-হ্যালো , আসসালামুআলাইকুম। আমি ইউসুফ শাকের।
-ওয়ালাইকুম সালাম। কিন্তু আমি তো আপনাকে চিনতে পারলাম না।
-আমাকে চিনলেন না! সো স্যাড। কাল আমরা একই বাসে চেপে চিটাগাং থেকে ঢাকা এলাম। আমি আপনার সামনের সিটে বসে ছিলাম। কতোবার তাকালাম পেছনে অথচ আপনি ফিরেও তাকালেন না। আপনার এতো অহংকার কেন সুস্মিতা সেন?
-কে সুস্মিতা সেন? আর আপনি আমার নাম্বার পেলেন কিভাবে?
-ও হ্যাঁ, আপনি দেখতে অনেকটা সুস্মিতা সেনের মতো। আর আমি তো আপনার নাম জানিনা তাই ও নামেই ডাকলাম। আর আপনার নাম্বার পেতে আমাকে বেশি কষ্ট করতে হয়নি। বুদ্ধি থাকলে সবই সম্ভব। শুধু বাস কাউন্টারে ফোন দিয়ে বলেছি, বাস থেকে নামার সময় আপনার ব্যাগের সাথে আমার ব্যাগ একচেন্জ হয়েছে। ব্যাগে আমার কাপড় চোপড়ের সাথে আজকের পরীক্ষার প্রবেশপত্রও আছে। প্রবেশপত্র না পেলে আমার ভীষন বিপদ হবে। আজ পরীক্ষা দিতে পারবো না। পরীক্ষা না দিলে চাকরী হবে না। চাকরী না হলে চিরকুমার থাকতে হবে। ভাইয়া আমাকে বাঁচান বলে, প্রায় কেঁদেই দিলাম। কাউন্টারের লোকও কাঁদো কাঁদো হয়ে আপনার নাম্বার দিয়ে উপকার করলো।
-আচ্ছা, নাম্বার নিয়ে খুব ভালো করেছেন। তা আপনি এতো বকেন কেন? ছেলেরা কম কথা বলবে এটাই নিয়ম।বেশি কথা বলা বাঁচাল হবে মেয়েরা।
-আপনি কি মাষ্টারী করেন? করে থাকলে দয়া করে আমাকে জ্ঞান দিবেন না। আমি কম কথাই বলি। এখন আপনাকে পটাতে আমার বেশি কথা বলা জরুরী, তাই বলছি।
-ও আচ্ছা! তো আমাকে পটিয়ে করবেন কি?
-কি আজব কথা! লোকে যা করে আমিও তাই করবো। শোনেন, আজকের অডিটরের পরীক্ষাটা ভীষন ভালো দিয়েছি। তারমানে আমি চাকরীটাও পেয়ে যাচ্ছি। তাছাডা আমি সুযোগ্য ছেলে, দেখতে ভালো, হাইট পাঁচ ফুট দশ ইন্চি। আপনার জন্য একেবারেই পারফেক্ট। এবার বিয়ের জন্য তৈরি হোন সুস্মিতা সেন!
-এই শুনুন! ফোন রাখেন তো। আপনার কথায় আমার মাথা ধরে যাচ্ছে। আর আমাকে সুস্মিতা সেন ডাকবেন না। আমি মুনতাহা জোবায়ের।
-ওকে, এখন রাখছি। কিন্তু পরে আবার ফোন দিবো। বাই সুস্মিতা সেন। সরি, মুনতাহা জোবায়ের।
উফফ্ কি আজব ছেলে। প্রথম পরিচয়ে কেউ এতো কথা বলে। কোনকিছু না জেনেই সে অনবরত বকবক করে বলেই গেলো সব। যেন কতো কালের পরিচিত।
আমি মুনতাহা জোবায়ের। জোবায়েরের সাথে আমার বিয়ে হয়েছে বলেই আমি সিদরাতুল মুনতাহা থেকে মুনতাহা জুবায়ের হয়েছি। মেয়েদের বেলায় এই আজব নিয়ম কেন বুঝি না।
আমার একটি মেয়েও আছে। বাবা দাঁড়িয়ে থেকে আমার বিয়ে দিয়েছিলেন। এখন আমার হাজবেন্ডের বয়স ষাট এর ঘরে। আমার বাবার থেকেও চার বছরের বড় মানুষটির সাথে বাবা কেন বিয়ে দিয়েছিলেন সেটাও একটা ইতিহাস।
বাবা আর জোবায়ের একসাথে ব্যবসা করতেন। বাবার পুঁজি কম, বুদ্ধিও কম। একটা দায়িত্বে চরম অবহেলা করায় ব্যবসায় বড় রকমের লোকসান হলো। লোকসানের পুরো দায় পড়লো বাবার ঘাড়ে। বাবা শোধ করবে সে স্বামর্থ্যও নেই।
তখন জোবায়ের বাবাকে আমার জন্য বিয়ের প্রস্তাব দিলেন। বাবা প্রথমে অবাক হলেন। একসময় আমাকে জানালেন। আমি কোন বাক্যব্যয় ছাড়াই রাজী হয়ে গেলাম। কারণ এ ছাড়া বাবার আর কোন পথ ছিলো না।
বিয়ের কিছুদিন পরই জানতে পারলাম জোবায়ের বিবাহিত। তার বৌ- বাচ্চা সবই আছে। প্রথম বউকে সে ভালোবেসেই বিয়ে করেছে। কোন কারনে তারসাথে ঝগড়া চলছিল। সেই ফাঁকেই সে আমাকে বিয়ে করেছে।
আমাকে বিয়ে করার পর এখন তার প্রথম বউ এর প্রতি রাগ পরে গেছে। সে মাঝে মাঝেই সেখানে যায়। তার সাথে সমস্ত যোগাযোগই আছে। শুধু আর আমি তার কাছে বিশ বছরের একটা কচি খাদ্য। খাবারের জন্যই সে আমার কাছে থাকে।
জানতে পারার পর আমি কাঁদলাম , অনেক কাঁদলাম। একসময় নিজেকে তৈরি করলাম জোবায়ের নামের লোকটার সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে। লোকটাও কি সুন্দর অভিনয় করে যেতে লাগলো। মন পরে থাকে বড় সংসারে আর সে আমার সাথে সংসার সংসার খেলে। আমিও একটা পন্চাশ বছরের লোকের সাথে বিশ বছরের তরুনী সংসার সংসার খেলতে লাগলাম।
আমি এই ফাঁকেই পড়াশুনা শেষ করে মোটামুটি সংসার করার জন্য কোমর বেঁধে নামলাম। কোমর বাঁধার ফল স্বরুপ আমার মেয়ের জন্ম হলো। আমি ভরা যৌবনে এসে সংসার খেলায় শারিরীক সুখের জন্য উন্মুখ হয়ে থাকি। আর সে তাতে বারবার ব্যর্থ হয়ে অল্পদিনের মধ্যেই তার পুতুল পুতুল খেলা শেষ হলো। একসময় আর সে না পেরে ওঠে, আমাদের বিছানা আলাদা করে ফেললো। আমি তখন শুধুমাত্র তার সেবাদাসীতে পরিণত হলাম। তার পছন্দ মতো বিভিন্ন পদ রান্না, ওষুধ, ডাক্তার এসবই আমার কাজ।
তবুও কোন তপ্ত দুপুরে জোবায়েরের পাশে আমার ভীষন শুতে ইচ্ছে করে। কিংবা সংসার আলাপনের অজুহাতে তাকে একটু ছুঁয়ে দিতে মন চায়, গায়ের গন্ধ নিতে মন চায়। আমার এমন চাওয়া তার কাছে ভয়ের, সে ভয়ে সিটকে থাকে। আতঙ্কিত হয়। আমি একটা বয়স্ক মানুষকে আতঙ্কিত করার অপরাধে নিজেকে অপরাধী ভাবি। শরীরকে সংযমী হতে বলি। এক সময় আমার শরীরও তা মেনে নেয়।
এখন আমি রীতিমতো আটত্রিশ বছরের এক মহিলা। যদিও আমাকে দেখতে মোটেও মহিলা লাগে না। এ নিয়ে জোবায়ের সারাক্ষন আতঙ্কে থাকে, আমাকে কেন বয়স্ক দেখায় না। আমার একটু হেলদি হওয়া উচিত। এবং আমি ফোন হাতে নিলে সে পরাজিত রাগী মোরগের মতো চোখ পাকিয়ে থাকে। রক্তাক্ত ঝুটি নিয়ে অভিযোগ করে আমি যা করছি তা চরম অন্যায়।
আমি যে অন্যায় করছি তা আমার একবারও মনে হয় না। আমি কবিতায় নয়, কথা বলি যেন তার সাথে। নিজের কথা বলি মনে বলে, আমি কবিতায় মনে মনে প্রেমিকও খুঁজি। জোবায়ের ভালোই বোঝে। আমার মাকে বিচার দেয়। মাকে সারাক্ষন পাহাড়ায় বসিয়ে সে নিশ্চিন্ত হয়।
আমার বিয়ের দুবছরের মাথায় বাবা মারা যান। বাবার ধারণা তিনি আমার উপর ভীষন অন্যায় করে ফেলেছেন। এটা ভাবতে ভাবতেই তিনি স্ট্রোক করেন। আমি ভীষন অসহায় হয়ে পরলাম মা আর ছোট তিন ভাইবোনকে নিয়ে। আর কোন উপায় না পেয়ে, জোবায়েরকেই আমার তখন একমাত্র ভরসা বলে মনে হলো। আমি নিজের প্রয়োজন ভুলে কখন যে একজন দায়িত্ববোধক নারীতে পরিনত হলাম তা নিজেও জানিনা। একসময় ভাই- বোনরা মোটামুটি একটা অবস্থানে চলে যায়। আমার দেখে শান্তি লাগে।
কিন্তু একাকিত্বতা সে যেন আমার সাথে সাথেই থাকে। আমি মনে মনে সেই ফোনটির অপেক্ষা করি। অবশেষে সেই ফোনটি আবার আসে বহুবছর পর। না চাইতে চাইতেই আমি তার কথায় আসক্ত হয়ে যাই। তবুও ভান করি, আমি বিবাহিত আমার এটা কাজ নয়। পরকীয়া করা ঠিক নয়।
শাকের মজার মানুষ, আমাকে হাসায়। তার কথায় কথায় যুক্তি। পরকীয়া নাকি হয় বিবাহিত- বিবাহিত মিলে। সে যেহেতু ব্যাচেলর তাই তার সাথে আমার পরকীয়া শব্দটি সঙ্গত নয়। সে আমার প্রেম ভিখারি কিংবা প্রেমিক হতে পারে!
প্রেমিক শব্দটা আমাকে কেমন শিহরিত করে। ভেতরে ভেতরে রোমানচ এনে দেয়। টুপটাপ ভিজিয়ে দেয় শীতের শিশিরে। তবুও আমি আতঙ্কিত হই। কোন একদিন ঠিকই ধরা পরে যাই। পরিবারের সবার সামনে জোবায়ের আমাকে চরিত্রহীন ঘোষণা দেয়। এ নিয়ে ছোট ভাইবোনেরা উপহাস করে। শরীর সর্বস্ব হিসেবে আখ্যা হয় আমার। আমি কূলকিনারা না পেয়ে শাকেরের উপর চড়াও হই। তাকে চরম অপমান করি। সে কেঁদে কেটে ফোন রেখে দেয়।
বহুরাত নির্ঘুম কাটানোর পর আমি শরনাপন্ন হই সাইক্রিয়াটিষ্ট এর কাছে। তিনি নিয়মিত কাউন্সিলিং করান। তাতে একবেলা ভালো থাকি তো অন্যবেলা ভীষন খারাপ। মনের মেঘ কখন যেন জমে বৃষ্টি হয়ে ঝড়ে পড়ে। তার খবর আমারও অজানা রয়ে যায়।
শাকেরের সাথে আমার শেষ কথা কবে হয়েছে মনে নেই। তাকে আমি আমার সকল গোপণ- প্রকাশ্য বলেছিলাম। সব শুনে সে সরে যাওয়ার বদলে ভীষন কষ্ট পেলো এবং বললো তারকোন সমস্যা নেই। আমি চাইলে মেয়ে সহ তার কাছে চলে যেতে পারি।
কিন্তু বয়স? শাকেরের সাথে আমার বয়সের বেশ তফাত। আমার মনে ভয় বাস করে। এও কি সম্ভব? আমি শাকেরের আট বছরের বড়। আমি তাকে আমার সিনিয়রিটি মনে করিয়ে দিতেই সে আমাকে একগাদা কথা শোনায়—
এই যে শুনুন সিনিয়র, ভাগের মা গঙ্গা পায় না জানেন তো! আর নিজেকে সারাক্ষন সিনিয়র সিনিয়র বলেন কেন? আপনি যদি বুড়ো ধামকে বিয়ে করে তাকে সিনিয়র মনে করতে না পারেন, সে হিসেবে আপনি তো আমার কাছে বাচ্চা। তো আমি কেন আপনাকে বিয়ে করতে পারবো না? আর আপনি তো মহাজ্ঞানী। সারাক্ষন জ্ঞানী জ্ঞানী লেকচার দেন। তা এই বুড়োর সাথে বিয়েতে রাজী হয়েছিলেন কেন? আপনার কান্ড-জ্ঞান নেই, নাকি তখন কান্ড- জ্ঞান কাজ করেনি। বুড়ো তো দুদিন পরে মরে ভূত হবে। দেখবো তখন কে দ্যাখে আপনাকে? তখন আমাকে খুঁজলেও পাবেন না। দুনিয়াতে ভালোবাসার মানুষ ছাড়া কেউ আপন হয় না বুঝলেন? আর আপনি আমার ফোনে বিরক্ত হন তাই ফোন দিয়ে আর বিরক্ত করবো না। থাকেন বুড়োর পা চেটে। তবে কোন একদিন আমি আবার ফিরবো!
শাকের ফিরেছে জোবায়ের মারা যাবার পর। এখন আমার কোন বাধাই নেই তাকে গ্রহন করতে। তবুও মন কেন যেন মানছে না! বারবার বলছে একজন বিধবার এটা মানায় না। পরিবারে আমি সবার বড়। মা মারা গেছে। এখন ভাই,বোন এবং চৌদ্দ বছরের মেয়ে আমার বিয়ে কখনোই মানবে না। কেন এ বয়সে আমার বিয়ে করা যাবে না, জীবনকে সুযোগ দেয়া যাবে না? এসবের কোন ব্যাখ্যাও তাদের কাছে নেই তবুও তারা মানবে না।
তারা ভালো করেই জানে যে মানুষটার সাথে আমি এতোগুলো বছর সংসার করেছি তার সাথে আমার মনের সম্পর্ক হয়নি। তার মন পরে ছিলো অন্য কোথাও। আর আমার কচি ডাবের শাষযুক্ত মন অক্ষতই রয়ে গেছে। শুধু দেহটাই কেবল একটু ব্যবহার হয়েছে। তাহলে আমার মনের লেনাদেনায় সমস্যা কোথায়?
সমস্যা একটাই, তা হলো আমরা সুবিধা বাদী। নিজের সুবিধার জন্য হাদিস, কোরআন সব খুলে বসি। আবার এও ভুলে যাই সেখানে কোথাও দ্বিতীয় বিয়ে কিংবা বিধবা বিয়ে কিংবা বয়স কোন বাধাই নয়। অনুমতি থাকার পরও আমরা তা খুলে বসি, খোঁড়া যুক্তি দেখাই। আমার ভাই- বোন ও পরিচিতরাও তাই করছে। তারা বলছে আর কবছর পরে আমার মেয়ের বিয়ে দিতে হবে। আর আমি কিনা নিজের কথা ভাবছি। শাশুরী হবার বয়সে এসে বিয়ে এটা বড্ড বেমানান।
এদিকে বারবার আমারও মন বলছে আমি কি পারবো শাকেরকে পরিপূর্ণ সুখী করতে। কিংবা সে যদি কোন একদিন আমার বয়স ও বৈধব্য নিয়ে খোঁচা দেয়, কষ্ট দেয়। মন আর নতুন করে কষ্ট পেতে চায় না। মনকে বোঝাই। মন তবুও ওই গানটার মতো বলে- বাহির বলে দুরে থাকুক, ভেতর বলে আসুক না,,,,
আমার বয়স যেটাই হোক জীবনে একজন সঙ্গী দরকার। যার সাথে দিন শেষে একান্তে মন মেলে বসা যায়। নিশ্চিন্ত হওয়া যায় তার সান্ন্যিধ্যে। আমি সিদ্ধান্ত নিলাম, যতোই আমার ভাইবোন, সমাজ, মেয়ে বাঁধা দিক। আমি এগিয়ে যাবো আমার মনের প্রয়োজনে। শরীর বারবার আমার কাছে তার পাওনা দাবী করছে। আমি যাবো তার প্রয়োজনে। বিয়ে যদি শরীর ও মনের প্রয়োজন হয় তাহলে সেখানে বয়স আর পরিবার কেন বাঁধা হবে? বরং তাদের উচিত আমাকে স্বাগত জানানো।
ছবি- নেটের।
৮টি মন্তব্য
খাদিজাতুল কুবরা
নামটা খুব ভালো হয়েছে।
আর বর্ণনা ও অসাধারণ। যদি ও শাকেররা পরাবাস্তব তবুও লেখক স্বপ্ন দেখে এবং জাতিকে সত্যিটা দেখানোর সৎসাহস রাখে।
একসময় গল্পে চরম পরিণতি দেখানো ছিল লেখকের স্বার্থকতা। সময় বদলেছে লেখক এখন শুভ পরিণয়ে সাজাতে পারেন নিজের ভাবনাকে।
একদিন বদলাবে সমাজ, লেখকের সাথে একমত আমি ও।
রোকসানা খন্দকার রুকু
আশা করি অবশ্যই বদলাবে। মা অসুস্থ ছিলো তাই উত্তর দিতে দেরী হলো। তবে আমার মতে, প্রতিউত্তর বাদ দিলেই ভালো হতো। অযথা ধন্যবাদ দেয়া নেয়া!
মনির হোসেন মমি
মানুষকে সমাজ সংসার মেনেই চলতে হয় আর যদি হয় সে নারী তাহলেতো কঠিন শর্তে জীবন যাপন করতে হয়।সমাজে এর ব্যতিক্রমের সংখ্যাও কম নয়।ডন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে ৮০ বছরের বুড়াবুড়িও নতুন সম্পর্কে জড়ায়।মনের ক্ষুধা জীবনের শেষ বয়সে সঙ্গি হিসাবে বিশেষ করে যে বয়সটায় তার পাশে কেউ আর থাকেনা,কেউ ইচ্ছায় অনিচ্ছাও বলে না কেমন আছেন,সেবাতো দূরের বাত এর জন্য হলেও এটা আমার চোখে মন্দ কিছু নয়
সুন্দর উপস্থাপনা।
রোকসানা খন্দকার রুকু
ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা অশেষ।
মোঃ মজিবর রহমান
আমি মুনতাহা জোবায়ের। জোবায়েরের সাথে আমার বিয়ে হয়েছে বলেই আমি সিদরাতুল মুনতাহা থেকে মুনতাহা জুবায়ের হয়েছি। মেয়েদের বেলায় এই আজব নিয়ম কেন বুঝি না– আপনারা কেউ বাধ্য হয়ে নেন কেউ বা সখ করে নেন ইউরোপিয় কায়দায়। মুসলমান ঘরের সন্তান আকিকা দিয়া নামটি বাবামা কত ভালো বেসে করেছে আর আধুনিক যুগে সব ধুয়ে মুঝে দিচ্ছে। এটা আমি পছন্দ করিনা।
বিয়ে যদি শরীর ও মনের প্রয়োজন হয় তাহলে সেখানে বয়স আর পরিবার কেন বাঁধা হবে? বরং তাদের উচিত আমাকে স্বাগত জানানো।
আপনার এই যুক্তি আমি সহমত পোষণ করি। কারণ আমার ধর্ম আমাকে সেই অধিকার দিয়েছে। সমাজ নয়।
রোকসানা খন্দকার রুকু
ইউরোপীয় কায়দা নয় ভাই। বাংলাদেশী কায়দা। ধন্যবাদ ও অশেষ কৃতজ্ঞতা ভাই।
সাবিনা ইয়াসমিন
এটা গল্প হলেও এমন ঘটনা প্রায়ই দেখি,শুনি। আমি নিজেই এমন কিছু ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছি। দুটো ঘটনা বলি, অল্প বয়সের এক নারীর বিয়ে হয়েছিল নিজের দ্বিগুণ বয়সী এক লোকের সাথে। তিন মেয়ের জন্ম তাদের বড় করা এবং দুই মেয়ের বিয়ের দেয়ার কিছুদিন পরেই ভদ্রলোকের মৃত্যু হয়েছিলো। নারীটির বয়স তখন চল্লিশের কিছু বেশি। তার মেয়েরা ঠিক করলো মায়ের বিয়ে দিবে, পাত্রও ঠিকঠাক পাওয়া গেল। মাকে রাজি করানো গেলেও বাদ সাধলো দুই মেয়ের শশুর বাড়ির লোক। মেয়েদের সংসার ঠিক রাখার জন্য সেই নারী আর বিয়ের পিড়িতে বসেনি। তিনি আজীবন একা থাকাকেই মেনে নিয়েছেন।
পরের ঘটনা ভিন্ন, এক ভদ্রলোকের স্ত্রী মারা যাওয়ার পর সে ঠিক করেছিলো ব্যবসা সংসার সব ছেলেমেয়ের হাতে তুলে দিয়ে বৃদ্ধাশ্রমে বাকি জীবন পার করবেন। চার ছেলে দুই মেয়ে বাবার এমন সিদ্ধান্ত মেনে নেয়নি, নিজেরাই পাত্রী খুঁজে বাবাকে বিয়ে করিয়ে দিয়েছে।
যদিও অত্যন্ত স্বল্পাকারে হচ্ছে তবুও সমাজ বদলাচ্ছে। আর এই পরিবর্তন আসছে নতুন প্রজন্মদের সচেতন মানষিকতার বদৌলতে। এখন হাজারো ঘটনা/দুর্ঘটনার ভীড় ঠেলে কিছু খবর প্রকাশিত হয় যেখানে দেখতে পাই কারো একাকিত্ব দূর করার জন্য মানুষের বয়স/ সন্তান বা স্বজনরা বাধা না হয়ে নিজেরাই স্বদ্যেগে এগিয়ে এসেছে/ আসবে।
হয়তো আরও অনেক সময় লাগবে তবে আলো আসবেই।
গল্পটা ভীষণ ভালো লাগলো।
ভালো থাকুন, শুভ কামনা 🌹🌹
রোকসানা খন্দকার রুকু
ভীষন ভালো লাগাতে পেরে আমারও ভালো লাগলো। ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা অশেষ!!!