনঃপীড়াহীনতায় তবুও এস একবার মানসী , শুধুই একবার , অনম্বর অনাসক্ততায় সময়ের মন্বন্তরে শিশিরের ঘ্রাণ ছুঁয়ে জীবন্ত ধোঁয়াটে নীল কুয়াশার ধোঁয়ায় বাঁধা-না-মানা হু-হু হৃদয়ের মেঘাকাশে নিশ্চুপ নীরবতায় যত্নপুত উদ্বেগে দূরতম দূরবর্তী ক্ষীণ দৃষ্টিসীমায় ; সাবলীলতায় অবলীলাক্রমে ব্যাকরণ হীন ভাবে হৃদয়ের হৃদয়ে শুধু আমাকেই চাই , আমার আমাকে -ই , অর্থহীন রুদ্ধ রুদ্ধতায় বসন্তের শীতে বা শরতের বর্ষায় নীরবে নীরব চেতন অবচেতনে মন্ত্রমুগ্ধ এই নিশুতি জ্যোৎস্নায় স্বপ্ননয় স্বপ্নময় সোনাস্বপ্নে স্বপ্ন পরিপক্বতায় বাঁধাহীন বাঁধায় স্বচ্ছন্দে বিস্ময়-বিমুগ্ধ বিহ্বলতায় দেখা না-দেখার পাওয়া না-পাওয়ার সাঁকো বেয়ে সাঁকো হয়ে ভুলে যাওয়া স্মরণে ভুল-ভাল ভাবে হলেও । অকস্মাৎ খেয়ালী বিস্মিত বিষণ্ণ চোখে বিরামহীন কুয়াশা নামে আকণ্ঠ মরণের বিনোনির ফাঁক গলে ম্লানায়মান মৃত্যু উপত্যকায় মৃত্যুহীন অপরিমেয় জীবনে আত্মহত্যার শেষেও ।
দেখা না-হ’লে বা কথা না-হ’লে না-হবে , এ আর এমন কী !
৩২টি মন্তব্য
জিসান শা ইকরাম
কঠিন কঠিন শব্দে মস্তিষ্ক শেষ
আবার পড়তে হবে , একবারে বুঝতে পারবো না —
ছাইরাছ হেলাল
মনযোগী পাঠক হওয়ার প্রচেষ্টা প্রয়োজন ।
আসলে এটি আমার শ্রেষ্ঠ পছন্দের লেখা , যদিও একটি লেখার অংশ ।
তাই কোন পরিবর্তন বা পরিবর্ধন অসম্ভব ।আপাত এলো মেলো মনে হলেও
অনেক অনেক প্রাঞ্জল কথা এখানে আছে ।
আদিব আদ্নান
নার্সিসাস তা বলতে পারছি না চেষ্টা করে কোন ভাবেই ।
আত্মপ্রেম বোঝাতে শব্দের যে উচ্চাঙ্গ শানিত হৃদয়গ্রাহী ব্যবহার তা এক কথায় অনবদ্য ।
কিছু শব্দের প্রেমে পড়ে যেতে পারলে ভাল হত । কিন্তু এতখানি ভালোবাসা আমি ধারন করি না ।
বার দু’য়েক মৃত্যুর কথা বলাতে নার্সিষ্ট বলতে পারছি না ।
তবে আত্মানুসন্ধানের এই উদগ্র বাসনা হয়ত আপনার নিজেকে আরও বেশি করেই খুঁজে নেবার
পথ দেখাবে ।
এর বেশি লেখার সাহস পাচ্ছি না ।
ছাইরাছ হেলাল
দেখুন আত্মপ্রেম অবশ্যই আছে , প্রেমে নিমগ্ন থেকেই নিজেকেই খুঁজে ফেরা ।
নিজের অপূর্ণতা অনুভব করা ।এজন্য এটি নার্সিসিজম নয় ।
আবার মৃত্যু বা আত্মহননের একটি ব্যাপার এর মধ্যেই থাকছে ।
মর্তুজা হাসান সৈকত
উঁচুমানের লেখা তবে আরেকটু স্পীড দিতে পারলে বোধহয় ভালো হত । শুভ কামনা রেখে গেলাম…
ছাইরাছ হেলাল
উঁচু মানের তা স্বীকার করছি না । তবে ইচ্ছে করেই স্পিড দেয়া হয়নি ।
এটি এক ধরনের নিমজ্জন । তাই এটি এমন ই ।
পড়ে শুভ কামনা জানানোর জন্য ধন্যবাদ ।
মিসু
বেশ কঠিন , তবে আত্মমগ্নতার ভিন্নরুপ ভালো লেগেছে ।
ছাইরাছ হেলাল
তা একটু হতেই পারে ।প্রাণের ভার বহনের জন্য একটু ভারবাহী শব্দের উপর ভর করা ছাড়া
আর কোন উপায় যে জানিনা ।
হ্যা একধরনের আত্ম নিমগ্নতার মধ্যে প্রবেশ করে আটকে গেছি , তাও বলা যেতে পারে ।
আবার এখান থেকে বেরিয়ে আরও উচ্চতায় নিজেকে নিয়ে যাব সেটাও সহজ নয় , সহজ নয় বারবার
নিজেকে অতিক্রম করা । হিমালয়ের এভারেষ্ট ছুঁতে হয়ত পারব না , আবছা হলেও যে ক্ষাণিকটা যে দেখতে
পাচ্ছি তার আনন্দও কম নয় কোন ভাবেই ।
ইচ্ছে হলে আরও একবার একটুখানি মন দিয়ে পড়ে দেখতে পারেন ।
বনলতা সেন
আমারা ভাবতে পারি অনেক কিছুই কিন্তু ভাবনা প্রকাশের সামর্থ আমাদের নেই ।
বা থাকলেও ভাবনার পরিপূর্ণ প্রকাশে আমরা অনেকখানি ব্যর্থ ।
এ লেখাটি পড়ে সব বুঝে ফেলেছি এমন কথা বলছি না তবে আপনি আপনার কথা মনে হয়
বলতে পেরেছেন তা মনে হচ্ছে ।আপনার ভাবনার পরিসর ব্যপক বিস্তৃত তা মনে হচ্ছে ।
যদিও খেই হারিয়েছি তা স্বীকার করছি ।
আমার কেন জানি মনে হয় আপনি ইচ্ছে করলে আরও সহজ করে লিখতে পারতেন ।
ভাল লিখেছেন এমন মন্তব্য করে আমি অন্তত লেখাটির মানহানি করছি না ।
ছাইরাছ হেলাল
দেখুন , বোঝাপড়া যখন নিজেকে নিয়ে তখন সেটুকু বুঝতে পারি ঠিক বা বেঠিক তা
প্রকাশের দায় এসে পড়ে ।প্রকাশের সামর্থ ও যথেষ্ট অপ্রতুল । এই অপ্রতুলতা নিয়েই লড়ে যাচ্ছি এবং যাব ।
কিছুটা যে সমর্থ হয়েছি তা সামান্য হলেও বুঝতে পেরেছি ।
আসলে এটির আর সহজ বা কঠিন করার কিছু নেই ।তবে হ্যা , অনেক্ষণ ধরে কথা বলা যেতে পারে এটি
নিয়ে , কোন কোন শব্দ নিয়ে বা কোন কোন বাক্য নিয়ে ।
মানহানির কিছু নেই । যেহেতু লেখক নেই তাই ভাবার বিষয় সীমিত ।
পড়ার জন্য অবশ্যই ধন্যবাদ ।
অন্তরা মিতু
“মনঃপীড়াহীনতায় তবুও এস একবার মানসী….”….. অসাধারণ…..!
“সাবলীলতায় অবলীলাক্রমে ব্যাকরণ হীন ভাবে হৃদয়ের হৃদয়ে শুধু আমাকেই চাই , আমার আমাকে -ই ………” …….. নিজেকে!!!!!!!!
লেখাটি পড়ে একটি কথা ভাবলাম… ইদানীং এদেশের একাধিক লেখকের বই পড়েছি যারা পুরষ্কার-টুরস্কার পেয়ে একাকার, তাদের চেয়ে এই লেখা অনেকগুণে ভালো, মানসম্পন্ন। এখন আমাকে কেউ যদি বলে মানের আমি কি বুঝি, তাহলে বলবো যে, সেই বইয়ে একই ঘটনা লিখতে লিখতে একই পাতায় চরিত্রের নাম পর্যন্ত বদলে যায়… এছাড়া একাধিকবার ঘটনার ধারাবাহিকতা হোঁচট খায় এমনভাবে যে, পাঠকের হিসেব মিলাতে রীতিমতো ক্যালকুলেটর প্রয়োজন হয় …. সুতরাং পাঠক হিসেবে ওই ধরনের নিম্নমুখী মান বোঝার ন্যূনতম যোগ্যতা সবারই থাকে ।
এই লেখকের কাছ থেকে বড় লেখা আশা করছি, এবং দাবী করছি…..
ছাইরাছ হেলাল
দেখুন প্রশংসা শুনতে কার না ভাল লাগে , আমারও লাগে , কিন্তু একটু বেশি বেশি হচ্ছে
এমন যে মনে হচ্ছে ।
মনে করিয়ে দিতে চাই —- আমি কিন্তু লেখক নই এবং হব না ।
আমার যখন যা মনে হয় তা আমি লিখে রাখি , খুব সামান্যই প্রকাশিত হয় ।
আমি যে নিজের জন্য লিখি ।
অনেক অনেক ধন্যবাদ ।
শিশির কনা
আত্মপ্রেমে মগ্নতা ভালো না কিন্তু , এটি মনে রাখার অনুরোধ করছি । মিতু আপু যে মন্তব্য লিখেছেন , এরপরে আর লেখার কিছু নেই আসলে। লেখকের কাছে আরো বড় লেখা আশা করছি ।
ছাইরাছ হেলাল
আপনিও একই সুরে বলছেন !
আমার সাধ্য সে তো আমি জানি ই ।
আপনি আমাকে ভয় পাইয়ে দিচ্ছেন কিন্তু ।
অবশ্য এই মগ্নতা মানবিক না ।এখানে যে জীবনের কথা বলা হচ্ছে তা কিন্তু
মৃত্যুহীন জীবন ।তাই এ আত্মমগ্ন ভালোবাসাও মানবিক সম্পর্কের উর্ধ্ব ।
পড়ছেন দেখে ভালোলাগল ।
কৃন্তনিকা
এক কথায় “অসাধারণ” :c
ছাইরাছ হেলাল
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি ।
প্রজন্ম ৭১
কি মন্তব্য লিখবো বুঝতে পারছি না , লেখকের লেখায় মুগ্ধ ।
ছাইরাছ হেলাল
ঠিক আছে , পেয়েছি মন্তব্য ।
ধন্যবাদ ।
লীলাবতী
এমন লেখাকেই অসাধারন লেখা বলে (y)
ছাইরাছ হেলাল
অনেকদিন পর আপনাকে দেখে ভালো লাগল ।
হতভাগ্য কবি
ভয়ঙ্কর সুন্দর লিখসেন। “”সুবিনয় অসহায় নড়নড়ে নতজানু নতচোখ নতমুখ উন্মুখ অক্লান্ত উজ্জ্বল জ্যোতিহীন নিষ্প্রভ সুশৃঙ্খল শীতল যুক্তিবুদ্ধিহীন ঔদ্ধত্যে দাঁত কিড়মিড়িয়ে অপেক্ষায় অতীত বর্তমান ও ধূসর ভবিষ্যৎ সিঁড়ির শেষ ধাপে মিটমিটে আলেয়ার আলোয় খ্যাপা না হয়েও শুদ্ধতম বিশুদ্ধতায়”” এই লাইন গুলো জীবনের কিছু কথা মনে রাখার কথা শপথ করিয়ে নিলো। সালাম
ছাইরাছ হেলাল
সত্যি করে বলছি ,আসলে মনে মনে চাচ্ছিলাম আমার এ লেখাটি আপনি অন্তত একবার পড়ুন এবং মন্তব্য করুন ।
দেরি করে হলেও আপনি আপনি তা করেছেন দেখে ভাল লাগল । আমার আবজাব লেখালেখির মধ্যে এটি আমার সবথেকে প্রিয় লেখা । এটি অনেক অনেক বড় লেখার একটি অংশ মাত্র । অবাক বিষয় হল অনেক অনেক গুলো মাস লেগেছে এটি লিখতে এবং সেই সময়টিতে অন্য আর কিছুই লিখিনি । অনেক কথা এই প্রথম বার বলেই ফেললাম । ধন্যবাদ অনেক অনেক ।
পুরো লেখাটি হয়ত কখনও দিয়ে দিব আরও সাহসী হলে ।
হতভাগ্য কবি
আপনার সব লেখাই চমৎকার। পুরো লেখাটি দিয়ে দিন না পড়ি। আমরা আমরাই তো। 🙂
ছাইরাছ হেলাল
শেষ হলে এখানেই দিয়ে দেব এমন আশা আমিও রাখি ।
হতভাগ্য কবি
🙂 আপেক্ষায় রইলাম
ছাইরাছ হেলাল
ধন্যবাদ।
আফ্রি আয়েশা
নিজেকে খোঁজা … কঠিন লিখা । আপনি খুব ভালো লিখেন আর কোন মন্তব্য করতে সাহস হচ্ছে না । শুভ কামনা 🙂
ছাইরাছ হেলাল
হ্যাঁ , খুঁজতে আমাদের হয় ই ।
প্রশংসা করার জন্য অনেক ধন্যবাদ , অনেক পুরোন লেখা খুঁজে পড়েছেন ।
প্রিন্স মাহমুদ
আরেকবার পড়তে হবে দেখছি ।
ছাইরাছ হেলাল
এত্ত পুরোন লেখা দেখছেন !
সম্ভব হলে পড়ে দেখতে পারেন ।
ভালো থাকুন ।
অরুনি মায়া
নিজকেই আহবান! যাক সেও ভাল | তবে কোন স্বপ্ন মানবী এলে জীবন টা আরও রঙীন হত |
চমৎকার লেখা |
ছাইরাছ হেলাল
পেয়ে যাব!! কোন ব্যাপার না।