অর্বাচীনের ডায়েরী

অরণ্য ৯ মে ২০১৫, শনিবার, ০২:৩১:০২অপরাহ্ন একান্ত অনুভূতি ২৪ মন্তব্য

ডায়েরী লিখা শুরু করেছিলাম যখন আমি সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র। আমার বড় ভাই আমাকে একটা ডায়েরী (আসলে তা ছিল রেক্সিনের কাভারযুক্ত নোট বুক) দিয়েছিল তার ছোট ভাই ক্যাডেট কলেজে চান্স পেয়েছে এই খুশিতে। কথা দিয়েছিল একটা CASIO ঘড়িও দেবে পরে। দিয়েছেও পরে তবে সময় নিয়েছিল পাঁচ পাঁচটা বছর। আমার বড় ভাইটা আমার অনেক বড় রোল মডেল ছিল, আমার অনেক কিছুরই প্রেরণা বলা যেতে পারে। যদিও এখন আমি তাকে বলি “আমরা আসলে স্ট্রাকচারালি রিলেটেড ব্রাদার, নট ফাংশানালি”। সেদিকে যাবনা, যাবার দরকারও নেই। তবে আমার ডায়েরী লেখার শুরুটা হয়েছিল আমার বড় ভাইয়ের বদৌলতেই। তখন বছরের শুরুতে একটা ভাল ডায়েরী কিনতে পারা বা পাওয়া সে ছিল রুটিনের মত। এমনও হতো ভিন্ন ডায়েরী ছিল ভিন্ন ভিন্ন ভাব প্রকাশের জন্যে। অনেক দিনের যত্নে রাখা ডায়েরীগুলো এখন কোথায় কোনটা আছে, নাকি হারিয়ে গেছে কিংবা পোকায় খেয়েছে বলতে পারব না।

গত পরশু দিন গিয়েছি আমার বোনের বাসায়। মা এসে উঠেছে আমার মেজবোনের বাসায়। আমার আরো দুই বোনও হাজির। ভাগ্নে-ভাগ্নিরা এখন বড়ই হয়েছে। ওরাও আছে সবাই। ওদের কাছে আমার জায়গা একটু আলাদা – ওদের বাসায় আমি তিন বছরের মত ছিলাম। অনেক স্মৃতি ওদের সাথে। আমার অনেক সুভেনিরও সব ওদের বাসায়। রাতের খাওয়া শেষে হৈ চৈ এর মধ্যে আমার মেজবোনের বড় মেয়ে এক প্যাকেট নিয়ে হাজির। “মামা, এই ডায়েরীটা তোমার, ড্রয়ারের কাগজ পত্রের নীচে পড়ে ছিল”। ডায়েরীটার কাভার দেখার সাথে সাথে আমি যেন বদলে গেলাম। প্রথম পাতা, পরের কয়েকটি পড়তে পড়তে যেন আমি অন্য কোন সময়ে হারিয়ে গেলাম বা যাবার পথ খুঁজছি। কিছু অংশ খেয়ে ফেলেছে উই পোকায়। কিছু লাইন সবাইকে পড়েও শোনালাম।

মজার ব্যাপার হলো সেই পুরোনো ডায়েরীটা আবার রেখে আসলাম ওদেরই কাছে, মনে হলো আমার স্ত্রী এ ডায়েরীর ভার নিতে পারবে না। ক্যাচাল না করে রেখে আসাই শ্রেয় মনে হলো। আজ আবার যাব ওদের বাসায়। ভাবছি নিয়ে আসব ডায়েরীটা। নিজের লেখা ডায়েরীর সমালোচনা লিখব সোনেলায়। নিজেকে নিজের নাম দিয়েছি নানাভাবে, যখন যেমন মন চেয়েছে। তখন নিজের নাম দিয়েছিলাম অর্বাচীন। তাই নাম দিলাম “অর্বাচীনের ডায়েরী” – লেখাগুলো আসলে কোন এক অর্বাচীনেরই।

৫১১জন ৫১১জন
0 Shares

২৪টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ