“আমার বাবা পৃথিবীর সেরা বাবা ; আমার মায়ের মত ভালো আর কেউ বাসে না”—- প্রতিটি সন্তানই তার বাবা মায়ের প্রতি এরকম একটা ধারনা পোষণ করে,ব্যাতিক্রম ছাড়া । এরকম ধারনা পোষণ করাটাও যুক্তিযুক্ত । কারণ একজন সন্তানকে জন্ম দেয়া থেকে শুরু করে বেঁচে থাকার উপজুক্ত করে গড়ে তুলতে বাবা মা যে শ্রম ও ভালোবাসা ব্যয় করে তা আর কারো পক্ষে সম্ভব না এবং বিলিওন ডলার খরচ করেও এই শ্রম বা ভালোবাসা কেনা সম্ভব না । বাবা মা প্রতিটা মুহুর্ত ব্যয় করে তাঁদের সন্তানের মঙ্গল চিন্তায় । সন্তানের অমঙ্গলের ভয়ে উৎকণ্ঠিত থেকে অসুস্থ হয়ে পড়াটাও খুবই স্বাভাবিক ।
আমরা সবাই জানি বাবা মা সন্তানের অমঙ্গল কামনা কখনও করে না । নিঃস্বার্থ ভাবে ভালোবাসে । এবং নিজের সর্বস্ব দিয়ে সন্তানকে খুশি রাখার চেষ্টা করে । কিন্তু এত কিছুর পরও বাংলাদেশের বাবা মায়েরা তাঁদের সন্তানদের প্রেমের সম্পর্ক কোনভাবেই মেনে নিতে পারে না । এর পিছনে কারণ কি হতে পারে ?? প্রাপ্ত বয়স্ক অবস্থায় প্রেম কি আসলেই খুব ক্ষতিকর কিছু ?? সন্তান প্রেম করে বিয়ে করতে চাইলে কেন বাবা মা আঁতকে ওঠেন ?? কেন বাবা মায়ের বদ্ধমূল ধারনা হবে “ছেলের প্রেমিকা একটা ডাইনি” আর “মেয়ের প্রেমিক একটা বখাটে” ?? এই প্রশ্নের জবাব বাবা মায়েরা দেন না । শুধু বলেন— আমরা তোমার ভালো বুঝি , সময় থাকতে কথা শোন । না হলে পস্তাবে ।
সব ক্ষেত্রেই সন্তানেরা প্রেমের ক্ষেত্রে যে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহন করতে পারে তা বলা যাবে না । তবে ছেলে মেয়েদের প্রেমের খবর শুনেই ভালো মন্দ না বুঝে অধিকাংশ পিতা মাতার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ে । প্রথমেই তারা বিভিন্ন ধরনের হুমকি ধামকি , শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার , মেয়ে হলে বুড়া কারো সাথে বিয়ে দিয়ে দেয়ার হুমকি , ছেলে হলে ত্যাজ্য করার হুমকি ইত্যাদি Typical অস্ত্রব্যাবহারকরাশুরুকরেন।এতে কাজ না হলেসন্তানের প্রেমিক বা প্রেমিকাকে বিভিন্নভাবে হেনস্থা করতেও দেখেছি । যদিও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এইসব হুমকি ধামকিতে সন্তানেরা প্রেম করা বাদ দেয় না । এবং যেহেতু পিতা মাতা তার সন্তানদের ভালোবাসেন সেহেতু হুমকি মোতাবেক কিছুই করেন না । এবং হুমকির চেয়ে মারাত্মক “ইমোশনাল অত্যাচার” শুরু করেন । মায়ের কান্না কাটি , বাবার উদাস উদাস ভাব , দুজনেরই সন্তানকে নির্দিষ্ট করে দীর্ঘশ্বাস ছাড়া ইত্যাদি শুরু করে দেন । মানে তাঁদের অবস্থা দেখলে মনে হয় সন্তান যেন প্রেম করছে না নিয়মিত সকালে ঘুম থেকে উঠে বিষ পান করার চেষ্টা করছে । এবং এসব দেখে অনেকেই নিজেদের সম্পর্কে ইতি টানতে বাধ্য হয় ।
(সব বাবা মা এক রকম নয় , অনেক বাবা মার কথা শুনেছি যারা সন্তানদের প্রেমের ক্ষেত্রে সাহায্যও করে। কিন্তু শিক্ষিত ও প্রতিষ্ঠিত পিতা মাতা যখন তাঁদের সন্তানের প্রেমে বাধা হয়ে দাড়ায় তখন আসলেই প্রশ্ন জাগে আমরা কোন যুগে আছি) ।
৯টি মন্তব্য
লীলাবতী
সব বাবা মাই সন্তানের ভালো চান । সন্তান বড় হলেও বাবা মার কাছে ছোটই থাকেন। সন্তান সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবেনা এই ধারনা থেকেই আসে শাসন ।
অনেক দিন পরে লিখলেন ।
"বাইরনিক শুভ্র"
ব্লগে দেয়ার মত লেখা গুছিয়ে লিখতে পারি না । তবে নিয়মিত হওয়ার চেষ্টা করছি । 🙂
মা মাটি দেশ
সত্যি কথা কি জম্ম,মৃত্যু,বিয়ে এই বিষয় আল্লাহর হাতে।এই বিষয়ে বাপ মা কেনো আপনি নিজেও হস্তক্ষেপ করতে পারবেননা।যার বাস্তব সাক্ষী আমি আমার মত আরো অনেকে তাই ভালবাসায় ছেকা বলতে একটা কথা থাকে।তবে মা বাবাকে যে সন্তান যে কোন কারনে কষ্ট দিবে সে কখনই সূখী হতে পারেনা এর প্রমানও আমি।তাই মা বাবা যতদিন বেচে থাকবেন তত দিন তাদের কথামত চললে চলার পথে আর অতৃপ্তি থাকবেনা “থাকতে দাতের মর্যাদা বুঝাই বুদ্ধিমানের কাজ”।মা বাবা যে কি তা আমার মত হারিয়ে যেন কেউ না বুঝে।এই পৃথিবী মোহের কোন কিছুই অসুন্দর নয় একটা যতটুকু সুন্দর আর এক সুন্দর অপেক্ষ মান।আমার অতৃপ্ত জীবন..ভালবাসা সিরিজে ধারাবাহিক ভাবে লিখছি আশা করি পড়বেন।
"বাইরনিক শুভ্র"
অদেখা ঈশ্বর বা সর্বশক্তিমানকে নিয়ে আমি চিন্তিত নই । বাবা মাকেও সৃষ্টিকর্তা বলে মানি । আচ্ছা বাবা মা
যখন সন্তানকে কষ্ট দেয় তখন সন্তানের কি করা উচিৎ ????
খসড়া
প্রেমটাই সব নয়। এর পর ভবিশ্যত জীবন। বাবা না যখন সেই খানে ঘাটতি দেখতে পায় তখবই বাধা দেন। কারন বিয়ের আগের আবেগ বিয়ের পর বাস্তবতার মুখে জটিলতা শুধু সন্তানের নয় পুরা পরিবারের সমস্যা হয়ে দাড়ায় তাই বাবা মার এই সতর্কতা। বিয়েটা শুধু দুইজনের জীবন নয় পুরা পরিবারের।
"বাইরনিক শুভ্র"
প্রেম অবশ্যই সব নয় । কিন্তু অনেককিছু । মানসিক বিপর্জয় বা বিপথগামী হওয়ার জন্য একটা ব্রেক আপই যথেষ্ট ।
নীলকন্ঠ জয়
“বাইরনিক শুভ্র” বলেছেনঃ
প্রেম অবশ্যই সব নয় । কিন্তু অনেককিছু । মানসিক বিপর্জয় বা বিপথগামী হওয়ার জন্য একটা ব্রেক আপই যথেষ্ট ।
সহমত।
বাবা-মাকে সন্তানের দিকটাও ভেবে দেখা উচিৎ ।
"বাইরনিক শুভ্র"
ঠিক । কিন্তু সমাজ আমাদের শুধু বাবা মার দিকেই দেখতে বলে ।
জিসান শা ইকরাম
জেনারেশন গ্যাপ থেকেই যায় ।
এই গ্যাপটুকু আসলে খারাপ না
ভালোই ।