রমজান মাস ।কাজের চাপে রোজা রাখতে পারিনি।দুপুরে খেতে হবে গেলাম সেরাঙ্গনের একটি চাইনিজ খাবারের দোকানে।কারন মুসলিম সব দোকানই বন্ধ।দোকানদার আমাদের দেখেই বুঝে ফেলে আমরা ভিনদেশী মুসলিম।আমাদের জিজ্ঞাসা করল আমরা মুসলিম কি না উত্তরে বললাম -হ্যা আমরা মুসলিম ।দোকানদার সরি বলে আমাদের বিদায় করে দিল।আর্শ্চয হলাম একজন অমুসলিম কতটা অন্যের ধর্মের প্রতি সহনশীলওশ্রদ্ধাশীল।প্রশ্ন করলাম -কেনো?আমরাতো পেইড করব।সে উত্তরে বল্ল -টাকা বড় কথা নয় এটা আইন…যদি তোমাদের মুসলিমদের কাছে দিনের বেলায় খাবার বিক্রয় করেছি পুলিশ জানতে পারে তাহলে আমাদের নিশ্চিত জেল-জরিপানা হবে।তাছড়া তোরাত মুসলিম তোরা কেনো ধর্মের আদেশ মানিসনা?।লজ্জায় চলে আসি।
আমাদের দেশ।বহু রক্তের বিনিময়ে এ দেশ পেয়েছি।যা মন্দ হবার তা হয়ে গেছে তাকে আগলে রেখে কাদা ছুড়াছুড়ির সময় এখন নেই।সন্ভাবনময় ভবিষৎতের দিকে এগুতে হবে।আর সে জন্য ভবিষৎ প্রজন্মের দিকে আমাদের বেশী ভাবতে হবে নতুবা এ ঘূণেধরা সমাজ ঘূণে পূকায় গ্রাস করে ফেলবে।আর তার জন্য আমাদের অবিভাবকদের সন্তনদের প্রতি যত্নশীল হতে হবে।শুধু জন্ম দিলেই দায়ীত্ব শেষ নয়।তার চাহিদা তাকে মমতার চাদরে বেধে রখতে হবে অন্ততঃ ১৮ বছর পর্যন্ত।আমার দৃষ্টিতে আমার অভিজ্ঞতায় অন্তত ছেলে মেয়ের ডিগ্রী পাশ পর্যন্ত তাকে গাইড লাইনে রাখতে হবে ।কারন একজন ডিগ্রী ধারীই জীবনের পূণাঙ্গতা বুঝতে পারে।কি করলে কি হবে -ভালো মন্দ বুঝার সময় হয়।বাকী পূর্বের সময়গুলো বিশেষ করে প্রথম কলেজে উঠা ছেলেমেয়েরা তাদের অতি মাত্রায় কলেজে উঠার উৎসাহে বা আনন্দে কেউ কেউ বিপদগামী হয়। আমাদের ধনী লেভেলের অবিভাবকরা টাকার ধান্দায় ভূলেই যান তার আরো কিছু দায়ীত্ব আছে যার জন্য এত ধৌলত আহরণ তার দিকেও লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন ।আগাছা গাছকে অঙ্কুরে বিনাষ করতে হয় নতুবা তরুলতার মত ছেয়ে যাবে সমাজেও তখন ইচ্ছে করলেও সহজে ধ্বংস করা যায়না।ধ্বংসেও আসবে বাধা।
ঐশী”তার বাবা মাকে শুধু হত্যা করেনি তার এ কু-কাম দিয়ে ধনী আর গরীব অবিভাকদের অশনি সংকেন জানিয়ে দিলো “তোমাদের অতি লোভে আমরা স্নেহ আর দিক নির্দেশক হতে বঞ্চিত হয়ে কু-পথে পা দিয়ে অকালেই ঝড়ে যাচ্ছি ।তোমাদের ঘূণে ধরা সমাজ আর রাষ্ট্রীয় ব্যাবস্হা আমাদের সঠিক ভাবে বেড়ে উঠতে অন্তরায়।আমাদের চলার পথে প্রথম শিক্ষক তোমরা (অবিভাবক)সেই তোমরাই যখন অচেনা পথে চলো তখন আমাদের কে দেখাবে আলো? ধিক! !তোমাদের অবিভাবকত্ব ধিক! তোমাদের ঘূণে ধরা সমাজ ব্যাবস্হা”।
এখানে সবচেয়ে আর্শ্চেযের বিষয় হচ্ছে স্রষ্টা এমন একজনকে দিয়ে আমাদের ঘূণে ধরা সমাজকে বুঝিয়ে দিলেন যে “বিভাগ” সবচেয়ে বেশী দূরর্নিতীগ্রস্ত ।পুলিশ প্রশাসন।আমাদের আরেকটি কালো বিভাগ।
গুটি কয়েকজন ছাড়া সেখানে বাকী সব ঘোষখোর আর দূর্নিতীবাজ।অবশ্য শুধু তারাই দায়ী নয়।তাদের এই পুলিশ বিভাগে ঢুকতে দিতে হয়েছে নগদ টাকা আর মামার মূল্য। যে দেশে যোগ্যতার কোন মূল্য নেই সেই দেশের সমাজ ব্যাবস্হা ভঙ্গু আর অপরাধীময় হবে এটাই স্বাবভীক ।সিঙ্গাপুর দেখেছি পুলিশের গাড়ী যখন রাস্তা দিয়ে টহল দেয় তখন কি চাইনিজ কি বৌদ্ধ সবার মনের মাঝে আতংক এসে যায় ভয় যদি কোন কারনে ফেসে যায় রাষ্ট্রের সুবিদার পয়েন্ট হাড়াবে-দেখেছি গাড়ী পাকিংয়ের কঠরতা- মহিলা অফিসাররা ৩৮/৪০ ডিগ্রী রৌদ্রে ঘূড়ে ঘূড়ে পার্ক করা গাড়ী চেকিং করে ।যদি কোন গাড়ীতে পার্কিংয়ের টিকেট না থাকে তবে জরিপানার একটি স্লিপ রেখে যায় গাড়ীর সামনের গ্লাসের আর যায় কোথায় !গাড়ীর মালিক পাগল হয়ে যায় কখন সে জরিমানার টাকা পরিশোধ করবে, সময় মত পরিশোধ না করলে পযায়ক্রমে ডাবল জরিপানা এবং তার আই ,সিতে স্পট পড়বে এ হলো আইনের সবশ্রেষ্ট্র দেশ সিঙ্গাপুর।রাষ্ট্র যেমন জনগণের তেমনি জনগণও রাষ্ট্রের প্রতি দায়ীত্ব ও কর্তব্য বুঝে এবং মানে।আমরা এর উল্টো।প্রয়োজনে অপরাধীর শিকড়কে উৎরে ফেলা।নতুবা কালে কালে আমরা অসভ্য জগতেই থেকে যাব।অপরাধীর শিকড়কে ধ্বংস করা আমাদের বর্তমান রাষ্ট্র নায়কদের জন্য কঠিন কেননা তাদেরই রাগব ভোয়ালে থাবায় থমকে গেছে আইনের শাসন।
সাগর-রুনির ছোট্র শিশু এখনও রাতে মা-বাবাকে অনুভব করে নীরবে শুধু চোখের জল ফেলে তার কষ্ট না বুঝে রাষ্ট্র না বুঝে সাগর-রুনির সহকর্মীরা।যদি এক্ষেত্রে সকল সাংবাদিকরা ঐক্যতায় আসত তাহলে সাগর-রুনির ছোট্ট্র শিশুটির কিছুটা ঋণ হলেও শোধ হত।এখানেও বিভক্ত।
আর এক দিক প্রকাশ্যে বিস্বজিৎ হত্যা -ইলিয়াস আলী গুম সহ মিল্কীকে ক্রসফায়ার এ সবই এক প্রকার রাষ্ট্র সন্ত্রাস।সে ক্ষেত্রে ঐশীর অপরাধকে অপরাধ বলা চলে না কারন আমাদের সন্তানের উপর দায়ীত্বহীনতাই তাকে অপরাধী বানিয়েছে।আর রাষ্ট্র তাদেরকে ফ্রি চলাচলের সুযোগ করে দিয়েছে।প্রশাসন একদিক দিয়ে নিশিদ্ধ দ্রব্য আটক করছে অন্যদিকে তাদের যোগ সাজসে অবৈধ দ্রব্যের ব্যাবসা করছে অবৈধ ব্যাসায়ীরা।তাহলে আমাদের কোমলমতি ছেলে মেয়েরা কোথায় যাবে তাদের ভালো মন্দ বুঝার জন্য।রাষ্ট্রের কর্ণধাররা যেখানে অসৎতের মদদে মগ্ন সেখানে আমজনতা অসহায়।
আলোচনা-সমালোচনা আর টকশোর করার সময় আর নেই এখনই সময় অবিভাবকদের “ফিরিয়ে দিতে সেই অরণ্য”একসঙ্গে একত্রে এ সমাজকে কলুষিত মুক্ত করে অবিভাবকত্বের দাবী নিয়ে আগত বিপদ গামী সন্তানদের জন্য ফ্রেস বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার। আর ভূলেও যেন না ভূলি “এ পৃথিবীকে সবুজের রংয়ে এঁকে দেব আগত নতুন প্রজন্মের তরে”।।
৭টি মন্তব্য
এই মেঘ এই রোদ্দুর
অকালে হারিয়ে যাওয়া প্রানগুলোর জন্য মন এখনো কাঁদে
সুন্দর পোষ্টের জন্য ধন্যবাদ
প্রজন্ম ৭১
একমত , সুন্দর পোস্ট ।
নীলকন্ঠ জয়
“এ পৃথিবীকে সবুজের রংয়ে এঁকে দেব আগত নতুন প্রজন্মের তরে”।।
সহমত। সুন্দর পোষ্টের জন্য শুভেচ্ছা।
খসড়া
আইন হায়রে, প্রতিটি স্কুলের পাশের মুদি দোকানটিতে ইয়াবা বিক্রি হয় সবাই জানে কেউ কিছু বলার সাহস রাখে না কারন বললে কাল যে আমার প্রানটাই থাকবে না আর আমার প্রান না থাকলে আমার মা/বাবা/সন্তান/বউ/স্বামী শুধু কষ্ট পাবে রাষ্ট্রের কিছুই হবে না।
ঐশীর মত বাচ্চা প্রতি ৫লাখে একটি হয়। এটা যুগে যুগে এসেছে। আমরা কি পত্রিকার পাতা খুলে কোনদিন দেখিনি ছেলের লাঠির আঘাতে মায়ের মৃত্যু। পিতার হাতে সন্তান খুন।বা সন্তানের হাতে পিতা। সম্রাট আলমগীর কি তার ভাইদের হত্যা করেনি। তার ভাইদের হত্যা করে তার পিতার কাছে পিতার সবচেয়ে প্রিয় সন্তান দারাশিকোর মাথা উপহার হিসাবে পাঠিয়েছেন। প্লিজ কেউ এই ঐশীর হত্যাকান্ডকে আমি জাস্টিফাই করছি বলবেন না।
সমাজে শুধু একটা দিক নয় একপেষে দোষ নয় শিকর থেকে খুজি। য্র জাতি নিজের সত্তাকেই অস্বিকার করে নিজের মুক্তিযুদ্ধ কে গন্ডগোল বলে সেই দেশে এখনও কিছু পাওয়ার আশা দু:স্বপ্ন।
মা মাটি দেশ
ধন্যবাদ
জিসান শা ইকরাম
প্রায় প্রতিটি দেশেই এমন অবস্থা
তারা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল
শুধু ব্যবসা নয় , আইন এবং নীতি দ্বারা পরিচালিত হন তারা ।
আর আমাদের দেশটির চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন —
মাঝে মাঝে হতাশ হই —
ভালো লিখেছেন ।
তৌহিদ
সমাজকে কলুষিত মুক্ত করে অবিভাবকত্বের দাবী নিয়ে আগত বিপথগামী সন্তানদের জন্য নতুন বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার নিয়ে সামনে এগুতে চাই। ভালো বলেছেন ভাই।