প্রচণ্ড ব্যস্ততার সাথে বসত গড়েছি আমি। চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে বিশ ঘন্টায় কাজে ব্যস্ত থাকি ইদানিং। তাই ফেইসবুকে টুকটাক দু এক লাইন লিখলেও কারো পোস্ট পড়ার সময় হয় না আমার। সারাদিন কাজ শেষে ঘরে ফিরে ফ্রেশ হয়ে মাগরিবের নামাজ আদায় করে আবার কাজ নিয়েই বসেছি। প্রায় ঘন্টা খানেকের মতো সারাদিনের কাজটাকে নিয়ে আলোচনা শেষে ফেবু ওপেন করতেই

 

সহব্লগার নাজমুল হুদা ভাইয়ের পোস্ট দেখে চিৎকার করে উঠলাম। তারপর স্তব্ধ হয়ে বসে রইলাম। খানিক বাদে বন্যা আপুকে টেক্সট দিলাম শিউর হবার জন্য। নেটে না পেয়ে ফোন কল দিলাম। ততক্ষণে দু’চোখ বেয়ে অঝরে ঝরছে অশ্রু। আপু ফোন তুলে সুরু বলতে

চিৎকার দিয়ে বলতে শুরু করলাম তুমি কই? সারাদিন নেটে ছিলে না! আরজু আপু আর নেই বলতে বলতেই হাউমাউ করে কেঁদে উঠলাম। বন্যা আপুও হতভম্ব -বলিস কি!! বলেই কান্না শুরু

 

খবর পাওয়ার পর থেকেই এখান অব্দি শুধু তাঁকেই দেখছি। মনে হচ্ছে এই তো কেমন ব্লগে সবার পোস্টে পোস্টে ঘুরছে, মন্তব্য করছে, উৎসাহিত করছে আর আমাকে বলছে ‘আমি যতোই মন্তব্য করি না কেনো আপনাকে টপকাতে পারিনা’ বলেই মৃদু হাসছেন। যে মানুষটাকে কখনো সামনাসামনি দেখিনি তাঁর বিয়োগের খবরে চিৎকার করে কাঁদছি। বুকের ভেতর তাঁর জন্য জলোচ্ছ্বাসের ঢেউ আছড়ে পড়ছে। সম্পূর্ণ অচেনা একটা মানুষ লেখা আর মন্তব্যে তাঁকে জানা। তিনি যে এতোটা কাছের আমার তা আজই টের পেলাম। কেবলই মনে হচ্ছে খুব কাছের খুব আপনজনকে হারালাম।

 

আপু আমাকে বলেছিলেন জয়পুরহাট আসবেন। দেখা হবে কথা হবে আড্ডা হবে। আমার হাতের রান্না করা খাবার খাবেন। কেমন রাঁধুনী জানতে হবে তো! আমি বলেছিলাম আপু অপেক্ষায় থাকলাম। চলে আসুন একদিন…

আপু আমাকে অপেক্ষায় রেখে চলে গেছেন দূরে বহুদূরে…

আমি যখন চিৎকার করে কাঁদছি তিতলী তখন আমার চোখের পানি মুছে দিচ্ছে আর বলছে কেঁদো না আম্মু

ঠিক তখনই নাবার মুখটা চোখের সামনে ভেসে উঠল। যেনো আকস্মিক একটা ধাক্কা এসে ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়ে গেলো বুকের পাঁজর…

 

মা নাবা তোমাকে সান্ত্বনা দেবার ভাষা ও শক্তি আমার নেই। জানি না এখন কি অবস্থায় কাটছে তোমার সময়? তুমি তোমার মা ও সবচেয়ে কাছের বন্ধুকে হারিয়েছো। তবুও চাই মহান রাব্বুল আলামীন তোমাকে ধৈর্য্য ধরার তৌফিক দান করুন। আমীন

 

সারাদিন পৃথিবী জুড়ে চলছে আজ শোকের মাতম। আকাশে বাতাসে ভাসছে আপনাকে হারানোর হাহাকারের প্রতিধ্বনি। একটা মানুষ কতোটা ভালো হলে তাঁর বিয়োগের খবরে পৃথিবী জুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আর কিছুই নিয়ে লিখতে পারছি না। নিঃশ্বাস ভারী হয়ে আসছে। আপনি কেনো এতো ভালো বলুন তো! কেনো এতো বন্ধু পরায়ণ! কেনো এতো মায়াবী আপনি! কেনো ভালোবাসার মায়ায় জড়িয়ে সবাইকে কাঁদিয়ে চলে গেলেন না ফেরার দেশে। একটা মানুষ কি করে এতোটা ভালো হতে পারে বলে যান না প্লীজ….

আমি আর কার সাথে অদৃশ্য এক প্রতিযোগিতায় উঠবো মেতে। যখন ব্যস্ততা শেষে ফিরবো প্রাণের সোনেলায়…

 

৭৪৬জন ৬৬৩জন
0 Shares

১২টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ