আজ সারাদিন ছিল বিষাদের দিন

সুরাইয়া পারভীন ১১ সেপ্টেম্বর ২০২০, শুক্রবার, ১০:২৪:৩১অপরাহ্ন একান্ত অনুভূতি ২৯ মন্তব্য

আজ সারাদিন ছিল বিষাদের দিন! কাকডাকা ভোর থেকেই কেমন যেনো ছন্নছাড়া অগোছালো অনুভূতি হচ্ছিল! যেনো একঝাঁক বিষণ্ণতা এসে ঘিরে ধরেছিল আমার চতুর্দিক। বুঝতে পারছিলাম আজ আর কিছুই ঠিক থাকবে না। উফ্! অদ্ভুত রকমের বিষণ্ণ বিষাদে তলিয়ে যেতে শুরু করলাম।

গতরাতে মেজ খালা উনার বাড়িতে যেতে বলেছিলেন।আমি খালাকে কথা দিয়েছিলাম আসবো। কিন্তু আজ একদমই ইচ্ছে করছে না। এ যেনো এক অদ্ভুত বাড়তি যন্ত্রণায় মস্তিষ্কে অদৃশ্য রক্তক্ষরণ শুরু হয়েছে। কী করবো এখন,কী করে বলবো? আমার ভালো লাগছে না

আজ আমার যেতে ইচ্ছে করছে না। অনেক ভেবে চিন্তে ঠিক করলাম আজ আর যাবো না। পরে একদিন গিয়ে দেখা করে আসবো। বলে দিলাম আজ যাবো না।

ঠিক বুঝতে পারছি না কী হচ্ছে? শুধু মনে হচ্ছে বেদনার বহ্নি শিখা একটু একটু করে জ্বালাচ্ছে পোড়াচ্ছে। কিসের বেদনা, কিসের জ্বালা-পোড়া! এইসব বেদনা জ্বালা পোড়া জীবন থেকে ইস্তফা দিয়েছি‌। তবে আজ এমন লাগছে কেনো? একটু একটু করে দিন বেড়ে যাচ্ছে সাথে বেড়ে যাচ্ছে আমার বিষণ্ণতা অস্থিরতা।

তখন বিকেল বেলা। সময় ৪:৫৫ পি এম। মন খারাপ আরো কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিল কাব্যের টেক্সট। কাব্য আমার পুরোনো বন্ধু। ওর সাথে আমার টম-জেরি সম্পর্ক ছিল সেই তিন চার বছর আগে থেকেই। জেরি যেমন সবসময় টমকে জ্বালাতন করে, পিছনে লেগে থাকে ঠিক তেমনই কাব্য জ্বালাতো আমাকে। আমার প্রতিটি কথার প্রতিকথা বের করে খুব করে রাগাতো। মাঝখানে বেশ কিছু দিন কথা হয়নি। যেনো কোথাও হারিয়ে গিয়েছিল। কাব্য কেমন যেনো ধীরস্থির শান্ত হয়ে গেছে! আমাকে আর একদম ক্ষ্যাপায় না, জ্বালায় না জেরির মতন। কী হয়েছে ওর? এমন চুপসে গেছে কেনো ছেলেটি!

৫:১৪ বেরিয়ে পড়লাম ঘর থেকে। হাতে ফোন আর হেডফোন কানে গুজে। মেইন রোডের পাশ ঘেঁষে হাঁটছি। হঠাৎ নোটিশ করলাম যানবাহনের, মানুষের, পাখিদের কারো কোনো আওয়াজ নেই। দেখছি রাস্তায় বাইক যাচ্ছে অথচ কোন শব্দ নেই। মানুষ হাঁটছে তাও কি-না নিঃশব্দে। পাখিদের আনাগোনা আছে কিন্তু কিচিরমিচির নেই। আরে হচ্ছে টা কী? কী হয়েছে আজ জয়পুরহাট বাসীর? কোথায় কোনো শব্দ টব্দ নেই। আমি ভাবনার গভীর অতলে ডুবে আছি। সব কিছু এমন অদ্ভুত কেনো? এমন সময় আমার খুব কাছ ঘেঁষে একটা বাইক গেলো। এই গায়ে লাগে কি সেই লাগে এমন অবস্থা!

প্রচণ্ড চমকে উঠলাম!

তারপর কানে কিছু একটা অনুভব করলাম। মনে হলো বেশ ভাড়ী কিছু। কানে হাত দিতেই মনে হলো হেডফোন কানে দিয়েছি কিন্তু গান চালাইনি। তাই এতোক্ষণ এমন নিশ্চুপ নিস্তব্ধ লাগছিল সব কিছু। এবার বেশ হাসি পেলো। হেডফোন খুলে হাতে নিয়ে মেইন রোড পাড় হয়ে গেলাম। তারপর একঘন্টা হাঁটলাম। এই একঘন্টা হাঁটার সময় একটাই গান বার বার শুনেছিলাম। বেশ ভালো লাগছিলো।

গানের কথা গুলো ছিল এ রকম…

‘ভালোবাসা নামক পাখি বন্দী আজ কোনো খাঁচায়

এই পৃথিবী সেই পৃথিবী নেইকো কেউ কোথাও তাঁকে বাঁচায়’

ছবি-আমিই

১২২৩জন ১০৬৪জন
0 Shares

২৯টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ