
এক কাপ চা….. একটু ভালোবাসায়, উষ্ণ ছোঁয়ায়, শুধু আমি তোমাকে চাই।
কাজের মাঝে, মাথা ব্যথায়, চাপ কমাতে, ঘুম থেকে উঠে, আবার ঘুম যাবার আগে , আলসেমির ফাঁকে, সকালের নাস্তায়, বিকেলের অবসরে, বন্ধুর আড্ডায়, টিফিনের ফাঁকে, রিমঝিম বৃষ্টিতে, মন খারাপে কিংবা কারণে অকারণে ———- আহারে ! শুধুই চা ; রং এর বাহারে।
” চলো সবাই চা খেয়ে আসি ! ” কোথায় নেই চা ? এসি রুমে, পথের বাঁকে, টং এর দোকানে। বড় মগে, ছোট কাপে কিংবা গ্লাসে গ্লাসে।
ইংরেজিতে চা বা টি কথাটি গ্রীক দেবি থিয়ার এর নামানুসারে করা হয়েছিলো। এর বৈজ্ঞানিক নাম ক্যামেলিয়া সাইনেনসিস। ১৬৫০ সালে চীনে বাণিজ্যিকভাবে চায়ের উৎপাদন শুরু হয়। ভারতবর্ষে চাষ শুরু হয় ১৮১৭ সালে। ১৬৫৭ সালে প্রথম চায়ের দোকান হয় ইংল্যান্ডে।
শোনা যায়, চীনেই এর আদি নিবাস। এক বৃদ্ধ একদিন বাগানে বসে পানি ফুটাচ্ছিলেন। এমন সময় ঝড়ে কিছু পাতা পানিতে এসে পরে। তিনি খেয়াল করলেন পানির রং ও বদলে গেছে। তিনি খেয়ে দেখলেন , এর স্বাদও আলাদা। এবং চনমনে লাগছে।
পৃথিবীতে আসাম ও চীন জাতীয় দুই ধরণের চা গাছ পাওয়া যায়। আসাম গাছ বেশ বড় এবং বহু পাতা যুক্ত। চীন জাতীয় গাছ আকারে ছোট এবং পাতার সংখ্যাও কম। বিভিন্ন প্রকারের চা পাওয়া যায়। গ্রীন টি, কালো চা, সাদা চা, ওলং টি, মাচা টি। দুধ চা পান করার সংস্কৃতি কিন্তু ব্রিটিশদের অবদান। এখন তো মাল্টা চা, স্ট্রবেরি চা, তেঁতুল চা, তুলসি চা, কাঁচা মরিচের চা, তন্দুরি চা ; কতো যে চা। তবে, পুরান ঢাকার সর ভাসা মালাই চা এর আবেদনই আলাদা। সিলেটের সাত রং এর চা পান করতে ছুটে যাই ” নীল কণ্ঠ চা কেবিনে। ”
চা গাছ রোপন, আগাছা নিধন, সার প্রয়োগ, কচি পাতা তোলা,, শুকানো, প্যাকিং, ইত্যাদি কাজে দক্ষ অদক্ষ শ্রমিক কাজ করে। তবে, যেহেতু বিষয়টি বেশ ধৈর্যের তাই নারী শ্রমিকদের নিয়োগ দেয়া হয়।
জাপান ও চীনে চায়ের ঔষধি গুণাগুনের জন্য খুব গুরুত্ব দিয়ে চা পান করা হয়। তুর্কি আর পারসিরা তাদের প্রাণীজ আমিষ ও ফ্যাট নির্ভর ভারি গোছের চর্ব্য ও চোষ্য ভোজনের পর মুখশুদ্ধি হিসেবে চা পান করে। আর আমরা চায়ের কাপেই ঝড় তুলেই ফুঁসে তুলেছি, ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা আন্দোলন, নব্বই এর আন্দোলন। চা নিয়ে কতো কবিতা, কতো গান, কতো কাহিনী। আমরা তো বেঁচে থাকার আশা খুঁজে পাই এক চুমুক চা পান করে। ডাল ভাত খেয়েও চাই এক কাপ চা।
চা এর উপকারীতার কথা আর কী বলবো?
★ চা এনার্জি রিগেইন করে।
★ চা ইমিউন সিস্টেম বৃদ্ধি করে।
★ লেবু চা রিফ্রেশিং করে।
★ মশলাযুক্ত চা শরীরের জন্য ভালো।
★আদা, লেবু ও মধু যুক্ত চা সর্দি কাশিতে উপকারী।
★ স্বাদের জন্য মালাই চা।
★ চা ফোটার পর চা পাতা সারের কাজ করে।
★ মাথায় চায়ের লিকার কন্ডিশনের কাজ করে।
ইস ! এ সময় বৃষ্টি হলে মন্দ হতো না। এতো ইতিহাস জেনে, আরাম কেদারায় বসে, হেড ফোন কানে দিয়ে, চাই শুধু এক কাপ ধোঁয়া ওঠা চা।
২৬টি মন্তব্য
হালিমা আক্তার
বৃষ্টি হলে বন্ধ হতো না। বৃষ্টির রিমঝিম শব্দের সাথে এক কাপ ধুমায়িত চা। সাথে যদি থাকে চাল ভাজা। এক কাপ চা না হলে চলেই না।চা দিবসে চমৎকার আয়োজন। শুভকামনা। ভালো থাকবেন।
আরজু মুক্তা
চা দিবস এই প্রথম ঘটা করে আয়োজন।
চা ছাড়া আসলে চলে না।
চলুন খেয়ে আসি
ছাইরাছ হেলাল
হুম, চা এর এত এত গুনাগুনা সে তো এখন দেখতেই পাচ্ছি।
এমন চনমনে লেখা পড়ে পড়ে। সাথে ইতিহাস বোনাস আমাদের জন্য।
ভড়পেট চা-পান চালু থাকুক।
আরজু মুক্তা
সকাল বেলা আহারে
চা এর রং বাহারে।
তো হয়ে যাক এক কাপ চা।
আলমগীর সরকার লিটন
চমৎকার চা চুমুকে দারুণ স্বাদ প্রিয় মুক্তা আপু একদিন চায়ের দাওয়াত নিতে হবে
আরজু মুক্তা
চা এর দাওয়াত থাকলো। সাথে টা ও থাকবে।
শুভ কামনা ভাই
আশরাফুল হক মহিন
কতো চা খাইলাম
বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে
এখন আর খেতে পারি না
কবিতা হয়ে চা খাবো ইনশাআল্লাহ্।
আরজু মুক্তা
চা থেলে মন উঠে গেলো। মন খারাপি কথা। তেঁতুল চা ট্রাই করতে পারেন।
কবিতায় যেনো চা মিস না হয়।
শুভ কামনা।
মোঃ মজিবর রহমান
চায়ের কাপে চুমুক
স্বাদে ভরে তৃপ্তির টেকুর
মব্দ কি বৃষ্টির শব্দে কথার শব্দে
চায়ের চুমুকে চুমুকে উৎফুল্লমতায়।
আরজু মুক্তা
আহ্ চা। এক কাপ চা ছাড়া কি চলে……
চলুন সামনের টং এর দোকানে। এক কাপ কড়া লিকারের চা। ড্যানিশের চা। খেয়ে আসি।
মোঃ মজিবর রহমান
হুম! চলুক চলবে , ইনশা আল্লাহ একদিন হবে।
রোকসানা খন্দকার রুকু
খেলবো না। সবাই বিরিয়ানি,চা এসবের লোভ দেখায়। দাওয়াত তো দেন টেস্ট করি তার পর ,,,,
চীনারা ভালো জিনিষ আবিষ্কার করেছে। তা নাহলে আমার মতো অলসদের কি যেহতো!!
শুভ কামনা।
আরজু মুক্তা
আগে জান্নাতের চা খাবো। কথা সত্য চা ছাড়া আলসেমি লাগে।
তাহলে চায়ের কাপেই পরিচয় হোক।
দু কাপ চায়ে চুমুকে চুমুকে বাড়ুক হৃদয়ের ভালোবাসা।
তো হয়ে যাক এক কাপ চা……☕
সাবিনা ইয়াসমিন
বিশ্ব চা দিবসের শুভেচ্ছা রইলো, সাথে পরিবেশ দিবসেরও। চা য়ের ঔষধি গুনাগুন আসলেই অনেক।
ভালো থাকুন, শুভ কামনা 🌹🌹
আরজু মুক্তা
জি আপনিও নিরাপদে থাকুন। লং আদা চা চলুক করোনা কালীন।
স্বপ্নীল মেঘ
“ইস ! এ সময় বৃষ্টি হলে মন্দ হতো না। এতো ইতিহাস জেনে, আরাম কেদারায় বসে, হেড ফোন কানে দিয়ে, চাই শুধু এক কাপ ধোঁয়া ওঠা চা”
সত্যিই চায়ের ইতিহাস পড়ে চায়ের নেশা ধরে গেলো।
অনেক কিছু শিখে গেলাম বুবু। আল্লাহ আপনাকে ভালো রাখুন। আরো লিখুন। যুগ যুগ বেঁচে থাকুন সোনেলার পারে। শুভকামনা।
আরজু মুক্তা
তো চলেন পাশের টং এর দোকানে লাল চা খেয়ে আসি।
নিরাপদে থাকুন।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
চায়ের ইতিহাস আবার পড়া হলো আপনার কল্যানে ধন্যবাদ আপনাকে। ছবিটা দেখে দুধ চায়ের নেয়াটা চাঙ্গা দিয়ে উঠলো। চা ছাড়া এখন অচল তবে সারাদিনে এক/ দুকাপ ই আমার জন্য যথেষ্ট। চা দিয়ে শুভ সকাল হবে এখন
আরজু মুক্তা
একটু অপেক্ষা করেন। আমি আসতেছি। আর যাই হোক গরম গরম দুধ চা ছাড়া যাবে না।
শুভ কামনা দিদি।
দিন ভালো কাটুক
হালিম নজরুল
ইংরেজিতে চা বা টি কথাটি গ্রীক দেবি থিয়ার এর নামানুসারে করা হয়েছিলো। এর বৈজ্ঞানিক নাম ক্যামেলিয়া সাইনেনসিস। ১৬৫০ সালে চীনে বাণিজ্যিকভাবে চায়ের উৎপাদন শুরু হয়। ভারতবর্ষে চাষ শুরু হয় ১৮১৭ সালে। ১৬৫৭ সালে প্রথম চায়ের দোকান হয় ইংল্যান্ডে।
———————চমৎকার তথ্যবহুল লেখা।
আরজু মুক্তা
তো হয়ে যাক এককাপ চা।……
শুভ কামনা
জিসান শা ইকরাম
কয়েকবার চীনে গিয়ে ওখানকার চা খেয়েছি। চীনে চা যেভাবে পান করা হয় তা আমাদের থেকে ভিন্ন। কেউ দুধ চা এর কথা চিন্তাই করে না। লিকার চা, চিনি ছাড়া। চায়ের প্রকৃত স্বাদ নিতে হলে তেমন চা ই খেতে হয়।
ভালো হয়েছে পোস্ট।
শুভ কামনা।
আরজু মুক্তা
চা ছাড়া চলেই না।
আহ্ চা!!!!
উর্বশী
আমার তো আপনার লেখা পড়েই চনমনে লাগছে। রিমঝিম বৃষ্টিতে চায়ের বিকল্প তো নেই প্রাথমিক ভাবে।আমি তো রং চা পান করি আপনার কি দুধ চা চাই আপু? তাহলে রং ও দুধ চায়ের ধোঁয়া ওঠা সতেজ শুভ সকাল। তথ্যবহুল চায়ের সম্পর্কে দারুন লেখা আপনার। অসংখ্য ধন্যবাদ সহ ভালোবাসা ।
আরজু মুক্তা
আমার চা ই পছন্দ। তা দুধ রং যাই হোক।
তবে সাত রং চা ভালো লাগেনি। বিকেলে কোন কারনে যদি চা মিস হয়। ঐটা আমি রাত ১০ টা হলেও খাবো।
একদিন চলেন ঝুম বৃষ্টিতে টং এর দোকানে চা খাই।☕☕☕
উর্বশী
আরজু আপু আমি রাজী।
জোড় করে হলেও সেদিন খুব ভাল থাকার চেষ্টা করবো।এখন শুধু ঝুম বৃষ্টির অপেক্ষা। মন্দ হয়না যদি চায়ের মিনি পার্টি হয়। অনেক ভালোবাসা রইলো।