সেই একই খবর , কোন নতুনত্ব নেই। ভাঙ্গা রেকর্ড বাজছে । বড় জোর পাত্রপাত্রী পরিবর্তন।
*সারাদেশে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে ঈদ/পুজা পালিত…………
*ঈদে পরিবহন গুলোতে টিকিট সঙ্কট
*হরতাল পালিত – সফল করার জন্য বিরোধীদলের নেতার জনগণকে অভিনন্দন
*হরতালের ডাকে সারা না দেয়ায় সরকারী দলের জনগণকে অভিনন্দন
*সিজনাল খবর – সারাদেশে শীতের প্রকোপ , গড়মে অতিষ্ঠ জনজীবন , বিদ্যুৎ সঙ্কট
*স্কুল /কলেজ / মাদ্রাসা ছাত্রী , গৃহবধূ ধর্ষণ ।
যত খবর দেখা যায় , সবই পুনারাবৃত্তি । এর সাথে ছবি থাকবে । আগামী পাঁচ বা দশ বছর পরে কি খবর হতে পারে তা এখনই বলে দেয়া যায়। শুধু মানুষ পরিবর্তন । এর অর্থ দাঁড়ায় – সাংবাদিক হতে হলে এ সম্পর্কে শিক্ষার কোন প্রয়োজন নেই। শুধু খবরের প্যাটার্ন জানলেই চলে। যখন থেকে খবরের কাগজ পড়ে আসছি, এমনই দেখছি।
খবর পরিবেশনায় ভিন্নতা এনে মানুষের দৃষ্টি ভংগি পাল্টানো সম্ভব ।
* সারাদেশে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে ঈদ/পুজা পালিত- দেশের ৬১ ভাগ দরিদ্র মানুষকে পরিপূর্ণ ঈদের আনন্দে আনতে ব্যর্থ আমাদের দেশের দেশের অতীত এবং বর্তমান শাসকেরা । এর সাথে দেয়া যায় রাজনীতিবিদ , আমলা , দরিদ্র মানুষের ঈদের দিনের ছবি।
*হরতালের জ্বালাও পোড়াও খবর ছবির সাথে থাকবে , জনগণের দুর্ভোগের খবর ও ছবি। জালাও পোড়ার ছবি আমরা দেখেছি- দেখিনি হরতালের কারনে দুর্ভোগে সাধারন মানুষের প্রতিক্রিয়া , যাদের কল্যাণের কথা বলে হরতাল আহ্বান করা হয়।
*অন্যান্য খবর গুলোর উপস্থাপনা ভিন্ন হওয়া প্রয়োজন ।
ধর্ষণের খবর পরিবেশনা সবচেয়ে অমানবিক বলে আমার কাছে মনে হয়। সাংবাদিকরা কুকুরের মত ছুটে যায় ধর্ষিতার কাছে । অধিকাংশ ক্ষেত্রেই খবর পরিবেশন টা এমন হয় যে , ধর্ষিতার পরিচয় মানুষ জেনে যায় , কিন্তু ধর্ষকের পরিচয় আড়াল করা হয় ‘ এলাকার প্রভাবশালী একজনের পুত্র , কতিপয় বখাটে যুবক , লীগ/দলের সদস্য ‘ ইত্যাদি বলে। আমার নিজের অভিজ্ঞতায় এই আড়াল করার পিছনে আছে অর্থের লেনদেন এর বিষয়। অনেক ক্ষেত্রেই সাংবাদিক খবর পরিবেশনার সময়ে ইচ্ছে করে এই সুযোগ টা রেখে দেন। ধর্ষিতার সাক্ষাৎকার , তাঁর বাব মায়ের সাক্ষাৎকার প্রচার করে তাঁকে যে আরো মানসিক নির্যাতন করা হচ্ছে – একথা এসব আহাম্মক সাংবাদিকের মাথায় আসেনা।
কি ফলাফল এই সংবাদ পরিবেশনে ? কমেছে ধর্ষণ এই সমাজ থেকে ? সংবাদ পরিবেশনা পাল্টাতে হবে ।
কিভাবে ? দেখুন –
” এই নরপশু/ পশুর দল এক স্কুল/কলেজ /মাদাসা ছাত্রী, গৃহবধূকে ধর্ষণ করেছে ”
এরপরে আসবে খবর। খবরের কোথাও ধর্ষিতাকে সনাক্ত করা যায় , তা থাকবেনা । ছবি থাকবে ধর্ষকের , তার মাতা পিতার ছবি সাক্ষাৎকার থাকবে।
“এক ধর্ষকের মৃত্যু দন্ড ”
এখানেও থাকবে ধর্ষকের ছবি , তার হয়ে আইনি লড়াইয়ে অংশ নেয়া আইনজীবীর ছবি , তার বাবা মায়ের ছবি । ধর্ষণের সংক্ষিপ্ত বিবরণ ।
” এটি একজন ঘৃণিত ধর্ষকের কবর ”
এখানে ছবি থাকবে ধর্ষকের , তার বাবা মায়ের , ধর্ষণের কারনে কবে তার ফাসি হয়েছিল , এলাকার মানুষের প্রতিক্রিয়া ।
প্রচলিত ধর্ষণের খবরে ধর্ষণ কমবে না । কমার কোন সম্ভাবনা নেই। এতে অনেকে উৎসাহিত হয়। এটি করলে শাস্তির উদাহারন এবং সামাজিক ভাবে ধর্ষকের প্রাপ্ত ঘৃণার উদাহারন দেখে ভবিষ্যৎ ধর্ষকদের নিবৃত করা যাবে বলে আমার ধারনা।
৭টি মন্তব্য
লীলাবতী
ভালো কথা বলেছেন ভাইয়া। নির্যাতিতার সব কিছু প্রকাশ করে তাঁকে আজীবনের জন্য নির্যাতনের সুযোগ করে দেয় সংবাদ মাধ্যম।
জিসান শা ইকরাম
প্রচলিত সংবাদ প্রকাশে কোন আনন্দ পাইনা এখন আর ।
খবরের কাগজের প্রথম পেইজ এখন আর পরি না। একঘেয়ে লাগে।
প্রজন্ম ৭১
গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট। এমন খবর প্রচারে অপরাধ কমছে না।
জিসান শা ইকরাম
ধন্যবাদ আপনাকে।
নীহারিকা
আপনার সাথে একমত
যাযাবর
এভাবে ভাবিনি কোনদিন । ভাবনার নতুন খোরাক দিলেন । ধন্যবাদ।
তৌহিদ
পত্রিকার খবরে ধর্ষকের ছবিসহ প্রকাশিত হওয়া উচিত।