বৈশাখ উদযাপন করা না করা নিয়ে আমরা বিভক্ত;
শুরু করতে চাই ভাইরাল একটা পোস্ট এর কথা দিয়ে অনিতা চক্রবর্তী নামে একজনের লিখা সারবস্তু হল ” মুসলমান শুধু রবিউল আউয়াল উদযাপন করবে, আর বৈশাখ পালন করবে সনাতন ধর্মানুসারীরা” আমাদের অনেকেই আবেগে এই পোস্ট হাজারটা শেয়ার দিয়েছেন ।
বৈশাখ উদযাপন চালু করেছে সম্রাট আকবর , আকবর কে ছিল ? সব চেয়ে বড় কথা আমরা বাঙালি আর বৈশাখ বাংলা সংস্কৃতির একটা অবিচ্ছেদ্য অংশ। আমরা বাঙালি, আমাদের সংস্কৃতি আমরা অস্বীকার করলে নিজস্বতা বলতে কি থাকে ? আমাদের পরিচিতি হবে কি দিয়ে ? বিশ্ব আমাদের জানবে কি দিয়ে বলতে পারেন ?
আমরা এখানেও ধর্ম কে অতি সূক্ষ্ম ভাবে ধুকিয়ে দিয়েছি , চলছে বিতর্ক । নাজায়েজ এর তকমা লাগাতে ইচ্ছা মত ধর্মের ব্যাখ্যা দাড় করাচ্ছি। আমাদের আসল সমস্যা হল সব কিছুতে ধর্ম কে জোড়াতালি দিয়ে যুক্ত করে দেয়া এবং একটা ঝামেলা পাকানো । আরে বেটা ধর্ম কি এত সস্তা জিনিস রে ? আগে ধর্ম কি বুঝ তার পরে টানাটানি কর । আগে মুসলমান কি ? সেটা বুঝে আয় তার পরে কথা বল । যারা এসব নিয়ে টানাটানিতে বাস্ত আমি তাদের বলতে চাই ভাই , মুসলিম কাকে বলে? আমারে বুঝায় দেন, আপনার তরে উৎসর্গিত হইব ।
বৈশাখ পালন করাতে আমি কোন ধর্মীও বাধা দেখি না । তবে এর মানে এই নয় যে উৎসবের নামে অন্যায় কে আমি সমর্থন দিচ্ছি । আমার মনে হয় এটা আমাদের কারো কাম্য ও নয় ।
আর এখনো বাংলাদেশে বসে যারা ধর্মের দোহাই দিয়ে বিরুধাচারণ করছেন তাদের বলি । ধর্মে বহুবার বলা হয়েছে সুদ হারাম হারাম , বাংলাদেশের অর্থনৈতিক বাবস্থা সুদের , তাই আজ থেকে বাংলাদেশের কোথায় বসে এক গ্লাস পানি ও খাবেন না , কারন সেই কলের পানি খাবেন তা সুদি অর্থনীতিতে ক্রয় বা উৎপাদন করা হয়েছে, সোজা কথা মুখে কুলূপ এঁটে থাকবেন, ধর্ম আপনাকে অবশ্যই বাঁচাতে হবে । আপনি মুসলিম ও ইমানদার এই দায়িত্ব আপনার।
আমরা আস্তিক ও নাস্তিক বিতর্কে চরমভাবে বিভক্ত;
কিন্তু যারা নিজেদেরকে নাস্তিক পরিচয় দিয়েছিলেন তাদের সবাইকেই নিজ ধর্ম অনুসারে সমাহিত করা হয়েছে । তাহলে বিষয় টা কি দাঁড়ালো ? অথচ তারা কিছু লেখা লিখি করেছিল বলে অনেক কেই হত্যা করা হয়েছে । যাও কিনা ধর্মের দোহাই দিয়ে , অথচ ধর্মে মানুষ হত্যা মহাপাপ ঘোষণা দেয়া হয়েছে । আল্লাহ আমাদের ক্ষমা করুন ।
এবার , যারা আমরা আস্তিক আছি তারা আসেন , আমরা কত টুকু ইসলামে প্রবেশ করতে পেরেছি ? ইসলাম কে জিবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে বাস্তবায়ন করেছি বা করতেছি বুকে হাত দিয়ে বলেন আমি শত ভাগ ইসলামের মাঝে আছি । আমি আপনাদের দেখতে চাই ।
আমরা ধর্ষণের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছি ;
আমি সবার প্রতি স্রধা রেখেই বলছি আমরা কতটা নৈতিক চরিত্রের অধিকারী নিজ জায়গা থেকে বিচার করে বলুন। আপনি জিবনে কখনোই কোন সুযোগ নেন নাই বা চেষ্টা করেন নাই বুকে হাত দিয়ে বলুন । আমি আপনাকে দেখতে চাই । সমাজটা পালটাবে কেমনে ? পালটাবে না , আমি বলছি পালটাবে না । অহরহ এইসব চলতেই থাকবে । কারন আমি পুরুষের ভেতর টাই যে ভিন্ন । আমার মনে হয় না এখানে আর কিছু বলার আছে ।
সংবিধানে রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম এটা নিয়েও আমরা বিভক্ত;
কিছুদিন আগে রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম থাকবে কি থাকবে না এটা নিয়ে আমরা মারাত্মক রকমের বিভক্ত হয়েছি । এ সংক্রান্ত অনেক গুলি কলাম ও পোস্ট আমি পড়েছি । কথা সেটা না । আসল বিষয় হচ্ছে , সংবিধান একটা বই এটার এ পর্যন্ত ১৬ বার সংশোধন হয়েছে । অষ্টম সংশোধনী: ১৯৮৮ সালের ৯ জুন সংবিধানে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অনুচ্ছেদে (২, ৩, ৫, ৩০ ও ১০০) পরিবর্তন আনা হয় এবং সংশোধনীর মাধ্যমে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বলে ঘোষণা করা হয়।
বিষয় হচ্ছে, একটা বইয়ের পাতায় ইসলাম রাষ্ট্রীয় ধর্ম থাকা না থাকায় আমাদের কি কোন লাভ হচ্ছে ? আমরা এটার জন্য আন্দোলন করছি কিন্তু ইসলাম আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠা পাক এর অনুশাসনে জীবন পরিচালিত হোক তা চাইছি না এর আন্দোলন ও করছি না । যারা রাষ্ট্র পরিচালনায় আছেন তাদের কে আমরা বুঝাতে পারছি না ইসলাম কতটা মানবিক আর গুরুত্পূর্ণ ধর্ম । আমরা খাটি মুসলিম হলে আজ মসজিদ গুলি নামাজের সময় ফাকা থাকতো না । উজ্জ্বল ভবিষ্যতের আশায় আমরা ইউরোপ বা আমেরিকার দেশ গুলিতে পাড়ি জমাতে সদা বাস্ত ও অনেকে জমিয়েছি । সেই দেশ গুলির রাষ্ট্রধর্ম কি ? আপনি তাদের শাসনে জীবন পরিচালনা করছেন আর সেখানে বশে বাংলাদেশে ইসলাম ধর্ম প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করছেন, মাঠ গরম করা বক্তব্য দিচ্ছেন, তাদের অনুশাসনে চলতে আজ কেউই আমরা বিভক্ত নই । ভণ্ডামির একটা মাত্রা থাকা উচিত ।
৮টি মন্তব্য
ব্লগার সজীব
বিভক্তি থাকবেই। বৈশাখ কোন ধর্মীয় অনুষ্টান না, এটি বাংগালীর জাতীয় অনুষ্টান। এটি নিয়ে বিতর্কের কিছু নেই।
রাষ্ট্রধর্ম সংবিধানে যুক্ত করেছিল এরশাদ. একটি নারী লিপ্সু, চরিত্রহীন, লম্পট এরশাদকে তোহলে সমস্ত ইসলামী চিন্তাবিদের উপরে স্থান দেয়া উচিত।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
“একটি নারী লিপ্সু, চরিত্রহীন, লম্পট এরশাদকে তোহলে সমস্ত ইসলামী চিন্তাবিদের উপরে স্থান দেয়া উচিত।” (y) (y) (y)
নীলাঞ্জনা নীলা
আমরা বাংলাদেশী, বাঙালী সংস্কৃতি আমাদের বাঙালীয়ানার পরিচয় বহন করে। কিসের ধর্ম এখানে?
বৈশাখ আমাদের বাঙালী সংস্কৃতিকে ধারণ করে।
অনিকেত নন্দিনী
বাঙালি বাংলা বছরের হিসাবে নতুন বছরের বর্ষবরণ করতেই পারে, এতে মাথা ঠোকাবার কিছু নাই। যারা বলেন বৈশাখ বিশাখা নক্ষত্রের নামানুসারে রাখা মাসের বরণের নামে বিশাখা নক্ষত্রের পূজো, তারা এমন কোনো দেশে চলে যাক যেখানে বৈশাখ মাস নাই। :@
লীলাবতী
যারা বলেন বৈশাখ বিশাখা নক্ষত্রের নামানুসারে রাখা মাসের বরণের নামে বিশাখা নক্ষত্রের পূজো, তারা এমন কোনো দেশে চলে যাক যেখানে বৈশাখ মাস নাই। @ নন্দিনী আপু, এমন মন্তব্যে শত লাইক (y)
অনিকেত নন্দিনী
আমাদের দেশের বারো মাসের নামই মোটামুটি নক্ষত্রের নামের উপর ভিত্তি করে রাখা। কিছু দাড়িওয়ালা রামছাগলের তিন বাচ্চা এগুলি না জেনেই লাফালাফি করে।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
এখানে যতোগুলো পয়েন্ট উপস্থাপন করা হয়েছে, তার প্রতিটির পেছনে রয়েছে রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্দি। রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্দির প্রয়োজনেই সুবিধাবাদীরা ভণ্ডামির আশ্রয় নেয়।
এসব ভণ্ডামির বেড়াজাল ডিঙানো স্মভব একমাত্র জ্ঞানের আলো জ্বালিয়ে।
শুভ নববর্ষ।
খসড়া
মানুষ সৃষ্ট থেকেই দলবদ্ধ ভাবে বাস করে। তখন থেকেই দলছুট হবার স্বভাবও তাদের আছে এবং তা একা না অন্য দের নিয়ে অন্য দলে ভিড়ে অথবা নতুন দল তৈরি করে। কারনে অকারনে গন্ডগোল করাই মানুষের স্বভাব। অন্যের সমালোচনাই তাদের মূল লক্ষ। মত বিরোধ মজ্জাগত।