
বাংলা ছায়াছবি এখন কেবলই সোনালী অতীত। ৬০ দশক থেকে ৯০ দশক পর্যন্ত বাংলা ছায়াছবি বিনোদনের একটি অনন্য মাধ্যম ছিল। সে সময় নির্মাতারা সামাজিক ও প্রেমের ছবি বেশী চিত্রায়িত করতেন। মারদাঙ্গা বাংলা ছবি এদেশে আসে স্বাধীনতার পর। মারদাঙ্গা ছবি দর্শক মনে যতটুকু দাগ কাটতো, তার চেয়ে কয়েক গুন বেশী দর্শক হৃদয় ছুঁয়ে যেত সামাজিক ছবি। বিশেষ করে ঘরের গৃহিনী, মা-খালা ও চাচী-ফুফুদের কাছে সামাজিক ছবি ছিল দুঃখের, বেদনার ও প্রেম ভিত্তিক আনন্দের। প্রেমের ছবিতে নববধূরা সুড়সুড়ি পেতেন। ছবির মতন করে অনেকেই তার স্বামী বা প্রিয়জনকে ভালবাসতে শিখতেন। কিছু কিছু ছবিতে মা-খালা বা চাচী-ফুফুরা এমন কেউ নেই যে, কান্না না করে ভেঁজা চোখে হল থেকে বেরিয়েছেন।
সে সময় নির্মাতাদের কাছে কোন নায়ক-নায়িকা ও খলনায়কের অভিনয় দর্শক মন জয় করবে তা নির্ভর করতো চিত্র কহিনী ও সংলাপের উপর। প্রেমের ছবিতে বেশীর ভাগ নায়িকার চরিত্রে অভিনয় করতেন কবরী,ববিতা, শবনম সহ অনেকে। আর সামাজিক ছবিগুলির অধিকাংশ ছবির বাজার দখলে ছিল শাবানা,সুচন্দা,সুজাতা সহ অনেকে। নায়কদের মধ্যে রাজ্জাক,ফারুক,উজ্জ্বল,ওয়াসিম,জাফর ইকবাল সহ অনেকে।
একটি সঙ্গীত পরিবারে জন্ম নেয়া চিত্রনায়ক জাফর ইকবাল মূলতঃ গায়ক থেকে নায়ক হোন। দেশের প্রখ্যাত সুরকার আনোয়ার পারভেজ ছিলেন জাফর ইকবালের বড় ভাই। কিংবদন্তী সঙ্গীত শিল্পী শাহনাজ রহমতুল্লাহ ছিলেন ছোট বোন। আবিদা সুলতানাদের মতন জাফর ইকবালের পরিবারের সবাই সঙ্গীত শিল্পী ছিলেন। যা এই দেশে বিরল।
বাংলা ছায়াছবিতে জাফর ইকবাল একজন ড্যাশিং হিরো হিসেবে খ্যাতি পান। তাঁর পোষাক, চুলের স্টাইল, কথা বলার ঢং, চোখের চাহুনী, কোমড়ের ব্যাল্ট সহ পায়ের জুতা পর্যন্ত সব খানেই ছিল স্টাইলিশ ছাপ। নামকরা গীটার বাদকও ছিলেন। সর্বময় গুনী এই মানুষটির জীবনে দুঃখ ও কষ্ট ছিলো মাত্রাতিরিক্ত। একটি মাত্র প্রেম বা ভালবাসা জাফর ইকবালের সব কিছু কেড়ে নেয়। নিজেকে হারিয়ে ফেলেন না পাওয়া স্বর্গীয় প্রেমে। জীবনের শেষ মহুর্ত পর্যন্ত আশায় ছিলেন তার প্রেমিকা আসবেই। কিন্তু আশাবাদী এই শিল্পীর স্বপ্ন তাঁর জীবদ্দশায় পূরন হয়নি। তার প্রেমিকার (নামটা অপ্রকাশিত থাকুক।) বিয়ের দিন নিজ কন্ঠের সর্বত্র দিয়ে এই গানটি গেয়েছিলেন-
“সুখে থাকো ও আমার নন্দিনী
হয়ে কারো ঘরনী”।
১৯৫০ সালের ১৯ এপ্রিল তৎকালীন পাবনা জেলার সিরাজগঞ্জে জন্ম গ্রহন করেন এই গুনী শিল্পী। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করেন। যুদ্ধাচলাকালীন সময়ে আরেক মুক্তিযোদ্ধা খসরুর সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয় কোলকাতায়। সেখান থেকেই দুজনের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে উঠে। স্বাধীনতার পর খসরু ওরা ১১ জন ছায়াছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্রে আসেন। পাকিস্তান আমল থেকেই জাফর ইকবাল চলচ্চিত্রের সঙ্গে জড়িয়ে ছিলেন। এফডিসিতে জাফর ইকবালের সঙ্গে খসরুর একটি আত্মিক সম্পর্ক হয়। নয়ক খসরু ও তিনি দুজনই মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তার সিনেমায় প্রথম প্লে-ব্যাক করা গান ছিল তার ভাই আনোয়ার পারভেজের সুরে নায়করাজ রাজ্জাক অভিনীত ‘বদনাম’ ছবিতে প্রথম গান করেন ‘হয় যদি বদনাম হোক আরও/আমি তো এখন আর নই কারও’। জাফর ইকবাল এর কণ্ঠে “হয় যদি বদনাম হোক আরো ” গানটি একসময় ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায় প্রথম প্লেব্যাকেই ব্যাপক প্রশংসা কুড়ান এই অভিনেতা।
এরপর সুরকার আলাউদ্দিন আলী তাঁকে দিয়ে অসংখ্য চলচ্চিত্রে কাজ করিয়েছিলেন। তাঁর জনপ্রিয় কিছু গানের মধ্যে
‘সুখে থেকো ও আমার নন্দিনী হয়ে কারও ঘরনি’,
‘তুমি আমার জীবন, আমি তোমার জীবন’,
‘হয় যদি বদনাম হোক আরও’ অন্যতম।
নিজের কণ্ঠে ‘কেন তুমি কাঁদালে’ শিরোনামে একটি অডিও অ্যালবাম প্রকাশ করেন আশির দশকের মাঝামাঝি সময়ে। বাংলাদেশ টেলিভিশনের যুগে ‘সুখে থাকো নন্দিনী’ গানটি গেয়ে দারুণ সাড়া ফেলেছিলেন। এরপর বাংলাদেশ টেলিভিশনের ২৫ বছর উদযাপন বিশেষ অনুষ্ঠানে গেয়েছিলেন ‘এক হৃদয়হীনার কাছে হৃদয়ের দাম কি আছে’ গানটি। গান ছাড়াও বহু ছায়াছবির নায়ক হয়ে অভিনয় করেছেন এই গুনী শিল্পী। তারমধ্যে
“ফকির মজনু শাহ”
“এক মুঠো ভাত”
“বাঁদী থেকে বেগম”
“বেদ্বীন”
“নয়নের আলো”
“বদনাম”
“শঙ্খনীল কারাগার”
“মিস লংকা”
“সূর্য সংগ্রাম”
“ফেরারি”
“মাস্তান”
সবগুলি ছায়াছবি ছিলো বক্স অফিস হিট। তখন এই ছবি গুলির কাহিনী ও গান সবার মুখে মুখে ভেসে বেড়াতো।
জাফর ইকবালকে আমি মামা বলে ডাকতাম। খুব কাছ থেকে দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল। তার মূল কারন নায়ক খসরু জন্য। খসরু মামার ভাইগ্না স্বপন ছিল আমার প্রিয় বন্ধুদের একজন। নতুন পল্টন ইরাকী কবরস্থান সংলগ্ন বাসা ছিল খসরু মামার। এখনও অসুস্থ্যাবস্থায় সেই বাড়িতেই আছেন। আমার বাসা আজিমপুর হওয়ায় প্রতিদিন বিকালে ইরাকী মাঠে খেলতে যেতাম। কোন নায়ক নায়িকা খসরু মামার বাসায় আসলে স্বপনই আমাদের নিয়ে যেত। এমন অনেকেরই সান্নিধ্যে ছিলাম। ১৯৮৭-১৯৯০ সাল পর্যন্ত স্বপন আমাদের সঙ্গে খেলধূলা ও আড্ডা দিতো। পরে স্বপন বিদেশে চলে যায়।
জনপ্রিয় প্রয়াত নায়ক জাফর ইকবালের কণ্ঠে ‘সুখে থাকো নন্দিনী’ গাওয়া এই গানটিতে যেন তার আত্ম অভিমান প্রকট হয়ে উঠেছিল। বেঁচে থাকতে এই প্রতিভাবান অভিনেতাকে কতটা মূল্যায়ন করা হয়েছে সে প্রশ্ন থেকেই যায়। অভিনয়ের স্বীকৃতির কথা বাদ দিলেও ‘হয় যদি বদনাম’ গানটির জন্য নিশ্চিতভাবে তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়ার যোগ্য ছিলেন। এখনো শ্রোতারা গানটি শুনে অশ্রু ঝড়ান। কিন্তু তাকে সেই সম্মান দেওয়া হয়নি।
প্রেমে ব্যার্থ এই গুনী শিল্পী শেষের দিকে অতিরিক্ত এ্যালকোহলে আসক্ত হয়ে পড়েন। লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মাত্র ৪১ বছর বয়সে ১৯৯২ সালের ৮ জানুয়ারী তাঁর সকল ভক্তদের কাঁদিয়ে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে যান। মৃত্যুর পর দীর্ঘ ২৮ বছর পার হয়ে গেলেও তার জন্ম বা মৃত্যুবার্ষিকীতে চলচ্চিত্র জগৎ, তার পরিবার বা অন্য কেউ তাকে স্মরণ করে না। সবচেয়ে কষ্টের বিষয় হলো মৃত্যুর পরও অবহেলায় রয়ে গেলেন এই ফ্যাশনেবল ড্যাশিং হিরো। প্রেমে ব্যর্থ ও স্ত্রী সোনিয়া তাকে ছেড়ে চলে যাওয়ার কষ্ট ভুলতে জাফর ইকবাল একসময় অ্যালকোহলে আসক্ত হয়ে পড়েন। অতিমাত্রায় আসক্তির কারণে ১৯৯২ সালে ক্যান্সার, কিডনি ও লিভারের জটিলতায় মৃত্যুবরণকারী জাফর ইকবালের শেষ ঠিকানা হয়েছিল ঢাকার আজিমপুর কবরস্থানে।
আজ ভোরে হাঁটার সময় বহু বছর পর স্বপনের সঙ্গে দেখা হলো। কথার ফাঁকে খসরু মামার প্রসঙ্গ চলে আসে। আসে প্রয়াত নায়ক জাফর ইকবালের কথা। হঠাৎ আমার মনে হলো জাফর ইকবালকে দাফন খসরু মামা নিজ হাতে করেছিলেন। খলনায়ক মঞ্জুর রাহীর মৃত্যুর দুই মাস পর জাফর ইকবাল মারা যান। দুজনকেই দাফন করেন খসরু মামা। দুজনের কবর ছিলো মুখোমুখি। রাস্তার ধারে নিম গাছের নীচে। কবরস্থান নতুন আঙ্গিকে সাঁজাতে যেয়ে নিম গাছটি কেঁটে ফেলেছে।
সেখানে গিয়ে তার কবর(?) খুঁজে পাওয়া গেল। কবরস্থানের একজন গোর খোদক ওলী মিয়া, যিনি প্রায় ৩৫ বছর ধরে সেখানে কাজ করছেন তিনি বললেন, জাফর ইকবালের পরিবারের কাউকে কখনো এখানে আসতে বা তার কবরের খোঁজ নিতে দেখিনি। কবরটিকে একটি পরিত্যক্ত জঙ্গলই বলা যায়। নেই কোনো নাম ফলক। তিনি বলেন, এই কবরটির ওপর ইতিমধ্যে ২০/৩০টির মতো কবর পড়েছে। কবরটিতে এখন জাফর ইকবালের বিন্দুমাত্র স্মৃতি চিহ্ন নেই। কষ্ট হলো এই ভেবে যে, এমন একজন জনপ্রিয় নায়ক, গায়ক ও মুক্তিযোদ্ধার প্রতি কি কারও কোনো দায়িত্ব ছিল না। মৃত্যুর পর তার স্মৃতিটুকু ধরে রাখার প্রয়োজনও কি কেউ অনুভব করলেন না। বড় ভাই ও বোন প্রয়াত সংগীতকার আনোয়ার পারভেজ ও শাহনাজ রহমতুল্লাহ বেঁচে থাকতে কি ভাইয়ের প্রতি এতটুকু মমতা অনুভব করেননি। জাফরের দুই পুত্রও কি বাবাকে ভুলে গেছেন।
একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবেও জাফরের প্রতি সরকারেরও কি কোনো দায়িত্ব নেই? চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি বেঁচে থাকতে কোনো শিল্পীর খবর রাখে না, মৃত্যুর পর তো খবর নেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না, অথচ এই আজিমপুরে কত কত নাম না জানা মুক্তিযোদ্ধা শায়িত আছেন। তাদের কবরে নামফলক আছে। আছে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত। একজন কিংবদন্তী শিল্পী ও মুক্তিযোদ্ধা জীবদ্দশায় মান অভিমানে জীবন কাটিয়ে গেলেন। যৌবনে যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ে দেশের জন্য পতাকা বয়ে আনলেন। অথচ মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি আজ ক্ষমতায় থেকেও মুক্তিযোদ্ধা জাফর ইকবাল জীবনের শেষ সম্মান থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
জাফর ইকবাল হয়তো বুঝেছিলেন তার মতো একজন নিঃসঙ্গ মানুষ যিনি প্রেমে ব্যর্থ এবং বিবাহিত জীবনেও ছিলেন অসুখী, কাজের কোনো মূল্যায়নও পাননি তাকে হয়তো মৃত্যুর পরও অবহেলায় ঘুমিয়ে থাকতে হবে। তাইতো তিনি তার সব আবেগ ঢেলে দিয়ে গেয়েছিলেন
‘হয় যদি বদনাম হউক আরও
আমিতো এখন আর নই কারও…।
আমি জাফর ইকবালের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি।
প্রয়াত জাফর ইকবালের অবহেলিত কবর।
এমন অনেক মুক্তিযোদ্ধাদের রিজার্ভ কবর।
২৮টি মন্তব্য
ইঞ্জা
প্রয়াত জাফর ইকবালের অভিনীত ছবি আমি কলেজ ফাঁকি দিয়ে ম লুকিয়ে লুকিয়ে চট্টগ্রামের জলসা এবং নুপুর সিনেমা হলে দেখতে যেতাম, উনার গান সুখে থাকো ও আমার নন্দিনী আমার সবচেয়ে পছন্দের গান, হয় যদি বদনাম হোক আরও, আহা এখনো গুন গুনাচ্ছি।
সত্যি দুঃখজনক যে এমন এক অভিনেতা, কণ্ঠ শিল্পীর কদর এ দেশ দিলোনা। 😢
শামীম চৌধুরী
তিনিতো রাজনীতির উর্ধ্বে ছিলেন। আওয়ামী বিরোধীও না। তবে কেন উনার প্রাপ্য মর্যাদাটুকু পান নি। আমি খোঁজ নিয়ে পরে মিডিয়াকে কাজে লাগাবো।
ইঞ্জা
অপেক্ষায় রইলাম ভাই
সুপর্ণা ফাল্গুনী
ভাইয়া লেখাটি পড়ে আমার আত্না আঁতকে উঠেছে। মানুষের এই হলো নিয়তি। সন্তান থাকতে , ভাইবোন থাকতেও সে সবার কাছে অবহেলিত হয়ে রইলো। একাধারে এদেশের একজন মুক্তিযোদ্ধা, গায়ক, স্টাইলিশ ড্যাশিং চিত্রনায়ক, গিটারবাদক এর এই করুন পরিনতি। মানা যায় না কিছুতেই। যারা তার মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গী ছিল বা যেসব নায়করা মুক্তিযুদ্ধ করেছে তাদের অন্তত এগিয়ে আসা উচিত ছিলো তার প্রাপ্য সম্মান টা পাইয়ে দিতে, সরকারের কাছে আবেদন করতে। আমার খুব প্রিয় নায়ক, গায়ক ছিল। তার আত্মার শান্তি কামনা করছি। ওপারে নিশ্চয়ই ভালো আছেন বিধাতার কৃপায়।
শামীম চৌধুরী
দিদিভাই, আমি জানতাম উনার কবর আজিমপুরে। ১৯৯২ সালে যখন উনি মারা যান তখন আমি দেশের বাহিরে। যার জন্য উনার দাফনে যেতে পারিনি। উনি আমাকে খুব আদর করতেন। উনার বাসায় বহুবার গিয়েছি। শাহনাজ আপার হাতের রান্না খেয়েছি। আমার ৩ বছরের বড় ছিলেন। জাফর মামা ছিলেন ১২ বছরের বড়। উনাকে নিয়ে দুবার ব্যাংকক গেছি। উনি প্রেমে ব্যার্থ হয়ে নিজেই নিজের জীবন স্বেচ্ছায় ধ্বংস করেছেন। যাক সেসব কথা। আজ সকালে স্বপনকে পেয়ে উনার কথা উঠলো। স্বপনও উনার কবর চিনে না। না চেনারই কথা। কারন সে সময় স্বপন আমেরিকা। পরে স্বপন সবচেয়ে পুরান গোর খোদককে বলে জাফর ইকবালের কবরটা কোথায়? আমরা ভেবেছিলাম কবে চিহ্ন থাকবে। যেয়ে কবর দেখে আমি আর স্বপন কান্নায় জড়িয়ে পড়ি। কবরের কোন চিহ্নই নেই। আমি খোঁজ নিবো। কেন উনি একজন মুক্তিযোদ্ধা হয়েও অবহেলিত। যদি রাজনৈতিক কোন বিদ্বেষ না থাকে তবে অবশ্যই উনার প্রাপ্যতা ফিরিয়ে আনবো। নইলে মিডিয়ার শরনাপন্ন হবো। নিউজ করাবো মুক্তিযোদ্ধা কেন আজ অবহেলিত। আমার সুযোগ আছে দিদিভাই।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
ধন্যবাদ ভাইয়া এটা করতে পারলে আমার চেয়ে আনন্দিত আর কেউ হবে না। কারন ওনাকে আমি সবসময় ই খুব পছন্দ করি। আর অবহেলিত মানুষের প্রতি আমার ভালোবাসা টা সবসময়ই বেশি কাজ করে। ওনার আপনজনরা ওনাকে মনে রাখেনি আমরা যদি ওনার কর্মকে বাঁচিয়ে রাখতে চাই , প্রাপ্য সম্মান দিতে চাই তাতে কারো কিছু না হলেও ভবিষ্যতের প্রজন্ম কিছুটা হলেও ওনাকে মনে রাখবে, সম্মান করবে। সালমান শাহ্ যদি তিন বছরেই এতো ভালোবাসা, সম্মান পেতে পারে ওনার মতো গুণীজন, মুক্তিযোদ্ধা কেন এতো টুকু পাবেনা? তখন আমি অষ্টম শ্রেণীতে উঠেছি, একটা ঝামেলার কারনে বাড়িতে আটকে থাকার জন্য ওনার মৃত্যুর দুই মাস পরে জানতে পারি যে উনি নেই। তখন কি যে খারাপ লাগছিলো।তখন তো এতো টিভি ও ছিল না গ্রামে। কিছু করুন ভাইয়া খুব খুশি হবো অন্তর থেকেই বলছি
নিতাই বাবু
ভুলে থাকার তো জো নেই! যেভাবেই হোক পুরোনো কিছু একভাবে-না-একভাবে মনে করিয়ে দেওয়ার লোক তো থাকবেই। তাঁদের মধ্যে আপনি একজন। প্রয়াত জাফর ইকবাল আমার প্রিয় অভিনেতা ও প্রিয় শিল্পী ছেলেন। আমি তাঁর প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা রেখে তাঁর বিদেহি আত্মার শান্তি কামনা করছি।
শামীম চৌধুরী
আল্লাহ উনাকে বেহেস্তবাসী করুন।
সুপায়ন বড়ুয়া
একজন শিল্পী পরিবারে জন্মগ্রহন করেও যিনি দেশ মাতৃকার ডা্কে জীবন বাজি রেখে যুদ্ধে গেলেন।
তাঁর প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা।
আপনার প্রতি কৃতজ্ঞ তাঁকে যোগ্য মর্যদায় তুলে আনার জন্য।
শুভ কামনা।
শামীম চৌধুরী
দাদা, উনার প্রাপ্যটুকু ফিরে পাবার সর্বাত্মক কাজ আমি করে যাবো। আমার সেই সুযোগ আছে। ব্যার্থ হলে মিডিয়ার শরনাপন্ন হবো। আর উনি কোন রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। দেশের পতাকার জন্য মুক্তিযুদ্ধে গিয়েচিলেন। একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা দেশের মাটিতে অবহেলিত হয়ে থাকবেন এটা কারো কাম্য নয়।
সুপায়ন বড়ুয়া
সহমত ভাইজান। স্যালুট আপনাকে !
ফয়জুল মহী
জাফর ইকবালের অবহেলিত কবর আমাদের শিক্ষালয় ।——— আমি এখন আর নয় কারো । চির সত্য চির মৃত্যু ।
শামীম চৌধুরী
গুনী শিল্পী ও একজন মুক্তিযোদ্ধার প্রতি সরকারের অবহেলা অনেক কিছুই ভাবতে শেখায়। উনার মৃত্যুর পর ক্ষমতাশীন দল বিএনপি ও পরবর্তীতে ক্ষমতাশীন দল আওয়ামীলীগ ছিল। কিন্তু কোন সরকারই উনার প্রাপ্যটুকু দেন নি। এটা অবিচার।
প্রদীপ চক্রবর্তী
বেদনাদায়ক স্মৃতি।
গুণী শিল্পী হয়েও মূল্যায়ন পাননি!
সেটা ভাবতে অবাক লাগে।
এছাড়া ৬০ থেকে ৯০ এমন গুণী শিল্পীরাই বাংলার চলচিত্রকে ধরে রাখতেন কিন্তু এ যুগের শিল্পীরা তাদের কতটুকুও বা মূল্যায়ন করে?
বরং সেটা প্রশ্ন থেকেই থাকে।
.
জানি গুণীরাও মরে গিয়েও মূল্যায়ন পায়না!
সরকার ও মিডিয়া মহলের এ বিষয়ে হস্তক্ষেপের প্রয়োজন। আমাদের তো একটা সমস্যা গুণীদের সম্মান দিতে জানিনা।
তবুও বিনম্র শ্রদ্বা জানাই।।
.
খুবি ভালো একটা অজানা বিষয় তুলে ধরেছেন, দাদা।
শামীম চৌধুরী
শিল্পী হিসেবে না হোক। একজন দেশপ্রেমিক মুক্তিযোদ্ধাকে তার উপযুক্ত পাওনাটা বর্তমান সরকারের মেটানো উচিত। নইলে জাতি ক্ষমা করবে না।
ছাইরাছ হেলাল
আমি তার সিনেমার ভক্ত না, তবে তার গান গুলো তখন খুব শুনতাম।
বিস্মৃতি কত ভয়ংকর তা আপনার এই লেখা পড়লে বোঝা যায়।
তাঁর ছেলে সহ নিকটজন যখন খবর নেয় নি তখন আর চিন্তা করে লাভ নেই।
আমরা জীবদ্দশাতেই কত কী ভুলে বসে আছি তার খোঁজ কে রাখে।
মনে করিয়ে দেয়ার জন্য ধন্যবাদ।
শামীম চৌধুরী
হুম।
রেজওয়ানা কবির
আমিন।
শামীম চৌধুরী
সুম্মামীন।
আলমগীর সরকার লিটন
আমার প্রিয় নায়ক ছিলেন
বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই ——–
শামীম চৌধুরী
বিনম্র শ্রদ্ধা আমিও জানাই।
মাহবুবুল আলম
লেখাটা হৃদয় ছূঁয়ে গেল। তবে আপনি জাফর ইকবালের প্রেমিকার নাম না বললেও প্রেমিকা এক সাক্ষাৎকারে স্বীকার করেছন প্রেমের কথা!!!
ততদিনে দুইজন দুই ভুবনে।…
জাফর ইকবালের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি।
শামীম চৌধুরী
জ্বী ভাই। থাক না কিছু গোপন অজানা পাঠকের কাছে। তবে আমি সেই সময় মন থেকে চাইতাম উনাদের বিয়ে হোক। বিয়ে হলে হয়তো বেঁচে থাকতেন াবার নাও থাকতেন। উপরওয়ালা ভাল জানেন।
ধন্যবাদ আপনাকে।
তৌহিদ
প্রয়াত জাফর ইকবাল আমার খুব পছন্দের একজন নায়ক। তাঁকে নিয়ে অনবদ্য এই লেখাটি পড়ে আপ্লুত হলাম ভাই। মানুষ কত তাড়াতাড়িই অবহেলার শিকার হয়! মৃত্যুর পরেও তার কবর সংস্কার করার কেউ নেই এমনকি আপনজনেরাও নেই। খুবই দুঃখজনক।
আপনাকে ধন্যবাদ জানালেও কম হবে। ভালো থাকুন ভাই।
শামীম চৌধুরী
আমি আজ সকাল ১০ টায় মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ে গিয়েছিলাম। আমার একজন কলেজ জীবনের সহপাঠি সেই মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা। ওর সঙ্গে আলাপ করি। ফেসবুকে আমার পোষ্ট দেখে সে আমাকে আজ মন্ত্ণালয়ে যেতে বলে। ওর সঙ্গে এক কাপ চা পান করতে। যাবার পর বেশ কিছু তথ্য দেয়ে। উপদেশও পেলাম। উনার সনদ নাম্বারের কপি ফটোকপি করে দিল। ওর নির্দেশনা মতন রবিবার থেকে সেই পথে হাঁটবো। প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টিগোচর না হলে কোন কাজ হবে না। আমার মাধ্যমে যদি উনি তাঁর ন্যায্য পাওনা জাতির কাছে পায় তবেই আমি গর্ববোধ করতে পারবো যে, একজন অবহেলিত মুক্তিযোদ্ধা তাঁর প্রাপ্য সম্মানে ভূষিত হয়ে শান্তিতে ঘুমাচ্ছেন। দোয়া করিও তৌহিদ।
আরজু মুক্তা
খুব বেদনাদায়ক।
এমনি অবহেলিত।
উনি আমার পছন্দের নায়ক ছিলেন
শামীম চৌধুরী
আপু, যদি উনার প্রাপ্য মর্যাদা উনাকে দেয়া হয় তবে জাতি ঋন মুক্ত হবে।
সাবিনা ইয়াসমিন
ছোটবেলায় তার অভিনীত কিছু ছায়াছবি দেখেছি টিভিতে। তখন অভিনয় তেমন একটা বুঝতাম না, তবে বড়ো হওয়ার পর তার অভিনীত মুভির গান গুলো দেখে/শুনে তাকে চিনেছি। আমার দৃষ্টিতে তিনি খুব স্টাইলিশ একজন হিরো। উনার ব্যাক্তিজীবন সম্পর্কে খুব একটা জানা ছিলো না। তবে এই লেখা পড়ে যতটা জানলাম তাতে মনে হচ্ছে না জানলেই ভালো হতো।
মানুষের জীবন/মৃত্যু এতটা অবহেলিত হতে পারে!
দেশের সম্পদ তুল্য এমন একজন স্বরণীয় ব্যাক্তিত্ব,একজন মুক্তিযোদ্ধা,দেশের প্রতিটি মানুষ যার গান শুনে মুগ্ধ ছিলো, যে ব্যাক্তি একটি সনামধন্য পরিবারের অংশ ছিলেন, তিনি বেঁচে থাকতে তার প্রাপ্য সম্মান পেলেন না! তার সমাধির কদর করার জন্য তার পরিবারের কেউ দায়িত্ব নিলো না! খুবই মর্মান্তিক ব্যাপার।
তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।
পরম করুণাময় তাকে তার প্রাপ্য শান্তি – সম্মান দান করুন। দোয়া করি।
ভালো থাকুন ভাই। শুভ কামনা 🌹🌹