
পত্রিকাটির নাম “ইচ্ছেঘুড়ির বনবাস”
আজ সকালে একটি নিখোঁজ সংবাদ বড় বড় ছাপা অক্ষরে বের হয়েছে,
মনের সব ইচ্ছেরা চুক্তি করে বনবাসে যাওয়ার যাত্রা শুরু করেছে।
রাস্তার সব অলিগলিতে, সেই নিখোঁজ সংবাদের খবর মাইকে প্রচার করা হচ্ছে।
সবার মনে একই প্রশ্ন ইচ্ছেরা কেন এভাবে নিজেদের জলাঞ্জলি দিয়ে হারিয়ে গেল???
অনেক অন্বেষনের পরও পাওয়া যাচ্ছে না ইচ্ছেদের!!!
বেশকিছুদিনপর ইচ্ছেদের খুঁজে পেলো এক বেহুশ মাতাল।
ইচ্ছেদের হারানোর কারন জানতে চাইলে,
ইচ্ছেদের নাটাই সুতায় আটকানো ঘুড়ির অনুভুতির ব্যাখ্যা,,,,
ছোটবেলায় তারা থাকে বাবা মায়ের বাক্সবন্দী,
তাই তাদের আর ডানা মেলে আকাশে উড়ার শখ পুরন হয় না আর।
এরপর,একটু বড় হলে যখনই তারা ভাবে, এবার সময় এসেছে!তাদের বাক্স থেকে বেড়িয়ে পড়ার!
তখনই যুক্ত হয় কোন না কোন বাস্তবতার চরম আর তীব্র আকার!
যেখানে এক নিমিষেই ভেঙ্গে চুরমার হয়ে হারিয়ে যায় ইচ্ছেদের স্বপ্নযাত্রা।
মাতল হাওয়ায় উড়ে যায় ইচ্ছদের পড়নের বেনারশী আর রং বেরঙ্গের শখের আহলাদে তৈরী ও যত্নে গড়া বাক্স।
অতঃপর মাস যায়, বছর যায়,
একটা সময়, ইচ্ছেদের পায়ে বেড়ী পরিয়ে দেয় সমাজ নামক এক খোলসযুক্ত পাত্র।
এভাবে ধীরে ধীরে ইচ্ছেগুলো যতদিন যায় ততোই গুমরে,পঁচতে পঁচতে মনের এক বিশাল জায়গা জুড়ে আবাসস্থান তৈরী করে।
হায়রে আবাস!
যেখানে ঘুনেপোকা,উইপোকা টিকটিকি আর ইঁদুর মিলে সেই আবাসের আরও বারোটা বাজায় আর কি!
সময়ের ঘুরপাকে ধীরে ধীরে ইচ্ছেদের চেনা শহর, চেনা অলিগলি, চেনা আবাস অচেনায় পরিনত হতে থাকে।
এরপর হঠাৎ ইচ্ছেরা শিশিরের শব্দের মতো টুপ করে আওয়াজহীন পড়ে যায় সদর দঁড়জায়।
তবুও ইচ্ছেরা মচকে গেলেও ভাঙ্গে না।
তাদের আহত শরীর নিয়ে অপেক্ষার প্রহর গোনে!
আর আবার নতুন করে স্বপ্ন দেখে নগ্ন পায়ে
শিশিরের স্পর্শে শিউরে উঠতে!
কিন্তু বাস্তবতার চরম নিরিখে আর হয়ে ওঠে না তাদের এইসব স্বাদ আহলাদকে প্রশয় দেয়া।
তাই শাখ দিয়ে, উলু দিয়ে, সানাই বাঁজিয়ে এতো ঘটা করে আয়োজন করলো ইচ্ছেদের বনবাসের।
ইচ্ছেরা এখন ঘুড়ির নাটাই সুতায় আটকে পড়া প্রানহীন নিছক অবশিষ্টাংশ।
আজ ইচ্ছেঘুড়ির বনবাস।
বেহুশ মাতাল বিভোরে ঘুমিয়ে আছে এখনো।
হয়ত মাতালও সঙ্গী হতে চায় ইচ্ছেদের সাথে! ইচ্ছেদের হাল এখন,,,,,
ইচ্ছেরা দুঃখের যাবৎজীবন কারাগারের আক্ষেপের সেল থেকে চিৎকার করে বলছে,,,,
আমরাইতো তোমাদের বাঁচার প্রেরনা, এভাবে আর আমাদের জলাঞ্জলী দিও না 😭
আমরাও বাঁচতে চাই, স্বপ্ন দেখতে চাই।।।
ছবিঃ নেট থেকে।
১১টি মন্তব্য
আলমগীর সরকার লিটন
বেশ অনুভুতির ছোঁয়া কবি আপু ভাল থাকুন
রেজওয়ানা কবির
ধন্যবাদ ভাইয়া, শুভকামনা।
মোঃ মজিবর রহমান
ইচ্ছেরা দুঃখের যাবৎজীবন কারাগারের আক্ষেপের সেল থেকে চিৎকার করে বলছে,,,,
আমরাইতো তোমাদের বাঁচার প্রেরনা, এভাবে আর আমাদের জলাঞ্জলী দিও না. বাহ ! দারুন প্রকাশ।
ইচ্ছেরা আছে বলেই জীবন ভবিৎসতের ভাবনা ভাবায়। ইচ্ছেরা জাগিয়ে রেখেছে আমাদের।
রেজওয়ানা কবির
ধন্যবাদ ভাইয়া, সুন্দর মন্তব্যের জন্য।ইচ্ছেরা সত্যি জাগিয়ে রাখে আমাদের,তবে সময় আর বাস্তবতার কারনে তাদের রুপ চেঞ্জ হ্য়। শুভকামনা।
মোঃ মজিবর রহমান
হুম! ইচ্ছেরা শক্তি যোগান দেয় স্বপ্ন আনয়ন করে মানুষকে।
মনির হোসেন মমি
পুরো একটি জীবনের বাস্তব রূপ তুলে ধরেছেন।ইচ্ছা শক্তিই জীবন বাচিয়ে রাখে ।।
রেজওয়ানা কবির
হুম ভাইয়া ঠিক বলেছেন। ধন্যবাদ আর অনেক শুভকামনা।
হালিমা আক্তার
চমৎকার কবিতা, মুগ্ধতা ছুঁয়ে গেল। ইচ্ছে শক্তি আছে বলেই এগিয়ে যাওয়ার পথ খুঁজে পাই ।
রেজওয়ানা কবির
অনেক ধন্যবাদ আপু। সত্যি ইচ্ছেশক্তি আছে বলেই এগিয়ে যেতে পারে। শুভকামনা।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
ইচ্ছাদের পায়ে শিকল , চাইলেই ছুটে গিয়ে অসাধ্য সাধন করতে পারে না। তবুও ইচ্ছে রা বেঁচে থাকুক, মনের আনন্দে, মুক্ত বিহঙ্গ হয়ে উড়ে বেড়াক । শুভ রাত্রি আপু
রেজওয়ানা কবির
অনেক অনেক ধন্যবাদ আর শুভকামনা দিভাই। অনেকদিনপর আপনার মন্তব্য পেয়ে ভালো লাগল।ইচ্ছেরা বেঁচে থাকুক এই কামনা।