
– আজকে আমি অনেক খুশি। মনে হইতাসে বেহেশতে আছি। আমি মরার পরে বেহেশতে তুমারেই আমার বউ করতে চাই। তুমিও বেহেশতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিও। নিয়মমাফিক চেষ্টা না করলে কিন্তু আমার বউ হইতে পারবানা।
= দুনিয়ার থেকেও বেশি সুখ-শান্তি ছাড়া বেহেশতে আর কি আছে?
– বেহেশতে কি নাই তাই জিগাও। যা চাইবা, যা কোনোদিন কল্পনায় আনতে পারো নাই ঐসবই থাকবো। সবচেয়ে বড় কথা দোযখের আগুনের ভয় নাই।
= হুর-গেলমান?
– হ, তাতো থাকবোই। তয় ঐগুলা শুধু পুরুষের জন্যে। মহিলারা চাইলে বেহেশতি পুরুষের বউ হইবার পারবো।
= হুর পাওয়ার আশায় যারা নিজেগো দমন রাখে তারা গেলমান পাওয়ার আশায় নিজের হাউশ দমন করে না ক্যান?
– মানে কি কইতে চাও?
=আপনেরা পোলাপানগুলারে বলাৎকার ক্যান করেন ? দুনিয়ার পোলাগুলা কি গেলমানের চাইতে বেশি সুন্দর!
************************************************************************
– নাম?
= মালতী
– এহ, তোমার বাপে এইটা কি নাম রাখছে? নামাজী মানুষের মাইয়্যার এমুন নাম কেউ রাহে!
= ক্যান? ফুলের নামে নাম রাখছে। আমার বাজান ফুল অনেক ভালো পায়, এইর লাইগ্যা মালতী ফুলের নামে নাম রাখছে। ফুল পছন্দ করলে পাপ হয় নাকি?
– না, পাপ হইতো কেরে, তয় এমুন ফুলের নাম রাখন উচিৎ ছিল যেটাতে বিধর্মীর ছাপ নাই। যাউগ্যা, আইজ থ্যাইক্কা তুমার নাম ফুলি। তোমার বাজানের পছন্দডাও থাকলো, আবার নামডাও ঠিকঠাক হইলো।
= ফুল- ফল, জন্তু-জায়গা সবইতো তাগোর নিজের ভালো-মন্দ দিয়া পরিচয় হয়, তাইলে মানুষের নামের বেলায় এতো তকমা ক্যান? মানুষ কি খালি নামেই পরিচিত পায়?
* ছবি – নেট থেক।
১৩টি মন্তব্য
ফয়জুল মহী
চলমান বাস্তবতা যথার্থ ও নিখুঁত প্রকাশ ।
সুরাইয়া পারভীন
মানুষের কর্ম দ্বারাই কীর্তিমান হয় মানুষ। যুগে যুগে যে সব মানুষের নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা হয়/হয়েছে তা কর্মের মাধ্যমেই।
হইকাল,পরকাল, স্বর্গ, মর্ত্য পাতাল সবখানেই কেবল পুরুষদের একচেটিয়া অধিকার। তাই তো তারা অনায়াসে ভয়ঙ্কর নেশায় মেতে ওঠে। হিংস্র থাবা বসিয়ে উল্লাস করে।
এর থেকে রক্ষা পায়না অবুঝ পুত্র সন্তান ও
শামীম চৌধুরী
ধর্মটা বিশ্বাস। অনেক কিছুই চোখে না দেখে আমরা ধর্ম পালন করি সব বিশ্বাস করে। তবে এই ধর্মকে যারা আমাদের ধর্মান্ধ করছে তাদের বিশ্বাসটা কোথায়? ফুলের নামেও যদি হিন্দু মুসলিম থাকে তবে আমরা আজ কোথায়? খুব বাস্তবমুখী সময়োপযোগী লেখা আপু।
শুভ কামনা রইলো।
সুপায়ন বড়ুয়া
যুগে যুগে শোষক আর শাষক শ্রেনী
নারীকে করে ভোগের বস্তু। মানষিকতার পরিবর্তন নাহলে
তা থেকে মুক্তি নাই যতই চেঁচামেছি আইন কানুন করি না কেন।
ভালথাকবেন। শুভ কামনা।
রোকসানা খন্দকার রুকু
নারী ও শিশু কেউ বাদ যাচ্ছে না। মাদ্রাসা ছাত্রের বলাৎকারের ছবি দেখে কি করব বুঝে উঠতে পারছিলাম না। দাড়ি,টুপী,পান্জাবী আর ধর্ম, না বেহায়া হুর পরীর আশায় থাকা হুজুর? কাকে গালি দিব বুঝে পাই না। আমরা কোন যুগে চলে এলাম। ভালো লাগে না।
শুভ কামনা আপু।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
মানুষ নামে পরিচিত হয়না কর্মেই হয় , নাম মানবের চিহ্ন যা দিয়ে তাকে চিহ্নিত করা যায়। ফুলের নাম ও যে বিধর্মী হয় তা আমিও শুনেছি, জেনেছি অথচ ফুলকে সবচেয়ে পবিত্র মানা হয় সব ধর্মেই। পু্রুষের রাজত্ব ইহকাল, পরকালেও। নারী দমিত, শোষিত। ভালোবাসা অবিরাম 🌹🌹
রেহানা বীথি
নারীর প্রতি বক্রোক্তি, সে তো যে কেউ করতে পারে। আর স্বামী তো পারেই, হুরের স্বপ্ন চোখে গুঁজে স্ত্রীর শরীরে বিচরণ তাদের জন্মগত অধিকার যেন।
ভালো লাগলো লেখা।
জিসান শা ইকরাম
ধর্ম আমাদের সামনে অনেক প্রশ্ন এনে দাঁড় করিয়েছে, যে প্রশ্ন করা খুবই বিপদজনক বর্তমানে আমাদের সমাজ ব্যবস্থায়।
বেহেশতে পুরুষেরা পাবে ৭০ জন হুর, অথচ নারীদের বেলায় একমাত্র স্বামী। যে স্বামী এ জগতে অত্যন্ত খারাপ হলেও তাকেই আবার বেহেশতে পাবে।
স্বামী যদি কখনো বেহেশতে যেতে না পারে, স্ত্রী যদি বেহেশতে যায়, তখন কি স্ত্রী বেহেশতে নিঃসঙ্গ থাকবে?
আজকেও পত্রিকায় পড়লাম, মাদ্রাসার হুজুর এক ছেলেকে বলাৎকার করেছে।
নামের হিন্দু মুসলমান আছে। গত কয়েক বছর ধরেই এধরনের বিভাজন খুব বেশী হচ্ছে। মনুষ্যত্ব জাগ্রত করার কোন কথা নেই, বাহ্যিক জিনিসগুলোই গুরুত্ব পাচ্ছে আজকাল।
ভালো থাকবেন। শুভ কামনা। শুভ ব্লগিং।
প্রদীপ চক্রবর্তী
মানুষের পরিচয় কর্মে।
ধর্মে নয়!
আজকাল মানুষ ধর্মের সারবস্তু না জেনে না বুঝে নিজের মতো করে মনগড়া তকমা দেয়।
আর কেউ ক্ষমতার বাহার দেখিয়ে নারীকে ভোগ করে কেউবা ধর্মের বাহার দেখিয়ে।
যুগেযুগে নারীরা অবহেলিত ও লাঞ্চিত হচ্ছে।
একদিন সে নারী জেগে উঠবে।
তবে এইবার উঠে দাঁড়াবার পালা!
একবার জেগে উঠলে তাঁকে আটকে রাখার সাধ্য কারো নেই।
মানুষের মনুষ্যত্ববোধ জাগ্রত হোক।
আরজু মুক্তা
মানুষের বিবেক জাগ্রত হোক।
খাদিজাতুল কুবরা
আসলে ধর্মের বিধি নিষেধ তো প্রেক্ষাপট অনুযায়ী নির্ধারিত হয়েছে। একটি জায়েজ নাজায়েজের পেছনে অনেক মজবুত যুক্তি আছে। সমস্যা হলো ধর্মকে অপব্যখ্যা করে নারীর বিরুদ্ধে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হয়। তাই নারীর নাম থেকে শুরু করে দাঁত খিলাল নিয়ে ও আলোচনা সমালোচনা কিংবা জবরদস্তি ফতোয়া চাপিয়ে দেওয়া নিত্তনৈমিত্তিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
খুব সুন্দর একটি প্রতিবাদী লেখা রম্য উপস্থাপনে যথার্থ লাগলো।
মূর্খের দলের এ লেখা বোঝার মতো আক্কেল নেই।
অনেক শুভেচ্ছা আপু।
কলম চলুক।
তৌহিদ
ধর্মের দোহাই দিয়ে নারীকে তার সত্ত্বার মাঝে বন্দী করার মাঝে কোন কৃতিত্ব নেই। অথচ পুরুষ শাসিত সমাজে নিজের পৌরুষত্ব বজায় রাখার জন্য আমরা নারীকে পদতলে ভষ্মিত করতে মোটেই কুন্ঠিত হইনা।
ভালো থাকুন আপু।
হালিম নজরুল
দ্রোহ বিদ্রোহ ছড়িয়ে পড়ুক আকাশে বাতাসে।