তখন একটি বহুজাতিক ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি করি।
ভালুকায় আমার অফিস। প্রতিদিন খুব ভোরে অফিসের গাড়ি মেইন রোডে একটি নির্দিষ্ট সময়ে আমার অপেক্ষা করে। দু’মাস হল এখানে জয়েন করেছি। বাসা থেকে বেশ খানিকটা পথ হেঁটে হেঁটে বাসস্টপের সেই যায়াগাটায় যেতে হয়।
বাসস্টপের সাথেই একটি পত্রিকার দোকান। পাশেই একটি টি-স্টল। মজার ব্যাপার হল এতো ভোরেই দোকানদুটো খোলা থাকে। নাইট কোচগুলো আসা যাওয়ার পথে এখানে যাত্রী নামে। এজন্য চায়ের দোকানটি প্রায় সারা রাতই খোলা থাকে। একজন বৃদ্ধ মানুষ দোকানটি চালায়। খুব ভালো চা বানায়। আর পত্রিকার দোকানটিতে এসে সব হকারেরা জমায়েত হয়। এই লোক এখানের একজন পত্রিকা ডিলার। দু’মাসে এই দুজনের সাথে আমার বেশ আলাপ ও মিত্রতা হয়ে গেছে। আমি-ই এই সময়ে তাঁদের একমাত্র কাস্টমার কিনা! সকালের প্রথম কাপ চা এবং প্রথম পত্রিকাটি আমি-ই নেই প্রতিদিন।
একটু ভুল হল। আমিই একমাত্র যাত্রী নই এই সময়ের।আর একজন প্রায় একই সময়ে আসে। আজ দু’মাস যাবত দেখে আসছি। ভোরের তাজা ফুলের মত স্নিগ্ধতাকে সাথে নিয়ে দূর থেকে একজন হেঁটে হেঁটে আসে। কাঁধে একটা ব্যাগ। দুলতে থাকে এলোমেলো। এত ভোরে দু’পাশে ছড়ানো এলো চুল। পীঠের দিকটা ভেজা থেকে। হয়তো ভেজা চুলের জন্য । আমার থেকে একটু দূরে অপেক্ষা করে। একই বাসস্টপের নীচে।
প্রথম যেদিন ওকে দেখি… সারা রাত বৃষ্টি হয়েছিল মুষলধারে। সকালে টিপটিপ ঝরছে। আমি সময়ের বেশ আগেই এসে বৃদ্ধ চা দোকানীর সাথে খাজুরা আলাপে মগ্ন। ইট বিছানো রাস্তাটি কাঁদায় ঢেকে আছে। অনেক আগের ইটের সলিং। সেই রাস্তার ডান পাশ ঘেষে অতি সন্তর্পনে হেঁটে আসছিল একটি মেয়ে। এলোমেলো ভারসাম্যহীন ইটের তলানিতে জমানো কাদা-পানি ‘পিচিক’ করে ওর শরীরকে যেন ভিজিয়ে না দেয়। তাই এতো সতর্কতা।
পরে জেনেছিলাম মিথিলা ওর নাম।
সেও একই দিকে অন্য একটি কোম্পানিতে কাস্টোমার সার্ভিস অফিসার হিসেবে আছে। ওকে নিতে আসা মাইক্রোবাসটি একটি কালো রঙের ‘হাইস’। কালো কাঁচে ঢাকা পুরো গাড়ির ভিতর যেন কবরের নিস্তব্ধতা। বাইরে থেকে তো তেমনই মনে হয় আমার।
প্রতিদিন ঘড়ি ধরে প্রায় একই সময়ে সে আসে। ততোক্ষণে পত্রিকার দোকানের ডিস্ট্রিবিউশন শেষ হয়ে যায়। হকারেরা উল্কার বেগে সাইকেলের প্যাডেল মারায় ব্যস্ত তখন অলিতে গলিতে। আমি আর বৃদ্ধ দোকানি নীরবে ওকে স্বাগত জানাই। এভাবেই কেটে যায় পাঁচ-সাত মিনিট। দূর থেকে ওর পরিচিত গাড়িটিকে দু’জনেই প্রায় এক সাথে দেখতে পাই। তবে কি আমিও গাড়িটির অপেক্ষায়-ই থাকি?
ওটা রাস্তার বাঁকে দেখা যেতেই মিথিলা ঘাড় বেঁকিয়ে আমার পানে তাকায়! আমিও ওকে দেখি। আমার চোখে কি তখন মুগ্ধতা বিরাজ করে? না হলে প্রতিদিনই একই ভাবে ওর ক্ষণিকের অপলক দৃষ্টির চেয়ে থাকা আর নীরবে গাড়ীতে উঠে যাওয়া কেন?
এভাবে একজন অপরিচিতা চলার পথে অপেক্ষার কষ্টকর (আমার কাছে অবশ্য আনন্দের ছিল ঐ সময়গুলো) প্রহরগুলোতে পাশাপাশি থেকে চেনা-অচেনার গণ্ডী পার হয়ে যায়। একজন সম্পর্কহীনার সাথে হৃদয়ের বিনা তারে কীভাবে যেন একটা লিঙ্ক হয়েই যায়। সে যে পথ ধরে এখানে আসে, ঐ পথটিকেও আমার বড় আপন মনে হয়! বন্ধের দিনগুলোতে আমি সেই পথ ধরে ধরে হেঁটে যাই… বাতাসে মিথিলার ঘ্রাণ পাবার চেষ্টা করি। আসলে মেয়েদের সাথে তখনো পর্যন্ত আমি তেমনভাবে মিশি নাই। তাই একজন অপরিচিত মিথিলা আমার পরিচিত জগতটিকে নাড়িয়ে দিয়েছিল।
সেদিন ছিল হরতাল। রুটিন সময়ে অপেক্ষা করছি। কিছুক্ষন আগে এক পশলা বৃষ্টি হয়ে গেছে, এখন হচ্ছে না। কিন্তু আকাশ মেঘে ঢাকা। যে কোন সময়েই নামবে নামবে ভাব। কাঁধের ব্যাগটি অবহেলায় এদিক সেদিক দুলিয়ে চিন্তিত মনে মিথিলা আসে। আজ কেন জানি প্রতিদিনের রেখে দেয়া দূরত্বটুকু পার হয়। অদৃশ্য সীমানা প্রাচীর ডিঙ্গিয়ে আমার আরো একটু কাছে আসে। কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে হঠাৎ বলে, ‘ আজ তো গাড়ি আসবে না। কি করি বলুনতো?’ প্রথমটায় মনে করলাম অন্য কারো সাথে কথা বলছে। কিন্তু আশেপাশে কেউ নেই… আর বাতাসের সাথে তো কথা বলবে না। তাই অবাক হয়ে ওর দিকে চেয়ে থাকি।
আমার অবাক হওয়া দেখে মিথিলা হাসে। আমাকে কি ল্যাবা মনে করেছিল সেদিন? হাসি থামিয়ে বলে, ‘এই যে মিস্টার। আপনাকেই বলছি!’
সেই প্রথম আমাদের কথা বলা। আমাদের না বলে ‘ওর বলা’ বললেই ভালো হয়। আমি বোকার মতো হেসেছিলাম। তারপর একজন মিথিলাকে আকর্ষণ করার জন্য নিজের ব্রেইনের সকল কোষগুলোকে তড়িৎ কাজে লাগাতে চেয়েছি। নিঃসঙ্গ একটা রিক্সা কোথা থেকে এসে যেন আমাকে হাতে চাঁদ পাইয়ে দিলো। একটা নির্দিষ্ট পথ পর্যন্ত যেতে পারলে সেখান থেকে অন্য একটা ব্যবস্থা করা যেতে পারে ভেবে মিথিলাকে ওটা ঠিক করে দেই। সে রিক্সায় উঠে আমার দিকে তাকায়। ওর চোখে আমি কি দেখেছিলাম জানি না। হয়তো কবিগুরুর মত, ‘ তোমার চোখে দেখেছিলাম আমার সর্বনাশ’। আমি দাঁড়িয়ে আছি দেখে বলল, ‘ আমি কি একাই যাবো? আসুন, একসাথে যাই।‘ পরোক্ষভাবে কি সে আমাকে জীবনের চলার পথের কথাই বলেছিল না?
সেই প্রথম কোনো মেয়ের খুব কাছাকাছি আসা। একজন নারীর সাথে পাশাপাশি রিক্সার অপরিসর যায়গায় একত্রে বসা। ঐ প্রথম নিজের ভিতর থেকে নিজেকে বের করে আনা। অন্য এক আমিকে চেনা। রিক্সাওয়ালা খুব দ্রুত চালাচ্ছিল। কারন পিকেটারদের রাস্তায় আসার আগেই সে গন্তব্যে পৌঁছাতে চাইছে। খুব হাল্কা বৃষ্টি শুরু হল। আমি রিক্সার হুড ফেলে দেবো কিনা জানতে চাইলে মিথিলা না করল। সেদিন যে কেমন লাগছিল তা আমি লিখে প্রকাশ করতে পারবো না। অন্য কেউ হয়তো পারতে পারে।
একেতো একটু একটু শীত করছিল… এদিকে দুরন্ত বাতাস দুষ্টুমি শুরু করে দিলো মিথিলার খোলা চুল নিয়ে। বার বার সেগুলোকে ঠেলে ঠেলে দিচ্ছিল আমার দিকে। অর সিল্কের মত কালো চুল আমার চোখে… গালে ভালবাসার পরশ বুলিয়ে যাচ্ছিল। আমার শরীর ওকে ছুঁয়ে আছে। কেমন নরম-পেলবতা আমার ভিতরে উষ্ণতর এক কাঁপন ধরিয়ে দিয়ে যাচ্ছিল। পৃথিবীটাকে খুব সুন্দর লাগছিল। এমনকি সেই পথে একটা ব্রীজ রয়েছে যাকে সবাই গন্ধ ব্রীজ বলে থাকি। যত সব নোংরা-ময়লা সেখানে রাস্তার এক পাশে ফেলা হয়। আর পৃথিবীতে এতোটা দুর্গন্ধ বোধ করি আর কোথাও নেই। সেখান দিয়ে যাবার সময়েও আমি কিছুই অনুভব করলাম না! আমার পাশে যে ভালবাসার (তখনো অবশ্য কিছুই হয়নি। আমার মনের ভিতরের তখনকার অনুভুতির কথা বলছি) সুবাস নিয়ে মিথিলা নামের একজন বসে ছিল!! জীবনের নতুন এক অর্থ খুঁজে পেয়েছিলাম সেদিন। বেঁচে থাকার ইচ্ছেটিকে সুদৃঢ় করে হৃদয় থেকে মস্তিষ্কে একটি বার্তাই জানান দিচ্ছিল- লাইফ ইজ বিউটিফুল!!
এরপর ধীরে ধীরে দুজন কাছে এলাম। যাওয়া আসার সময়টুকু ছাড়াও বন্ধের দিনগুলোতে আমরা দেখা করতাম… অনেক দিন… অনেকগুলো ঘণ্টা একত্রে কাটিয়েছি মিথিলার সাথে। শীত গ্রীষ্ম বসন্ত আর ভরা বাদলের দিনে ওকে নিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছি যত্রতত্র। ‘বাদল দিনের প্রথম কদম ফুল’ নামে ওকে নিয়ে জীবনের প্রথম একটি কবিতাও লিখেছিলাম। খুব লজ্জা নিয়ে যেদিন ওকে সেটা পড়ে শুনালাম, কেমন করে যেন আমাকে দেখল! ওর চোখ দিয়ে ক’ফোটা অশ্রু ঝরে পড়ল। আমার হাত ধরে বলেছিল, ‘এতোটা ভালোবাস আমায়!?’
ভালবাসার স্বরূপ জানতে ওকে নিয়ে ভেজা শালবনের গভীরে হারিয়েছিলাম… নুহাশ পল্লীর নিভৃত অরন্যে… তুরাগের বুক চিরে ট্রলারে করে দুজনে দিগন্তে যেখানে আকাশ আর নদী এক হয়ে গেছে, সেখানে যাবার চেষ্টা করে করে অনেক দূরে চলে গেলাম! ভালবাসার জন্য… মিথিলাকে পাবার জন্য আমি করি নাই এমন কিছুই ছিল না।
সেই মিথিলাকে শেষবার দেখি এক আলোকোজ্জ্বল রাতে! রঙ বে-রঙের পোশাক পড়া অতিথিদের ভিড়ে… অপ্সরী সেজে বসে আছে সে! চারিদিকে এতো আলোর ভিতরে আমাকে নিকষ কালো আঁধারে ডুবিয়ে সে চলে গেলো অন্য একজনের হাত ধরে! সানাই বেজে চলেছে… সেই সানাইয়ের সুরে সুরে সে চলে গেলো… ফিরে এলোনা! ওর হৃদয়ে তখন সানাইয়ের মধুর রাগিনী! আর আমি কয়েক শ’ বিষাক্ত সাপের ছোবল হৃদয়ে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি… আমার কানে বেজে চলছিল সানাইয়ের করুণ সুর। আমার কষ্টকে তা আরো বাড়িয়ে দিচ্ছিল। আমাকে যেন ধারালো তরবারী দিয়ে কয়েক শ’বার আঘাত করা হয়েছে… একটা জ্বলন্ত তীর আমার হৃদয়টাকে এফোঁড় ওফোঁড় করে দিয়ে গেলো মিথিলার সামনে দিয়ে।
মিথিলা একবারও পিছনে আমার দিকে ফিরে তাকালো না!
আসলে মিথিলারা কখনো-ই পিছু ফিরতে চায় না… মিথিলারা এক একজন হৃদয়হীনা!
ওরা কখনোই কারো হয় না।।
১৪টি মন্তব্য
ছাইরাছ হেলাল
ভন্ডামি করে মন্তব্য আমি করি না।
মনের কথা লিখলে শুনতে ভাল লাগবে না। অবশ্য আমার বোঝার ভুল হতেই পারে।
আপনার আগের লেখা আবার পড়ব ভাবছি।
পাঠক হিসেবে আমি কিন্তু সুবিধের নই ।
মামুন
অনেক ধন্যবাদ।
একটা কথা ক্লীয়ার হওয়া দরকার।
আমার গল্পগুলিতে ‘আমি’ দিয়ে যে লিখাগুলো (শুধুমাত্র গল্পতে, একান্ত অনুভূতিতে নয়) , তাঁকে আমি মনে করলে ভুল করা হবে। আমি নির্দিষ্ট একটি প্যাটার্ণ বা ছন্দে লিখতে পছন্দ করি না। আমার ভিতরে কয়েকটি সত্ত্বার উপস্থিতি আমি অনুভব করি। তাই লিখাগুলোও সেভাবেই এগিয়ে যায়। আমার ফেসবুকে ৬০টিরও অধিক আইডি রয়েছে (একটি ছাড়া আর সবগুলো ফেইক)। সেখানে নারী, পুরুষ, যুবতী, বৃদ্ধা, বৃদ্ধ, শিশু – এদের সবার চরিত্র নিয়ে আমি ভার্চুয়াল জগতে বিচরণ করি, তাদের আইডিতে অবস্থান করে ওদের মত অনুভূতিপ্রবণ হতে চেষ্টা করি। কিন্তু পারি কিনা জানি না।
আমি নিজের ভিতরের ঐ নেতিবাচক এবং ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে ক্রমাগত সৃষ্টি করি এবং ধ্বংস করি। তাই আমার যে কোনো একটি লিখা দেখেই আমার সম্পর্কে কোণ ধারণা করাটা কি ঠিক হবে? 🙂
আপনি আমার সবগুলো লিখাই পড়ুন। নিজের মনের সট্য অনুভূতিকে স্বাচ্ছন্দ্যে প্রকাশ করুন। আপনি নিজেও একজন লেখক, তবে যখন আপনি পাঠক হয়ে আবির্ভূত হবেন, তখন একজন যথার্থ পাঠকের দৃষ্টি নিয়েই দেখবেন আশা করি। লেখক কে প্রকৃত লেখকে পরিণত করেন কিন্তু এই পাঠকেরাই।
সাথে থেকে অনুভূতি রেখে যাবার জন্য অনেক ধন্যবাদ। -{@ -{@
ছাইরাছ হেলাল
আমি মুলত পাঠক মনে করি নিজেকে। লেখক নই কোনভাবেই।আমার পাঠক সত্ত্বা আমাকে লেখক হিসাবে
মেনে নেয় না। আমি তাতেই বরং খুশি। আমি আসলে যা বলতে চাইছি তা হল এখানে আপনার অন্য লেখা আমার কাছে বেশি ভাল মনে হয়েছে। অন্য কোন বিষয় নেই। আমি বা তুমি নিয়ে আমি ভাবছি না। একজন লেখক তার উচ্ছল আনন্দ নিয়ে ক্রমাগত সৃষ্টি করে যাবেন নিজের ইচ্ছেয় সেটাই স্বাভাবিক।
এ স্বাধীনতা একজন লেখক বহন করেই।বোধ করি আমি আমাকে উপস্থাপন করতে পেরেছি।
লেখা চালু থাকুক, পাঠক আপনার সাথেই থাকবে।
মামুন
অনেক ধন্যবাদ ভাই।
শুভ সকাল। -{@
নওশিন মিশু
মিথিলারা খুব হৃদয়হীনা হয়, তাই….না ???
এক নিশ্বাসে শেষ করলাম গল্পটা ….
মামুন
এইটা এই গল্পের নায়কের অনুভূতি, আমার নয়। 🙂
বাস্তবে আমার মিথিলা আর দুই জুনিয়র মিথিলাদেরকে নিয়ে ওদের হৃদয়ের উষ্ণতায় আমি বেশ আছি।
সাথে থেকে অনুভূতি রেখে যাবার জন্য অনেক ধন্যবাদ। -{@
সিহাব
মিথিলারা একই হয় ! অন্য নামের কেউ আবার এক নাও হতে পারে !! হাতের সব আঙ্গুল এক হয়না কিনা ! গ্লপটা খুবই ভাল লেগেছে !
মামুন
ধন্যবাদ ভাই।
শুভ সকাল। -{@
জিসান শা ইকরাম
মিথিলা কেন এমন করলো তার কি কোন ব্যাখ্যা আছে?
এমন মেয়ে থাকতে পারে
তবে মেয়েদের চেয়ে ছেলেরাই বেশি প্রতারনা করে।
ভুক্ত ভোগী বেশি মেয়েরা।
যাই হোক গল্প গল্পই
সে হিসেবে ভালোই লিখেছেন।
উপরে মন্তব্যে দেখলাম ৬০+ টি ফেবু আইডি আপনার
একটি চালাতেই গলদঘর্ম, কেমনে কি ?
মামুন
আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
২০১১ তে প্রথম ফেবু একাউন্ট করি। তখন কিছুই বুঝতাম না। কাকে, কিয়াবে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠাতে হবে, সে সম্পর্কেও অজ্ঞ ছিলাম। তখন কয়েকজনকে বন্ধু হবার রিকোয়েস্ট পাঠাই। কয়েকজন বন্ধু হয়। কিন্তু তাদের ভিতরে এততা নোংরামি এবং অশ্লীল ছবি পোস্ট করা ছিল যে, বিব্রত হই। এরপর অনেকে আমাকে না চিনবার দরুন রিপর্ট করে। বেশ কয়েকবার আনাকে ফেসবুক থেকে ব্লক করা হয়। তখন ভাবতে থাকি। শেষে সিদ্ধান্ত নেই, আমি নিজেই নিজের বন্ধু হব। এরপর একে একে নিজের এক এক নামে আইডি বানাতে থাকি। নিজের লিখাগুলোতে, অনুভূতিগুলোতে নিজেই বিভিন্ন চরিত্র হয়ে লাইক দেই, মন্তব্য করি। এভাবে এই তিন বছরে এতোগুলো আইডি হয়েছে।
তবে আমি শুধুমাত্র একটা জেদের কারনে এই কাজটি করেছিলাম। আমার এর কোনো আইডি দিয়ে কাউকে সামান্যতম বিব্রত ও করি নাই। নিজেই নিজের একটা গ্রুপ বানিয়ে নিয়েছিলাম। যেখানে পরবর্তীতে অন্য বন্ধুরাও চলে আসে। গ্রুপটার নাম- এসো সাদা মনের মানুষ হই।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
শুভসকাল। -{@
লীলাবতী
মিথিলারা বড় নিষ্ঠুর। লীলাবতীরা ভালো :p গল্প ভালো লেগেছে (y)
মামুন
হ্যা লীলাবতীরা বেশ ভালো 🙂
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। -{@
সঞ্জয় কুমার
বেশ কঠিন কিন্তু একবারে এতগুলো সত্তা ধারণ করা । আর এত্তোগুলো আইডি !!!!!!! আমার তো একটা চালাতেই বোরিং লাগে ।
ধন্যবাদ সুন্দর একটা গল্পের জন্য ।
মামুন
ধন্যবাদ।
সত্ত্বা ধারণ করার চেষ্টা করা।
আর বোরিং লাগাটা যার যার মানসিকতার ব্যাপার। একজন লেখককে বিভিন্ন চরিত্রের ভিতরে ঢুকে যেতে হয়, আর এরকম ফেবু আইডি দিয়ে যখন অন্যদের সাথে অনুভূতি প্রকাশ করা হয়, কিছুক্ষণের জন্য নিজেকে কেন জানি আইডির রঙে রনীন মনে হয়।
ভালো লাগার অনুভূতি রেখে গেলেন, অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
শুভকামনা রইলো। -{@