আমার কৈশোরে আকাশী হলুদের পতাকায় ছেয়ে যেতো আমাদের আধা শহুরে গ্রামের আকাশ, যেদিন আবাহনী মোহামেডানের খেলা থাকতো। ফাকে ফাকে দুয়েকটা সাদাকালো পতাকা, ব্যাটারী আনা হইতো চাদা তুইলা, টিভি নামায়া দেওয়া হইতো বারান্দায়, উঠানের দিকে মুখ করে।
সেই সময়ের সেই সাদাকালো টিভিতে আমাদের একজন ফুটবল মহানায়ক ছিলেন – দ্যা রিয়েল সুপারস্টার। শুধুমাত্র তারজন্য মোহামেডানের আলাদা গেমপ্ল্যান থাকতো। ক্রীড়ালোক এর সেন্টারফোল্ডের তার রঙ্গীন পোস্টারটি অনেকদিন টাঙ্গানো ছিলো আমার পড়ার টেবিলের সামনের দেয়ালে। নব্বইয়ের প্রথম দিকে সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পাওয়া ফুটবলার- একবার সেই আমলে অকল্পনীয় বিশ লাখ টাকা পারিশ্রমিক পেয়েছিলেন। বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা ফুটবলার বেছে নিতে বললে প্রথম তিনেই থাকবে তার নাম। কিন্তু সর্বকালের সেরা ডিফেন্ডার হিসাবে তার ধারে-কাছে যাওয়ার সাধ্য কারও নেই। সেই সময়ে ঢাকা বা কলকাতার ফুটবলপ্রেমীরা তার খেলা দেখতেই মাঠে যেত… কলকাতার মাঠেও তিনি অসম্ভব জনপ্রিয় ছিলেন।
আজকের রিয়াল বার্সা ভক্তদের অনেকেই হয়তো তার নামও জানেনা, আফসোস নাই তাতে – যারা জীবনে একবার তার খেলা দেখেছে, আমৃত্যু তাকে ভুলবে না। অনন্যসাধারণ সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার মাত্র ৩৯ বছর বয়সে কিডনির জটিলতায় ভুগে ২০০৫ সালের ১১ই ফেব্রুয়ারি মারা যান। ফুটবলের প্রতি অপরিসীম ভালবাসা আর অক্লান্ত পরিশ্রমই তার মৃত্যুকে ত্বরান্বিত করে। নিষেধ সত্ত্বেও ফুটবল আর মাঠ ছাড়তে পারেননি। ১১ ফেব্রুয়ারি, আমার কৈশোরের মহানায়কের মহাপ্রয়াণের দিন।
মোনেম মুন্না, প্লে ইন হেভেন (3
তথ্য কৃতজ্ঞতা – ফেসবুক গ্রুপ ফুটবল ফ্রিক
২৭টি মন্তব্য
ছাইরাছ হেলাল
বেশি জানা নেই, কিডনি জটিলতায় তার বোন তাকে কিডনি দান করেছি এই জানি।
তবে সে নাকি অসম্ভব সুন্দর সুপুরুষ ছিলেন। আমাদের এখানে এমন খেলোয়াড় নাকি দেখা যায় না।
আগুন রঙের শিমুল
সে সর্বকালের সেরা বাঙ্গালী ডিফেন্ডার দাদা, তারা পার কইরা বল নিয়া যাওয়া মোটামুটি অসম্ভব ছিল সেই সময়।
মুন্না যখন আবাহনীর ম্যানেজার ছিলেন সে সময়কার ঘটনা একবার ১৫ আগস্টে আবাহনীর সাথে একটা দলের (নাম মনে পড়ছে না) খেলা ছিল। খেলার আগে টিভিতে ম্যানেজারদের সাক্ষাতকার নিতো। মুন্না ভাইকে বলা হয়েছিল ১৫ আগস্ট বিষয়ে কিছু না বলতে। মুন্না ভাই দৃঢ় কন্ঠে সেই প্রস্তাব প্রত্যাখান করেছিল। আর তাই সেদিন তিনি টিভিতে আসেননি।
হি অয়াজ দ্যা ম্যান উইথ হার্ট 🙂
প্রজন্ম ৭১
মুন্না দেশে এবং কলকাতাতে সমান জনপ্রিয় ছিলেন।
আগুন রঙের শিমুল
হ্যাঁ, অসম্ভব জনপ্রিয় ছিলেন দুজায়গাতেই 🙂
মোঃ মজিবর রহমান
তাঁর অকাল প্রয়ানে মর্মাহত।
আল্লাহ বেহেস্তদান করুন, আমিন।
আগুন রঙের শিমুল
আমিন
জিসান শা ইকরাম
একটি সময়ে আবাহনী মোহামেডান ফুটবলে বুদ হয়ে ছিলাম
আবাহনী মোহামেডানের খেলা দেখতে গিয়েছি ঢাকা অনেক বার।
তখন অবশ্য সালাউদ্দিন,মেজর হাফিজের যুগ,আমি আবাহনীর সমর্থক 🙂
মোনেম মুন্নার খেলা আমি দেখেছি,একজন বড় খেলোয়ারের সমস্ত বৈশিষ্ট তার ছিলো
একজন ষ্টার।
মোনেম মুন্না, প্লে ইন হেভেন (3
আগুন রঙের শিমুল
আমিও আবাহনীর অন্ধ সমর্থক দাদা 🙂
ব্লগার সজীব
অকালে চলে গেলেন তিনি।তিনি বেঁচে থাকলে তাঁর নির্দেশনায় দেশ ফুটবলে এগিয়ে যেতো অনেক দূর।
আগুন রঙের শিমুল
আমাদের দুর্ভাগ্য সজীব 🙁
খসড়া
আমরা তখন ওদের খেলা দেখতাম আর আবাহনী- মোহামেডান- ব্রাদার্স নিয়ে ঝগড়া করতাম ঠিক যেমন আওয়ামিলীগ বিএনপি নিয়ে করি।
আগুন রঙের শিমুল
আর এখন সবাই করে বার্সা – রিয়াল , ম্যানিউ – লিভারপুল নিয়া 🙂 আমিও করি , ইউ আর দ্যা সিটিজেন অফ ওয়ার্ল্ড (নিজেদের গৌরব ভুইলা , বেপান্না ) 🙂
শুন্য শুন্যালয়
মোহামেডানের সাপোর্ট করতাম, তাই মোনেম মুন্না ছিলো একটা আতংকের নাম। হ্যাটস্ অফ এই গ্রেট প্লেয়ারকে। গ্রেটদের মৃত্যু নেই।
আগুন রঙের শিমুল
মোহামেডান 😮 -:-
আগুন রঙের শিমুল
প্রতিটি মোহামেডান হারজিন্টিনা সাপোরটার
শুন্য শুন্যালয়
বুইঝা ফালাইছি আপনি বেরাছেরা দলের সাপোর্টার ^:^
নুসরাত মৌরিন
এই যে ভাইয়া আমি কিন্তু আবাহনী আবার আর্জেন্টিনা।আর্জেন্টিনা নিয়ে আবোল তাবোল বলা কিন্তু সহ্য করবো না। :@
নুসরাত মৌরিন
খুব বেশি মনে নাই।তবে ভাইয়ারা আবাহনী করতো,তখন খুব একটা শোরগোল পড়ে যেত আবাহনী-মোহামেদান খেলার সময় পাড়ায় পাড়ায়- এতটুকুই মনে আছে।
শ্রদ্ধা রইলো মোনেম মুন্নার প্রতি।ফুটবলের গৌরবের দিনগুলো ফিরে এলেই তাঁর প্রতি সত্যিকার শ্রদ্ধাটুকু দেখানো হবে।
আগুন রঙের শিমুল
নুসরাত বাংপাকিদের পাকিস্থান সাপোর্ট করা বন্ধ হলেই এইসব গ্রেটদের প্রতি সত্যিকারের শ্রদ্ধা দেখানো হবে , কারনটা উপরে হেলালদার কমেন্টের উত্তরে বলেছি 🙂 আর ফুটবল আমাদের প্রাণে এখনো আছে বঙ্গবন্ধু কাপের খেলায় কি পরিমান লোক হইছে দেখছেন ? আসলে সবাই কৃকেটরে যতখানি স্পন্সর করে এটেনশন দেয় তার অর্ধেক যদি ফুটবলরে দিত , তাইলেই দেখতেন 🙂 আর আফ্রিকান ফুটবলার রা আরেকটা ঝামেলা – এদের কারনে দেশী মিডফিল্ডাররা মৌসুমের বিরাট একটা সময় সাইড বেঞ্চে বসেই কাটায় 🙁
নুসরাত মৌরিন
ভাইয়া আমি যে ফুটবলের কী পরিমান ফ্যান বিশ্বাস করবেন না!!এখনো দেখুন না ক্রিকেট বিশ্বকাপ শুরু হয়েছে কিন্তু তাতে কী ফুটবল বিশ্বকাপের উন্মাদনার ছিঁটে-ফোটাও আছে?নাই!!
ক্রিকেট কখনোই ফুটবলের আকাশ ছোঁয়া জনপ্রিয়তার টিকিটাও ছুঁতেই পারবে না।
হ্যাঁ বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের সময় ঠিক দেখা গেছে ঠিক মতো পৃষ্ঠপোষকতা পেলে ফুটবলের সেই স্বর্নযুগে ফিরে আসবে।
কিন্তু এই কর্পোরেট যুগে সবকিছুতেই সবাই শুধু বানিজ্য দেখে ভালবাসা দেখে না।অথচ ফুটবল এখনো আমাদের চরমতম ভালবাসার জায়গা জুড়ে আছে…।
বাং-পাকিদের কথা কিছু বললাম না,এইসব নপংশুকদের জন্মই আজন্ম পাপ।
স্বপ্ন
ভালো থাকুন তিনি স্বর্গে।
আগুন রঙের শিমুল
ভালো থাকুন 🙂
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
আমার প্রিয়দের একজন ছিলেন।সামনা সামনি দেখেছি বহুবার।অসম্ভব সৎব্যাবহার। -{@
আগুন রঙের শিমুল
আপনি ভাগ্যবান মমি ভাই 🙂
আমি মাত্র একবার দেখেছিলাম কাছ থেকে, তাও ভিড়ের ভেতর থেকে আব্বু উচুকরে তুলেধরেছিলেন বলে দেখতে পেয়েছিলাম 🙂
শিশির কনা
মহান ফুটবলারের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা।
আগুন রঙের শিমুল
শ্রদ্ধা এবং ভালবাসা 🙂
মিথুন
আপনাকে শেয়ারের জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া, এভাবেই গ্রেটরা বেঁচে থাকবে আমাদের মাঝে। শ্রদ্ধা এই মহান প্লেয়ার কে।