একজন মানুষের পক্ষে যতখানি শোক সহ্য করা সম্ভব মানসিক ভারসাম্যহীন না হয়ে তার চেয়েও বহুগুন বেশী শোক এনে দেওয়া মাস এই আগস্ট, এই মাসে তিনি তার পরিবারের প্রতিটি সদস্যকে হারিয়েছেন। তিনি শেখ হাসিনা। আমাদের অভিভাবক, আমাদের বুবু। বঙ্গবন্ধু কন্যা।
ঘাতকেরা এই মাসটাকেই বেছে নিয়েছে তার প্রাণের উপর আরেকবার হামলা চালানোর জন্য ২১ আগস্ট বাংলার ইতিহাসে আরেকটি শোকের সন্তাপের দিন। সেদিন অল্পের জন্য বেঁচে যান বঙ্গবন্ধু কন্যা। কারন তার ভাইয়েরা মানব ঢাল হয়ে দাঁড়িয়ে গিয়েছিল ঘাতকের বুলেটের সামনে , ছুটে আসা স্প্লিন্টারের সামনে তাদের প্রাণপ্রিয় বুবুকে রক্ষার জন্য।
সেদিন সেই ভয়াবহ হামলায় মারা যান:
আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক বেগম আইভি রহমান,
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ সেন্টু,
শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত নিরাপত্তা রক্ষী ল্যান্স কর্পোরাল (অব.) মাহবুবুর রহমান,
মহানগর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা রফিকুল ইসলাম (আদা চাচা),
মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী সুফিয়া বেগম,
মাদারীপুরের যুবলীগ নেতা লিটন মুন্সী ওরফে লিটু,
নারায়ণগঞ্জের রতন সিকদার,
মহানগর রিকশা শ্রমিক লীগ নেতা মো. হানিফ,
মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী হাসিনা মমতাজ রীনা,
সরকারি কবি নজরুল ইসলাম কলেজের ছাত্র মামুন মৃধা,
ঢাকা মহানগর যুবলীগ নেতা বেলাল হোসেন,
আমিনুল ইসলাম,
স্বেচ্ছাসেবক লীগ কর্মী আবদুল কুদ্দুস পাটোয়ারী,
যুবলীগ নেতা আতিক সরকার,
শ্রমিকলীগ কর্মী নাসির উদ্দিন সর্দার,
স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেত্রী রেজিয়া বেগম,
আবুল কাসেম,
জাহেদ আলী,
মমিন আলী,
যুবলীগ নেতা শামসুদ্দিন আবুল কালাম আজাদ
এবং ইছহাক মিয়া।
সে দিনের সে হামলা থেকে যারা বেঁচে গেছেন তারা আজীবন সেই হামলার ভয়াবহ স্মৃতি বয়ে বেরাচ্ছেন। তাদের একজনের জবানীতে শুনি কি ঘটেছিল সেদিন –
ট্রাকে উঠলেন শেখ হাসিনা।
ছোট বক্তৃতার পরই শুরু হবে র্যালি শ্লোগান চলছে বক্তৃতার শেষ লাইন জয় বাংলার পর জয় বঙ্গবন্ধু বলার সুযোগ আর পেলেন না তিনি।
প্রচণ্ড বিস্ফোরণ হলো ট্রাকের সামনে। দুহাতে কান ঢেকে বিমূঢ় হয়ে দাড়িয়ে শেখ হাসিনা।
ওই অবস্থাতেই একদল লোক শেখ হাসিনাকে ঘিরে ট্রাক থেকে নামিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
পরপর কয়েকটা বিস্ফোরণ, লোকজন ছুটোছুটি করছে নিরাপদ আশ্রয়ের খোজে।
সামনে ফাঁকা, আহত এবং নিহত হয়ে পড়ে আছে একটু আগেই তাকে ঘিরে থাকা মানুষগুলো।
একটু আগে ইঞ্চির ফারাক ছিলো না যেসব শরীরে সেখানে এখন এক জীবনের সমান দূরত্ব।
পার্টি অফিসের সামনের ড্রেনটা রক্তে লাল হয়ে আছে।
হঠাত গুলির শব্দ , স্নাইপার শট নিচ্ছে ………… পিতার রক্তের শেষ নিশানা মুছে দেবার অন্তিম চেষ্টা।
কিন্ত মুজিব কন্যাকে মানুষ তাদের প্রাণের চেয়েও বেশী ভালোবাসে সেটা প্রমানিত হলো আরেকবার, ল্যান্স করপোর্যাল মাহবুব (অব:) নিজের শরীর দিয়ে বুলেট ঠেকিয়ে রক্ষা করলেন প্রাণপ্রিয় বুবুকে।
শেখ হাসিনাকে নিয়ে তোলা হয় তার সব সময়ের বাহন ডিফেন্ডার ল্যান্ড রোভারটিতে , পিছনের কাঁচে এসে লাগে আরেকটি বুলেট, হাল ছারেনি ঘাতক। কিন্ত এবার বাঁচিয়ে দিল বুলেটপ্রুফ গ্লাস এবং ভাগ্য
সেই দুঃসহ শোক সামলে আজকে তিনি পুরো দেশের হাল ধরেছেন শক্ত হাতে , মুজিবের রক্ত বলে কথা ……. তা তাকে বানিয়েছে মৃত্যুঞ্জয়ী ফিনিক্স।
২১ আগস্ট হামলার নেপথ্যে যারা ছিলো তাদের যথোপযুক্ত শাস্তির দাবী জানাই
জয় বাংলা
জয় বঙ্গবন্ধু
১০টি মন্তব্য
ছাইরাছ হেলাল
এ জঘন্যতম নৃশংসতার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই অবিলম্বে ।
শুন্য শুন্যালয়
অনেকগুলো বছর তো পার হয়ে গেলো। 🙁
আগস্ট মাস তাদের স্বাধিনতা দিবস, মাথা চাড়া তো দিবেই ।
এরকম জঘন্য ঘটনা আর যেন না ঘটে ভবিষ্যতে, তার বিচার এখনই করা উচিত।
ব্লগার সজীব
নেত্রীকে আল্লাহ রক্ষা করবেন অবশ্যই। ঘাতকদের অবিলম্বে বিচার চাই ।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
খুবই মর্মাহত এর রকম ঘটনার দ্রুত বিচার করা উচিত ছিল।
প্রজন্ম ৭১
বাংলাদেশে কোন জনসভায় এভাবে গ্রেনেড মেরে এত গুলো মানুষ হত্যা করার ঘটনা এই প্রথম। উদ্দেশ্য পরিস্কার, শেখ হাসিনা এবং অন্যন্য আওয়ামী লীগের প্রথম শ্রেনীর নেতাকে হত্যা করে লীগকে নেতা শুন্য করা। ২১ আগষ্ট তাদের পরিকল্পনা সফল হলে, এখনো জামাত বিএনপি জোট ক্ষমতায় থাকতো।
খুনীদের অবিলম্বে বিচার চাই ।
বনলতা সেন
দিন দুপুরে হত্যাকাণ্ডের বিচারে কী করে এতদিন লাগে বুঝিনা ।
জিসান শা ইকরাম
২০০৪ এর ২১ আগষ্ট আমি ঢাকায় ছিলাম,
এত আতংক গ্রস্থ হয়ে পরেছিলাম যে স্বাভাবিক হতে দুই দিন লেগেছে।
ঘাতকদের দ্রুত বিচার চাই।
মিথুন
নিহত সবার মাগফেরাত কামনা করি। আহত সবার শান্তির জন্য প্রার্থনা করছি। এমন দিন যেন আর না আসে আমাদের দেশে।
ওয়ালিনা চৌধুরী অভি
এই ঘাতক অশুভ শক্তিকে বিনাশ করতেই হবে (y)
পাগলা ঘন্টা
এতো ভয়ংকর এবং বীভৎস ঘটনা এইটা নিয়ে কি মন্তব্য করবো ঠিক বুঝতে পারছি না। স্রেফ এইটুকু বলবো যারা চলে গেলেন না ফেরার দেশে তাঁদের রুহের মাগফিরাত কামনা করছি। এই অপূরণীয় ক্ষতি কোন কিছু দিয়ে পুসাবার নয়। আর যারা শরীরে আঘাত নিয়ে বেঁচে আছেন তাঁদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনে দেশের বাহিরে নিয়ে গিয়ে উন্নত চিকিৎসা দিতে হবে। হয়তো দেহের চিকিৎসা দেওয়া যায়। কিন্তু মনের ক্ষত মিটানোর মতো মলম কি আছে? ২১ শে অগাস্টের ভয়াবহতম নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার সম্পন্ন করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি বিধান করা এখন সময়ের দাবী।
জয় বাঙলা। জয়# বঙ্গবন্ধু