আমার দাদি এবং বড় দাদি(আব্বুর বড় চাচি) দুইজনেই পান খাইতো। আর আমি তাদের মুখের সামনে হাত পেতে রাখতাম চিবানো পান খাবার জন্য। দাদি কে দেখতাম কমলার খোসা শুকিয়ে রাখতেন পানের সাথে খাবার জন্য। কি যে সুঘ্রান ছিল সেই পানে। এর পর বড় হয়ে কত মশলা দেয়া পান খেলাম। সেই শৈশবের সুঘ্রান আর পেলাম কই?
দাদি কখনোই তার পানের বাটা ধরতে দিতো না। কারন উনি খাইতেন কড়া জর্দা। তো একদিন সুযোগ পেয়ে পানের সাথে এক খাবলা জর্দা আর ইচ্ছে মতো খয়ের সাদা পাতা ইত্যাদি দিয়ে আয়েস করে পান খাইলাম। তার পর দেখি উঠান ঘোড়ে, আম্মায় ও ঘোড়ে। পুরা দুন্নাই সুদ্ধা ঘোড়ে, তারপর মনে নাই।
বড় দাদি খাইত পাথর চুনা। পাথর চুনা প্রথমে মাটির পাত্রে ভিজাইয়া রাখতে হয়, তারপর খায়। আর সেই সময় আব্বু পাটের ব্যাবসা করত। পাট কিনতে যাইত অনেক দূরে দূরে। আর প্রায়ই নিয়ে আসতেন গৌরনদীর দই। তো বড় দাদি চুনা ভিজাইয়া রাখসে, আলমারির নিচে। আর আমি মনে করসি দাদি মনে হয় দই লুকাইয়া রাখসে। এক খাবলা তুইলা দিসি মুখে। বাবারে মারে। হাউ কাউ, চিল্লাচিল্লি ডাক্তার। ৭ দিন কিছু খাইতে পারি নাই তরল ছাড়া।
বড় মামার এক বন্ধু তারে সিলেট থিকা পাতার বিড়ি আইনা দিসে। আমি মনে করছি মরিচা বোম। পুরা প্যাকেট নিয়া ভাগলবা। এর পর ওইডির পাছায় যতই আগুন দেই, দৌড়ায় না। বিষয় ডা কি? হালার মরিচা গুলা কি ড্যাম হইয়া গেল? ১ টা ২ টা কইরা অর্ধেক শেষ করছি। মাগার মরিচায় তো দৌড়ায় না। তখন খোজ পরসে, আমার টেবিলের উপ্রেথন ইয়া গুলা কে নিল? ইয়া ডা যে কি তাতো আর মামু কইতে পারে না। নানায় বাসায়। পরে হেলাল কয় এইডি মনেঅয় পাতার বিড়ি। তার পর দুই মামু ভাইগ্নায় মিল্লা টান আর সেকি কাশি।
– এই সিরিজটা কন্টিনিউ লেখার ইচ্ছে আছে, কিন্ত সময় খুব ভয়ানক জিনিস। একবার সময়ের ওপর থেকে ধুলো সরে গেলে – অনেকদিন পর্যন্ত খুব জ্বালাতন , কে হায় হৃদয় খুড়ে দুঃখ জাগাতে ভালোবাসে 🙂
”কবে কোন প্রদোষকালে
এসেছিলে হেথা হে প্রাকৃতজন
এ বিলের জেলেদের জালে
পেয়েছিলে কবে সে রুপকাঞ্চন ”
২৮টি মন্তব্য
প্রহেলিকা
হাহাহা যখনি কইছেন চুন এক খাবলা মুখে দিছেন তহন কইলজাডা খাবুত কইরা উঠছে, ভাবছিলাম এক্কেবারে গেছেন, যাক ৭দিন পরে হইলেও খাইতে পারছেন! :D) :D) :D)
কন্টিনিউ করেন সাইদ ভাই, মজা লাগে শুনতেও পড়তেও। -{@
সাইদ মিলটন
😀 😀
জিসান শা ইকরাম
এমন পান আমিও খেয়েছি
তখন পানের ঘ্রানই আলাদা ছিলো।
পাথর চুন, বিড়ি, জর্দা পড়ে হাসতে হাসতে পইরা গেছি।
লেখা চলুক।
সাইদ মিলটন
সেই মজা ছিলো, কি বলেন দাদা
😀
জিসান শা ইকরাম
এখনো তার সুগন্ধ পাই 🙂
মিথুন
কমলার খোসা পানের সাথে খেতেন, এমন নতুন শুনলাম। ভাইয়া আপনার ছোটবেলা দেখছি চরম গিয়েছে :p :D)
সাইদ মিলটন
হ্যাঁ আমার দাদী খেতেন, কুচিকুচি করে কেটে রোদে শুকায়ে রাখতেন তারপর – চমৎকার ঘ্রাণ হতো পানে ।
আমার শৈশব কৈশোর দুর্দান্ত গিয়েছে 😀
হৃদয়ের স্পন্দন
লে বান্দর :p
সাইদ মিলটন
\|/
শুন্য শুন্যালয়
হা হা হা হা হা, ভাইয়া দই খাবেন? 😉
সাইদ মিলটন
;( আপ্নেই খান
প্রহেলিকা
একটা কথা উপরের বর্ণনার সাথে নিচের চারটা লাইনের মাঝে ভাবটা কোথায়? কিছু না কিছু একটা আছে আছে মনে হয়।
সাইদ মিলটন
সময়ের থিতানো জলে জাল ফেলে তুলি স্মৃতির রুপমনিকাঞ্চন – কষ্টকর যদিও এবং বেদনাদায়ক অবশ্যই, কতজন মুছে গেছে স্রোতে…… যার যায় সেই জানে 🙂
ছাইরাছ হেলাল
এখন কী কী খাচ্ছেন তার তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরা হোক।
সাইদ মিলটন
এখন – পান পানি ইত্যাদি :p
নীলাঞ্জনা নীলা
এত মজা করে লেখেন কিভাবে?হাসছি পড়ার পর থেকেই 🙂
সাইদ মিলটন
😀 \|/
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
বেশ চলতে থাকুক -{@
সাইদ মিলটন
উক্কে 😀
স্বপ্ন
:D) :D) এত দুষ্ট ছিলেন আপনি, কল্পনাই করতে পারিনা এমন দুষ্টামি। আরো চাই এমন লেখা।
সাইদ মিলটন
😀 😀 😀
ব্লগার সজীব
পিচ্চি বান্দরের এই পোষ্টটি সবচেয়ে ভালো হয়েছে। \|/
সাইদ মিলটন
\|/ \|/ 😀
নুসরাত মৌরিন
হিহিহি।হাসতে হাসতে শেষ। :D) আপনি তো দেখি সিরিয়াস সিরিয়াস এক্সপেরিপেন্টের মধ্য দিয়ে গেছেন।দই,মরিচ বোমা!!খিক খিক খিক।
পানের কথায় আমার ছোটবেলার কথা মনে পড়লো।আম্মু পান খেয়ে ছিঁবড়াটা জিভের ডগায় ধরতো আমার জন্য,আমিও আমার জিভ দিয়ে সেটা মুখে নিতাম আর মহা আনন্দে খেতাম।
সাইদ মিলটন
আহ, পুরনো সে দিন ভুলবি কিরে হায় 🙂
মেহেরী তাজ
ভাইয়া মরিচ বোমাটা দারুন হয়েছে :D)
প্রজন্ম ৭১
:D) :D) :D) পেট ব্যাথা করার জন্য আপনার সাজা হবে :D)
অরণ্য
আপনার লেখাটি পড়লাম। জব্বর স্মৃতি তো আপনার! এত ইন্টারেস্টিং লেখা আমার চোখে পড়েনি, কি অদ্ভুত! হতে পারে শিরোনামটাই আমাকে কম টেনেছে। শুভেচ্ছা রইল।