
মিষ্টার ওয়াটসন ছিলেন দারুন এক অপরাধী।ভিন্ন ভিন্ন নামে কাজ হাসিল করা ছিল তার নেশা। শিকাগোর ব্যাংকের মানেজার কে গুলি করে ডাকাতি করেছিল,তখন সে ছিল ক্যাপ্টেন ম্যাক।আবার মেলবোর্ন এ সংগঠিত হওয়া বড় প্রতারণার পেছনে যে মানুষটার হাত আছে বলে ধরে নেয়া হয়,লোকজন তাকে চেনে ক্রিষ্টিপার নামে।পুলিশের ধারনা এই ক্রিষ্টিপার আর ম্যাক এক ই লোক।
ম্যাককে পুলিশ আজ অব্দি পাকড়াও করতে পারেনি। নিজের আসল পরিচয় গোপন রাখতে বরাবরের মত সতর্কতার পরিচয় দিয়ে আসছিলেন তিনি। তার সাথে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে এমন লোক পাওয়া গেছে।কিন্তু তাদেরও জানা নেই সে দেখতে কেমন। কারো বর্ননার সাথে মিলছে না। পৃথিবীতে দুজন ছিল যারা ম্যাককে সনাক্ত করতে পারতো,ব্যাংকের সেই মৃত ম্যানেজার আর তার গার্লফ্রেন্ড। দ্বিতীয়জন কোথায় যে হারিয়ে গেছে তার খোঁজ পাওয়া যায়নি। ম্যাক এক মাত্র প্রত্যক্ষদর্শীর সামনেই ম্যানেজারকে হত্যা করেছিলেন।
দিন টি ছিল উষ্ণ রৌদ্রজ্বল। দুপুর দেড়টা থেকে দুটো। স্ট্রিটে নারীরা শপিংয়ে ব্যস্ত।পুরুষেরা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে গল্পগুজব করছিল। ভিড়ের বেশ ক্যাবের পিছে পিছে একটি ঘোড়ার টানা গাড়ী এগিয়ে এল। একদম মন্থর গতি।কারণ ভিতরে থাকা তরনী তাগাদা দিচ্ছিল,গাড়ী যেন আস্তে চালানো হয়। আসলে সে ঘোড়াকে ভীষণ ভয় পায়।কৌতুহলী দৃষ্টিতে একবার স্ট্রিটের দিকে তাকালো তরুনী।ছোট খাটো আলোড়ন দেখা গিয়েছিল কিছু সামনে।”দ্যা ক্যাফে” নামে একটা রেষ্টুরেন্ট সেটা। সামনে একটা ক্যাব সেই রেষ্টুরেন্টর কাছে থামলো। দুটো ক্যাবের পেছনেই ছিল তরুনীর ঘোড়ার গাড়ী। মুহূর্তের মাঝে রাস্তার ট্রাফিক থেমে গেল।বড় বিল্ডিংয়ের সিড়িতে কয়েকজনকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলো।গাড়ী থেকে নেমে যাবার সিদ্ধান্ত নিল।
“ড্রপ মি হেয়ার” ড্রাইভারকে বলেছিল সে, কথায় স্পষ্ট আমেরিকান টান।
গাড়ী থেমে গেল।নেমে এসে চালকের দিকে কয়েন বাড়িয়ে দিল তরুনী।কয়েন টার দিকে তাকিয়ে মৃদু হাসলো লোকটা। আমেরিকানরা খুব ই দয়ালু বিড়বিড় করে বললো নিজেকে।
এদিকে দ্রুত পায়ে ক্যাফেতে প্রবেশ করার সময় বাইরের সিড়িতে থাকা মানুষগুলোর দিকে এক পলকের জন্য তাকালো তরুন। কয়েকজন তার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়েছিল। সেসব ভ্রক্ষেপ না করে ডাইনিং রুমে যেতে উদ্যত হলো তরুনী।
আমার কথা সম্পর্কে তুমি নিশ্চিত থাকো জনি, মেয়েটির দিকে তাকিয়ে মন্তব্য করেছিল একজন। আমেরিকান দের লাজলজ্জা বলতে কিছুই নেই।বিশেষ করে মেয়েরা।তাদের যেখানে খুশি,সেখানে যায়। কোনও কিছুকেই তারা পাত্তা দেয়না।
রেষ্টুরেন্টের ভিতরে একজন লম্বা লোক হাঁটছিলেন ডাইনিং রুম লক্ষ্য করে। তরুনীও তার পিছে পিছে। এক মুহূর্তের জন্য থামলো লম্বু। দীর্ঘদেহী ফাঁকা কোন টেবিল খোঁজ করছে বুঝতে পেরে ওয়েটার দেখিয়ে দিয়েছিল তাকে। লোকটা যেখানে বসেছে, তার পেছনে একটা টেবিল বেছে বসে পড়ল তরুনী।
“এক্সকিউজ মি ম্যাডাম” ওয়েটার এগিয়ে এসেছিল তার দিকে।” টেবিল টা চার জনের বসার জন্য বুঝতেই পারছেন।
“জানি” নরম সুরে কথাটা বলে কিছু টাকা বাড়িয়ে দিল তরুনী। হাতে টাকা গুঁজে চোখের পলকে বিদেয় হয়ে গেল ওয়েটার।
ক্যাফেতে নানা রকম মানুষে ভরপুর।অনেকেই গল্পগুজবের ফাঁকে ফাঁকে তরুণীর দিকে বাঁকা চোখে তাকাচ্ছিল। সচারাচর কোনো অল্পবয়সী তরুনী এরকম একা একা রেষ্টুরেন্টে খেতে যায়না। অবশ্য যাকে নিয়ে এতকিছু তার এসব দিকে মোটেও লক্ষ্য নেই। সামনের লোকটা ছাড়া আর কিছুতেই নজর দিচ্ছে না সে। লম্বু লাঞ্চের সাথে শ্যাম্পেই অর্ডার দিয়েছে। পানি দিয়ে গলা ভেজাল তরুণ। হঠাৎ করে ওয়েটারকে ডাক দিল।
“প্লিজ ” আমাকে একটি কাগজ দিতে পারবেন? আর আমার বিলটাও দিন।আস্তে করে বললো তরুণী। কারো দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইছে না।
চলবেঃ—–
১৭টি মন্তব্য
ফয়জুল মহী
গল্পের ছবিতে বন্দুক দেখে ভয়ে আছি শেষে কি জানি হয়। জানতে চলতে থাকুক। অসাধারণ লেখনী
উর্বশী
ফয়জুল মহী,
আন্তরিক ধন্যবাদও কৃতজ্ঞতা। বেশী ভয় পেওনা।অল্প পেলেই আপাতত চলবে।বন্যা লিপি আপুর কমেন্টের কথা স্মরণ রেখো সাথে বন্দুকের কথাও। সুন্দর মন্তব্যের জন্য আন্তরিক শুভ কামনা সব সময়।
ইঞ্জা
বাহ দারুণ গল্পের অবতারণা দেখছি, মনে হচভহে ওয়েস্টার্ন গল্প পড়ছি, আগামী পর্ব কবে দেবেন আপু?
চমৎকার পর্বটার পর উৎসুক হয়ে উঠলাম।
উর্বশী
ইঞ্জা ভাইয়া,
আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা । জ্বি খুব তাড়াতাড়ি দিয়ে দিব। কিছুটা ওয়েষ্টার্ন এর ছোঁয়া মনে হবে।আস্তে আস্তে সব সামনে এসে যাবে। অনেক শুভ কামনা রইলো ।
ইঞ্জা
অপেক্ষায় রইলাম।
উর্বশী
ইঞ্জা ভাইয়া,
শুকরিয়া।আজ লেখা দিয়েছি।
আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা৷।
উর্বশী
ইঞ্জা ভাইয়া,
আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা। ভাল থাকুন। শুভ কামনা।
রেজওয়ানা কবির
বাহ! সুন্দর লেখা।
উর্বশী
রেজওয়ানা কবির আপু,
আন্তরিক ধন্যবাদ সহ সালাম।ধৈর্য নিয়ে পড়েছেন, সেজন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। পরের পর্ব পড়ার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। ভাল থাকুন,অফুরান শুভ কামনা৷।
আলমগীর সরকার লিটন
বেশ বইপড়ুন গল্প সুন্দর আপু————
উর্বশী
আলমগীর সরকার লিটন,
আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা। গল্প ভাল লেগেছে সেজন্য অফুরান শুভ কামনা। ভাল থাকুন।।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
রহস্যময় লেখা মনে হচ্ছে। দেখা যাক কি হয় সামনে। ভালো লেগেছে আপু। আপনার জন্য শুভকামনা রইলো
উর্বশী
সুপর্না ফাল্গুনী আপু,
আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা। কিছুটা রহস্যময়। লেখা পড়ে
আপনার ভাল লেগেছে সেজন্য আবারও কৃতজ্ঞতা জানাই।
আগামীতে পাশেই পাব আশা রাখি। পড়ার আমন্ত্রণ করছি।
অনেক ভাল থাকবেন,অফুরান শুভ কামনা।
তৌহিদ
ওয়েস্টার্ন গল্পের ধার ফুটে ঊঠেছে লেখায়। আপনি কিন্তু গল্প লেখায় অনবদ্য। মজার হবে লেখাটি বুঝতেই পারছি।
শুভকামনা আপু।
উর্বশী
তৌহিদভাইয়া, ,
আন্তরিক ধন্যবাদ সহ সালাম। জ্বি ভাইয়া,কিছটা অন্য ধাঁচে লেখার চেষ্টা করছি মাত্র।আপনারা গুনীজন,কোথাও ভুল ত্রুটি হলে শুধরে দিবেন প্লিজ। অনুশীলন টা যেন আমার ভাল হয়। ভাল লেগেছে জেনে আমারও ভাল লেগেছে।
পরের অধ্যায় আজ দিয়েছি। আগামী অধ্যায় শেষ করে ফেলবো আশা করি।ভাল থাকুন।কৃতজ্ঞতা ও শুভ কামনা।
আরজু মুক্তা
ওয়েস্টার্ন, মানে আগে যেমন মাসুদ রানা পড়তাম। তেমন গন্ধ পাচ্ছি।
ভালো লাগলো। বন্দুকে নল দেখি কই যায়
উর্বশী
আরজু মুক্তা আপু,
জ্বি , কিছুটা আপু সেরকম ই।
আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা। পড়ার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। ভাল থাকুন,শুভ কামনা।