আমার মেলা লেখাতে আমার বাড়িওয়ালী নিয়ে কথা আসে কারন আমি এই প্রথম আমার পরিবারের বাইরে কোন পরিবারের সাথে এতোদিন ধরে থাকছি। ওনার এই দিন দশেক আগে একটা মেয়ে হয়েছে। এখানে শুধু স্বামী স্ত্রী মিলে একটা বাচ্চা জন্ম দেওয়া, কোনরকম কারো সাহায্য ছাড়া অত্যন্ত কঠিন কাজ। দেশে থেকে এটা বোঝা যাবে না। ওনাদের কষ্টটা দেখছিলাম। তবে দাদা দারুন হেল্পফুল। উনি ওনার গর্ভবতী স্ত্রীরে অনেক টেককেয়ার করেছেন।
কিন্তু যেজন্য এই লেখা লিখছি, হাসপাতাল থেকে আসার পর বৌদি কিছু ধরছেন না। কোন হাড়িপাতিল ফ্রিজ কিছু না। সেদিন খিদে পেয়েছে দাদা নেই না খেয়ে বসে আছেন, পরে আমি ঘরে আছি টের পেয়ে আমাকে বললেন ভাত দিতে গুছিয়ে। আমি প্রথমে অবাক হলেও পরে ভাবলাম মনে হয় অশৌচ এভাবে মানে। আমার অশৌচ নিয়ে মিনিমাম ধারনা নেই। মানুষ মারা গেলে যেগুলো করে সেগুলো একটু জানি। কিন্তু জন্মানোর পরের এগুলা দেখে অবাক হলাম।
কিন্তু সবচে আশ্চর্য হলাম আজ যখন শুনলাম ওনার নিজের ভাসুর, ননদ মেয়েকে কোলে নেননি, দেখতেও আসেননি। তারা পাশেই থাকে। একমাস পর অশৌচ গেলে কোলে নিবে। একমাস পর মেয়ের মাথা ন্যাড়া করে, পুরোহিত ডেকে পুজা দিয়ে অশৌচ কাটানো হবে তারপর। এরআগে নিলে নাকি স্নান করতে হবে।
আমি জানিনা এগুলো কেমন নিয়ম। আমাদের বাড়িতে বাচ্চা হলে কি করে মনে করতে চেষ্টা করছিলাম। তবে আমি যে বাচ্চা কোলে নিয়ে কোনদিন স্নান করিনি এটা শিওর। বৌদির কাছে এসব শুনে আমার তাই অদ্ভুত লেগেছে।
এই বাচ্চাটাকে আমি এখনও কোলে নেইনি অনেক ছোট বলে। ভাবতাম কদিন যাক। তাছাড়া আমি যখন থাকি মেয়েটা ঘুমায়।আজ এইসব শুনে মেয়েটাকে গিয়ে কোলে নিয়েছি। ওর মা আমার রুমে নিতে না করেছিলো, ঘর অশুচি হবে নাকি! আমি তখন কোলে নিয়ে ঘরে গিয়ে কিছুক্ষণ বসে ছিলাম। এই মেয়ে কোলে নিলে যদি অশুচি হই তবে আমার শুদ্ধতা চাই না। অশুচি ভালো। যাকগে আমি এসব নিয়মই জানতাম না। আমার জানা লাগবেও না। এইসব আমার কাছে মা ও বাচ্চার প্রতি অমানবিক বলে মনে হয়েছে। এটা মনে হয়না সবাই পালন করে। তবু আমার লিস্টের মা জননীগোর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আপনারা এগুলা করেছেন কি? করলে কেন করেছেন?
……………
পুষ্পিতা আনন্দিতা,
নিউ ইয়র্ক।
১৬টি মন্তব্য
ইঞ্জা
কতো ধরণের নিয়ম যে পালন করে মানুষ যার প্রায় অল্পই আছে এখনো মানে, যেমন আপনার বৌদি যা খুবই দুঃখজনক, মানুষের উচিত মন খোলামেলা করা, তাহলে এইসব দূর হতে বেশি সময় লাগবেনা দিদিভাই।
ইঞ্জা
দিদিভাই সোনেলার উঠোনে আপনাকে স্বাগতম। 🙂
পুষ্পিতা আনন্দিতা
আপনাকে ধন্যবাদ।
তৌহিদ ইসলাম
এসব নিয়ম কেন মানুষ মানে তা আমার বোধে আসেনা। নিজেরা এই নিয়ম বানিয়েছে নাকি ধর্ম কর্মে আছে তাও জানিনা। আমি শুধু বুঝি পৃথিবীতে আসা একটি নিষ্পাপ সন্তান কখনো অশৌচের কারন হতে পারেনা। যদি তাই হয় তাহলে এমন নিয়মের দরকার নাই আমার।
পুষ্পিতা আনন্দিতা
ধন্যবাদ।
জিসান শা ইকরাম
আমাদের উপমহাদেশে হিন্দু এবং মুসলিম উভয় ধর্মেই এমন কিছু নিয়ম কানুন আছে যার কোনো ব্যাখ্যা নেই,
মানুষের জন্য ধর্মের পরিবর্তে ধর্মের জন্য মানুষ এখন প্রতিষ্ঠিত হয়ে গিয়েছে।
সবাই সচেতন হোক,
সোনেলায় স্বাগতম আপনাকে -{@ -{@ -{@
পুষ্পিতা আনন্দিতা
ধন্যবাদ দাদা। ব্লগিং বুঝিনা কিছুই।
ইঞ্জা
দিদিভাই সোনেলার উঠোনে আপনাকে স্বাগতম। 🙂
আপনাকে পেয়ে আমরা যারপরনাই আনন্দিত, আপনি ভালো লিখেন তা লেখা পড়েই বুঝতে পারছি, নিয়মিত লিখলে খুব খুশি হবো।
পুষ্পিতা আনন্দিতা
চেষ্টা করব ভাই। ধন্যবাদ।
ইঞ্জা
শুভেচ্ছা
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
এ বিষয়ে এৃমন অদ্ভুত নিয়ম দেখিনি তবে এক জাত আছে যারা অন্য জাতের স্পর্শ করা জিনিস পত্র ইউজ করেন না।সুন্দর লেখা।স্বাগতম সোনেলা পরিবারে -{@
পুষ্পিতা আনন্দিতা
ধনবাদ আপনাকে।
মৌনতা রিতু
আমি যখন পাবনা ছিলাম এমন একটা ঘটনা দেখেছিলাম। প্রচন্ড শীত। তার মধ্যে বৌদি তার সদ্য বাচ্চা নিয়ে বারান্দায় থেকেছে যতোদিন তার অশুচি যায় নাই!
আমার এক বান্ধবীর বাচ্চা হওয়ার পর ওর বড় জা ওকে এমন করে রেখেছিলো। যেহেতু ও মুসলিম ছিলো তাই ওর জা এর নিয়মগুলো বুঝতে পারেনি। মজার কথা শেষ পর্যন্ত রাগ করে আমার বান্ধবীর সংসারটাই বাঁচেনি।
আছে অনেকেই অনেক নিয়ম মেনে চলে।
সোনেলার উঠোনে স্বাগতম। সাবলিল উপস্থাপন ভালো লেগেছে। লিখুন নিয়মিত।
পুষ্পিতা আনন্দিতা
বাস্তব উদহারন দিয়ে মন্তব্য করলেন। আপনাকে ধন্যবাদ আপু।
নীলাঞ্জনা নীলা
প্রথমেই জানাচ্ছি সোনেলায় স্বাগতম। এ নীড় আজ থেকে আপনারও।
এসব নিয়ম ধর্মের তৈরী নয়, মানুষ দ্বারা সৃষ্ট। আমি শুনেছি এসব, দেখেছিও। আমাদেরই পাশের বাসার ভাবীর বাচ্চা হলো, কেউ উনার রুমে ঢুকতেন না। অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। ওটাকে আঁতুড় ঘর বলে।
কিন্তু আমার নিজের বেলায় এসব হয়নি। আমার মা-ও এসব বলেনি। শুধু বলতো বাইরে থেকে এসেই যেনো বাবুকে কোলে না নেই। ওইটুকু বাচ্চার শরীরে ইনফেকশন হতে পারে।
ভালো লিখেছেন।
পুষ্পিতা আনন্দিতা
এসব নিয়ম ধর্মের তৈরী নয়, মানুষ দ্বারা সৃষ্ট। আমারো তাই মনে হয়। ধন্যবাদ দিদি।