অড়হরঃ দেশের ডাল জাতীয় খাদ্যের একটি সুস্বাদু ডাল। । ছোট্ট বেলায় বাবা-চাচাদের মুখে এর নাম শুনেছি আড়োল, কিন্তু বড় হয়ে বই পুস্তকে জেনেছি অড়হর। বাংলার আবহমান কাল ধরে চাষ হয়ে আসছে।
চাষ প্রনালীঃ- ভুমি সাধারনত, দো-আশ, এটেল, ভাল জন্মে। তাছাড়া রাস্তার ধারে, খাল বিলের ধারে, টিলা, ভুমিতেই আবাদ করা যায়।
চাসাবাদ এলাকাঃ- আমাদের দেশের কুষ্টিয়া, দিনাজপুর, রংপুর যশোর ছাড়াও অনেক জেলায় আবাদ করা হয়। একবছরব্যাপি চাষ হওয়াতে এখন রাস্তার পাশে, উচুনিচু, টিলা, বা ঝোপছাড়েও চাষ হয়। এছাড়া ভারতের অনেক রাজ্যে আবাদ হয় কিন্তু উত্তোর প্রদেশ ও বিহারে ব্যাপক চাষ হয়।
বোনা বা রোপন সময়ঃ- জ্যৈষ্ঠ মাস থেকে শ্রাবণ মাসে বীজ বোনার সময়।
আধুনিক চাষ প্রনালীঃ- জমি প্রস্তুত করার সময় বিঘাপ্রতি প্রায় ৬ কুইন্টাল গোবর সার অথবা আবর্জনা সার প্রয়োগ করা দরকার। এ ছাড়া শেষ চাষের সময় বিঘাপ্রতি ৫ কিলোগ্রাম ইউরিয়া এবং ৩৫ কিলোগ্রাম সিঙ্গল সুপার ফসফেট সার প্রয়োগ করা ভালো।
বীজের হার : ২ কেজি প্রতি বিঘা।
রোপণের দূরত্ব : সারি থেকে সারি ৭৫ সেন্টিমিটার। গাছ থেকে গাছ ৩০ সেন্টিমিটার।
বীজ রোপণ ও মাধ্যমিক পরিচর্যা : বোনার আগে প্রতি কেজি বীজে ৩ গ্রাম কেপটান বা মিরাম বা ১ গ্রাম বেভিস্টিন বা ২.৫ গ্রাম ইন্দফিল এম ৪৫ ওষুধ মিশিয়ে শোধন করে নেয়া প্রয়োজন এরপর ৭৫ সেন্টিমিটার দূরত্বে সারি করে প্রতি সারিতে ৩০ সেন্টিমিটার দূরত্বে বীজ বোনা দরকার চারা জমি থেকে বের হওয়ার ৩ সপ্তাহ পরে একবার এবং প্রয়োজন মতো ৫-৬ সপ্তাহ পরে আর একবার আগাছা পরিষ্কার করে দিতে হয়।
নভেম্বর ডিসেম্বরে ফুল হয়ে ফেব্রুয়ারী বা মার্চ মাসে গাছ কাটা হয়। তারপর রোদ্রে শুকিয়ে লম্বা( মটর শুটির মত ফল।) থেকে আলাদা করতে হয়।
অড়হরের হরেক গুনঃ- প্রোটিন সমৃদ্ধ উৎকৃষ্ট খাদ্য।
* জন্ডিস রোগের ঔসুধ হিসাবে এর পাতার রস ২/৩ চামচ একটু লবণ দিয়ে হালকা গরম করে খেতে হবে।
* এর পাতা খেলে অরুচি দূর হয়।
*জিহ্বার ক্ষত দূর করার জন্য এর পাতা বেশ উপকারী।
* হাতে পায়ে জ্বালা করলে পাতার রস মাখলে কমে যায়।
* জ্বিহবার খতে। পাতার রস খেলে ভাল হয়।
উপসংহারঃ- একটি সুস্বাদু ডাল ও খিচুড়ি হিসেবেও খাবার হয়।
মুড়ি মত করে ডাল ভাজা খেতেও বেশ মজার।
তথ্যঃ কিছু ব্লগ ও নেট থেকে সংগৃহীত।
১৪টি মন্তব্য
মাহমুদ আল মেহেদী
আমার বাবার ও খুব প্রিয় এই অড়হররের ডাল।
মোঃ মজিবর রহমান
ডাল ও খিচুড়ি আমার খুবই ভাল লাগে কিন্তু এখন চাষ খুব কম হয়। আর গ্রামে গেলে অনেক কষ্ট করে জোগাড় করতে হয়। যেমন আমার প্রিয় একটি খাবার কালায়ের হাতে বানানো রুটি আর কাচা ঝালের ও বেগুন ভর্তা।
সাবিনা ইয়াসমিন
অড়হর ,,অনেকে বলে অড়ল আবার অনেকের মুখে শুনেছি জন্ডিস পাতা। জায়গা ভেদে এই একই গাছ বিভিন্ন নামে পরিচিত। ঔষুধি হিসেবে এর খ্যাতি সবচেয়ে বেশি।
চমৎকার তথ্যবহুল একটি পোষ্ট দিয়েছেন ভাই। আশাকরি অনেকেই উপকৃত হবেন।
ভালো থাকুন,,শুভ কামনা -{@
মোঃ মজিবর রহমান
হ্যাঁ অনেক গুনে গুনাম্বিত।
ছাইরাছ হেলাল
এতো এই প্রথম শুনলাম,
ভালই হলো, আপনি লিখছেন বোলে জানতে পারলাম।
মোঃ মজিবর রহমান
ধন্যবাদ ভাইজান। পড়ার জন্য।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
একদিন আপনার বাসায় অড়হর দাওয়াত খামুনে। 😀 😀
মোঃ মজিবর রহমান
হুম, খাওয়ানো যাবে ক্ষন।
জিসান শা ইকরাম
* জন্ডিস রোগের ঔসুধ হিসাবে এর পাতার রস ২/৩ চামচ একটু লবণ দিয়ে হালকা গরম করে খেতে হবে।
* এর পাতা খেলে অরুচি দূর হয়।
*জিহ্বার ক্ষত দূর করার জন্য এর পাতা বেশ উপকারী।
* হাতে পায়ে জ্বালা করলে পাতার রস মাখলে কমে যায়।
* জ্বিহবার খতে। পাতার রস খেলে ভাল হয়।
বাহ এর এত গুন?!!! নোট করে রাখলাম।
মোঃ মজিবর রহমান
হ্যাঁ ভাই, অনেক গুন। আমার বাবা ক্রিমি ও পেটের পীড়ার জন্য আমাদের বাড়ির পাশে জঙ্গল থেকে তিতা একটি গাছ যা আমি গ্রাম্য ভাষায় বলি পিপল তা থেকে বড়ি বানিয়ে খেতেন তবে আশ্চর্য জনক হলো বাবার কখন খাওয়া অরুচি, পেটের কোন সমস্যা শুনি নাই। বাবার মৃত্যু পর্যন্ত খাওয়াতে কোন সমস্যা হয়নি।
ভাল থাকুন।
তৌহিদ
বাহ, খুব সুন্দর ব্যতিক্রমী একটি পোস্ট দিলেন ভাই। গাছের কত গুন, অথচ আমরা জানিই না।
মোঃ মজিবর রহমান
পড়ার জন্য আন্তরিক অভিনন্দন।
সুরাইয়া পারভিন
চমৎকার পোস্ট
অড়হর ডাল যে আছে শুনেছিলাম
আজ পুরো রোপণ প্রণালী পর্যন্ত জানলাম
মোঃ মজিবর রহমান
ধন্যবাদ আপু। ডাল এবং ইতিপুর্বে ঔষুধি হিসেবেও ব্যাবহার্য্য।