
আজ সারাদিন ছিল বিষাদের দিন! কাকডাকা ভোর থেকেই কেমন যেনো ছন্নছাড়া অগোছালো অনুভূতি হচ্ছিল! যেনো একঝাঁক বিষণ্ণতা এসে ঘিরে ধরেছিল আমার চতুর্দিক। বুঝতে পারছিলাম আজ আর কিছুই ঠিক থাকবে না। উফ্! অদ্ভুত রকমের বিষণ্ণ বিষাদে তলিয়ে যেতে শুরু করলাম।
গতরাতে মেজ খালা উনার বাড়িতে যেতে বলেছিলেন।আমি খালাকে কথা দিয়েছিলাম আসবো। কিন্তু আজ একদমই ইচ্ছে করছে না। এ যেনো এক অদ্ভুত বাড়তি যন্ত্রণায় মস্তিষ্কে অদৃশ্য রক্তক্ষরণ শুরু হয়েছে। কী করবো এখন,কী করে বলবো? আমার ভালো লাগছে না
আজ আমার যেতে ইচ্ছে করছে না। অনেক ভেবে চিন্তে ঠিক করলাম আজ আর যাবো না। পরে একদিন গিয়ে দেখা করে আসবো। বলে দিলাম আজ যাবো না।
ঠিক বুঝতে পারছি না কী হচ্ছে? শুধু মনে হচ্ছে বেদনার বহ্নি শিখা একটু একটু করে জ্বালাচ্ছে পোড়াচ্ছে। কিসের বেদনা, কিসের জ্বালা-পোড়া! এইসব বেদনা জ্বালা পোড়া জীবন থেকে ইস্তফা দিয়েছি। তবে আজ এমন লাগছে কেনো? একটু একটু করে দিন বেড়ে যাচ্ছে সাথে বেড়ে যাচ্ছে আমার বিষণ্ণতা অস্থিরতা।
তখন বিকেল বেলা। সময় ৪:৫৫ পি এম। মন খারাপ আরো কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিল কাব্যের টেক্সট। কাব্য আমার পুরোনো বন্ধু। ওর সাথে আমার টম-জেরি সম্পর্ক ছিল সেই তিন চার বছর আগে থেকেই। জেরি যেমন সবসময় টমকে জ্বালাতন করে, পিছনে লেগে থাকে ঠিক তেমনই কাব্য জ্বালাতো আমাকে। আমার প্রতিটি কথার প্রতিকথা বের করে খুব করে রাগাতো। মাঝখানে বেশ কিছু দিন কথা হয়নি। যেনো কোথাও হারিয়ে গিয়েছিল। কাব্য কেমন যেনো ধীরস্থির শান্ত হয়ে গেছে! আমাকে আর একদম ক্ষ্যাপায় না, জ্বালায় না জেরির মতন। কী হয়েছে ওর? এমন চুপসে গেছে কেনো ছেলেটি!
৫:১৪ বেরিয়ে পড়লাম ঘর থেকে। হাতে ফোন আর হেডফোন কানে গুজে। মেইন রোডের পাশ ঘেঁষে হাঁটছি। হঠাৎ নোটিশ করলাম যানবাহনের, মানুষের, পাখিদের কারো কোনো আওয়াজ নেই। দেখছি রাস্তায় বাইক যাচ্ছে অথচ কোন শব্দ নেই। মানুষ হাঁটছে তাও কি-না নিঃশব্দে। পাখিদের আনাগোনা আছে কিন্তু কিচিরমিচির নেই। আরে হচ্ছে টা কী? কী হয়েছে আজ জয়পুরহাট বাসীর? কোথায় কোনো শব্দ টব্দ নেই। আমি ভাবনার গভীর অতলে ডুবে আছি। সব কিছু এমন অদ্ভুত কেনো? এমন সময় আমার খুব কাছ ঘেঁষে একটা বাইক গেলো। এই গায়ে লাগে কি সেই লাগে এমন অবস্থা!
প্রচণ্ড চমকে উঠলাম!
তারপর কানে কিছু একটা অনুভব করলাম। মনে হলো বেশ ভাড়ী কিছু। কানে হাত দিতেই মনে হলো হেডফোন কানে দিয়েছি কিন্তু গান চালাইনি। তাই এতোক্ষণ এমন নিশ্চুপ নিস্তব্ধ লাগছিল সব কিছু। এবার বেশ হাসি পেলো। হেডফোন খুলে হাতে নিয়ে মেইন রোড পাড় হয়ে গেলাম। তারপর একঘন্টা হাঁটলাম। এই একঘন্টা হাঁটার সময় একটাই গান বার বার শুনেছিলাম। বেশ ভালো লাগছিলো।
গানের কথা গুলো ছিল এ রকম…
‘ভালোবাসা নামক পাখি বন্দী আজ কোনো খাঁচায়
এই পৃথিবী সেই পৃথিবী নেইকো কেউ কোথাও তাঁকে বাঁচায়’
ছবি-আমিই
২৯টি মন্তব্য
রেজওয়ানা কবির
আজ আমাকেও অনেক বিষন্নতা আঁকড়ে ছিল।আমিও আজ একটা গান বার বার শুনছিলাম,
“কিছু কিছু নাম্বার থেকে আর আসবে না কোন ফোন,
কিছু কিছু এস এম এস এ আর ভরবে না এ মন”
ভালো লাগলো আপনার লেখা।ভালোবাসা অবিরাম।
সুরাইয়া পারভীন
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন
ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সবসময়
ফয়জুল মহী
অনিন্দ্য সুন্দর উপস্থাপন । ভালো লাগা অবিরাম ।
সুরাইয়া পারভীন
ধন্যবাদ অশেষ
ভালো থাকুন
বন্যা লিপি
আজ মন খারাপের দিন ছিলো বুঝি আদ্যোপান্ত! নির্জিব একটা দিন পেরোতে পেরোতে ব্রেকিং নিউজের মতো ছড়িয়ে পড়েছে পত্রিকার পাতা থেকে বাতাসের সর্বত্র যোগাযোগে।
আজ একটা ভীষণ বিষন্ন একটা দিবস পালন হলো আড়ম্বরে যথা তথা।
তবু পথঘাট, সেই পরিচিত রাস্তাটাও মনে করিয়ে দেয় তুমি আজ ভালো নেই…….
সুরাইয়া পারভীন
শুধু বিষণ্ণতা আর বিষণ্ণতা
যেনো চতুর্দিক থেকে ছেয়ে গেছে বিষণ্ণতা
কোথাও কেউ ভালো নেই এই বিষণ্ণতায়
চমৎকার মন্তব্যের জন্য কৃতজ্ঞতা সহ আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন আপু
ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন সবসময় 💜💜💜
কামাল উদ্দিন
মাঝে মাঝে এমন মন খারাপ করা দিন যায়, দেখা গেছে কারো সাথে কোন কারণে মনোমালিন্য হলো সারাটা দিন আর মন ভালো হয় না। সেক্ষেত্রে আমি চেষ্টা করি বন্ধুদের সাথে কর্মহীন একটা আড্ডাবাজি করে সময় কাটাতে। অবশ্য সবাই সব সময় আর সময় কাটানোর জন্য অবসর থাকে না। তবে কানের ভেতর এয়ার ফোন গুজে পথচালাটা সত্যিই বেশ বিপদ জনক। ব্লগে পোষ্ট করলে আর অন্যের পোষ্টগুলো পড়ে সময় কাটানোটাও কিন্তু খারাপ মন ভালো হওয়ার ভালো একটা রেসিপি………শুভ সকাল আপু।
সুরাইয়া পারভীন
আমার মন খারাপ হলে কারো সাথেই কথা বলতে ইচ্ছে করে না, পড়তে ইচ্ছে করে না, লিখতে ইচ্ছে করে না। একা একা বেড়িয়ে নির্জন নিস্তব্ধ কোনো স্থানে নিজেই নিজের সাথে কিছু সময় কাটাতে ভালো লাগে।
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন ভাইয়া
ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সবসময়
ছাইরাছ হেলাল
বিষণ্ণতা একটি অসুখের নাম, জ্বলে/জ্বলায়।
মুক্তির পথ খুঁজে নিতে হয় নিজেকেই। বিলাস-বিষণ্নতা না এলেই ভাল।
সুরাইয়া পারভীন
হুম একদম সঠিক বলেছেন ভাইয়া
নিজেকেই মুক্তির পথ খুঁজে নিতে হয়
কৃতজ্ঞতা সহ আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন ভাইয়া
ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সবসময়
সুপর্ণা ফাল্গুনী
বিষণ্ণতা সবাইকেই যেন কোন না কোন সময়ে ভর করবেই , জ্বালাতন করবেই। এটা এমন একটা অসুখ নিজেকেই এর থেকে বের হবার পথ খুঁজতে হয়। গান শুনুন, বই পড়ুন, মেয়েকে নিয়ে ব্যস্ত থাকুন। শুভ কামনা রইলো।
সুরাইয়া পারভীন
একদম তাই দিদিভাই
এর থেকে পরিত্রাণ নিজেকেই খুঁজতে হবে
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন
ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সবসময়
আলমগীর সরকার লিটন
বেশ কাল্পনিক ভাবনাগুলো ভারি চমৎকার আপু
সুরাইয়া পারভীন
এটা কাল্পনিক নয় ভাইয়া
এমনটাই ঘটেছে সেদিন
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন
ভালো থাকবেন সবসময়
আরজু মুক্তা
বিষণ্নতা কাটানোর দারুণ রেসিপি, গান শোনা। আর একটা হলো সামাজিক কাজে অংশগ্রহণ।
সুরাইয়া পারভীন
দারুণ বলেছেন আপু
সেদিন আমার বিষণ্ণতা কেটেছিল
একগান ৩০ বার শুনে
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন
ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সবসময়
আরজু মুক্তা
ওয়াও
তৌহিদ
দেখছেন কারবারটা! এত বেখেয়ালি হলে হয়! বিষণ্ণতা মনে থাকলে দিগ্বিদিকজ্ঞান শুন্য হয় মানুষ। তখনই ঘটে নানাবিধ বিপত্তি।
সাবধানে থাকুন আপু। আপনার আশেপাশের প্রিয়জনদের দেখাশুনো করার দায়িত্ব কিন্তু আপনারই।
শুভকামনা রইলো।
সুরাইয়া পারভীন
এটা একদম সঠিক বলেছেন ভাইয়া
সেদিনও কিন্তু ঘটতে পারতো কোনো দুর্ঘটনা
কৃতজ্ঞতা সহ আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন ভাইয়া
ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সবসময়
শামীম চৌধুরী
ভালোবাসা নামক পাখি বন্দী আজ কোনো খাঁচায়
এই পৃথিবী সেই পৃথিবী নেইকো কেউ কোথাও তাঁকে বাঁচায়’
চিরন্তন সত্য বলেছে।
শুভ কামনা রইলো।
সুরাইয়া পারভীন
চমৎকার ছিল গানের কথা গুলো
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন দাদাভাই
ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সবসময়
সুপায়ন বড়ুয়া
এমন কোন দিনে বিষন্নতায় ভর করে মানুষের মন
উদাষ মনে জায়গা করে নেয় বেদনা বিষাদের ক্ষণ।
হতাশা ভুলে হাসি খুশী মনে ভাল থাকুন সারাক্ষণ।
সুরাইয়া পারভীন
ছন্দে ছন্দে দারুণ মন্তব্য
কৃতজ্ঞতা সহ আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন দাদা
ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সবসময়
রোকসানা খন্দকার রুকু
এ সময়টাই বোধহয় এমন তাই।সবাই বলে ভালো লাগে না।কেন লাগে না তাঁর কারন জানা নেই।
ভালো না লাগলে গান শুনতে হবে। পুরোপুরি না হলেও কিছুটা কাজ করবে।
শুভ কামনা। ভালো থাকুন।
সুরাইয়া পারভীন
জ্বী আপু
সেদিন গান আমার মন ভালো করে দিয়েছিল
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন
ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সবসময়
হালিম নজরুল
হেডফোন নিয়েও এত চমৎকার গল্প লেখা যায় এটা আগে ভাবিনি। চমৎকার।
সুরাইয়া পারভীন
হা হা হা হা হা
ভাইয়া এটা সত্যিই ঘটেছে
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন
ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সবসময়
শামীনুল হক হীরা
দারুণ লিখেছেন সম্মানিত।।। শুভেচ্ছা জানবেন সতত।
সুরাইয়া পারভীন
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন
ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সবসময়