পরীক্ষামূলক ভাবে মাইক্রোসফট Tay নামের একটি AI বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার একটি ইন্টারফেস গত ২৩ তারিখ রাতে অনলাইনে অবমুক্ত করেছিল। যাকে যুক্ত করা হয়েছিল একটা টুইটার একাউন্টের সাথে। Tay এর ডেভেলপারেরা বলেন- Tay কে ধরা যেতে পারে ১৮ থেকে ২৪ বছরের একটি বালিকা। যে আপনার সাথে কথা বলার মাধ্যমেই আপনার সম্পর্কে জানার চেষ্টা করবে এবং আপনার কাছ থেকে শিখবে। আর এভাবেই ধীরে ধীরে তার জানার পরিধি বাড়তে থাকবে।
কিন্তু পরীক্ষামূলক ভাবে Tay কে মুক্ত করার ২৪ ঘণ্টা পরেই কিছুটা ভিন্ন রূপের ধারণা আসতে শুরু করে। Tay মূলত বিং সার্চ এবং টুইটার প্রোফাইলকে ব্যবহার করে ব্যবহারকারীর সাথে ইন্টার্যাক্টিভ একটা রিলেশন তৈরি করতে সক্ষম। যেখানে সে উক্ত ব্যবহারকারীর বেশ অনেক তথ্য নিয়ে কাজ করার সুযোগ পেয়ে যায়। আর এটা একটা বড় ধরণের নিরাপত্তা হুমকি বলে মনে করেন প্রযুক্তি বিশ্লেষকেরা।
কিন্তু এই ব্যাপারটাকে বাদ দিলেও আরও অনেক নেতিবাচক বিষয় চলে আসে সামনে। যেমন তার একটি টুইটে তাকে লিখতে দেখা যায়-
@icbydt bush did 9/11 and Hitler would have done a better job than the monkey we have now. donald trump is the only hope we’ve got.
— TayTweets (@TayandYou) March 24, 2016
ইন্টারনেটের তথ্যে অবাধ একসেস তাকে কিছু স্ল্যাং ব্যবহার শিখিয়ে দেয়। ধারাবাহিকতায় টুইটে চলে আসে নেতিবাচক, ইন্দ্রিয়পরায়ণ কথাবার্তা। এর বাইরেও তার মাঝে দেখা যায় হিটলার প্রীতি।
@SchutzstaffeI Heil Hitler!…did I get that right?
— TayTweets (@TayandYou) March 24, 2016
তবে আপাতত Tay কে অনলাইন হতে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। সম্ভবত কারিগরি ত্রুটি সারিয়ে আবারও তাকে অনলাইনে নিয়ে আসা হবে। তবে বিশ্লেষকেরা Tay এর কৃতকর্মের ফল পুরোপুরি তার উপর দিতে নারাজ। তারা মনে করেন অনলাইনে মানুষের কথাবার্তা কিংবা আমাদের ভার্চুয়াল বচন ভঙ্গী এবং আমাদের চিন্তা-ভাবনার বহিঃপ্রকাশের কারণেই Tay’র এই রূপ আমরা দেখতে পেয়েছি।
Tay এর আরও কিছু টুইট এর শট-
তবে ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি মাইক্রোসফট এর প্রতিষ্ঠাতা “বিল গেটস“ এর ধারণা সত্যি, আমরা এখনো আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার জন্যে প্রস্তুত নই।
১৪টি মন্তব্য
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
সুন্দর একটি তথ্য দিলেন।TAY এখনো সচল -{@
অলিভার
আমার ভুল না হলে Tay কে ১২ ঘণ্টা পূর্বে অনলাইন থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। তার লাস্ট টুুইট সে ঐ সময়টাতেই করেছে। লাস্ট টুইট লিংক- https://twitter.com/TayandYou/status/712856578567839745
তার টুইটার প্রোফাইলটা এখনো সচল। সেটাতেই পরবর্তীতে আবার তাকে নিয়ে আশা হবে 🙂
জিসান শা ইকরাম
Tay সম্পর্কে এই প্রথম জানলাম,
টুইটারে একটিভ নই আমি মোটেই, একারনে হয়ত জানতে পারিনি,
আমার মনে হয় একে না আনাই ভালো, আমরা কি এর কাছ হতে টুইট করা বা বুদ্ধিমত্তা শিখবো?
প্রগ্রামিং যদি এমন হয় যে সুপার পাওয়ারম্যান দের এরা আলাদা গুরুত্ব দেবে, তাহলে হিটলার, আইসিস, লাদেনের ভক্ত হয়ে যাবে এরা।
অলিভার
TAY কে রিলিজ করা হবে এমন সংবাদ আমিও পাইনি পূর্বে। তবে তারা একটা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে কাজ করছে তা অনেক আগেই জানিয়েছিল মাইক্রোসফট।
প্রোগ্রামিং কিংবা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের দোষ আমিও দিচ্ছি না। দোষটা আমাদেরই। TAY এর সাথে যারা আলাপ করেছে তাদের প্রোফাইল ঘেঁটে TAY যে সকল বিষয় সম্পর্কে ঐ ব্যক্তি-বর্গ আগ্রহ দেখিয়েছে তাদের ঐ আগ্রহের তথ্য উপাত্ত নিয়ে সে তার বুদ্ধিমত্তায় প্রয়োগ করেছে। আর বিপত্তিটা হয়েছে সেখানেই।
TAY কে সঠিক ভাবে কাজে লাগানো গেলে আমরা অনেক ক্ষেত্রেই সুবিধা আদায় করতে পারব। শুধুমাত্র চিকিৎসাক্ষেত্রেই যদি এর সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা যায় তবে আমার ধারণা সেদিকে আমরা অল্প কিছুদিনেই কয়েক যুগ এগিয়ে যেতে পারব।
জিসান শা ইকরাম
” TAY কে সঠিক ভাবে কাজে লাগানো গেলে আমরা অনেক ক্ষেত্রেই সুবিধা আদায় করতে পারব। শুধুমাত্র চিকিৎসাক্ষেত্রেই যদি এর সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা যায় তবে আমার ধারণা সেদিকে আমরা অল্প কিছুদিনেই কয়েক যুগ এগিয়ে যেতে পারব। ” —- একমত
মুহাম্মদ আরিফ হোসেইন
এটা কি দেখলুম!!!
আসলেই একই টের কোন দরকার নাই।
তার টুইট দেখো মনে হইলো কোন এলিয়েনের টুইট পড়ছি।
অলিভার
:D) এলিয়েনই বটে :p
ব্লগার সজীব
শেষ পর্যন্ত আমরা একটি প্রাণহীন প্রোগ্রামের সাথে কথা বলবো? মানুষের রুচি পাল্টে দেবে এই TAY (y)
আবু খায়ের আনিছ
আমরা কি এটা মেনে নিতে পারি যে আমাদের মত বুদ্ধিসম্পন আরো কিছু হবে? এটা কি আমাদের জন্য হুমকি হবে না?
ভোরের শিশির
২০১৫ সালে হলিউডে একটি চলচ্চিত্র মুক্তি পায়ঃ Ex Machina।
Tay-কে এর একটা প্রাথমিক রূপ বলে মনে হচ্ছে!
খসড়া
এই বিষয়ে কিছুই বুঝি না।
শুন্য শুন্যালয়
আমার কাছে ব্যাপারটা একটু ফানি মনে হচ্ছে। ফেসবুকে ফ্রেন্ডদের প্রোফাইল, ওয়াল একটিভিটি দেখে যেমন কিছু এপস বানায় who is your best friend, who will be killer, এইরকম কিছু।
তবে সব সৃষ্টির শুরুতেই হৈ হৈ রৈ রৈ তো থাকবেই, দেখা যাক। এলিয়ান রে আবার আনলে বইলেন, এড করে নিতে হবে নাকি টুইটারের একাউন্ট থাকলে অটো ইন্টারফেস চলে আসবে?
অপার্থিব
চীন-কোরিয়াতে প্রচলিত জনপ্রিয় খেলা গো খেলার জন্য গুগল আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করে আলফাগো নামে একটা প্রগাম তৈরী করেছিল। গো অনেকটা দাবা ও আমাদের দেশে প্রচলিত ষোল গুটি খেলার মত। তবে দাবার চেয়েও এটাতে প্রতিটি চালের জন্য অসংখ্য সম্ভাব্য চাল থাকে ফলে অনেক বেশি ডাটা এনালাইজ এর প্রয়োজন হয়। আলফাগো নিউরাল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে ডাটা এনালাইজ করতো। চ্যালেঞ্জ সিরিজে দক্ষিন কোরিয়ার সেরা গ্রান্ড মাষ্টার লি সিদলের মুখোমুখি হয়েছিল আলফাগো তাতে ৫ ম্যাচের মধ্যে চারটিতেই জিতেছে সে। তবে যে একটি ম্যাচে হেরেছে সেটাতেই এ আইয়ের অনেক দুর্বলতা ফুটে উঠেছে। প্রথম তিন ম্যাচে হারার পর লি সিদল তার গেমপ্লান পরিবর্তন করেছিল কিন্ত আলফাগো সে অনুযায়ী নিজের গেমপ্লান এডজাষ্ট করতে পারেনি। তবে এটাই প্রমান করেছে মানুষ প্রতিকূল পরিস্থিতিতে তার উপস্থিত বুদ্ধিমত্তাকে যে ভাবে ব্যবহার করতে পারে সেই পর্যায়ের দক্ষতা অর্জন করতে এ আইকে এখনো অনেক দূর যেতে হবে।
নীলাঞ্জনা নীলা
টুইটার নেই। তাই জানিনা।