“ওদের ৩০ লক্ষ হত্যা করো। বাকিরা আমাদের থাবার মধ্যেই নিঃশেষ হবে…”
প্রচন্ড চিৎকার, হাহাকার, কান্নার ধ্বনি চারিদিকে। ঘামছে, সমস্ত শরীর ঘামছে কিম্ভূতকিমাকার লোকটার। অদ্ভুত! ঘামগুলো ক্যামন রক্তের মতো দেখাচ্ছে যে!!
লোকটা ঘুমিয়ে পরেছে আবার। অনেক বছর যাবৎ একইভাবে ঘুমুচ্ছে সে।কিন্ত ইদানীং বহু বছরের পুরনো কিছু ঘটনা দু্ঃস্বপ্ন হয়ে আনাগোনা করে তাঁর ঘুমের মাঝে। হঠাৎ হঠাৎ জেগে যায় সে।
“… আমারে মাইরো না,আমি মায়ের কাছে যামু!” — কে! এ-তো সেই বাঙালির বাচ্চা! খুন, রক্ত, চোখ মানুষের চোখ, স্তূপ -মানুষের মাথার স্তূপ! ৩০ লক্ষ বাঙালির চিৎকার।ঐ যে,ঐ যে দেখা যাচ্ছে একটা জল্লাদখানা,কিছু মস্তকবিহীন দেহ। রক্তের দেড় ইঞ্চি পুরু একটি কাস্টার্ড রাখা লোকটির প্লেটে!
এতো বছর পর তো এমন হবার কথা নয়! কিছুই ভেবে পাচ্ছে না লোকটা। এই তো, এই তো ধবধবে সাদা সেই ছোট ছেলেটা! যাকে সেই ৩০ লাখের সাথেই মারা হয়েছিল….
লোকটা ঘুমুচ্ছে। প্রতি রাতে একবার করে জেগে উঠে সে।নৈশভোজ করে ৩০ লাখের রক্তের দেড় ইঞ্চি পুরু কাস্টার্ড দিয়ে….
একি! এ যে এক থোকা মগজ!! হ্যাঁ তাঁর মনে পরেছে, সেই যে ৯ দিনের বাচ্চাটাকে দেয়ালে আছড়ে মারা হয়েছিল এগুলো তাঁরই মগজ! প্রচন্ড ঘামছে লোকটা,ভয় পাচ্ছে খুব, ৬ লক্ষ নারীর দীর্ঘ ছায়া এগিয়ে আসছে সামনে, পানির তৃষ্ণা পাচ্ছে তাঁর।একটি গ্লাস এগিয়ে দিল লোকটার দিকে, পানি পানি… ওমা এ-তো ৬ লাখ নারীর যোনি নিঃসৃত রক্ত!
জ্বলে যাচ্ছে,খেয়ে যাচ্ছে লোকটার সমস্ত দেহ।মনেহচ্ছে কেউ যেন তাকে দু পা টেনে ধরে ছিড়ে ফেলছে। ঠিক ভাগীরথীর মত!
চিৎকার করতে করতে জেগে উঠলো লোকটা। কই ঠিকই তো আছে সব।যাক তাহলে এবার সেরে নেয়া যাক নৈশভোজটা।কিন্তু রক্তের কাস্টার্ডের বদলে এটা কি! ওহ, এযে চন্ডাল গ্রামের সেই বৃদ্ধ মাস্টারের কলিজাটা।
নৈশভোজ সেরে আজ অনেকদিন পর লোকটা বেশ প্রশান্তিতে সময় কাটাচ্ছে। বেঁচে থাকতেও এতো প্রশান্তিতে কখনো থাকেনি সে। প্রশান্তিতে চোখ বুজে দূরের ঐ বঙদেশ থেকে ভেসে আসা “পাকিস্তানের” জয় ধ্বনি শুনছে সে। সাথে “পাকিস্তান জিন্দাবাদ আর ম্যারি মি আফ্রিদি” “মিস ইউ আফ্রিদি” স্লোগান।শুনছে আর ভাবছে, আহা কি প্রশান্তি! বাঙালির মাঝে অবশেষে আমি আমার স্বজাতির বীজ ঢুকিয়েই ছেড়েছি।আর তাচ্ছিল্যের হাসি মৃদু হেসে বলছে কি বেজন্মার জাত-ই না ঐ স্লোগানের ছোকরাগুলো…..
প্রশান্তিতে আবারো ঘুমিয়ে পরলো শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ নরপিশাচ ইয়াহিয়া…..
উৎসর্গ -তোমরা যারা খেলার সাথে রাজনীতি মেশাও না।
১২টি মন্তব্য
জিসান শা ইকরাম
পাকিদের সাথে কোন ধরনের সহানুভূতি নেই
ওদের প্রতি ঘৃণা অব্যাহত থাকবে।
ইয়াহিয়ার প্রেতাত্মা এখন প্রচুর আমাদের এই দেশে
চাঁদ তারা পতাকা উত্তোলন করছে না শুধু সুযোগের অভাবে।
ফাতেমা জোহরা
এদের তো ঘৃণা করতেও আমার রুচিতে বাঁধে।
রিমি রুম্মান
হুম… বাঙালির মাঝে ওদের স্বজাতির বীজ আছে বলেই এখনো কেউ কেউ “পাকিস্তান জিন্দাবাদ আর ম্যারি মি আফ্রিদি” “মিস ইউ আফ্রিদি” স্লোগান তুলে আজ এতগুলো বছর পরেও ! ওরা ঘৃণিত হয়েই থাকবে শতাব্দীর পর শতাব্দী।
ফাতেমা জোহরা
কিন্তু লজ্জা আর আক্ষেপে মিশে যেতে ইচ্ছে হয় যখন দেখি এই দেশের কিছু লোকেরা ওদের নামে স্লোগান দেয়।
স্বপ্ন নীলা
মেয়েরা কিভাবে বলে মেরি মি আফ্রিদী !! ওদের কানের ঠিক নীচে কইসা থাপ্পর দিতে মন চায়
ফাতেমা জোহরা
এদের পাকিস্তানেই পাঠিয়ে দেয়া উচিৎ।
কৃন্তনিকা
সত্যি বলতে, আফ্রিদীভক্তের সংখ্যা এতোই বেশি যে থাপ্পর দিতে গেলেও হাতের চামড়া উঠে যাবে…
পাকিস্তানে পাঠাতে পারলে আসলেই ভালো হত… যদিও তা অবাস্তব ইচ্ছামাত্র…
বড্ড হতাশ লাগে যখন আশেপাশে এসব নরপিশাচদের দেখি…
ফাতেমা জোহরা
সেইসাথে খুব আক্ষেপও হয় আপু 🙁
নীলাঞ্জনা নীলা
মানুষ পাকিদের এখনো কিভাবে সাপোর্ট করে ভেবে পাইনা।
ফাতেমা জোহরা
ওরা তো মানুষ-ই না, তাই করে।
ব্লগার সজীব
খেলার মাঠে পাকিদের সমর্থক দেখলে গায়ে আগুন ধরে যায় আপু।আমার দুর্ভাগ্য যে কোনদিন হাতের কাছে এদের পেলামনা।
খেয়ালী মেয়ে
ম্যারি মি আফ্রিদি–একটা মেয়ে কতটা সস্তা টাইপের হলে এই ধরনের পোস্টার টাঙাতে পারে, তাও আবার পাকিস্তানিদের জন্য-চিন্তার বিষয়……….