যুদ্ধাপরাধ ১৯৭১ : পূর্বকথন

সঞ্জয় কুমার ১৩ মে ২০১৫, বুধবার, ১১:৪৫:৩০পূর্বাহ্ন বিবিধ ১০ মন্তব্য

এ

২৫ মার্চ,১৯৭১ এর কালরাত্রিতে যেসব অকুতোভয় বাঙালি বুকের কয়েকটি পাঁজর আর একটি করে লাল টুকটুকে হৃদপিন্ড নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন ইতিহাসের নিকৃষ্টতম পশুদের বিরুদ্ধে,তাদের সেই ছেলেমানুষি দুঃসাহসকে উৎসর্গ করছি এই সিরিজটি
১.
উধার আটঠো লাশ হ্যায়।কুত্তাছে খিলানা হ্যায়,খিলাদো।আউর না কিসিকো দেনা হ্যায় দে দো।যাও,যো তোমহারা মর্জি করো।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নির্যাতন ক্যাম্পে চার মাস আটক থাকার পর সৌভাগ্যক্রমে ছাড়া পেয়ে যান যশোরের আমির হোসেন।ফেরার পথে একদল পাকিস্তানি সৈনিকের সাথে দেখা হয়ে যায় তার।তাদের একজন এই কথাগুলো বলেছিল আমির হোসেনকে।কিছুদর যেতেই তার চোখে পড়ে হাত পা বাঁধা উলঙ্গ আটটি লাশ।তাদের কারো কারো শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিচ্ছিন্ন করা।১৯৭১ সালের মার্চ থেকে ডিসেম্বর – এসময় বাঙালিদের শুধু হত্যা করা হয়নি,হত্যার ধরণটা এমন ছিল যাতে মানুষ হিসেবে নিজের পরিচয় চিরতরে ভুলে যায় বাঙালি।সার বেঁধে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে,অথবা শরণার্থীদের ভিড়ে আচমকা ব্রাশ ফায়ার করে হত্যা করা হয়েছে।হত্যা করা হয়েছে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে,কিংবা শাবলের বাড়িতে মাথা গুড়িয়ে দিয়ে।শিশুকে হত্যা করা হয়েছে ঘুমের ভেতরে,হত্যা করা হয়েছে হাসপাতালের অসুস্থ রোগীকে।সদ্যজাত শিশু থেকে অশীতিপর বৃদ্ধ – কেউই বাদ যায়নি দশ মাসব্যাপী ইতিহাসের অন্যতম নৃশংস এই গণহত্যাযজ্ঞে।সমস্ত বাংলাদেশটাই ছিল একটা বধ্যভূমি।

ওয়ার ক্রাইমস ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটির মাঠ পর্যায়ের অনুসন্ধানে শনাক্তকৃত বধ্যভূমির সংখ্যা ৯৪০ টি।এছাড়া ৬৫ টি ব্রিজ ও সেতু এবং ৮৮ টি নদীর সন্ধান পাওয়া গেছে যেখানে নিয়মিতভাবে হত্যাযজ্ঞ চলতো।তাদের গবেষণা বলছে সারা বাংলাদেশের এরকম ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বধ্যভূমির সংখ্যা পাঁচ হাজার ছাড়িয়ে যাবে।

প্রীতম এর লেখা হতে সংগ্রহীত

৫৩৮জন ৫৩৮জন

১০টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ