
ব্লগার রোকসানা খন্দকার আপার ভুত নিয়ে লেখা রম্য রচনায় কমেন্ট করলাম। একদিন জিনের সাথে কথা বলেছি। রোকসানা আপা বললেন, তাড়াতাড়ি লিখেন জিনের সাথে কথা বলা জানতে চাই। সেই থেকে চেষ্টা করছি কিন্তু ব্যস্ততা, কলমে জমাটবাঁধা আগাতে পারছিলাম না।
মাঝে মাঝে পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে দেখতাম জিনের ফাঁদে পা দিয়ে অনেকেই সর্বশান্ত হয়েছেন। তাই জিনের সাথে কথা বলার ইচ্ছে ছিল।
অনেক দিন আগের ঘটনা। রাত প্রায় আড়াইটা। পাশে রাখা মোবাইল ফোনটা বেজে উঠলো। স্কিনে অপরিচিত নাম্বার দেখে রেখে দিলাম। আবার বেজে উঠল। রিসিভ করতেই-আসসালামু আলাইকুম ওরাহমাতুল্লাহ ওয়া বারাকাতুহু। সালামের উত্তর দিয়ে জিজ্ঞেস করলাম আপনি কে? মা তোর পাশে কি কেউ আছে। ইচ্ছে করেই বললাম, না পাশে কেউ নেই। এবার প্রশ্ন-তোর স্বামী কই? বললাম সে তো বিদেশ থাকে। এবার সে মিষ্টি সুরে কোরআন তেলাওয়াত করতে লাগলো। একবার ভেবেছিলাম দেখি কি করে। কিন্তু এত রাতে ঘুম ভেঙে ধৈর্য ছিল না। কিছু না বলে ফোনটা কেটে দিলাম। কিন্তু সাইলেন্ট করে রাখতে ভুলে গেলাম। কিছুক্ষণ পর আবার ফোন। ইচ্ছে করে রিসিভ করলাম। তুই ফোন রেখে দিলি কেন (খুব কড়া ধমকের সুরে)। রাখবো না তো কি করবো। এত রাতে ফোন দিয়েছেন কেন। তুই জানিস আমি কে? আমার জানা দরকার নাই। এত রাতে কল দিয়ে বিরক্ত করেন কেন।
এবার আরও কড়া সুরে। তোরে কি আমি ডিস্টার্ব করেছি? তোরে কি আমি খারাপ কথা বলেছি?। তুই জানিস আমি কে? তুই আমার সাথে বেয়াদবি করছিস। তোকে আমি দুই চারটা ভালো কথা বলার জন্য ফোন দিয়েছি। আমি তোকে কোরআন হাদিসের কথা শোনাতে চেয়েছি।
এবার বললাম, কোরআন হাদিসের কোথায় আছে, মাঝ রাতে মেয়েদের কল দিয়ে ওয়াজ করার কথা।
তুই আবার আমার সাথে বেয়াদবি করছিস। আমি তোর ঘাড় মটকিয়ে ফেলব। এবার খুব জোরে ধমক দিয়ে বললাম- বেয়াদবির দেখছিস কি। তোর মজা কাল সকালে দেখাবো। বাকি কথা বলার আগেই লাইন অফ। পরদিন ওই নাম্বার বন্ধ পেলাম। এরপর কয়েকদিন ট্রাই করেছি। সুইচ অফ।
এ ঘটনার দুই দিন পর। এক লোক কল দিয়ে বলে। আপনার নাম্বার থেকে গতরাতে জিন সেজে কেউ একজন আমার বোন কে ফোন দিয়েছি। আমি কমপ্লেন করব। এই বলে তর্ক করতে শুরু করলো। আমি বললাম, আপনার যা মন চায় করতে পারেন। আমার নাম্বার থেকে কল যায়নি। আর আমাকে খুব বোকা ভাববেন না। প্রায় চার পাঁচ ঘণ্টা পর। ওই লোক কল দিয়ে বলে। সরি ম্যাডাম, আপনার নাম্বার ক্লোন করে হয়তো কেউ ফোন দিয়েছিল। মনে মনে বললাম, বাছাধন তোমরা ভুল জায়গায় নক করছো।
ছবি সংগ্রহ-নেট থেকে।
১২টি মন্তব্য
বন্যা লিপি
হাসতে হাসতে পেটে খিঁচ ধরে গেলো আপা😃😃😃আপনি তাও অনেক্ক্ষণ কথা বলছেন জ্বিন মৌলানার সাথে….আমি তো কোরআন তেলওয়াতের আওয়াজ শুইন্যাই মোবাইল অফ কইরা দিছিলাম।
আহারে বেচারা!!!! জায়গা না চিইন্নাই ভুলভাল ডায়াল…….
হালিমা আক্তার
ওরা টার্গেট মহিলাদের করে। সবাই তো আর ভুল পথে পা বাড়ায় না। সুন্দর মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ও শুভকামনা রইলো আপা। শুভ রাত্রি।
মোঃ মজিবর রহমান
হায়! এ কষ্ট কামে আইলোনা। যাক কপাল খুলছে জ্বিনের লগে কথা কউনের। আপনাকে জ্বিনে ফোন করে আপনার নাম্বার ক্লোন করে হইতো পরবর্তি কল করেছে ঐ লোকের বোনকে। তাই হইতো সে আপনাকে ফোন করেছিলো।
ধমক টা কেমন দিলেন জানালেন নাতো? জ্বিন কি পুরুষ না মহিলা ?
হালিমা আক্তার
জিনের কন্ঠ বলে সে পুরুষ। নাম্বার ক্লোন হয়নি। ওরা একই দলের। ইচ্ছে করে হেনস্তা করার জন্য আবার কল দেয়। কিন্তু ওরা বুঝতে পারে নাই, আমি খুব শক্ত মনের। আর ধমকের চোটে বাড়ির অন্যরা জেগে গিয়েছিলো। অসংখ্য ধন্যবাদ ও শুভকামনা রইলো। শুভ রাত্রি।
আলমগীর সরকার লিটন
কিছুদিনে আগে এরকম ঘটনা প্রায় শুনতাম এখন আর তেমন শুনা যায় না কবি আপু ভাল থাকবেন
হালিমা আক্তার
মানুষ এখন সচেতন হয়েছে। তাই এধরনের ভন্ডামি কমে গেছে। আর মানুষ কত বোকা। চমৎকার মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
রোকসানা খন্দকার রুকু
হা হা হা জীন বুঝতে পারে নাই যে- কতো ধানে কতো আটা। বাকিরা লিখলে মজা হবে। শুভকামনা রইল।
হালিমা আক্তার
বুঝলে আর কল দিতো না। ওরা মেয়েদের নাম্বার জোগার করে ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করে। সব মেয়ে যে মেয়ে না তা বুঝতে পারে না। অশেষ ধন্যবাদ আপা। শুভ রাত্রি।
বোরহানুল ইসলাম লিটন
জীনের বাদশা সাজে ওরা আপু
ধাপ্পা দিয়ে টাকা হাতড়ানোর জন্য!
নববর্ষের শুভেচ্ছা ও শুভ কামনা জানবেন সতত।
হালিমা আক্তার
একদম ঠিক বলেছেন। অশেষ ধন্যবাদ ও শুভকামনা রইলো।
মাছুম হাবিবী
এমন জ্বীন বাবাদের দেখা প্রায়ই পাওয়া যায়। প্রশাসনের একটু সুদৃষ্টিই পারে। এসব জ্বীন বাবাদের সুপথে ফিরিয়ে আনতে।
হালিমা আক্তার
তবে এখন মনে হয় কিছুটা কমেছে। মানুষ এখন অনেক সচেতন। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য।