
প্রথম যুগ-
জন্মের পরের প্রায় অর্ধেক সময়ের স্মৃতি ভুলে গেছি! মেমোরি ফাঁকা দেখাচ্ছিলো। বারকয়েক রিস্টার্ট দেয়ার পর কিছু কিছু রিকোভার হলো। সেই যুগে আমার একটা আটপৌড়ে নাম ছিলো। হাতে ছিলো কাঁদা-মাটি। যা খুশি বানিয়ে নিতাম, ভাবনার সব আদল তৈরী করতে চাইতাম নিজের খেয়ালমত। তারপর হঠাৎ ঘাস ভরা মাঠের আনাচে-কানাচে ফড়িং এর ঝাঁক আর রঙিন প্রজাপতির পিছু নিতে নিতে এক সময় উপলব্ধি করলাম আমি বড় হচ্ছি! এমন করে বাতাসের সাথে পাল্লা দিয়ে ছুটে বেড়ানো ঠিক হচ্ছে না। ছেড়ে দিতে হবে শৈশবের মাঠ, পুতুলের ঘর। ভর দুপুরে বাড়ির কাছের ডোবা থেকে যেসব ব্যাঙের পোনা ধরে আনতাম পুষবো বলে, সেসবও আর আনা যাবে না। কারণ ব্যাঙ গুলো বড় হয়ে ডোবাতেই ফিরে যায়। আমি বড় হয়ে ঘরে ফিরলাম, বড়ো হয়ে যাওয়া ব্যাঙের মতো। অতি আদরে পালিত সাদা ইদুর গুলোর উপর বেশ বিরক্ত হয়ে তাদেরকে একপ্রকার তাড়িয়েই দিলাম।
ঐসময়ে আমার বন্ধু-বান্ধবী অনেক ছিলো। পিঠেপিঠি ভাইবোন, খেলার সাথী, সহপাঠীদের মাঝেই মিশে থাকতাম। বন্ধুত্বের সঠিক ব্যাখ্যা জানা ছিলো না।
দুই যুগ-
প্রথম যুগ মোটামুটি দ্রুত পার হয়ে গেছে। দ্বিতীয় যুগে এসে আমি অনেক পরিচয়ে পরিচিতি পেলাম। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সমাজ, পরিবার সব জায়গাতেই আমার পরিচিতি বাড়লো। দুই যুগ শেষ হওয়ার আগে আগেই শিক্ষাজীবন সমাপ্ত হলো। শিক্ষা চলাকালীন সময়ে আমি গৃহবধু হলাম। দুই সন্তানের মা হলাম। আমার নামের পাশে আরও অনেক নাম যুক্ত হলো। নতুন বাড়িতে নতুন পরিবারে এসে নাম এডিট হলো। সমাজে ওমুক বাড়ির বউ, তমুকের স্ত্রী, —– ওদের মা। আমার আটপৌরে নাম খানি একটু একটু করে একসময় পুরোপুরি ভাবে বিশেষ ঘনিষ্ঠ জনদের দুই ঠোঁটের সীমানা প্রাচীরে আটকে গেলো! এখন সেই নামে কেউ ডাকলে চমকে উঠি।
এমন করেই যুগ এগোয় পরবর্তী যুগের দিকে, পিছনে পরে থাকে চিরচেনা সম্বোধন.. স্মৃতি।
শিক্ষাজীবন হঠাৎ করেই থেমে গিয়েছিল। নতুন নতুন সম্পর্কে জড়িয়ে গেছি সম্পর্কের চাহিদা অনুযায়ী। যার সাথে যতটুকু দরকার ততটুকুই মিশেছি। এই সময়ে এসে আমার বন্ধুত্ব গড়েছি আমার সন্তানদের সাথে। আমার সুখ-দুঃখ, আনন্দ-আশ্রয় সব কিছুতেই ছিলো আমার পরিবারের মানুষ,,আমার বোনেরা, আমার মেয়েরা।
তিন যুগ-
তৃতীয় সন্তান এর জন্ম এবং দ্বিতীয় যুগের রেশ নিয়েই তিন যুগে পদার্পণ করতে হয়েছে।
কথায় বলে, দান দান তিন দান, মানে হলো কারো যদি কিছু পাওয়ার ইচ্ছে থাকে তাহলে সেটা পেতে হলে কমপক্ষে তিনবার চেষ্টা চালাতে হয়। আমিও বেশি না, মাত্র তিন যুগের চেষ্টায় আরাধ্য অনেক কিছু পেয়েছি। মনের সর্ব চক্ষু মেলে/দেখে বুঝেছি, সৃষ্টিকর্তা এই যুগে এসে আমার প্রতি মনোনিবেশ করেছেন। বিপদে ধৈর্য রাখা, যেকোন পরিস্থিতিতে মানসিক স্থিরতা অটুট থাকা, আত্মসংযম, এবং নিয়তির প্রতি মনেপ্রাণে আস্থাশীল হওয়ার শিক্ষা পেয়েছি পরম করুনাময়ের দয়ায়।
আমি আমার ভাগ্যবিধাতার উপর কৃতজ্ঞতা রাখি কারণ তিনি আমাকে এই সময় পর্যন্ত সুস্থ অবস্থায় বাঁচিয়ে রেখেছেন। আমার জন্যে নির্ধারিত সকল দুঃখকষ্ট, রোগশোক, বিপদাপদ গুলো সহনীয় (দোজখের যন্ত্রণা তুল্য কোন কষ্টই পৃথিবীবাসীকে আল্লাহ তায়ালা দেন না) পর্যায়ে রেখেছেন। এবং প্রাপ্ত নেয়ামত গুলোকে বরকতময় করে দিয়েছেন/ দিচ্ছেন। আলহামদুলিল্লাহ।
বর্তমান – তৃতীয় যুগ অবস্থান কালে আমি পরিচিত পারিবারিক সীমানার বাইরে এসে কিছু বন্ধু পেলাম। ঠিকঠাক বন্ধুত্বের সঠিক সংজ্ঞা অনুসারেই।
অবাক করা বিষয় হলো তাদেরকে পেয়েছি এই ভার্চুয়াল জগতে এসে! কখনো দেখা হয়নি, পূর্ব পরিচয় বা পরিচিতি কিছুই ছিলো না কারো সাথে, কিন্তু তারা কেমন করে যেন ধিরে ধিরে আমার একান্ত আপন হয়ে গেলো!
আমার ভালুকা বন্ধু- না না, এটা তার নাম না! আর দেখতে শুনতে মোটেই ভালুক নয়। তবুও আমি তার নাম দিয়েছি ভালুকা বন্ধু।
আমার সকল সুখ দুঃখের সাথী সে। ভালুক যেমন বিশালতার দিক দিয়ে সেরা, তেমনি সেও তার বিশাল মনোভাব, অন্তহীন উদারতা এবং বন্ধুত্বের সংজ্ঞায় একজন পরিপূর্ণ মানুষ। আমি তাকে আমার জন্য বিধাতার পাঠানো নেয়ামত (আশির্বাদ) রুপে পেয়েছি।
ময়না– সোনেলায় যারা আছেন, অথবা ভার্চুয়াল জগতে যারা আমাকে জানেন তারা প্রায় সবাই আমার এই ময়না বন্ধুটির সাথে পরিচিত।
উহু, ওর সাথেও আমার কখনো সামনাসামনি দেখা হয়নি, ফোনেও কথা হয়নি। আমাদের মাঝে যোগাযোগ যা টুকু সবই ঐ যাদুর বাক্সে!
ময়না, আমার বন্ধু এটা পারিবারিক ভাবেও স্বীকৃত। ময়নার বন্ধুত্ব নিয়ে গর্ব করার অনেক কারণ আছে, কিন্তু আফসোস এর কোন অবশিষ্টাংশ নেই।
রম্যরানী– হাহাহাহা, তাকে আমি মনে মনে এই নামেই সম্বোধন করি। বলার অপেক্ষা রাখে না, তার সাথেও পরিচয় হয়েছে ফেসবুকে। তারপর থেকে সে একমুহূর্তের জন্যেও আমার সঙ্গ ছাড়েনি। কথা হয়েছে অনেকবার, কিন্তু দেখা হয়নি। একটু একটু করে সে আমাকে আমার মতো করে আপন করে নিয়েছে। অনলাইনে আমার অনুপস্থিতিতে অথবা অসুস্থ থাকার সময়ে কীভাবে যেন টের পেয়ে যায়! খোঁজ নিতে কখনোই তার দেরী হয় না! একটা কথা না বললেই নয়, তাকে কিছুটা ভয় পেতে শুরু করেছি। আমি নিশ্চিত, যদি কখনো ব্যক্তিগত কারণে (ভাইরাল হতে নয়) আত্মগোপনে যেতে চাই হয়তো সেটা সম্ভব হবে না। রম্যরানীর খোঁজ দ্য সার্চ মিশন শুরু হয়ে যাবে।
তিনি সোনেলাতেও সুপরিচিত একজন। আমার এই বন্ধুটি সমসাময়িক লেখায় যেমন সিরিয়াস, তেমন রম্য লেখায় জিনিয়াস। তিনি সোনেলায় নীড় বেধেছেন মাত্র এক বছর দুইদিনে, অথচ অন্যান্য অনেক ব্লগারদের তুলনায় তার ব্লগবাড়ি খুবই শক্তপোক্ত বলা যায়। অভিনন্দন এবং শুভেচ্ছা 🌹🌹 তাকে।
আমাদের জীবন নানা রঙের সম্পর্কের সুতোয় বাঁধা। প্রতিটি রঙই আলাদা, সব রঙের বৈশিষ্ট্য ভিন্ন। যেকোনো কারুকাজ/ নকশায় সৌন্দর্য বাড়াতে আমার যেভাবে প্রয়োজনীয় সুতো খুঁজে নিই, তেমনই সম্পর্কের চাহিদা মেটাতে বিভিন্ন সম্পর্কের সাথে আমাদের তাল মিলিয়ে চলতে হয়। রক্তের সম্পর্ক, পারিবারিক আত্মীয়তা অস্বীকার করার উপায় কারোরই নেই। এই সম্পর্ক গুলো আমাদের বেঁচে থাকার মুলভিত্তি, এবং আমাদের অস্তিত্বের বাহক।
মনে রাখতে হবে, বন্ধুত্বের সম্পর্ক তৈরী হয় মন থেকে। এটা আত্মা পর্যন্ত ছুঁয়ে যায়/থাকে। সঠিক বন্ধুরা আমৃত্যু পর্যন্ত বন্ধুত্বের মর্যাদা রাখে, বন্ধুর মূল্যায়ন করে। যে বন্ধুত্ব নিমিষেই শেষ হয়ে যায়, বিশ্বাসঘাতী হয়, সে সম্পর্ককে কখনো বন্ধুত্ব বলা যাবে না।
পরিচিত গন্ডি পেরিয়ে যাদের সাথে আমার বন্ধুত্ব গড়েছে তারা প্রত্যেকেই নিজ নিজ যোগ্যতায় অসাধারণ। আমার সাথে সংযুক্ত হওয়া বা আমাকে তাদের আপনজন করার সম্পুর্ন ক্রেডিট তাদেরই।
সত্যি বলতে কারো সাথে কোনরূপ বন্ধুত্ব গড়তে আমার নিজস্ব কোন অর্জন নেই।
তিনযুগ পেরিয়ে এসেছি, জানি না চারযুগ পর্যন্ত বেঁচে থাকবো কি না। যেখানেই থাকি মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে দোয়া করি তিনি যেনো সবাইকে সুস্থ সুন্দর জীবন যাপনের তৌফিক দেন। ভালো থাকুক সবাই, ভালো থাকুক আমার সকল শুভাকাঙ্ক্ষী বন্ধুরা ❤️❤️
** ছবি- আমার 😇😇
২৫টি মন্তব্য
সুপর্ণা ফাল্গুনী
চমৎকার ভাবে উপস্থাপন করলেন জীবনের বাঁকগুলো। বন্ধুত্বের সংজ্ঞা আসলেই দেয়া কঠিন। স্মৃতিগুলো হারিয়ে যায় নয়তো আড়ালে চলে যায়, মাঝে মাঝে ঠিক উঁকি দিয়ে জানান দেয় সে আছে মনের মেমোরিতে । অনেক অনেক স্মৃতির ভীড়ে কিছু কিছু স্মৃতি আড়ালে চলে যায়। বিধাতা আপনাকে আরো কয়েক যুগ সুস্থ ও সুন্দর রাখুন। অবিরাম শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইলো 🌹🌹। শুভ সকাল
সাবিনা ইয়াসমিন
অনেক অনেক ধন্যবাদ সুপর্ণা। আপনাদের দোয়া আর ভালোবাসা আমার সোনেলা সময়গুলোকে সার্থক করেছে। কাল কি হবে কেউ জানেনা, তাই যতক্ষণ বেঁচে থাকার সামর্থ্য আছে, ততক্ষণ ভালো থাকার চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
ভালো থাকবেন আপনিও।
শুভ কামনা নিরন্তর ❤️❤️
রোকসানা খন্দকার রুকু
ও মাই গড!!! এদিকে এতোকিছু ঘটে যাচ্ছে টেরই পেলাম না।
মাত্র ‘ একবছর দুই দিন’ পরে বন্ধুত্বের স্বীকৃতি পেলাম। ভয় পান বুঝতে পারি। তখন নিজেকে অনেকবার ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখি! ভাই, মানুষকে কনভিন্স করতে কতটা সময় লাগে বা কি কি যোগ্যতা লাগে। এতো ঘাম ঝরালে কয়েকটা ছেলেকে প্রেমে ফেলা যেত। যাক ফাইনালী!!!
অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা আপনার প্রতি। তাই পিছু ছাড়ি কি করে? আজকের যতোটুকু অর্জন বা পাওয়া সবটুকুই যে আপনার জন্য। সবসময় অনেক ভালো থাকুন! শুভ কামনা ও ভালোবাসা রইলো!!!
সুরাইয়া পারভীন
পাইছি রম্যরানীকে😃😃 রম্যরানীকে খুঁজে পেতে খুব একটা বেগ পোহাতে হয় নি। ভাগ্যিস আগেই পোস্ট দেখে নিয়েছিলাম।
রোকসানা খন্দকার রুকু
হা হা হা আপনি ছাড়া মজা হয় না সুরাইয়া। অনেক ধন্যবাদ।।
সুরাইয়া পারভীন
এখনকার ব্লগকে কেমন যেনো নিঃষ্প্রাণ লাগছে আপু। আমি বেশ হতভম্ব! যা হোক আমরা আবার সোনেলাকে প্রানবন্ত করে তুলবো ইনশাআল্লাহ ♥️♥️
সাবিনা ইয়াসমিন
এখানে আপনি যা কিছু অর্জন করেছেন সবই নিজের যোগ্যতায় আর প্রচেষ্টায়। যে পারে সে সবখানেই পারে, এটাই হলো মুল কথা।
আপনাদের হাত ধরেই সোনেলা এগিয়ে যাবে।
ভালো থাকবেন সারাক্ষণ। শুভ কামনা 🌹🌹
সাবিনা ইয়াসমিন
@সুরাইয়া- একা একা কিছুই করা যায় না। সাহায্য আমাদের লাগেই। নিজের শরীরের কথা ধরুন, খিদে পেলে আমাদের পেট ফাঁকা হয়, ব্রেইনে সিগনাল দেয়। ব্রেইন সেই সিগনাল শুনে চোখ, হাত, পা, মুখ, জিহবা সব গুলো অঙ্গকে কাজে লাগায় খাবার তৈরী করে পেটে পৌঁছানোর জন্যে। এসবই ব্রেইন করে নিজেকে সুস্থ, প্রানবন্ত রাখতে। একটা অংশ বিকল হয়ে গেলে তার উপরেও তো প্রভাব পড়বে 🙂
তেমনি আমাদের সোনেলা,, এটাকে প্রানবন্ত রাখতে এখানে সবাইকেই লাগবে।
আপনি/আপনারাই পারবেন এর প্রানবন্ত উচ্ছ্বাস ফিরিয়ে আনতে।
সুরাইয়া পারভীন
@সাবিনা আপু চমৎকার বলেছেন। ইনশাআল্লাহ আবার আমরা সবাই মিলে সোনেলাকে আগের অবস্থানে ফিরে আনবো
সুরাইয়া পারভীন
স্তরে স্তরে সাজানো মানব জীবনের প্রত্যেকটি বাক। সময়ের সাথে সাথে নিজেস্বতা হারিয়ে গেলেও পাওয়া যায় অনেক কিছু। নতুন পরিচয় নতুন নাম নতুন সম্পর্ক। এইসব প্রাপ্তির মধ্যে লুপ্ত কিছু বোধহয় খুব একটা যন্ত্রণা দেয় না। দুর্দান্ত লিখেছেন প্রিয় আপু।
সাবিনা ইয়াসমিন
প্রতিদিনই নতুন দিন, দিন পেরিয়ে পরের দিনে যেতে হয়, তেমনি করেই যুগ পেরিয়ে যায়।
যেইদিন চলে গেছে তার শুধু প্রাপ্তি গুলোই স্বরনে থাকে। অপ্রাপ্তি গুলো জমা থাকে অনাগত দিনে পূর্ণতার প্রতিক্ষা নিয়ে। জানিনা আগামীতে আর কিছু লিখতে পারবো কিনা, তবে এইসব অনুপ্রেরণাময় কমেন্ট গুলো মনে থাকবে।
ভালো থাকবেন সুরাইয়া। শুভ কামনা রইলো ❤️❤️
প্রদীপ চক্রবর্তী
অসাধারণ উপস্থাপন।
যুগে যুগে যুগান্তরী হয়ে।
তিনযুগ কেন এ বন্ধুত্বের বন্ধন আরও অনেক সুদৃঢ় হোক।
স্মৃতি গুলো সুন্দর আর এ স্মৃতি কখনো মানুষ ভুলতে পারেনা।
আপনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করি।
ভালো থাকুন, দিদি।
সাবিনা ইয়াসমিন
তাই যেন হয়।
তুমিও ভালো থেকো প্রদীপ। তোমার চলার পথ সুস্থ সুন্দর সাবলীল হোক।
অনেক অনেক স্নেহ ও ভালোবাসা তোমাকে ❤️❤️
জিসান শা ইকরাম
অত্যন্ত সুচারু এবং পরিচ্ছন্ন ভাবে অতিক্রান্ত তিন যুগের কথা প্রকাশ করলেন।
এমন প্রকাশ আমি পূর্বে কারো লেখায় দেখিনি।
লেখার একটি নতুন ধারনা লব্দ করলাম আপনার লেখা পড়ে।
চেষ্টা করে দেখবো আমার পাঁচ যুগকে কিভাবে লেখার মধ্যে আনা যায়।
প্রথম যুগের সাথী এবং স্মৃতি,
দ্বিতীয় যুগের নতুন জীবন, নতুন নাম,
তৃতীয় যুগে এসে পূর্নতা, স্থিথি সবকিছুই জানলাম।
ভালুকা, ময়না, রম্যরানী এই তিন বন্ধুকেই পেয়েছেন তৃতীয় যুগে।
আফসোস আমরা বন্ধু হতে পারলাম না। কত শত যুগ অপেক্ষা করতে হয়, কে জানে?
ভালো থাকুন বন্ধুদের মাঝে আত্মার আত্মীয়তার দৃঢ় বন্ধনে।
শুভ কামনা।
সাবিনা ইয়াসমিন
তিন যুগেই অনেক কিছু পেয়েছি আমি, বলতে পারেন সবকিছু পেয়ে গেছি খুব অল্প দিনেই।
রক্তের সম্পর্ক, পারিবারিক আত্মীয়তা, সামাজিক সম্পর্ক গুলো নিজ নিজ ভিত্তিতে গড়ে উঠে। এগুলো তৈরী করা লাগে না। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত আমরা এসব সম্পর্কের বলয়ে থাকি।
একমাত্র বন্ধুত্বের সম্পর্কটাই গড়ে নিতে হয়। বন্ধুত্ব গড়ার মাঝে কিছু অলিখিত শর্ত থাকে, যেটা বন্ধুরা অবচেতন মন থেকে ধরে রাখতে পারে।
কেন জানি সবার সাথে বন্ধুত্ব হয় না। খুব ঘনিষ্ঠ প্রিয়জনের সাথেও হয় না। সম্মানিত, শ্রদ্ধাশীল ব্যক্তিদের যেমন চাইলেই অপমান করা সম্ভব হয় না বা তাদের উপর রাগ করার হাজার কারন থাকলেও তাকে গালি দিয়ে/তুই সম্বোধনে ডাকা যায় না, তেমননি খুব বেশি সম্মান করা ব্যক্তিদের বন্ধু তালিকায় রাখা যায় না।
আপনার মন্তব্যর জন্য ধন্যবাদ। সোনেলায় বিচরন করা সময়গুলোতে প্রায় সবার কাছ থেকেই সহযোগিতা, অনুপ্রেরণা পেয়েছি, যা আমাকে লিখতে /লেখক হতে সহায়তা করেছেন। সাহায্যকারীদের মাঝে সবার শীর্ষে আপনাকেই পেয়েছি। ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা রইলো।
ভালো থাকবেন। শুভ কামনা 🌹🌹
মোঃ মজিবর রহমান
কেমন করে যে লিখে যান বোধদয় আসে না। অতি সুনিপুণভাবে তুলে আনলেন তিন যুগ। তারমাঝে সোনেলার প্রিয় ব্লগাদের নিয়ে সুন্দর বিশ্লেষণ।
ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন । শুভ কামনা রইল।
সাবিনা ইয়াসমিন
একেকটা পোস্ট লেখার পরে যখন দেখি লেখাটা আপনাদের মনে ঠাঁই পেয়েছে, আর এমন কমেন্ট পেয়ে যখন আমিও কৃথার্থ হই, ঠিক তখনই আরও কিছু লিখতে ইচ্ছে করে। এভাবেই লিখতে থাকি/লিখে যাই। সোনেলায় আসার প্রথম দিন থেকে আজ পর্যন্ত আপনার স্নেহময় সম্বোধন পেয়ে এসেছি মজিবর ভাইজান। আপনাকে ধন্যবাদ দিতে চাইলে সেটা কম হয়ে যাবে। ভালো থাকুন সারাক্ষণ, দোয়া ও শুভ কামনা আপনার জন্য 🌹🌹
মোঃ মজিবর রহমান
ইনশা আল্লাহ। আল্লাহ আপনাকে সুস্থ ও ভালো রাখুক এই প্রার্থনা রইল। আর সোনেলায় সোনালীয় আলো ঝরুক এই প্রত্যাশা করি।
আসলে আমার এখন খরা যাচ্ছে। বসঅতে ও লিখতে মনে সাই দিচ্ছে না তারচেয়েও বড় কথা বই পড়া হচ্ছে না এটা বোড়ই দুর্ভাগ্য।
ভালো থাকুন।
রেজওয়ানা কবির
বন্ধুত্ব এমনই হয় যেটা দুতরফা হয় এবং ভালোবাসাটা প্রখর থাকে যেকোনো মনের কথা ইজিলি শেয়ার করা যায়, বিপদে আপদে পাশে থেকে সব পরিস্থিতি সামলানো যায়। আপনার লেখায় এক ধরনের জাদু আছে,,,,,লেখাটি পড়ে ফিরে গেলাম আমার অনেক বন্ধুদের স্মৃতি। ব্যাঙ্গের উপমাটা ভালো লাগল। ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন, আপনার বন্ধুদের জন্য ভালোবাসা থাকল, ভালো লাগল যে আপনার বন্ধুদের মাঝে একজন আমার বোন যার সান্নিধ্য পেয়ে আমিও এভাবেই ভালো থাকি সবসময়, এরকম মানুষ পাওয়া খুব ❤️❤️❤️।শুভকামনা।
সাবিনা ইয়াসমিন
আপনার মন্তব্যর মাঝে কখনোই কোন ফাঁক থাকে না, সেটা কি আপনি জানেন? বন্ধুত্বের যে ব্যখ্যাটা দিলেন এটাই আমি পোস্টে বলতে চেয়েছি, কিন্তু আপনার মতো করে গুছিয়ে লিখতে পারিনি।
অনেক ধন্যবাদ সব সময় সুগঠিত মতামত দেয়ার জন্য। আপনিও ভালো থাকুন।
শুভ কামনা নিরন্তর 🌹🌹
রেজওয়ানা কবির
আবারও ধন্যবাদ আপু,জেনে ভালো লাগল যে আমি যেভাবে মন্তব্য দেই সেটা আপনার ভালো লাগে,,, তবে সত্যি বলছি আপনার লেখা পড়লে মনে হয় চুম্বক টানছে, শুভকামনা আপু।
হালিমা আক্তার
চমৎকার নান্দনিকতায় তিন যুগের বিশ্লেষণ। জীবনের বাঁকে বাঁকে কিছু খোয়া আবার কিছু প্রাপ্তিযোগ হয়। বন্ধুত্বের বাঁধন আরো দৃঢ়তার বন্ধনে আবদ্ধ হোক। শুভ কামনা রইলো।
সাবিনা ইয়াসমিন
জীবনের অজানা বাঁক ধরেই আমাদের চলতে হয়। সব কিছু তো সাথে করে নেয়া যায় না। প্রাপ্তি গুলোকে মুঠোয় পুরে সামনে এগোতে হয়। পেছনে থাকে স্মৃতি আর সামনে প্রত্যাশা। কিছু সম্পর্ক অঘোষিত থাকে, তাৎক্ষণিক কোন নাম দেয়া হয় না, কিন্তু অস্তিত্বময়। সোনেলায় আপনি আমার সহব্লগার। সব সময় পোস্টে এসে আন্তরিকতার সাথে আপনার মুল্যবান মতামত রাখছেন, একজন লেখকের জন্য সহব্লগারের কাছে থেকে পাওয়া এটাও একটা প্রাপ্তি।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। ভালো থাকুন সারাক্ষণ, শুভ কামনা 🌹🌹
দালান জাহান
জীবন পরিবেশ প্রকৃতি জীবনের রঙ সুখ দুঃখ তৃতীয় পর্যায়ে জীবনের বাহ্যিক আবহ সবশেষে বন্ধুদের স্মরণ। মনেহয় একটা উপন্যাস পড়লাম।
সাবিনা ইয়াসমিন
সুন্দর মতামতের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ দালান ভাই। ভালো থাকুন, শুভ কামনা 🌹🌹