হুমায়ুন আহমেদের ছোট্ট চরিত্র ‘কটুমিয়া’। হঠাৎ করে কটুমিয়া বিলাসী ও আয়েশী জীবনে পদার্পণ করে। বড়লোকদের এমন জীবনে তিনি যেহেতু মোটেও অভ্যস্ত নন। তাই তার উপকার না হয়ে ক্ষতি হয়। অতি এলকোহল ও রিচ ফুডের কারণে শরীরে মেদ জমে তার অবস্থা খুবই খারাপ। একসময় তিনি সারাক্ষন বাথটাবেই থাকেন।

আমরাও দিনে দিনে কটুমিয়া হয়ে উঠছি। খাওয়া- পড়ার টেনশান নেই বসে থেকে থেকে বিলাসিতা, অতি আদর যেন পেয়ে বসেছে। আর যিনি( খালা) এটি করছেন তিনি বুঝতেও পারছেন না কি পরিমাণ ক্ষতিটা করছেন!

হঠাৎ কোমর ব্যাথা, টের পেলাম ওজন বেড়েছে। বেশি না মাত্র সাতকেজি। আর কবছর করোনা থাকলে কি হবে জানিনা। ওজন কমানো দরকার কিন্তু সাইকেলে চড়লে দশ প্যাডেলের পর পা অবশ, তখন মনে হচ্ছে কাল থেকে হাঁটতে হবে। হাঁটতে গেলে জুতা পরতে মন চাচ্ছে না কিংবা বিরক্ত লাগছে। জীবনে অতিরিক্ত অনিয়ম চলে এলে যা হয় আরকি?

বাংলাদেশ সুস্বাদু ও মিষ্টি আমের দেশ হিসেবে নাম করে ফেললো। এর সুফল আমরা সবাই পাচ্ছি। আম আমার প্রিয় ফল। হাডিভাঙ্গা, রুপালী আম ভাই- বোনদের বাড়িতে পৌঁছানোর পর নিজে রসালো আমেজ নিতে দিনে মিনিমাম কয়েকবার আম খেয়ে ফেলছি। সবার এমন হয় কিনা জানিনা আমার হয়। আম খাবার পরেই শরীর কেমন যেন অবশ অবশ লাগে, ভীষন ঘুম পায়। কাজ নেই তাই ঘুমিয়ে পড়ি। জেগে আবার নবউদ্দোমে আম খাই। ওজন তো বাড়তেই হবে!

আমি কটু মিয়া হওয়াতে অন্য একজনও ভীষন খুশি। মা আমাকে চাইলেই কাছে পাচ্ছেন। চা- কফিতে একই গল্প বারবার বলছেন। আমি অবশ্য শুধু শুনি। ভীষন ইচ্ছে করে বলি, মা তোমার এ গল্পটা বহুবার শুনেছি আর বলো না। নতুন কিছু বলো। কিন্তু গলায় এসে আটকে যায় বলতে ইচ্ছে করে না।

আজ প্রায় দুবছর হলো সকাল হবার তাড়া নেই। একচোট দৌড়ে এসে দশহাতে রান্না করে, নাকে মুখে দিয়ে কাজে দৌড়ের যে মজা ছিলো তা চরম মিস্ করছি।

স্টুডেন্ডদের সাথে খুঁনসুটিময় সময়, পরীক্ষা, খাতাপত্র মূল্যায়ন, ক্লাস তৈরি এসব বাড়তি কাজ ছিলো। এখন কলেজ নেই তাই মনে হয় লাইফে কোন কাজ নেই, কোন চার্মও নেই। জীবন চলছে যেমন- তেমন। বারোটায় উঠে এককাপ চা হলেও চলে।

আমরা যারা মনের খুশিতে লিখি এমন বোরিং টাইমে আমার মনে হয় লিখতেও ভালো লাগে না। আমি লিখতে পাচ্ছি না সেরকম নয় লিখতে যে প্রেষণা লাগে সেটি নেই। সারাক্ষন মাথা ঝিম ধরে থাকে । ব্লগে যাই কারও কারও লেখা অসাধারণ তবুও মন চায়ই না মন্তব্য করি।

প্রায়ই মধ্যরাতে ঘুম ভাঙ্গে আর কোনভাবেই ঘুম আসেনা। মা খুটখাট শব্দে চা খান, তাহাজ্জুদ পড়েন। আমি পাশেই পঁচা, উৎকট গন্ধ পেতে থাকি। একি আমার নিজের লাশের পঁচা গন্ধ? মরার পর আমার গন্ধ এমন উৎকট ও পঁচাই যদি হয় তাহলে জীবনে এতো হিসাব- নিকাশ কিংবা জটিলতা কেন?

তবুও জীবনের জটিল হিসাবে ঢুকে যাই। কতোটা পেয়েছি, কতোটা হারিয়েছি, কতোটা পাপ করেছি বা করবো। একজন লেখক বলেছিলেন, আমি ছোট ছোট পাপ করি কবরে যাতে বোর ফিল না করি। ফেরেশতারা আমাকে পাপের জন্য মেরে মেরে তকতা বানাবে আর আমি সেই ব্যাথায় কো কা করবো এটাই কবরে আমার কাজ।

পুরুষদের তবুও সময় কাটবে। আমাদের জন্য তো হুর, গেলমান কিছুই নেই। তাহলে করবোটা কি? সত্যিই কবরে কি ভীষন বোরড্ হবো? কেমন করে কাটবে।পাপের জন্য ফেরেশতা নাকি অনেক পেটাবে। এতো ছোট্ট জীবনের এতো জটিল হিসাব! জীবন বড়ই কঠিন। আল্লাহ কি সত্যিই আমাদের জন্য এতোটা কঠোর হবেন? কাহার হবেন?

মধ্যরাতের জটিল ভাবনায় মাথা কুলায় না। তাছাডা জটিল হিসাব বেশিক্ষণ করাও ঠিক না। আমিও লেখকের মতো কিছু পাপ কুঁড়োতে ওয়েব সিরিজের জগতে ঢুকে যাই।কি দুধর্ষ অভিনয় আর গল্প। এমনি করেই যায় যদি দিন যাকনা,,,,,

ছবি নেটের

৮০৭জন ৬১৫জন
0 Shares

১২টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ