আসলে লেখালেখির শুরু করেছিলাম সেই ক্লাস ফোরে থাকতে। কবিতা লিখতাম তখন। প্রথম কবিতা টা নাই বলি!!! অনেক কবিতাই লিখেছিলাম, ডায়েরি ভর্তি। লিমেরিক ছন্দ আমার অনেক পছন্দের।কবিতা পড়ে বাসার সবাই অনেক প্রশংসা করতো, একদিন মেঝো বোন ডায়েরি টা পুড়িয়ে দেয়। তাই অনেক কবিতাই হারিয়ে গেছে। পরে অবশ্য কবিতা লেখা বন্ধ হয়ে যায়। তো, একটা পোস্ট দেয়ার ইচ্ছা ছিল। আমার ২ টা কবিতা দিয়ে দিলাম। লেখার সময় আমি পিচ্চি ছিলাম, তাই কেও পচাইবেন না কিন্তু!!! 😛
নাম : প্রিয়তমেষু
নববর্ষার নবঘন সিক্ত প্রভাতে
এসেছিল সে পাহাড়, মাঠ, বন ভালবেসে।
আসলো আমার কাছে
নিয়ে গেল সব দুঃখ একচিলতে।
তাই অশ্রু তার আর সইছে না।
তা দেখে এক জোনাকি আমার প্রশ্ন করে —
“তুমি কেন অমন করে কাদোঁ না?”
আমি ম্লান হাসলাম,
হাসলো আমার বিহঙ্গম।
বলিনি কোন কথা
সইনি কোন ব্যাথা।
তোমার স্মৃতি রয়েছে আমার চোখে
কাদিঁ না ভয়ে, যদি তোমার স্মৃতি
বেয়ে পরে আমার অশ্রু দিয়ে?
সেই মেঘদূত বিরহী যক্ষের বানী বহন করে,
নিয়ে গেল এক অজানার দেশে,
রেখে গেল আমায় শূন্য করে।
অনেক দুঃখ আছে, দুঃখ চাই না আর, আষাঢ়ের নব মেঘপুঞ্জকে আমার নমষ্কার। (শেষ)
এই কবিতাটি লিখেছিলাম ক্লাস এইটে থাকতে। আমার বিজ্ঞান স্যার হঠাৎ করেই চিরুনি অভিযানের মাধ্যমে ডায়েরি টা পায় আর এই কবিতাটা পড়ে ফেলেন। পরে কেন জানি তিনি কেদেছিলেন। তার চোখ লাল হয়ে গিয়েছিল। কি জানি? এটা আজও জানি না। এই কবিতায় কাজী নজরুল ইসলামের প্রভাব লক্ষনীয়। কবিতা লেখার সময় আমি তাকেই একমাত্র অনুসরণ করি।
আরেকটা কবিতা।
নাম : শ্রদ্ধাঞ্জলি
হে বিজ্ঞান —-
তোমার জন্য পৃথিবী আজ সাফল্যের কর্ণধারে,
জীবনকে সুন্দর করলে তোমারই সফল লহরে।
তোমার জন্য আসমান আজ ভূমির মতোন,
তুমি সত্য করেছ মানুষের সোনালী স্বপন।
তোমার জন্য বিজীত চরন চিহ্নহীন ভূমি,
পৃথিবীর বুকে নেমে এসেছে আজ অমরাবতী।
অচেনাকে করলে তুমি চিরচেনা,
দেখালে জীবনের নিশানা।
দূরকে করালে নিকটবর্তী, পরকে করালে আপন।
গিরি, মরু, পারাবার আজ সবই সমান।
এতো তোমারই অপার অবদান।
তোমার জন্য বিশ্ব আজ হাতের মুঠোয়,
দৃষ্টির সীমারেখা পর্যন্ত তুমি করেছ জয়।
তুমি বসুন্ধরার নতুন বিটপি -তটিনী
তোমাকে সহস্র প্রানের হৃদয় নিংড়ানো শ্রদ্ধাঞ্জলি। (শেষ)
এটা বোধহয় কেলাস নাইনে থাকতে বিজ্ঞান মেলার জন্য লিখেছিলাম। আধাঘন্টার মধ্যে কবিতা টা লিখেছিলাম। ম্যাগাজিনে প্রকাশ করা হয়েছিল!! 🙂
তো এই তো। আমার কাছে লিমেরিকের কোন কবিতা অবশিষ্ট নাই। সব আগুনে পুড়েছে। এখন আর কবিতা লিখি না। মানে সময় পাই না। মানসিকতা ও নেই। তবে ডায়েরি তে গল্প লিখি। আর এসব আমার বন্ধু বা বোন টাইপ করে দেয়। আমি পাবলিশ করি। ইদানীং ব্যাস্ততা আমার সব খেয়ে ফেলছে।আর সাথে জীবনের বিচিত্র সব অভিজ্ঞতা। আমি আমার জীবনে বাইরের দিকে একটা কল্পনার আবরণ তৈরী করেছি। যার মধ্যে সব দুঃখ কষ্ট আটকা পরে। আর এটাই আমার গল্প জগৎ। মন খারাপ থাকলে কল্পনা করি। আর ও থেকেই জন্ম হয় এক একটা গল্পের। আমি তো কল্পবিলাসী।
৮টি মন্তব্য
মিথুন
পিচ্চিকালেই এতো সুন্দর লেখা, প্রথম কবিতা সত্যিই অসাধারণ.
বিটপি শব্দের মানে কি ভাইয়া?
কবিতা লেখা ছেড়ে দিয়েন না ভাইয়া
অনেক শুভকামনা আপনার জন্য.. -{@
নীলকন্ঠ জয়
বিটপি অর্থ বৃক্ষ/ তরু/ গাছ। 🙂
নীলকন্ঠ জয়
পিচ্চিকালে যে ধার ছিলো তাতে মরিচা লাগানো ঠিক হবে না। তাই চর্চা অব্যাহত রাখুন।
শুভ কামনা।
মোঃ মজিবর রহমান
খুবই সুন্দর শব্দশৈলী অল্প বয়সেই রপ্ত করেছে ভাই।
লিখা বাদ দিলে অনেক কিছু বঞ্চিত হবে অজানা অনেকেই।
তাই লিখাই ভালো……………………
ভালো লিকেছেন ধন্যবাদ। -{@
লীলাবতী
পিচ্চিকালে তো ভালোই কবিতা লিখেছেন ।
জিসান শা ইকরাম
ক্লাস ফোর থেকে লেখা শুরু ? বাপরে !
ভালো লেগেছে
বনলতা সেন
কল্প বিলাসী বলেই হয়ত এত ব্যস্ততার মধ্যেও লেখালেখি চালু রেখেছেন ।
আর অন্যদের সাহায্য পাচ্ছেন সেটাও অনেক পাওয়া , এমনটি সবাই পায় না ।
অবাক লাগছে এই ভেবে যে আপনি চতুর্থ শ্রেণি থেকে লিখছেন , আর অষ্টমের কথা আর নাই-ই বা বললাম ।
চালু থাকুক আপনার এই অনবদ্য প্রচেষ্টা ।
খসড়া
আপনি তাহলে পিচ্চিকাল থেকেই কবি 🙂