মাননীয় ডক্টর ইউনূস, আপনার নতুন ধারনার কথা জানলাম, ”সামাজিক ব্যবসা গ্রাম” । ২/১ দিনের প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রকাশিত বিরাট এবিষয়ক প্রতিবেদন থেকে বিষয়টা অনেকের মতো আমারও নজরে এসেছে । প্রতিবেদনের প্রথমদিকে মনে হয়েছিল যে, কোন ব্যক্তি অথবা প্রতিষ্ঠান সামাজিক ব্যবসা হিসেবে লভ্যাংশটা কোন তরুন উদ্যোক্তাকে দেবে এবং লভ্যাংশটা বাদে তার বিনিয়োগকৃত অর্থটাই শুধুমাত্র ফেরৎ নেবে । গ্রাম হিসেবে এখানে একটা ইউনিয়নকে বুঝানো হয়েছে । প্রতিবেদনের শেষাংশে এসে দেখা যাচ্ছে, বিনিয়োগকৃত অর্থ যাকে এখানে ফান্ড বলে বলা হচ্ছে, সেটার যোগান ইউনিয়ন দেবে অর্ধেক আর অর্ধেক দেবে আপনার সংগঠন গ্রামীন ট্রাষ্ট । আর এই যৌথ ফান্ডটা পরিচালনা করবে গ্রামীন ট্রাষ্ট, এটা বুঝতে কষ্ট হলো । তবুও আমার মনে হয় যে, এর উত্তর আপনার আছে । কারন আপনি সৎ মানুষ । দেবেন আশা করতে পারি সম্তবত: ।
শুনে বিরক্তি লাগে এটা যে, আপনার গ্রামীন ব্যাংক লভ্যাংশ আদায় করার জন্য প্রচন্ড চাপ দেয় । এমনকি ঘরদোরের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের উপরও হাত দেয় আপনার লোক স্যার । এটা কী আপনি জানেন ? অনেক ঋণগ্রহীতা আপনার ব্যাংকের ঋণ নিয়ে সাপ্তাহিক কিস্তি দিতে না পেরে আত্মহত্যা পযর্ন্ত করেছেন । এগুলি কেমনে অস্বীকার করবেন । আমি আপনার হয়ে অনেকের সাথে ঝগড়া পযর্ন্ত করেছি । কিন্তু ঝগড়া করার বিশেষ, মানে খুব যুৎসই যুক্তি খুঁজেও পাইনা এখন আর।
কারন আপনার গ্রামীন ব্যাংকের ৮৫ হাজার শেয়ার হোল্ডার । শুনেছি গ্রামীন ব্যাংকের লভ্যাংশ দিয়ে ক্রমান্বয়ে গড়ে উঠেছে গ্রামীন ট্রাষ্ট, গ্রামীন টেলিকম ইত্যাদি নামের অনেক প্রতিষ্ঠান । মানি যে, সেগুলোতে কর্ম-সংস্থান হয়েছে অনেক বেকার তরুন-তরুনীর । যদি বুঝে থাকি, তবে এটাই হচ্ছে সামাজিক ব্যবসা, এটাতে দারিদ্রতা একদিন বিশ্ব হতে বিতাড়িত হবে, আপনার এই স্বপ্নের কথাও আমরা জানি । আংশিকভাবে মানি এটাও, অর্থাৎ প্রায় ৬০-৭০ ভাগ মানি । বাকীটা অজর্নের জন্য আপনাকে সারাদেশে বিরাজিত সুশাসনের দিকে তাকাতে হবে । সে প্রশ্ন অন্যত্র স্যার । তবে এই যে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলি গড়ে উঠলো গ্রামীন ব্যাংকের টাকায়, সেটার সামান্য কিছু সুফলও কি ৮৫ হাজার আপনার শেয়ার গ্রহীতারা পাওয়ার দাবীদার নয় ?
প্রশ্নটা করে গেলাম স্যার । কারন এদেশে কিছু করতে হলে আপনাকে আপনার স্বচ্ছতা প্রমান করতে হবে আগে । এটা প্রমান করার আগে আপনি কেন, করোরই পক্ষে আর দারিদ্রতা দুর করার কোন পদক্ষেপ গ্রহন করা সম্ভব নয় । সেই দিন শেষ হয়ে গেছে । নতুবা কেন ব্যাপক গণমানুষের মাঝে স্থান করে নিতে পারছেন না, এমনকি আপনার মতো এত বড় মাপের (আপনি আসলেই বড় মানুষ স্যার) মানুষও পযর্ন্ত না । মানুষ আসলে সচেতন এবং চালাক হয়ে গেছে । হতে পারে তা আপনাদের মতো ক্ষুদ্রঋণ প্রদানকারী সংস্থাগুলোর অবদান । এটারও মূল্য বিরাট ।
আপনি বলেছেন, গ্রামীন দরিদ্র মহিলাদের মাঝে এই বোধ জেগেছে যে, তারাও উদ্যোক্তা হওয়ার মতো যোগ্যতা রাখে এবং এই বোধটা ক্রমেই প্রসারলাভ করছে । আপনার কর্মকান্ডের ফলে এটা সম্ভব হয়েছে । সঠিক কথা তবে আত্মতুষ্টিতে ভুগলে তো হবেনা স্যার । কারন আত্মতুষ্টিতে ভোগা মানুষও কিন্তু একদিন হারিয়েই যান শেষ পযর্ন্ত এবং শেষ বিচারে । আপনি কোন মানসিকতা নিয়ে উপস্থাপিত হচ্ছেন, তা বোঝার মানুষও আপনি-ই বাড়িয়ে দিয়েছেন তাদেরকে সচেতন করার মাধ্যমে, এখন সামলান ।
ধন্যবাদ আপনাকে ।
৬টি মন্তব্য
জিসান শা ইকরাম
হুম, গ্রামীন ব্যংকের অনেক কিছুই প্রশ্নবিদ্ধ এখন।
আজিম
জানতাম ১টি মন্তব্য হলেও আপনিই সেটা করবেন । মন্তব্যটিও করেছেন আপনি খুবই প্রাসঙ্গিক ।
ধন্যবাদ ।
রিমি রুম্মান
গ্রামীণ ব্যাংক নিয়ে অনেক প্রশ্ন… আগ্রহ কমেছে অনেক আগেই…
আজিম
প্রশ্নগুলোর উত্তর না পাওয়া, এটাই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন । ধন্যবাদ ।
শুন্য শুন্যালয়
গ্রামীণ ব্যাংক এর ছোট একটা ব্রাঞ্চের ম্যানেজার ছিলো আমার আপু, অনেক রুট এর খবর জানি। তাই কোনকালেই শ্রদ্ধা আসেনি।। সাময়িক একটা উচ্ছাস এসেছিলো যখন নোবেল পেলো, কিন্তু তার পরের অবস্থান আমরা সবাই জানি।।
আজিম
আপনার আপুদের মতো অনেকের কর্মসংস্থানও হয়েছে । আর আমি যতদুর জানি, ডক্টর ইউনূস কোন প্রতিষ্ঠান থেকেই কোনরকম দুর্নীতি করে ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হননি । আশা করি জনাবা শুন্য শুন্যালয় রুটগুলির খবর সম্ভব হলে ব্লগে প্রকাশ করবেন ।
ধন্যবাদ ।