মিটিমিটি তারাদের মিটমিট হাসি—
রাতজাগা জোনাকীদের ছুটোছুটি—
রজনীর সাথে হবে বরেণ্য প্রীতি–যেখানে পাহাড় ঘুমোবে জোছনার আলো মেখে–নিঃশব্দে কথা হবে মায়াবী চাঁদ, নক্ষত্রের সাথে–এমনি চন্দ্রাহত জোছনায় ভাবনাগুলো আরো বেশী করে নেওয়া যায় এলোমেলো, স্বপ্নগুলোকে আরো বেশী রঙ দিয়ে রাঙিয়ে নেওয়া যায় এমনি চন্দ্রাহত জোছনায়–নক্ষত্রখোচিত উজ্জ্বল আকাশ অথবা মেঘে ঢাকা জোছনায় প্লাবিত আলোর বন্যায় ভেসে যাওয়া অদ্ভুদ রাত্রি–কল্পনার সাগরে হাবুডুবু খেতে আর কি চাই–একটি চন্দ্রাহত জোছনায় ইচ্ছের ডানা মেলে মেঘের ভেলায় ভাসিয়ে নেয়ার জন্য যথেষ্ট 🙂
“চন্দ্রাহত” শব্দটির সাথে কমবেশি আমরা সবাই পরিচিত–ইংরেজী লুনাটিক শব্দটির আক্ষরিক অর্থ চন্দ্রাহত..যার বাংলা অর্থ দাঁড়ায় পাগল/উন্মাদ/বুদ্ধিহীন/নির্বোধ…..চন্দ্র+আহত=চন্দ্রাহত….কারো কারো মতে,চাঁদনী রাতে পাগলামি করাটাই হচ্ছে চন্দ্রাহত—তার মানে কি চন্দ্রাহত শব্দটির সাথে শুধু চাঁদেরই গভীর কোন সম্পর্ক রয়েছে?..হয়তো না—অর্থের দিকে তাকালে ‘চন্দ্রাহত’ সেটাতো আমরা যেকোন সময় যেকোন জিনিসের জন্যেই হতে পারি—কখন যে কার কোন সৌন্দর্য ভাল লাগে, কোন জিনিসটার জন্য যে মন কখন উতলা হয়ে উঠে তা আমরা কেউই আগে থেকে বলতে পারি না—তাই হয়তো চন্দ্রাহত যেকোন সময় যেকোন কিছুর উপরই হওয়া যায় 🙂
তবে আকাশে যখন একটা চাঁদ থাকে, ভরা জোছনায় মনটা তখন খুব বেশী আবেগী হয়ে উঠে—অদ্ভূত এক ভাললাগা মনটাকে খুব বেশী চন্দ্রাহত করে তুলে—স্বপ্নগুলো ভাবনাগুলো এক হয়ে খুব দ্রুত সাতরঙা রঙে রাঙিয়ে দেয় মনটাকে—আনমনে একটা চাঁদের দিকে তাকিয়ে কত কিছুই না ভেবে যাই, কতই না রঙিন স্বপ্নের জাল বুনি, অদৃশ্য কাউকে ভেবে কতোই না এলোমেলো ভাবনা শব্দজটে বাঁধার চেষ্টা করি, মাঝেমাঝে তো আমি আমার ভাবনার জগতের সেই অদৃশ্য ছায়ার মুখশ্রীও খুঁজে যাই এমন চন্দ্রাহত জোছনায়—একটা চাঁদকে ঘিরে কতোই না পাগলামী করে যাই, আরো কতো যে পাগলামী করবো কে জানে 🙂
জানো কি, ওহে চাঁদ—
ভালবাসার মুহুর্ত রচনা করার জন্য, তুমি এক মধুরতম ফাঁদ—
স্বপ্নে দেখি মেঘের নায়ে দিচ্ছি আকাশ পাড়ি—
চাঁদের বুড়ি হাত ইশারায় ডাকছে চাঁদের বাড়ি—
রূপালি চাঁদটা বড্ড নিঠুর থাকে অচিন গাঁয়—
আমার মাথার উপর দিয়েই পরের বাড়ি যায়—
ঐ চাঁদ আমার না বলা হাজার কথামালার সাক্ষী—
সেই তো জানে কিভাবে আছি আমি, সাথে নিয়ে নদী ময়ূরাক্ষী–
জোছনার একরাতে দেখেছিলাম ঐ দূর নীলিমায়—
ভেসে উঠেছিল তোমার মুখখানি দূর আকাশের অজানা চূড়ায়—
(আমি আঁকতে পারি না,তাতে কি হয়েছে?..চেষ্টা করতে তো দোষ নেই—এই ছবিটা তেমনি একটা চেষ্টার ফল)
জোনাক জ্বলে লক্ষ কোঠি-
রাতের কাছে চাঁদের চিঠি-
নীল জোছনায় তুমি কোথায়?..•♫♪
সুপার মুনের সেই রাতে’ ধর্মসাগর পাড়ে’ অনেকের ভীড়ে’ কোন এক চন্দ্রাহত জোছনার কথা ভেবে’ আমিও হাতে ক্যামেরা তুলে নিয়েছিলাম, কিন্তু______
চাঁদ কেনো আসে না আমার ঘরে—রাঘবের গানটা যত শুনি ততই ভাল লাগে—জানি না এ কেমন মায়ায় গানটা আমায় বাঁধলো..•♫♪
খুব ইচ্ছে করে আমার ভাবনার জগতের অদৃশ্য সে ছায়ার হাতে হাত রেখে, একটা ভরা পূর্ণিমার রাত কাটিয়ে দিতে খোলা আকাশের নিচে 🙂
(বি:দ্র: এই লেখাটা এক চন্দ্রাহতপ্রেমীর লেখা 🙂 কি লিখেছে তা সে নিজেও জানে না 🙁 কিভাবে শেষ করতে হবে সেটাও বুঝে উঠতে পারছিলাম না ;? চন্দ্রাহতের মানে তো সবারই জানা আছে তাই না—আর চন্দ্রাহত জোছনা প্রেমে আমি এতোটাই মগ্ন যে, নিজেকেও চন্দ্রাহত বালিকা ছাড়া অন্যকিছু ভাবতে পারছি না—তাই কেউ লেখাটা পড়ে বিরক্ত হয়ে বকা দিবেন না প্লীজ 🙂 )
(খেয়ালী মেয়ের চন্দ্রাহত প্রেম)
৪০টি মন্তব্য
লীলাবতী
খেয়ালী মেয়ের আরেক রূপ দেখলাম এখানে। তাঁর মনে প্রচন্ড কাব্য প্রেম,গান, চাঁদের প্রতি টান। সে ছবি আকতে পারে, ফটো তুলতে পারে। সে পারেনা কি তাই ভাবছি। কথা,গান,ছবির সম্মিলনে দারুন এক পোষ্ট দিলেন পরী আপু। -{@ (y)
খেয়ালী মেয়ে
লীলাবতী আপু আমি এসে গেছি তাই ভাবাভাবি বন্ধ, আমিই বলে দিচ্ছি যে আমি কি পারি না, সত্যি বলতে আমি আসলে কিছুই পারিনা 😀
লীলাবতী
আপনি অনেক বিনয়ী, আর একটি গুন প্রকাশিত হলো 🙂
খেয়ালী মেয়ে
ইশশশশশ এই মেয়ের যন্ত্রনায় তো দেখি কথা বলা যাবে না-থাক আমি আর কিচ্ছু কমু না 🙁
জিসান শা ইকরাম
এমন ছবি লেখা গান আবেগ দেখে বিরক্ত হবার প্রশ্নই ওঠেনা
সব কিছু নিয়ে অনেক অনেক সুন্দর একটি পোষ্ট
আপনাকে বুঝা যাচ্ছে এই পোষ্টে।
শুভ কামনা।
খেয়ালী মেয়ে
জিসান ভাইয়া বিরক্ত হননি জেনে খুশি হলাম 🙂
জিসান শা ইকরাম
আমাকে বিরক্ত করা এত সহজ না।
খেয়ালী মেয়ে
তাইতো দেখছি–সেই সাথে চিন্তায়ও পড়ে গেলাম যে,এতো বিরক্ত করার পরেও কেনো বিরক্ত হননা ;?
আপনার জায়গায় আমি থাকলে বুঝতেন বিরক্ত কাকে বলে?ইহা কত প্রকার ও কি কি? :p
কৃষ্ণমানব
কি বলমু ?
কৃষ্ণমানব একেবারে ফিদা হয়ে গেছে ।
প্রত্যেকটা ছবি নিখুতভাবে জায়গায় এমনভাবে সাজানো হয়েছে যেন কল্পনারাজ্যে ক্ষনিকের জন্যে নিজের গা ভাসিয়ে দেয়া যায় . ,
কল্পনা গুলো আসলেই অন্যরকম ..
সেখানে যে কেউ চাইলে মনের ক্যানভাসে যে কোণ রং ,, চাইলে রংধনুর ৭টি রং এ ও যে কোণ প্রতিচ্ছবি আকঁতে পারে ।।
আধো আবছা আলোতে কারো মলিন মুখ কিংবা নির্জন অন্ধকার আচ্ছন্ন পরিচিত মুখটির কথা ভাবতে পারে ।
চাইলে সে ঝড় তুলতে পারে ।
মেঘের সিক্ততায় বৃষ্টিকে এনে নিজেকে আরো আরো শীতল করে তুলতে পারে ।
একেবেকে যাওয়া একমুখী অন্তবিহীন রাস্তার পানে ছুটে চলতে পারে পথহারা পথিকের মত ।
ইশশ কল্পনা আর বাস্তব এক কেণ হয় না ?
কিছু সময়ের জন্যে ডুব দেয়া আবার ফিরে পাওয়া পুরোনো ছায়াকে ?
খেয়ালী মেয়ে
হায় হায় কৃষ্ণমানব একেবারে ফিদা হয়ে গেছে—এখন কি হবে আপনার? ;?
ইশশশশশশশ কল্পনা আর বাস্তব এক হয় না কেনো?—এ প্রশ্নটা আমারও 🙁
শুন্য শুন্যালয়
চন্দ্রাহত শব্দটির অর্থ যেভাবে বুঝিয়ে দিলেন মুগ্ধ হয়ে গেলাম। আপনার লেখার গুনের সাথে আগেই পরিচিত আজ আরো অনেক দিক উন্মুখ হলো। এমন একজন পরীর কোন কিছুতেই আহত হওয়া উচিত নয়। চন্দ্রপ্রেমী ঠিক আছে। ভালো থাকুন পরী, অই চাঁদ আপনার পিছু রয়েছে আর কিছু কি চাই?
খেয়ালী মেয়ে
না, কিছুই চাওয়ার নেই–আপনিও ভাল থাকুন….
ছাইরাছ হেলাল
ড্যামিশ কি জানে চন্দ্রাহতের ঘটনা !
চন্দ্রাহতের এমন অর্থ জানা ছিল না, জানলেও আপনার লেখা পড়ে চন্দ্রাহত হতেই হয়।
আপনি দিনে দিনে আপনার লেখায় রং ছড়াচ্ছেন তাতে আপনার লেখক সত্ত্বার শক্তিমত্তা টের পাইয়ে দিচ্ছেন।
যে এমন লেখে তার লেখার শেষে এ বিনয় ঠিক মেনে নিচ্ছি না।
আপনি ছবি তোলেন ! ছবি আঁকেন! আর কী কী পারেন আগাম জানিয়ে দিন।
গান শুনতে শুনতে লিখলাম।
একদম নিয়মিত লিখতে শুরু করুণ।
খেয়ালী মেয়ে
ড্যামিশতো আমার সবকিছুর মাঝেই আছে অদৃশ্য হয়ে 🙂
লেখার শেষে বিনয়টা যদি না দেখাতাম তাহলে তো এতোক্ষণে অনেক বকা হজম করতে হতো :p
আমিতো কিছুই পারি না, কি জানাব ;?
তার চেয়ে বরং আমি কি কি পারি না-তার একটা তালিকা করতে বললে সুন্দর করে দিতাম 🙂
ছাইরাছ হেলাল
সে তালিকা দিলেও চলবে।
কেউ আপনাকে বকা দিচ্ছে না, দেবেও না,এই লেখা পড়ে।
আর কোথায় লেখেন বা লিখতেন ?
খেয়ালী মেয়ে
সে তালিকাটা দিতে গেলে সোনেলা কর্তৃপক্ষ আমার জন্য নোটিশ টাঙিয়ে ১৪৪ধারা জারি করবে-বুঝছেন কিছু? 🙂
কী সৌভাগ্যে আমার যে, কেউ এখনো বকা দেয়নি 😀
আমি ছোট মানুষ আর কোথাও কখনো লিখিনি–একজন বললো এখানে যা মন চায় লিখতে পারি কেউ কিচ্ছু বলবে না-মানে আমি হচ্ছি এখানে প্লে গ্রুপের স্টুডেন্ট :p
মামুন
চিত্র সমৃদ্ধ লিখনিটিতে গভীর ভালো লাগা রেখে গেলাম।
শুভ সকাল। -{@
খেয়ালী মেয়ে
শুভ সন্ধ্যা 🙂
মরুভূমির জলদস্যু
সুপার মুনের বেশ কিছু ছবি আমিও তুলেছিলাম।
খেয়ালী মেয়ে
সময় করে একদিন শেয়ার করে ফেলুন ছবিগুলো–
সোনিয়া হক
লুনাটিককে অন্য ভাবে দেখতাম। এটি যে চন্দ্রাহত তা কোনোদিন ভাবিনি আসলে।সুন্দর ভাবে বুঝিয়েছেন।একরাশ মুগ্ধতা রেখে গেলাম আপু (y)
খেয়ালী মেয়ে
লুনাটিক শব্দটির আক্ষরিক অর্থই হচ্ছে চন্দ্রাহত–ধন্যবাদ 🙂
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
খেয়ালী মেয়ের খেয়ালীপনায় দারুন উজ্জীবিত আমরা। -{@ (y)
খেয়ালী মেয়ে
🙂
অরণ্য
অনেক চন্দ্রাহত দেখছি! আপনার লেখাটি পড়তে পড়তে, শুনতে শুনতে আমারও একটি গান মনে পড়ল। শেয়ার করলাম – “ও চাঁদ সামলে রাখো জোছনাকে…” https://www.youtube.com/watch?v=UvW5QFdMcNw ।
খেয়ালী মেয়ে
হুমম মান্না দের গানটিও দারুন-ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য..
কৃষ্ণমানব
আয় , , হায় !
তাও তো কথা !
এখন কি হবে ?
খেয়ালী মেয়ের ৫ম চিঠি কবে আসবে ?
খেয়ালী মেয়ে
মকবুল ফিদা হুসেইন এর মৃত্যুর পর ভারতবর্ষে তার জায়গাটা নাকি এখনো শূণ্যে রয়ে গেছে–দেখি তার শূণ্যস্থান পূরণে কৃষ্ণমানব ফিদাকে সেখানে পাঠিয়ে দেওয়া যায় কিনা :p
খুব শীঘ্রই আসছি ড্যামিশের জন্য স্বপ্নীল চিঠি নিয়ে 🙂
নওশিন মিশু
সব কিছু মিলে চমৎকার উপস্থাপন ….. (y)
খেয়ালী মেয়ে
ধন্যবাদ 🙂
নীলাঞ্জনা নীলা
চন্দ্রাহতের ব্যাখ্যাটি খুব ভালো ভাবেই দিয়েছেন।আবেগি মেয়ে আপনি। প্রকাশটি ভালো লেগেছে।
খেয়ালী মেয়ে
মেয়েটা আমি একটু বেশিই আবেগী 🙂
ব্লগার সজীব
পরী আপু যা লেখেন তাই ফাটাফাটি টাইপের ভালো হয় 🙂
খেয়ালী মেয়ে
আমার চন্দ্রাহত জোছনা সবাই ভালভাবে গ্রহণ করেছে দেখে অনেক আনন্দ লাগছে \|/
কৃষ্ণমানব
একজনের জায়গায় যদি আরেকজন পাঠিয়ে দেয়া যেত . .
তাহলে মানব উপাধি বদলে ভুত হয়ে যেতাম !
মানুষ হওয়া খুব সহজ…
কিন্তু মনুষ্য গুনাবলী অর্জন খুব কঠিন ।। 🙂
অফটপিক : মকবুল হোসেনটা কে ?
ভারতবর্ষে শুভ্রমানব গেলে কেমন হয়?
খেয়ালী মেয়ে
মানুষ হওয়া খুব সহজ-একথাটার সাথে দ্বিমত পোষণ করলাম–মনুষ্যত্ব অর্জন ব্যতীত কেউ মানুষ হতে পারে না-আর মনুষ্য গুনাবলী অর্জন খুব কঠিন কাজ–তাই আমি মনে করি মানুষ হওয়াও খুব কঠিন 🙁
ভারতের নামকরা চিত্রশিল্পী মকবুল ফিদা হুসেইনকে চিনেন না, একথাটা কি সত্যি?.. 😮
অফটপিক :শুভ্রমানবটা কে? ;?
প্রজন্ম ৭১
অসাধারন। আপনি তো খুবই ভালো লেখেন আপু।
খেয়ালী মেয়ে
পড়ার জন্য ধন্যবাদ 🙂
হৃদয়ের স্পন্দন
আবেগাপ্লুত হয়ে গেলুম
খেয়ালী মেয়ে
ভাগ্যিস আবেগে কাঁন্দেন নাই :p