মানুষ হিসেবে আমরা জন্ম নিয়েছি যখন সংসার বংশবৃদ্ধি করাটা জীবনের চরম পর্যায় হিসেবে মেনে নেওয়া হয়ে থাকে –কিছু যুগপুরুষ বাদে প্রায় সব মানুষকেই সংসারধর্ম পালন করতে হয় । সংসার —- অসার –পদে পদে বিপদ —সুখের ধানভাঙা মেশিন —– কখনও ভাঙা চাল আবার গোটা চাল — তবুও অদৃশ্য শক্তির তালে তালে নাচতে হয় ।
সবুজ ঘাসের নরম স্পর্শ গোলাপ রজণীগন্ধা গন্ধরাজ র গন্ধ কার না ভালো লাগে ? সবাই জীবনে সুখী হতে চায় বিবাহিত জীবনে পরম সুখ কামনা করে —- সুন্দর সংসারের স্বপ্ন দেখে — কিন্তু বিবাহিতদের মধ্যে কজন দাম্পত্য জীবনে প্রকৃত ভালোবাসা পায়!
খুব কম ভাগ্যবান বা ভাগ্যবতী জীবনে প্রকৃত সুখী হতে পারেন । আমার মতে এক শতাংশ মানুষ বিয়ে করে সুখী বা সুখ পান বলে মনে হয় । বর্তমানে ডিভোর্সের সংখ্যাও খুব বেড়েছে — যার ফলে সন্তানদের ভোগান্তির অন্ত থাকে না । মা ভালো হলে জীবনে কিছু হল নাহলে বাচ্চাদের জীবন অতলে তলিয়ে যায়— কোনরকমে বেঁচে থাকে ,ভবিষ্যত বলে কিছু থাকে না—-স্নেহ ভালোবাসাহীন এক নির্জীব হৃদয়ে পরিণত হয় — এইভাবে কিছু বাবা মায়ের হঠকারিতা ভুল বোঝাবুঝির জণ্য সন্তানদের জীবন নরকের থেকেও দুর্বিষহ হয়ে ওঠে । অনেকে তো মানসিক ভাবে অসুস্থ হয়ে সারাজীবন রুগী বনে যায় । বেশীরভাগ ক্ষেত্রে দেখা গেছে বাবা মা পরিবারের ভালোবাসা না পাওয়া বাচ্চারা অনেক বেশী বেপরোয়া ও হিংস্র হয়ে ওঠে অথবা গুমরে গুমরে মানসিক যন্ত্রণায় ভোগে ।
বিবাহিত জীবনে অসুখীর কারণ—–
সরকারী নিয়ম অনুযায়ী ছেলে মেয়ের বয়সের সীমা ২১ ও ১৮ করা হয়েছে। শহরের দিকে মেয়ে যতই প্রেম আর আ্যবোরশান করুক তেত্রিশের আগে মানে একটা মেয়ে যতক্ষন না স্ট্যান্ড করছে ততক্ষন বিয়ের কোন প্রশ্নই নেই । একদিক দিয়ে এটা খুবই ভালো পদক্ষেপ । কারন একটা মেয়ে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হওয়া খুব জরুরি। বিয়ের আগে মানসিক শারীরিক আর্থিক সব দিক থেকে পরিপক্ব হওয়াটা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় । তাহলে বধূ নির্যাতনের মত আরো অনেক প্রকারের ডোমেস্টিক ভায়োলেন্সের স্বীকার হতে হয় না ।
আর একদিকে ছেলে মেয়ে একে অপরকে বুঝতে মেনে নিতে অনেকটাই সুবিধে । আবার মেয়ে প্রতিষ্ঠিত ছেলে প্রতিষ্ঠিত হলে অনেক ক্ষেত্রেই প্রবলেমটা হচ্ছে একে অপরকে সময়টা কম দিতে পারছেন আর খুব ভালো আন্ডারস্টেন্ডিং না থাকলে ভালোবাসাটা আস্তে আস্তে হারিয়ে যেতে দেখা গেছে । মানে টাকা থাকলে সেক্স পার্টনার তো অনেক পাওয়া যায় কিন্তু প্রকৃত ভালোবাসাটা তো পাওয়া যায় না তাই না —-
তাছাড়া অনেক কর্মরতা তেত্রিশী মহিলা পুরুষদের মধ্যে একাধিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়তে দেখা গেছে —যার ফলে অনেকেই বন্ধু বান্ধবী মদ নেশাগ্রস্থ লক্ষ্যহীন ভোগী জীবন যাপন করছেন । ঠিক বুঝতে পারছেন না কোনদিকে গড়াবেন ।
কিছু বিবাহিত ভালো ছেলেদের কাছে চাকরীতে বশের সংগে সম্পর্কে মানসিক দুশ্চিন্তায় ভুগবেন । একদিকে বৌ আর একদিকে চাকরী তাছাড়া আজকাল বিজনেস মার্কেটে শারীরিক সম্পর্কটা পেশাগত শর্তে পরিণত হয়ে গেছে বিশেষ করে রঙিন জগতে মিডিয়ার দুনিয়া—- সবাই স্ট্র্যাগল করছে সেখান থেকে ছেড়ে যেতেও পারছে না — অনেকেই ডিপ্রেশনের স্বীকার হয়ে পড়ছেন সংসারে অহেতুক সন্দেহ মারধোর এমনকি বাচ্চাদের সামনে উল্টোপাল্টা আচরণ শুরু করে দিচ্ছেন¡
দাম্পত্য কলহ—- বিয়ের পর বর বৌর মধ্যে ঝগড়া স্বাভাবিক ব্যাপার । কিন্তু সেই ঝগড়া ঝাটি যখন অস্বাভাবিক হয় তখন তা ঠেকানো খুবই মুশকিল –যা থেকে অনেকেই আত্মহননের পথ বেছে নেন আবার অনেকে মিথ্যা সন্দেহের কারণে মেন্টাল জীবন যাপন করতে শুরু করেন পায়ে কঁাটা বিঁধলেই মনে করেন এই বুঝি বৌ মারার ষড়যন্ত্র করছে–
বিবাহ একটি মধুর বন্ধন যার মাধ্যমে দুটি মনের শরীরের সার্বিক মিলন ঘটে । যার চারিদিকটাই খুব সুন্দর রোমান্টিক হওয়া উচিত ।“ বাসরঘর ” একটা মেয়ের জীবনে স্মৃতি হিসেবে ধরে রাখার সবচেয়ে বড় সম্পদ? কিন্তু বিয়ে ” নামক শিকলের বন্ধন দ্বারা মেয়েদের কয়েদ করে রাখা হচ্ছে ,অবশ্য তা শুধুমাত্র কিছু সহজ সরল নির্যাতিতা মেয়েদের ক্ষেত্রে –তঁাদের কাছে শ্বশুড়বাড়ি শুধুমাত্র অভিশপ্ত জেলখানা ছাড়া কিছুই না — তিনবেল খাওয়া বিছানায় গতর দেওয়া আর কাজকর্ম করে দেওয়া সুখ সখ আহ্লাদ বলতে কিছুই থাকে যেটা থাকে সেটা স্বামীর চড় থাপ্পড় গালিগালাজ ¡
গ্রাম বা আধা শহর এলাকার মেয়েদের আঠারো না পেরোতেই বিয়ে দিয়ে দেওয়া হচ্ছে — তঁারা যা খুব শান্তিতে থাকছে সংসার করছে তা কিন্তু নয় তঁাদের মূর্খ করে রাখা হচ্ছে পড়াশোনা ছাড়িয়ে দিয়ে সংসারের গোলাম — জাস্ট বাচ্চা জন্ম দেওয়ার মেশিন — শারীরিক চাহিদা মিটল কি না মিটল মনের মিল হল কি না হল জানার দরকার নেই — শুধু বাচ্চা পেটে ধরতে থাকো আর হেঁশেলের ঘরে ঢুকে পচে মর¡
অনেকে প্রতিবাদ করছে না তা নয় — অধিকাংশ অল্পবয়শী মেয়েরা বিয়ের পর বিশেষ করে বাচ্চা হওয়ার পর বাপের বাড়িতেই আশ্রয় নেন –দেখা গেছে মেয়েটা যদি কোনক্রমে নিজের চেষ্টায় কিছু করতে পারে ছেলেটি পঁাচ দশ বছর পর হলেও দরকার পরের বৌ কে ছেড়ে দিয়ে প্রথম পক্ষের বাচ্চা বৌ র পিছনে নেড়ি কুত্তার মত ঘুরঘুর করেন — মেয়েদের মন এতোটাই দুর্বল যে বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই স্বামী” নামক মাতাল মাদুলী ঝুলিয়ে নিজের সতীত্বকে বড়াই করতে ভালোবাসেন — এই হচ্ছে আমাদের সার্কাশ” সমাজ । খেলা ই দেখায় খেলেও কিন্তু হারাটাকে কখনই মেনে নিতে চায় না ।
মধ্যবিত্ত বাড়ির মেয়েদের অতিরিক্ত খারাপ পথে যাওয়ার কোন চান্স ই থাকে না । তঁাদের দৌড় ওই পিকনিক না হয় কলেজ ক্যান্টিন বা কলেজ বাথরুম অবধি — লিভ টুগেদার বা লেসবো র দুঃসাহস তঁারা জীবনেও দেখাতে পারবেন না ¡ আমার মতে ছোটোবেলার প্রেম কারোর জীবনে শেষ পর্যন্ত থাকলে বা তঁাকেই বিয়ে করলে আমি মনে করি তঁার মহাসুখী কেউ নন — কারন তঁাদের মধ্যে আন্ডারস্টেন্ডিং টা খুব বেশী থাকে , ঠিক যেমন রোদ তেমন বৃষ্টি — নাতিশীতোস্ন ওয়েদার – খুব ই স্বাস্থ্যকর — বাদবাকি মেয়ে বা ছেলেরা — অপরিচিত — তঁাদের জন্য একটাই নীতিবাক্য আপনারা পরের জিনিসটাই আপন করছেন !– সাবধানে চলবেন ¡কারন কুড়ি পঁচিশ পর কোন ছেলে মেয়ে ই সিঙ্গেল থাকেন না — কেউ না কেউ জীবনে থাকবেই?
Continue
—
অরুণিমা মন্ডল দাস
২৬ জানুয়ারী ২০১৬
কলকাতা, ভারত।
৭টি মন্তব্য
নিহারীকা জান্নাত
সমাজের ভয়ংকর দিক তুলে ধরেছেন আপনি। সমাধানের পথ কি? কেউ হয়তো জানিনা।
আবু খায়ের আনিছ
প্রবন্ধ……… প্রবন্ধ এভাবে পড়া যায় না, পুরো না পড়লে খচখচানি থাকে।
শুন্য শুন্যালয়
আপু বিরামচিহ্ন এভাবে কেন ব্যবহার করেন? লাইনগুলোর সৌন্দর্য্যই নষ্ট করে দেয়।
ভালো একটি বিষয় নিয়ে লিখেছেন। মেয়েরা নড়েচড়ে উঠেছে এজন্যই ডিভোর্সের ঘটনা বাড়ছে। এরপর সন্তানদের দোষারোপও থাকছে। আগেরকার মানুষরা বলে এখনকার মেয়েদের নাকি ধৈর্য্য কম তাই ডিভোর্স বাড়ছে। মারধোর, কুকুরের কাই কাই সহ্য করে গেলে তারা মহান নারী।
সম্পর্ক একটি কঠিন বিষয়, এটা নিয়ে লেখার সাহস করে উঠতে পারিনি কখনো। অপেক্ষা পরের পর্বের।
নীলাঞ্জনা নীলা
যে কোনো সম্পর্কের ক্ষেত্রেই ‘কম্প্রোমাইজ’ শব্দটি ব্যবহার করা খুবই জরুরী। আর স্বামী-স্ত্রী সম্পর্কে তো অবশ্যই। ছোট্ট একটা উদাহরণ একই মায়ের গর্ভের ছেলে-মেয়ে সব একই চরিত্রের হয়না। সেখানে স্বামী বা স্ত্রী তাদের দুজনের মানসিকতা এক হবে কোনোভাবেই সেটা সম্ভব নয়। কিন্তু মানাতে এবং মানিয়ে নিতে হয়। অবশ্য ‘কম্প্রোমাইজ’ শব্দটি আমরা সভ্যভাবে দেখি। আদতে ‘স্যাক্রিফাইস’ বলা চলে। যুক্তি-তর্ক যতোই হোক না কেন স্যাক্রিফাইস নারীদেরকেই করতে হয়। যে সংসারে নারীরা স্যাক্রিফাইস করেনা, সে সংসার ভাঙ্গতে বাধ্য।
পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম দিদি।
জিসান শা ইকরাম
ভাল একটি প্রসঙ্গের নিখুত বিশ্লেষনমূলক লেখা লিখেছেন,
ধন্যবাদ আপনাকে।
ভাল থাকুন সারাক্ষণ।
মৌনতা রিতু
আসলে বিবাহিত জীবনে ভালবাসা মানে কি?
আমি ধৈর্য বলতে বুঝি কিছুটা মানিয়ে চলা। তবে স্বামীর পশুত্বকে সহ্য করতে নারাজ।
হ্যাঁ, লগু পাপে গুরু দন্ড দিতে রাজী নই। সন্তানদের জন্য আমরা দুই পক্ষই কোনো কোনো ত্যাগ তো অবশ্যই করি। তাই আমাদের সন্তানরাও এবং আমরাও বেড়ে উঠেছি একটা সামাজিক বন্ধনে।
এটা আমাদের সমাজের রূপ।
আর বৈবাহিক বহির্ভূত সম্পর্কগুলোর কোনো সংগা আমার জানা নেই। আমরা অনেকেই অনেককে অনেক কথা বলে ফেলি জীবনের দুর্বল কিছু সময়ে, এই যেমন দুখের দিনগুলোর কিছু কথা। এটখ অনেকেই একটা খারাপ সম্পর্ক আছে বলেই ধরে নেই।
খুব সুন্দর একটা বাস্তব পোষ্ট।
ইঞ্জা
শুধু বলতে চাই, সহমত আপু।