খুব গরম পড়েছে । ঠান্ডা পানিতে গোছল করতে পারলে বেশ হতো । কিন্তু নতুন কোথাও এসে মোসলেম সাহেবের বাথরুমে যেতে ইচ্ছে করে না । সারাজীবন কেটেছে কলেজের ডরমেটরীতে । বিয়ে শাদী করেন নি । রুম কিংবা বেড শেয়ার করতে আপত্তি কখনই ছিল না । কিন্তু বাথরুম ব্যাপারটা এক্কেবারেই ভিন্ন । এসেছেন তাঁরই এক ছাত্রের বাসায় ।
ছাত্র নতুন বিয়ে করেছে, মেয়েটাও চটপটে বেশ । সব কথাতেই হাসে । কিছুক্ষন আগে কফি বানিয়ে এসে বললো স্যার কফি খাবেন ? খুব গরম কিন্তু । মোসলেম সাহেব চুমুক দিতে গিয়ে দেখলেন কোল্ড কফি । এইদেখে তার কি হাসি । থামতেই চায় না । মোসলেম সাহেব অবাক হয়ে হাসি দেখলেন, আজকাল কেউ এমন প্রাণ খুলে হাসে না । মেয়েটাকে তাঁর খুব আপন মনে হতে লাগলো । বুকের ভেতরে বাবা বাবা একটা অনুভুতি ।
মোসলেম সাহেব গোছল করছেন অস্বস্তি নিয়ে । বাথটাবে আগে কখনো গোছল করেন নি । মিলি এসে দেখিয়ে দিয়ে গেছে কিভাবে কল খোলা বন্ধ করতে হয় । মিলি তার ছাত্রের বউয়ের নাম । যে মেয়েটা কথা বলতে গিয়ে বারবার হাসে । প্রাণ খোলা হাসি । সম্ভবত দরজার ওপাশে দাঁড়িয়ে এখনো হাসছে । মোসলেম সাহেব তার হাসির শব্দ শুনতে পাচ্ছেন । আচ্ছা মিলি কি বুঝতে পারছে তার অস্বস্তি লাগছে ? বাথটাবের অল্প জায়গাটা কবরের মত । মোসলেম সাহেব একবার কবরে নেমেছিলেন । তাঁর মায়ের কবরে । ঐদিন খুব বৃষ্টি হয়েছিলো । কবরের মাঝে একহাঁটু পানি । বালতি দিয়ে পানি তুলে কবর দিতে হয়েছিল । কবর থেকে উঠে আসার আগে মৃতের মুখ পশ্চিমমুখী করে দিতে হয়, শরীর সোজা রেখে ।
মোসলেম সাহেব লক্ষ্য করলেন তিনি মুখ পশ্চিম দিকে করে রেখেছেন । মিলি এখনো হাসছে, তবে শব্দটা কান্নার মত লাগছে এখন । আচ্ছা, তাঁকে কি কবরে শোয়ানো হচ্ছে ? তা কেন হবে ? তিনি তো মারা যান নি । নিশ্চয় তাঁর হ্যালুসিনেশন হচ্ছে । নিঃশ্বাস নিতে সমস্যা হলে এমন হয় । মস্তিষ্কে অক্সিজেনের পরিমান কমে যায় । এতে স্ট্রোক করার সম্ভাবনা থাকে । না, তাঁকে খুব দ্রুত মস্তিষ্কে অক্সিজেনের সরবরাহ বাড়াতে হবে । কিন্তু অবাক ব্যাপার, তিনি নিঃশ্বাস নিতে পারছেন না । আর তার থেকেও বেশি ভয়ানক ব্যাপার হলো তিনি সম্ভবত অনেক আগেই ভুলে গেছেন কিভাবে নিঃশ্বাস নিতে হয় ।
(এটি একটি পরীক্ষামূলক পোস্ট, স্ট্যাটাসও বলা যেতে পারে :p :p :p :p )
২২টি মন্তব্য
মিসু
ভয়ানক ব্যাপার । আমি। আর বাথটাবে গোছল করতে পারবোনা। আপনার এই কবরের কথা মনে হবে । (y)
রাইসুল জজ্
🙂 🙂 🙂 🙂 🙂
আদিব আদ্নান
এই প্রথম এখানে লিখলেন , লিখবেন নিয়মিত আশা করি ।
একটি পরীক্ষামূলক পোস্ট, স্টাটাস যদি এমন সুন্দর গোছান হয় তাহলে পাঠক হিসেবে
আনন্দিত বোধ করছি অবশ্যই , যদিও কবরের মত ভয় জাগানিয়া বিষয় নিয়ে সুন্দর ভাবেই
প্রথম উপস্থাপনা রেখেছেন ।
রাইসুল জজ্
ধন্যবাদ, ভাই । ইনশাল্লাহ ।
ছাইরাছ হেলাল
স্বাগত আপনি এখানে , আপনার নামটি দেখে নস্টালজিক হয়ে যাচ্ছি ,
আমার হারান এক সুহৃদ ছিল এমন নামের ।
আমার যদি বুঝতে ভুল না হয় তাহলে আপনাকে নিয়মিত লেখালেখি করা একজন ব্লগার মনে হচ্ছে ।
লিখুন এমন করেই নিয়মিত ।
মৃত্যুকে খুব সুন্দর করেই উপস্থাপন করেছেন ।
রাইসুল জজ্
নারে ভাই, আমি জীবনে কোন কিছুতেই নিয়মিত না । ধন্যবাদ ভাই । ভালো থাকবেন ।
মর্তুজা হাসান সৈকত
ভালো লিখেছেন । চলুক আরও…
রাইসুল জজ্
🙂 🙂 🙂 🙂
শিশির কনা
বাথ টাবকে কবর বানিয়ে ফেললেন ? ভাল হয়েছে লেখা ।
রাইসুল জজ্
ধন্যবাদ 🙂 🙂 🙂
এই মেঘ এই রোদ্দুর
বাপরে পড়ে খুব ভয় লাগল
তবে সত্যিই তো এমনই হবে
রাইসুল জজ্
ধন্যবাদ আপু, ভালো থাকবেন । 🙂 🙂
জিসান শা ইকরাম
সোনেলায় স্বাগতম
লেখার স্টাইলটি ভিন্ন
একদম সমাপ্তির পূর্ব পর্যন্ত বুঝা যায়নি – কি হচ্ছে ।
শুভকামনা ।
রাইসুল জজ্
জেস দা, আপনাকে বলছিলাম আসবো । আসার পর কয়েকটা পোস্ট পড়ে ভালো লেগে গেলো । আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ।
আদিব আদ্নান
ভয় পাইয়ে দিয়ে শুরু করলেন !
তা আপনার টেষ্ট এর ফলাফল জানালে বাধিত হব ।
রাইসুল জজ্
🙂 🙂 🙂 🙂 :v :v :v
প্রজন্ম ৭১
(y) (y)
রাইসুল জজ্
🙂 🙂
লীলাবতী
প্রথম লেখাটিই মৃত্যু বিষয়ক দিলেন ভাইয়া ? 🙁
রাইসুল জজ্
হাতের কাছে এটাই পেয়েছি তাই দিলাম 🙂 🙂 🙂
হতভাগ্য কবি
ম্রিত্তুকে ভালা পাই। অসাধারণ হইসে 🙂 :c :c
রাইসুল জজ্
ধন্যবাদ 🙂 🙂